বোতাম
এটাই অভ্যাস এখন।
জোরে হাঁটতে গেলেই ধাক্কা লাগে
বিশ্বাসঘাতক
তুমিও সেই জ্বলন্ত আগুনে
তোমার মশালটা জ্বালাবে?
বলা কথা
কিন্তু বলতে পারোনি।
...
বাউল
রাস্তার দিকে।
কোনো চেনা বাউলের সুর শুনেছে কি?
...
বোকাটা
বলল,জন্মদিনে পরতে হয়, এটাই নিয়ম।
পারলাম না পরতে।
...
বুড়ো আঙ্গুল
খুশী হয়ে যেতাম,
বুঝতাম, বন্ধুর আমার রাগ ভেঙেছে।
...
ব্যবহার
...
বাদামের ঠোঙা
আর কয়েকটা দাঁত দিয়ে বাদাম চিবোচ্ছে।
ক্লান্ত অফিস যাত্রীর ভিড়ে ঠাসা আপ শান্তিপুর লোকাল।
চীৎকার, আলোচনা, ঝিমুনি, হাসি, উদাসীনতায় মিশে রোজকার ছবি।
...
বৃত্ত
বনে গুহায় সৈকতে।
পেলে না।
বোসো। আর খুঁজো না।
ওটা খুঁজলেই হারায় মানুষ।
...
বাঁক
পিচে বাঁধানো রাস্তা, স্ট্রিট লাইটের আলোতে
অভ্যস্ত আমার চোখ, রাতের আকাশকে বিশ্বাস করে না।
দূরের মানুষের কাছে থাকার উপায় অনেক আজ,
পাশে কে তুমি? চিনি না।
আমি কথা রাখি না। অত বোকা নাকি?
...
বন্ধনহীন গ্রন্থি
...
বরং
সেই ভাল
বরং আগুনেই পুড়ি।
শেষে কিছু তো থাকবে বাকি।
...
বুঝেশুনে
ততটাই জানো, যতটা জানলে হৃদয়ের সাথে চলতে পারো।
ততটাই শোনো, যতটা তুমি ভাণ না করে শুনতে পারো।
ততটাই দেখো, যতটায় তুমি রংগুলোকে চিনতে পারো।
...
বাঁশি
ঈশ্বরের সৃষ্টির শেষ দিন। সব ঠিকই চলছিল। হঠাৎ কি করে প্রভুর অন্যমনস্কতার সুযোগে সৃষ্টি হল এক পাগলের।
বীজ
কিছু যন্ত্রণার বীজ অঙ্কুরিত হয়েছে
কিছু বীজ সুপ্ত এখনো
সময় হয় নি যে।
কিছু গাছে কুঁড়ি ধরেছে
ফুলও ফুটেছে কটায়।
সুখ?
ওই যে
এক যন্ত্রণা ভুলে আরেক যন্ত্রণার পথে -
মধ্যখানের ব্যবধান।
এতেই নিজেকে ভুলিয়ে নাও তো ভালো
বাঁক
বুদ্ধপূর্ণিমা
কে আমার পরম বন্ধু? যিনি আমার সব সমস্যার সমাধান করে দেন? না। তা হলে তিনি আমার পরম বন্ধু নন, তিনি পঙ্গুর লাঠি।
তবে? তিনিই আমার পরম বন্ধু যিনি সমস্যায়, বিপদে আমার বুদ্ধিটাকে স্থির পথে এনে দেন, চিন্তাটাকে আরো স্বচ্ছ করে দেন। সমস্যার সমাধান না, সমস্যাটাকেই আরো স্পষ্টভাবে বুঝতে সাহায্য করেন। ফলস্বরূপ সমস্যার সমাধানের পথ আমি আপনিই পেয়ে যাই।
বেগতিক
বিশ্ব দিবস
বিষুবরেখার মধ্যভাগে দাঁড়াতে পারি
চীৎকার করতে পারি গলা চিরে
হয়তো পৃথিবীর দুই প্রান্তদেশে
কিছু বরফের পাহাড়ে ধরতে পারে চিড়
কটা পেঙ্গুইন, শীল চমকে তাকাতেও পারে এদিকে
বিলাসী
১
---
কিছুটা হলেও টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়েই যাচ্ছিল বিলাসী। বয়স চল্লিশের আশেপাশে। বাড়ি মুকুন্দপুর। হরিনাভীতে স্বামীর ভিটে। মেয়েটাও তার সাথে কাজে বেরোতো। গীতা। উনিশে পড়েছিল এই মাঘের শেষে। বিলাসী চারটে বাড়ির ঠিকে ঝি-র কাজ করত। তার স্বামী মদন ভাগের চাষ করত। ছেলেটার বিয়ে দিয়েছে গত শ্রাবণে। নেতাই আর তার বৌ কামিনী। নেতাই চব্বিশে পড়েছে। আর কামিনীর বয়স ওই গীতার মতই হবে।
বাঁকাচোরা
(লেখাটির সাথে আমার পরিচিত জীবিত/ মৃত/অনাগত কোনো মানুষের মিল নেই।)
বিন্দু
বেগতিক
যদি ভালবাসতে
পুড়তে পারতাম
যদি গালাগাল করতে
রাগতে পারতাম
তুমি তো দেখেও দেখলে না
না ঝাড়া ঝুলের মত ঝুলে রইলাম
বাজার
বাজারে তো আর জামার অভাব নেই। কত কায়দা, কত রঙ, কত বাহার! তা বলে কি সব জামা আমার মাপের হয়, না সব জামায় আমায় মানায়!?
