টিফিন বক্স
যখন স্কুলে পড়তাম, টিফিন বক্সের একটা রহস্য ছিল। মা কি টিফিন দিয়েছেন আজ? ম্যাগী না পরোটা? চাউ না রুটি? না সুজি? না অন্য কিছু!
আজও টিফিন বক্সের ঢাকনা খুলছি প্রতিদিনের মোড়কে। রোজই ভাবি, আজ কি এনেছে আমার জন্য? ঠোঁটের কোণে হাসি, না চোখ জ্বালা ধরা ব্যাথা? নাকি পাঁচ মিশালি তরকারী?
যাই আনুক, নিতে হবে হাসি মুখেই, পরের দিনের দিকে তাকিয়ে।
টপ-আপ
-হ্যালো, সায়ন্তনী?
-বলছি
-আমি কুশল
-হুঁ
-আমার খুব জ্বর
-এটা বলতেই কি ৬ মাস তেরোদিন বাদে ফোন করলি?
-তোর এতটা মনে আছে!
-ন্যাকামো না করে, কেন ফোন করেছিস বল
-আমার খুব জ্বর
-শুনলাম তো। আমি ডাক্তার নই, নার্স নই, না তো আমার বাবার ওষুধের দোকান আছে।
টপকে
ঘন্টা কখনো মিনিটের আগে দৌড়ায় না।
সন্ধ্যা কারোর আঙিনাতেই পা রাখে না, দুপুরের আগে
...
টর্চ
টর্চটার একদিন খেয়াল হল। কি খেয়াল হল? না সে তার ব্যাটারীগুলোকে দেখবে। এদিকে ঘরে আর অন্য আলোও নেই। তো তা সে মানবে কেন? জোর করে সব ব্যাটারী বার করে টেবিলে রাখল। তারপর সে ব্যাটারীগুলো দেখবে বলে আলো জ্বালার চেষ্টা করতে লাগল, মানে নিজেকে জ্বালানোর আর কি! এখনো চেষ্টা করে চলেছে।
যেমন কেউ কেউ তাঁকে ভিতরে ছেড়ে বাইরে দেখার গোঁ ধরেছে।
টেবিল ক্লথ
টেবিল ক্লথের উপরে এত নক্সা কেটেছো কেন?
আমায় একটা সাদা টেবিল ক্লথ আনিয়ে দাও
টেবিলের ওপর রাখা
কাগজ, কালি, পেন ছুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলেছো
বহুবার
যেই ওরা আড়াল করেছে নক্সা,
লোককে দেখিও তোমার টেবিল ক্লথ নিজের সারা গায়ে জড়িয়ে
আমার টেবিল থেকে সরিয়ে নাও
তোমার রঙীন সূতোর নক্সা কাটা টেবিল ক্লথ
আমার অসুবিধা হচ্ছে
টান
আমার বুকের থেকে কিছু রঙ চুঁইয়েছে
দেখো ওরা তোমার আঁচলে লেগে এখনো
ওরা গড়িয়ে তোমার সর্বাঙ্গ ভেজাবে
চুঁইয়ে চুঁইয়ে ঢুকবে তোমার ধমনী শিরায়
স্নায়ুতে লাগবে পূর্বজন্মের টান
ভেজা মাটির গন্ধে শিকড়
পায় যেমন জলের সন্ধান
টিপ
টিপের আঠাটা নষ্ট হয়ে গেলে খুব মন খারাপ লাগে। বারবার আয়নার সামনে দাঁড়ায়। কপালে আঙুল ছুঁইয়ে দেখে, না তো আঠাটা লেগে নেই তো! টিপটা হাতে নিয়ে, টিপের পিছন দিকে আঙুল ছুঁইয়ে দেখে, খসখস করছে, আঠাটা কোথায় গেল?! প্রত্যেকবারই এমন হয়, আঠাটা খুঁজেই পায় না।
টুপ!
বাড়ির পাশেই একটা পুকুর থাক
মিছিমিছিই না হয় হল
তেতেপুড়ে যখন তখন নামা যায়
এমন দূরত্বেই থাক
তার জল সবুজ। ঘন সবুজ।
টেস্ট ড্রাইভ
রত্না মিষ্টির প্যাকেটটা একটা প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে নিয়ে হনহন করে হাঁটছে।
এই মিষ্টিগুলো না, ভুল মিষ্টি কিনে নিয়ে গেছে ছেলেটা, এতে টকটক গন্ধ লাগে তার। ফেরৎ দিতে হবে।
টিকিট
তুমিও বাস থেকে নেমে গেলে
অচেনা স্টপেজে হঠাৎ
কথা তো ছিল না এমন!
টু দ্যা সেক্রেটারীস, শুভ বিজয়া স্যার/ ম্যাডাম/?
