একটা উপড়ানো গাছ
জঙ্গলের ধারে পেলাম একটা উপড়ানো ফুল গাছ।
...
একই কথা
এক একজন না পড়া চলমান উপন্যাস।
কত অধ্যায়, কত অনুচ্ছেদ, জানি না।
...
একসাথে
বর্ষার বেলা, মেঘলা আকাশ,
দারুণ প্রস্তাব।
বললাম চল, উঠলাম বাইকে-
...
এখোনো কি রাত?
কেউ জেগে আছো?
কারোর পায়ের শব্দ কি আসছে?
কই না তো!
মনের ভুল?
...
একলা যাবি
ওদের আসতে অনেক দেরি।
সবাই মিলে যায় না যাওয়া,
যেতে হবে একলা তোরই।
...
এক
খোল রে চোখ, তাকা দেখ না।
...
এলে নয়ন মাঝে
আগরপাড়া থেকে একটা পরিবার উঠে আমার পাশের সিটগুলোতে বসল।
...
এতএব
রোজই যখন যায়-
বলতেই পারি, "আর ফিরো না"।
পারি না বলতে।
বলি, এসো।
...
এবার আসলে
এবার আসলে
পায়ের নূপুর খুলে এসো
তুমি চলে গেলেও
ওদের আওয়াজ যেতে চায় না
এবার আসলে
গায়ে সুগন্ধী দিয়ে এসো না
তুমি ফিরে গেলেও
ওরা আমার চারপাশ ঘিরে ফেরে
এবার আসলে
কোনো কথা বোলো না
তুমি ফিরে গেলেও
কথাগুলো সব এ পাশ ও পাশ ভাসে
একতারা
এমন কেন করেন
এগিয়ে
জিভকে একটু বিরাম দাও
হৃদয়েরও কিছু বলার থাকতে পারে।
সব জানাশোনা ছেড়ে এগিয়ে যাও
অজানাতেও কেউ আপন থাকতে পারে।
এমনটাই
হঠাৎ হঠাৎ বুক ধড়ফড়?
মাঝে মাঝেই কান্না, অকারণ?
আচমকা উদ্বেগে বিনিদ্র রজনী কাটে, একা, সবার মাঝেও?
হাসির মাঝে চোখের জল,
চলকে এসে গালে পড়ে?
মুছে নাও, সবার অলক্ষ্যে।
ভাবছ-
'আমি খুব দুর্বল বলেই আমার এমন হয়!'
তা না গো মোটেই,
দুর্বল নও-
বরং, তুমি ভয়ঙ্করভাবে বেঁচে আছো
ভীষণভাবে বেঁচে থাকতে চাইছ।
এক সমুদ্র অনন্ত
তুমি চেয়েছিলে-
তাই অসীম থেকে হলাম সসীম
নিরাকার থেকে হলাম সাকার
তুমি ফিরে গেলে-
সসীম থেকে হলে অসীম
সাকার থেকে হলে নিরাকার
তোমার আর আমার মাঝে এখন
এক সমুদ্র অনন্ত
একাকীত্ব ও নিঃসঙ্গতা
একাকীত্বের সাথে নিঃসঙ্গতা রোজই সকালে বেরোয় বেড়াতে।
একাকীত্ব নিয়ে আসে মুঠো ভরা ফুল, চোখ ভরা বিস্ময় আর বুক ভরা গান।
নিঃসঙ্গতা নিয়ে আসে মুঠো ভরা ধুলো, চোখ ভরা ঈর্ষা আর বুক ভরা দীর্ঘশ্বাস।
আমি বলি কেন এই রকমই হবে?
এতটুকুই থাক
তুমি পারতে আরো আরো বেশি যন্ত্রণা দিতে, জানি
যদি পারতাম তোমায় আরো আরো ভালোবাসতে, মানি
তবু এতটুকুই থাক
বাকিটুকু রাখি বাকি
সব পলাশ কি এক বসন্তেই হবে লাল
কিছু পলাশ দিক না, এই বসন্তে ফাঁকি!
একমুখী
এই মুহুর্ত্তে আমি হাওড়া-যশোবন্তপুর দুরন্ত এক্সপ্রেসে আছি। সারা ট্রেন থিকথিক করছে বাঙালী। যেন বাঙলার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যাচ্ছে ট্রেনটা। কিন্তু তা তো নয়। এক রাজ্য ছেড়ে ভিন রাজ্যে এতগুলো মানুষ প্রতিদিন ছুটছে - কাজের জন্য, উচ্চশিক্ষার জন্য। দোকানের কাজ থেকে শুরু করে আইটি-র বড় বড় কম্প্যানীতে কাজ করেন এঁনারা, অনেকের সাথে কথা বলে জানলাম।
এমনটাও ঘটে
সংসারে প্রকৃত সুখী সেই, যে সুখে থাকার চেষ্টাই করে না। ভাবেই না কতটা জমল, কতটা গেল।
এড়িয়ে
সব খারাপ কথার উত্তর দেওয়ার দরকার নেই। যখন কেউ বলছে, তখন তার দিকে না তাকিয়ে জানলা দিয়ে বাইরে চলে যাও। কান থাকুক কানে। মন থাকুক চোখের সাথে বাইরে- খেলুক, ঘুরুক, দেখুক, ছুটুক। তারপর ফিরে এসে দেখবে, যে বলছিল সে নেই। ব্যস হয়ে গেল।
কঠিন একটু। বাইরে যাওয়াটা না, যেতে চাওয়াটা। মনে হয় আমিও বলি। যেই বললে, অমনি ফাঁদে পা দিয়ে দিলে। আর ওড়া হল না।
একাকার
যেদিন ঘরে আসলে-
আমার মনে ছিল কিছুটা শঙ্কা
ভেবেছিলাম সব দরজায় দেবে খিল
বলবে, "আজ থেকে এ ঘর শুধু আমাদের"
যেদিন ঘরে এলে
সেদিন শুধু দক্ষিণের দরজা ছিল খোলা
তুমি এসে পূব পশ্চিম উত্তরের দরজাও দিলে খুলে
বললে, "এ ঘর সবার আজ থেকে"
অবাক হয়ে বললাম, "তুমি?"
