চোখ
চোখ নিয়ে কবিতা অনেক পড়েছি,
গানেও শুনেছি।
বুঝলাম তোকে দেখে
আগুন কেমন বিনা শিখায় পোড়ায়।
পুড়ছি রোজ চুপ করে।
ভাবি তোর আসার পথ বন্ধ করে
বাঁচার পথ খুঁজি।
হয় না।
চোখ বুজেও যে চোখের দৃষ্টি বুকের কাছে বিঁধে, তার দাবি - সর্বনাশ!
চেনা মানুষ
তবু সেই চেনা মানুষটা কোন দিকে থাকে, জানো?
সেই দিকটাই খুঁজছি কবে থেকে।
...
চিঠি
থাকতেই পারে সে কথা।
তা বলে একসাথে চলতেই হবে
এমন কথা কি ছিল?
...
চড়াই-উৎরাই
জলে স্থলে অন্তরীক্ষেও ভাসলাম।
এভারেস্টে না চড়লেও বা ভারত মহাসাগরের মাটি না ছুঁলেও
সারা জীবন অনেক উঠলাম নামলাম।
...
চলা
ফেরা হল না।
চক্র
সমাধান করতে হয়।
চাঁদ ও কিছু প্রশ্ন
পূবাকাশে উঠল একলা চাঁদ।
পূর্ণ চাঁদ।
মনে হল সঙ্গী পেলাম। তাকালাম হেসে। সেও তাকাল প্রসন্ন মুখে। জানতে চাইলাম, "ব্যস্ত? কিছু কথা বলা যাবে?"
সে নীরবে জানাল সম্মতি।
"জান, একটা কথা তোমাকে দেখলেই মনে হয়।
...
চৌকাঠে
ঘরেও গেলাম না, পথেও নামলাম না।
দরজায় রইলাম দাঁড়িয়ে।
কেউ দাঁড়াল, কেউ চলে গেল তাকিয়ে।
কেউ দুদিন বিশ্রাম নিয়ে বলল,"যাই"।
তাদের কিছু আছে আমার ঘরে
...
চোখ
চোখ না তো
ভলক্যানো
না ভলক্যানো না
শানানো ধারালো ছুরি যেন
না ছুরি না না
গিলেটিনের পাত যেন
না, তাও না, তাও না
গোলাপের কাঁটা যেন
কাঁটা বলব না গোলাপ?
তুমি বলবে প্রলাপ!
প্রলাপ না, প্রলাপ না - নেশা
চাবি হারিয়ে, ঘর হারিয়ে
এখন পাগল পাগল দশা
চিরনূতন
তুমি বললে আমাদের ভালবাসা নাকি পুরোনো হয়ে গিয়েছে
কেমন খটকা লাগল শুনে
প্রেম কি কখনো হয় পুরোনো?
সারারাত ঘুমালাম না, মাথার মধ্যে প্রশ্নচিহ্নের বাড়ি
প্রেম কি কখনো হয় পুরোনো?
সকাল বেলা উঠে ছাদে আসলাম
ডিমের কুসুমের মত রঙ সূর্য্যের
মনে হল এ সূর্যোদয় কি পুরোনো?
চিঠি
তোমার চিঠি লেখা একটা খাম নিয়ে।
তাতে লেখা থাকুক-
সবাই ভাল আছে, সুস্থ আছে, আনন্দে আছে।
...
চিরকালের কথা
এটাই তার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা
এটাই তার সবচেয়ে বড় শক্তি।
...
চাঁদের মত অলখ টানে
...
চিরন্তন
হৃদয়নীড়ে সুখ দুখ আশার পাখিরা জাগল
আমি চোখ মেলতেই ওরা উড়ে গেল বাইরে
...
চিরকালের
অনিচ্ছাতে থাকব না।
দূরেই যদি কাছে থাকি, কাছে থেকে দূর করব না।
...
চৈতন্যময়ী
সে আলো হল চেতনা। যাকে আমাদের সাধকেরা “মা” বলে ডেকে এসেছেন যুগ যুগ ধরে।
...
চাতক
রাজার নিমন্ত্রণ উপেক্ষা করে,
আমি সেদিন আম্রপালীর ঘরে ছিলুম,
টিকটিকি হয়ে দেওয়ালে।
...
চিঠি
চিঠি যখন আসে
সেকি পথের খবর আনে?
না তো না
না তো না
সে শুধু
তার সৃজকের কথাই আনে
একের কথা
ভেসে ভেসে
দেশে দেশে
আরেককে বলতে আসে
সে কি শুধুই কথা আনে?
না তো না
না তো না
চশমা
চিরশুচি
ওরা বলল তোমায়
অশুচি
দুশ্চরিত্রা
লজ্জাহীনা
চেয়ো না
যে শিখার আলোতে তুমি বাঁচো
সে আলোকেই নাও শুধু কাছে
যে প্রদীপের সে শিখা
সে প্রদীপকে চেয়ো না, থাক
যাবে পুড়ে
সে আগুনকে বুকে নেবে -
এমন শ্মশান কি তোমাতে আছে?