এটা বুঝে গেলে, বাজার আর আমাকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায় না। বাজারের প্রয়োজন নিজের প্রয়োজন ফুরালেই ফুরায়।
এটা না বুঝলে বাজার আর কিছুতেই পিছু ছাড়ে না। আত্মার দেহ ছাড়ার সময় হয়ে যায়, কিন্তু দেহের আর বাজার ছাড়ার সময় হয় না। মন সাবধান!
বেরিয়ে এসো
রেগো না। রেগে লাভ নেই। বরং মুখ ফেরাও। চলন্ত রিকশার স্পোক গোনার চেষ্টা করো। বা নিজের বুকের জামাটা খামচে ধরে নিজেকে হেঁচড়ে বার করো, তবু রেগো না। রেগে লাভ নেই।
প্রত্যাশা রেখো না। লাভ নেই। ভুলে যাও। যেমন উনুনে আঁচ ধরিয়ে ধোঁয়াকে ভুলে যায়। কারোর চোখের দিকে বেশিক্ষণ তাকিও না। কুকুরটার ল্যাজটার দিকে তাকাও। হাজার চেষ্টাতেও সোজা হয় নি যেটা। হাত দুটো পকেটে ভরো। পেতো না।
বাইরে
পূজা শেষ না হতেই উঠলাম
কে কাঁদে?
নৈবেদ্যর থালা হাতে বাইরে এসে দাঁড়াই
কে ডাকে?
প্রদীপের আলো ধরি তুলে
কে তুমি?
প্রভু বললেন, আমি।
বন্ধুর জন্য
আমি তোমার জন্য একটা নদী বানাবো
ছোট্ট নদী
যাতে হাঁটুজলের বেশি না থাকে
সারাদিন হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে
আমার পাশে বোসো
পা ডুবিয়ো জলে
পা জলের তলার নুড়িগুলো ছুঁয়ে খেলবে
ধরো আকাশে চাঁদ উঠবে
গোটা না, একফালি
কয়েকটা তারা বেছে নেব, বড় আকাশ থেকে
আমাদের ছোটো আকাশটাতে
কালপুরুষ, সপ্তর্ষিমন্ডল আর শুকতারা
ধ্রুবতারা?
বিজয়িনী
বাগানে নানান ফুলগাছ। হঠাৎ করে কোথা থেকে একটা ক্যাকটাস গাছ জন্মালো। অন্য গাছেদের ভুরু কোঁচকাল, নাক উঁচু হল। বেশ কিছুদিন কাটল। সব গাছে ফুল ফুটল। গোলাপ, রজনীগন্ধা, জুঁই, জবা আরো কত কি। শুধু ক্যাকটাস থাকল ফুলহীন। অন্য ফুলগাছেরা ক্যাকটাসের দিকে তাচ্ছিল্যভরে তাকালো। বলল, শুধুই কাঁটা? আহা বাছা থাকো কি করে! ক্যাকটাস হাসল শুধু।
বোঝা-বুঝি
তুমি কথা বলতে বলতে পাশ থেকে উঠে গেলে
আমায় বোঝাতে কি সব
আঁকিবুকি কথা
বোঝালেও
মানে বোঝানোর চেষ্টা করলে
শেষে বললে, বুঝেছ?
আমি মাথা নেড়ে বললাম, হ্যাঁ
কি বোঝালে বুঝিনি
বুঝলাম এটুকুই-
তুমি পাশ থেকে উঠে গেছো
বল্মীক
হাতের তালুতে অনেক ধুলো জমে তোমার
ঝেড়ে ফেলো এবার
আর কতদিন হাতদুটো পিছনে করে হাঁটবে?
যে বল্মীকে ছেয়েছিল বাল্মীকিকে
সে মাটি জমাতে পারো কি?
বাসন্তীদেবী
বোকা
সে মরণকে বলেছিল, ফুঃ
...
ব্যক্তি বনাম নীতি
...
বেবাক বনে যাই
বেড়াল কই? বেড়াল কই?
এ তো আস্ত আস্ত বাঘ!
...
বন্ধন
...
বহমান অফুরান
সারা আকাশ নীল নীল আর শুধুই নীল
উড়ে বেড়াচ্ছে কয়েকটা সাদা বক
ডানাগুলো যেন মোৎসার্টের সিম্ফনির মত কোমল
...