বললে, "আমি থাকব সবার মাঝে,
তোমায় ঘিরে, তোমায় আড়াল না করে"
একাই
তুমি প্রথম না
আমি অনেকগুলো গোলোকধাঁদা পেরিয়ে এসেছি
একাই
অনেক বসন্ত পেরিয়েছি শুধু শুকনো পাতা মাড়িয়েই
একাই
পিছন থেকে ছুরি মেরেছে বন্ধুর মত কেউ, ছুরিটা বার করেছি
একাই
যে কোনোদিন পাশে থাকে নি, সেও এসে বন্ধুত্বের জাল ফেলেছে
স্বার্থের সন্ধানে
সে জাল কেটে ক্ষত- বিক্ষত শরীরে বেরিয়ে এসেছি, একাই
বন্ধু, তুমিই প্রথম না
এমন কেন?
এমন কেন?
সব সময় নদীর ওপারেই দাঁড়াবে?
তুমি জানো না
আমি সাঁতার জানি না?
নৌকা থাকে না, তাও জানো না?
কান পেতে শোনো
আমার হৃৎপিন্ডের স্পন্দনে ওপারে গাছের পাতাগুলো
কেঁপে কেঁপে উঠছে থরথর করে
চাঁদের আলো তোমার রক্তিম
ঠোঁট ছুঁয়ে ঠিকরে পড়ছে জলে
মুক্তোর মত
আর না-
হয় তুমি এপারে এসো
না হয় আমায় সাঁতার শেখাও
একলা একলা
বুকে কিছুটা আগুন জ্বলেছিল
পুড়ছিলাম নিঃশব্দে
আঁচটা নিভাইনি জেনেশুনেই
শেষে শুধু ছাই পড়ে থাকবে জেনেও
একাকীত্ব
১
-----
তুমি যখন আসো
আমার সামনে এসে দাঁড়াও
মনে হয় তুমি আমার বহু জন্মের চেনা
কৃষ্ণগহ্বর সৃষ্টিরও আগে থেকে
তুমি যখন যাও
আমার মনে হয়
আমি যেন জন্ম জন্ম একা
ইতিহাস সৃষ্টিরও আগে থেকে
২
----
আমার একাকীত্বের কোনো মানচিত্র নেই
তুমি যে ভাবে খুশী এসো
একটা ঘটনা ও দুটো প্রশ্ন
১
---
মা হাসপাতালের বেডে শুয়ে, অর্ধ-চৈতন্য,
মহাপ্রস্থানের পথে, চিকিৎসা শাস্ত্রের বাইরে।
আমি বেডের ধারে গার্ড দেওয়া রেলিং-এ
কনুই রেখে, গালে হাত দিয়ে মায়ের দিকে
স্থির দৃষ্টিতে চেয়ে,
আগুন নেওয়ার আগে, দু'চোখ ভরে শুষে নিচ্ছি
মায়ের মুখ, হাত, পা।
হঠাৎ স্লিপ করে গেল কনুই,
মা অর্ধ-চেতনায় চমকে উঠলেন,
আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
একটা পলতে
ওরা অসময়ে জন্মে গেছিল
ওরা জানত না
যে নরম ভিজে মাটির উপর ওরা খেলে বেড়াচ্ছে,
তার নীচে ফুটছে জ্বলন্ত লাভা
...
এই তো
যারা আছে তারা নতুন
তাদের সাথেও পরিচয় হবে
...
এখন এখানে
পালে লেগেছিল বাদলা বাতাস
কূলে আছড়ে পড়েছিল ঢেউ
...
এবারে
শুধু তোমার দিক।
একথা ওকথা না
...
এ ভাবে পারো তো এসো
বারণ করিনি তো!
তবে পাপোসে পা টা মুছে এসো
...
এক একটা সময়
সূর্য্যের মত, চাঁদের মত, অক্সিজেনের মত, জলের মত।
ভারী লাগে।
...
এলোমেলো
শোয়ার ঘরে, বসার ঘরে ধুলো ছিটিয়ে
...
এরকম হয় না?
মনে হয় এই যে আমি এখন বসে আছি
পাখাটা ঘুরছে, টিকটিকিটা পোকা ধরতে গিয়ে
...