সরিষার মধ্যে ভুত
দুষ্ট মাছ ধরা পড়িবে, জাল বিছানো হইল। জালে ধরা পড়িতে লাগিল, খাবি খাইতে লাগিল শুধু চুনোপুটি। রাজা বলিলেন, বড় মাছ কই?
পাত্র-মিত্র-সভাসদ আদি সবাই কহিল, তাই তো, বড়মাছ কই?
মন্ত্রী কহিল, আসিবে।
পাত্র-মিত্র-সভাসদ সক্কলে কহিল সমস্বরে -
আসিবে, আসিবে, আসিবে
সময়
তারপর কি রৌদ্রোজ্বল পথে হেঁটে চলে যাবে দূরে?
নাকি নদী সাঁতরে যাবে ওপারে ওই ঘন জঙ্গলে?
সরে দাঁড়াও
শূন্য আঙিনাও কাড়বে?
সিঁদুর
ওটা বেড়া না বাগানের সীমারেখা?
তবে আমার মাথায় নেই কেন?
স্পর্ধা!
পঁয়তাল্লিশ ঊর্দ্ধ, চশমা চোখে ছিপছিপে মহিলাটি
সেদিন কাব্য ভয়ঙ্কর
সব খবর
...
সত্যযুগ
ওহে কোটিপতি জগদগুরু, সদগুরু, মন্ত্রগুরুর দল
ভারতে নাকি সত্যযুগ এসেছে...কই হে তোমরা...
স্নিগ্ধ ঝড়
ধুলোয় ধুলোয় উড়িয়ে দিয়ে গেল
...
স্বাধীনতা
...
সক্রেটিসের জন্ম
...
সময় হল কি?
একলা ফিরে যাই
নিঃশব্দ আকাশ আর নিঃশব্দ মাটির
মাঝখানে
...
সময়
আমিও নই আমার নাগালের মধ্যে সব সময়
আমার মত করে আমার কাছে যে থাকে
...
সর্বমঙ্গলময়
ভীষণ দুর্বলচিত্ত মানুষ তো, এরকম কিছু হলে, দেখলেই একজন সর্বমঙ্গলময়, করুণাময় ঈশ্বরকে খুঁজি। যে সব কিছু ঠিক করে দেবে। দুষ্টুলোকগুলোকে ভ্যানিশ করে দেবে।
...
সেলুন
চশমা পরা নেই, তাই চুলগুলোর মুখ দেখতে পাচ্ছেন না। সেলুনের ছেলেটা প্রতিবারই চশমাটা খুলে নেয়। চশমা খুললে আর চোখে দেখতে পান না। আওয়াজ শুনতে পান।
...
সুটকেশ
...
সময়ের মুঠো
চিঠির ভাঁজ বরাবর জমেছিল কিছু বালি
তাদের উড়িয়ে দিয়ে
চিঠিটা আবার নতুন করে পড়তে বসলাম
...
সূর্যোদয়
তবু সূর্যোদয়ের অপেক্ষা আমার আমরণ
...
সমাজ
...
সুবর্ণ
সবই তো আছে
সুভাষচন্দ্রের ভাষণ দিতে গিয়ে কণ্ঠ অবরুদ্ধ হয়েছে এমন ঘটনা ঘটেছে। মোহনদাস গান্ধী নুন বানাতে যাওয়ার ডাক দিয়েছেন তাতে লক্ষ লক্ষ মানুষ সাড়া দিয়েছে – ইতিহাস সাক্ষী। সুভাষ বা গান্ধী কেউই তাদের মতাদর্শ অনুসরণ করলে চাকরি দেবেন এমন কথা দেননি। তবু মানুষ গেছে। মেরেছে। মরেছে।
সেদিন বেসিনে মুখ ধুচ্ছি
সংশয়
ব্যবসায়ীকূল পথপাশে
মনোহারী নয়নাভিরাম সাজে
তীব্র তীক্ষ্ণ উত্তরের বাতাস নখদন্ত মেলি
ফিরিতেছে পথেঘাটে আপন শিকার লাগি,
ক্ষণিক অসতর্কতায় আছাড়ি পড়িছে দেহে
হিম-দংশন, কোনো ক্ষমা নাহি
সন্ন্যাসী
...
সমান্তরাল
কত যুগ হল
পাশাপাশি
সমান্তরালে হাঁটছি
মাঝামাঝি যে প্রাচীর, সেও -
সমান্তরালে হাঁটছে
সকাল দরজায় দাঁড়িয়ে
মন্থনময়ী মধ্যনিশা
বিষ শুষে নিল চোখের পাতা,
অমৃতলোভী সকাল রইল দরজায় দাঁড়িয়ে
সম্পর্ক
সম্পর্ক অবিনশ্বর
মোড় ফিরিয়ে রূপ বদল
এখন তখন
তবু শূন্য হয়ে যেতে দেখিনি
হয়ও না
স্পন্দন
বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে। পুরোহিত সন্ধ্যারতি শেষ করে দরজায় হেলান দিয়ে বসল। কেউ নেই মন্দিরে আজ। এত বৃষ্টি সেই বিকাল থেকে, কে আসবে?