এবার প্যাণ্ডেলগুলো খুলে ফেলুন প্লিজ। একটু তাড়াতাড়ি করুন। এত মাইকের আওয়াজ হচ্ছিল আপনারা শুনতে পাননি, এই বড় রাস্তাটার সামনেই যে বাঁদিক ঘেঁষে গলিটা, ওর পাঁচ নম্বর বাড়ির ভদ্রলোকের (অবশ্য ততটাও ভদ্রলোক নন, শুনেছি ক্লার্ক ছিলেন কোনো একটা প্রাইভেট স্কুলের, কত টাকাই বা মাইনে পেতেন!) হাঁপানির টান উঠেছে সপ্তমীর দিন রাত থেকে। বেশিরভাগ সময় একটা সবুজ নাইটি পরে থাকা ওনার মেয়েটা এখানে ওখানে ছুটে বেড়িয়েছে একটা
ট্যু গণ্ডগোলস
১
"Reformation of society in line with 'BARANASHRAMIC (বর্ণাশ্রমিক)' tradition, creation of a state and then a world's state without the so called Democratic system"
'অর্থাৎ আমরা আমাদের বর্ণভেদ ব্যবস্থার আস্থায় তোমাদের তথাকথিত গণতন্ত্রের বিশ্বাসকে হটিয়ে নতুন পৃথিবী গড়ার শপথ নিচ্ছি। এটাই আমাদের লক্ষ্য।'
টুল আনছি, আয়
ঝিরঝিরে বৃষ্টি পড়ছে। শীতটা জাঁকিয়ে। আলোটা অফ করে বাথরুমের লাইটটা অন রেখেই বিছানায় এলাম। নতুন জায়গা। একটু অস্বস্তি হচ্ছেই। কৃষ্ণনগরের এই দিকটা প্রত্যন্ত গ্রাম। চারদিক বেশ ফাঁকা ফাঁকা। মাসিদের নতুন বাড়ি এটা। ওরা দুদিন পর আসবে। পুরী গেছে।
টাকাটা কি আব্বুকে দেব?
ফরজানা আকাশের দিকে তাকিয়ে, মস্তবড় একখানা মাঠের মাঝখানে শুয়ে। চোখদুটো আকাশের দিকে খোলা। সকাল থেকে বুকে ব্যথা হচ্ছিল। স্কুলেও গিয়েছিল, ফিরে এসেছে। স্যারেরা বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন। বাড়ি এসে বমি হল। মা বলল, সকালের নামাজে কিছু ভুলচুক করেছিস। বাবা বলল, আল্লাহ্র মেহেরবানিতে সব ঠিক হয়ে যাবে।
টিনের বাক্স
...
টালি
ছাদের ফাটা টালি ক'টা সারানো হয়নি
জ্যোৎস্না ঘরোয়া
বৃষ্টি নয় তো!
ফাটা টালির ফাঁক দিয়ে নেমে আসা জ্যোৎস্না
বিন্দুমাত্র ইতস্তত না করে
চৌকি, জামা-কাপড়ের স্তূপ, ঠাণ্ডা মাটির উনুন
টোবা টেক সিং
সার দেওয়া কবিতার বই
তারই লেখা
টিউলিপ ফুটছে অলিতে-গলিতে
সাজানো ঘটনা। মিথ্যা ঘটনা। আরোপিত ঘটনা।
চারদিকে টিউলিপ ফুটছে
...
টোটোনিয়া
...
টিনের কৌটো
পাখিটা উড়ে গিয়ে পুকুরপাড়ের গাছটায় বসল। সন্ধ্যে হব হব। বকের সারি ধানক্ষেতের উপর দিয়ে উড়ে গেল। একটু একটু শীত শীত করছে। এদিকটা এত ফাঁকা ফাঁকা। শেয়াল ডাকতে শুরু করল। এ সব শুনব বলেই তো গ্রামে আসা। তবে এবারের অ্যাডভেঞ্চারটা অন্য। আমার পিসেমশায়ের বন্ধুর ছেলে তারকদার সঙ্গে এসেছি। তারকদা কলেজ অবধি পড়েছে। অ্যাকাউন্টেন্সি অনার্স ছিল। খুব মিশুকে। আহেরিটোলায় আমাদের বাড়িও গিয়ে থেকে
ট্যাটু ও রুমি
...
টিফিন
সোনাইয়ের খুব ইচ্ছা সে ক্যাডবেরি বানাতে শেখে। আকাশে ছড়ানো সব জেমসগুলো কুড়িয়ে নিয়ে আসে পকেট ভরে। বড়দের খালি খালি কেন যে সব বাজে বাজে খাবার খাওয়ার ইচ্ছা হয়, সোনাই বুঝে উঠতে পারে না। বাবা কেন রোজ ফুচকা খায় না?
ট্রেনে ওঠ বাবু
না। সতীশ মাথাটা ঝুঁকিয়ে বসে। নাম বত্রিশে। এখন চলছে আঠারো। এক একজন পেশেন্ট সময় নিয়ে দেখেন ডাক্তারবাবু।
টগরেশ্বরী
টক্সিক
যতবার শুনি ততবারই চমকাই। ভাগ্যে ভালোবাসা অদ্দূর গড়ায়নি ভেবে নিশ্চিন্ত হই। চারপাশে ভালো করে মন বুলিয়ে নিই, এমন ধারা ভালোবাসার গন্ধ পাচ্ছি না তো কোনো বন্ধুর জীবনে!
যাকে ভালোবাসবে সে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করবে না
...
টক্সিক
রজত মিত্র, বিখ্যাত মনোবিজ্ঞানী, দিল্লীর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের উপর একটা আর্টিকেল লিখেছেন আজ টাইমস অব ইণ্ডিয়ায়। একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ লাইন লিখে শেষ করছেন,
টিপের পাতা
টিপের পাতাটা হাতে নিয়ে বলল, দাম কাল দিলে হবে?
টিনের কৌটো
ট্রাম
জীবনে কোনো কিছুই স্থায়ী নয়