চাবি
তোমাকে ভুল বোঝার মানুষ প্রচুর পাবে। ঠিক বোঝার মানুষ হাতে গোনা কয়েকজন। দেখো যেন সেই 'ঠিক বোঝা'র মানুষগুলোর মধ্যে প্রথমজন হও তুমি নিজে।
চলা
না তো দুর্ভাগ্যকে অস্বীকার করতে পারো, না তো সৌভাগ্যের পথ চেয়ে সব কাজ ফেলে বসে থাকতে পারো।
মাঝামাঝি একটা রফা তোমায় করতেই হবে। জুতো না মিললে খালি পায়েই হাঁটতে হবে। তবু হাঁটতেই হবে। জুতোর ওজর দেখিয়ে বসে থাকলে, জুতোর মানই বাড়ে শুধু অনর্থক, ক্ষতি যা হয় সে আমার। সে না-চলার ক্ষতি, রক্তাক্ত পায়ের তুলনায় অনেক বেশি। ক্ষত সারবে, কিন্তু, সময় আর ফিরবে না যে!
চলেছি
উড়ে চলেছি
ভেসে চলেছি
খুঁড়িয়ে চলেছি
হেঁচড়ে চলেছি
জেগে চলেছি
ঘুমিয়ে চলেছি
পিছনে চলেছি
সামনে চলেছি
উপরে চলেছি
নীচে চলেছি
ভুলে চলেছি
ঠিকে চলেছি
পাপে চলেছি
পূণ্যে চলেছি
আলোতে চলেছি
আঁধারে চলেছি
একা চলেছি
দোকা চলেছি
অনেকে চলেছি
চোখের কাজল
চোখের কাজল চোখকে বলল-
আমার জন্যই তোর রূপ ভাই
চোখ বলল, হ্যাঁ-
অপর জনের চোখেই শুধু পড়া চাই
চোখের কোণায়
চোখে জল আসেনি এখনো।
তবে আসত।
চোখ বোঝার আগে,
তুমি বুঝলে কি করে?
সে জল তোমার চোখের কোণায়
চিল
দরজায় তালা দিয়ে একবার এদিকে এসো। তালাটা টেনে দেখেছো তো? ঠিক আটকানো তো?
ঠাকুরঘরের জানলাটা দেখেছো? ভালো করে ছিটকিনি দিয়েছো?
ছাদের দরজা? পিছনের দরজা?....
ঘুমের ওষুধটা দাও এবার। কাল রাতেও এটা খেয়ে ঘুম আসেনি। বরং দুটো দাও বা তিনটে।
হ্যাঁ গো, রাত কটা এখন? আড়াইটে। একবার মেয়েটার ঘরে যাও না। দেখো তো সব ঠিক আছে কি না?
চুপচাপ দূরে
চুপ করে শোনো
চুপ করে শোনো
তারারা ফিরে যাওয়ার আগে কি বলে গেছে
দেখো ফাতনা না ডুবলেও লোকটা বসে আছে
এই আড়াই ঘন্টা হল
বাচ্চা মেয়েটা স্কুলে যাওয়ার ব্যাগ নিয়ে রাস্তায়
স্কুলের থেকে রাস্তাটা টানছে বেশি
চলা
আমার কিছু খবর রাখে মন
বেশির ভাগটাই অন্ধকারের ভাগে
চক্র
চেয়ে থাকো
চোখ, লোহার ত্রিফলা পাটাতনে, জুড়ছেন কোনো ছেঁড়া চটি
তাকিয়ে দেখছেন না, কার পায়ের তলায় রাস্তা হেঁটে চটিটা ছিঁড়ল
চিন্তামণি
আমি তাঁকে যেদিন মুক্তি দিলাম
আমার বাসনা পূরণের পদকর্তা থেকে
সেদিন তিনিও আমায় মুক্তি দিলেন
লোভে ঢাকা মুক্তির আকাশকে মুক্ত করে
সেদিন থেকে তাঁর সরোবর থেকে শীতল বাতাস আসে আমার বাগানে
আমার বাগান থেকে ফুল উড়ে বুকে ভাসে সে সরোবরের জলে
আমরা দু'জনেই মুক্ত দু'জনের দিকে তাকিয়ে
ওই সরোবরের তলদেশে আছে
আমার মননের মণি - চিন্তামণি
চিন্তা
সুতোর পরে সুতো জোড়া
তাতে হরেক রকম রঙ করা
একটু এদিক ওদিক হলে
সুতোর বাঁধন যাবে খুলে
সেই সুতোতেই ঘর বানানো
রঙ মিলিয়ে রঙ সাজানো
সুতোর ভাষায় সুতোর টান
লক্ষ সুতোয় বাঁধছে প্রাণ
সুতোর খেই যেই হারালে
চেনা জগৎ সেই খোয়ালে
সুতোর মালিক যদি চান
সব সুতোরই নাগাল পান
চুরি
তুমি যাওয়ার পর
তন্নতন্ন খুঁজলাম সারা ঘর
কি খুঁজলাম?
কি আবার,
রাতের ঘুম আমার!
নিয়ে গেছো তাতে ক্ষতি নেই
বলে যাবে তো একবার!