পঞ্চপ্রদীপের মাঝের কর্পূরটা নিভে গেছে। বাদল বাতাসে কেঁপে কেঁপে উঠছে জ্বলন্ত বাকি চারটে শিখা। পুরোহিত অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে সেই দিকে। দেবতাও। যেন এখনি নিভে যাবে।
সত্য
দার্শনিক, সন্ন্যাসী খুঁজে চলেছেন সত্যের সংজ্ঞা
দার্শনিক লিখলেন বই
সন্ন্যাসী গড়লেন মঠ
সত্য ঘুড়ি উড়িয়ে চলল মহাকাশে
লাটাই নিতে চাইলেন সন্ন্যাসী
নিতে চাইলেন দার্শনিক
সুরাসুর
যথারীতি এ বছরও মা দুগ্গা গট-আপ কেস করে, একটা আই ওয়াশ করে বেরিয়ে গেলেন। একখেন অসুরও মারা গেল না। বিশেষ করে কাল রাতে বেপাড়ায় নবমীর নিশির মদো নৃত্যের হুল্লোড় কথাটা প্রমাণ করেই ছাড়লে। এই সুরার মত অসুর সংসারে খুব কম আছে। কত মানুষকে অমানুষ, অমানুষ থেকে মহিষাসুর হতে দেখলাম তার ইয়ত্তা নেই।
সরি, ভুলে গিয়েছিলাম
ছাদের ধারে কার্নিশ ঘেঁষে দাঁড়িয়েছিলাম
একাই ছিলাম। রাত কটা হবে তখন?
সাড়ে বারোটার কাছাকাছি
দূরে কিছু কুকুর জটলা করে ডাকছে
কয়েকটা বাড়িতে আলো জ্বলছে
সত্য পরিচয়
১
===
জানলা দরজা বানাতে গেলে
আগে দেওয়াল বানাতে হয়
বোকার হদ্দ তুমি!
জানলাকে বলো - আকাশ
দরজাকে বলো - মুক্তি
২
===
চিড় ধরা দেওয়াল থেকে বাঁচায়
আকাশ, খোলা মাঠ, নদীর জল
সেদিনের একটুকরো ছেঁড়া গপ্পো
স্যুটকেশ গোছানো বাকি
সব কিছু খাটের উপর বার করে রাখা
তবু গোছানো হয়নি।
স্নান করতে ঢুকল। জলটা তেমন ঠাণ্ডা নয় যেন আজ।
চশমা চোখে নেই, তবু বুঝতে পারছে বাথরুমের ছাদের দেওয়ালের কোনে একটা বড় মাকড়সা।
ঝড় হয়েছে কাল সন্ধ্যেতে, ঢুকে পড়েছে।
সেরকম ভয় করল না। একবার ভাবল ডাকে, তারপর ভাবল, থাক ঘুমাক। ট্রেনে তো ঘুম হয় না।
সমস্যার সমস্যা
আদৌ কোনটা সমস্যা আর কোনটা সমস্যা না, সেটা বোঝাই একটা জটিল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোনটা তৈরি করা হয়েছে আর কোনটা নিজে থেকেই একটা সমস্যার রূপ নিয়েছে সেটা বড্ড গোলমেলে ব্যাপার। যেমন রোহিঙ্গা সমস্যাটা কিছুটা তৈরি করা আর বাকিটা ঐতিহাসিক জটিলতা। জল ঘোলা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহল যতটা উদ্বিগ্ন হওয়া দরকার তা হয়ে উঠছে না। এ ওকে, সে তাকে দোষারোপ, চাপসৃষ্টি ইত্যাদিতেই সীমাবদ্ধ থেকে যাচ্ছে। এমনকি যথেষ্ট পরিমাণ
স্নিগ্ধ বিশ্বাস
গুরু বললেন, "ঈশ্বরলাভ করতে কাম ত্যাগ করো"
শিষ্যের কামঘরে পড়ল তালা। তিলে তিলে জমে উঠছে বিষ। বাইরে ধূপধুনো চন্দনের গন্ধ। আরতির কাঁসরের আওয়াজ, পঞ্চপ্রদীপের শিখার তাপ। দিনে দিনে তালাতে পড়ল জং।
স্পষ্ট
স্পষ্ট তাকিয়েছিলাম
স্পষ্ট তাকালে তুমিও
স্পষ্ট কথা বললাম
স্পষ্ট কথাগুলো তোমারও
রেস্টুরেন্টের খাওয়ার বিল
সংশয় নেই, স্পষ্ট হিসাব
মিটিয়ে উঠলাম
উঠে দাঁড়ালে তুমিও
তাড়া আছে
তাড়া তো আছে তোমারও
তবু কেন যেন বেয়াড়া কষ্ট
বুক তো চিরছে তোমারও