হঠাৎ
লোভে পড়ে গেলে?
হঠাৎ দিক বদলালে যে?
...
হোক কলরব
দিনের আলো নেভাবি কি করে?
হুঁ!
ধর্মের শাসনের-
হেস্তনেস্ত
কেউ তার খোঁজ পেলে
জানিও তো কোন দেশে থাকে?
ভেবে খুঁজে সারাদিন
মাথা করে ঝিমঝিম,
কি করে যে ধরে আনি তাকে!
...
হাত
পথ হারালাম।
ভাবলাম, চলতে হবে বাকিটা পথ একা।
হারানো পথ
কাঁধে রাখল হাত
বলল-
আমি চলব পাশে পাশে
হবে কি আর একা?
হে মহামানব
হলুদ পাতা
হলুদ পাতায় ভরেছে আমার উঠান
আমি সকাল বিকাল ঝাঁট দিয়ে দিয়ে ক্লান্ত।
বস্তা বস্তা পাতা ফেলে এসেছি নদীর ধারে, একা, গোপনে।
দুদিন পরেই জমেছে পাতা, হলুদ ঝরা পাতা এদিক ওদিক সারাটা বাগান ছড়িয়ে ছিটিয়ে।
ঝরা পালকের রোঁয়া উড়ে এসেছে পাতার সাথে, কোন পাখির জানি না।
মৃত পাখির শাবক মুখে করে পাঁচিল ডিঙ্গিয়েছে বেড়াল
ঝরা পাতায় লেগে রক্ত, আবার ফেলেছি সরিয়ে।
হিংসা
দুর্বলের হিংসাই একমাত্র সম্বল আর অভিযোগই একমাত্র হাতিয়ার। এটা বেশ বুঝতে পারছি। কবে একটা গল্প পড়েছিলাম। একটা মশা হাতির পিঠে বসেছিল। তা আচমাকাই হাতির লেজের বাড়ি খেয়ে ঘায়েল হয়ে, ঘ্যান ঘ্যান শুরু করে, এটা কি ন্যায্য বিচার হল!
তারপর অনেক জল এনে হাতিটাকে ডুবিয়ে মারার চেষ্টাও করে মশা। হয় না।
হাল্কা জ্ঞান
জ্ঞান মানে, অনেক জানা না। জ্ঞান মানে অনেক কিছুই যে জানি না, এটা জানা। তখন থেকেই বাঁচা শুরু, নির্ভয়ে, সপ্রেমে।
নির্ভয়ে, কেন না ভয়ের মূল যে 'আমি' নামক গ্যাস বেলুন, তাতে 'ছিদ্র হইয়াছে'। সমস্ত গরম হাওয়া বেরিয়ে, সে অসীমের কোণে চুপসে পড়ে আমার দিকে জুলজুল চোখে তাকিয়ে আছে। তাই আর ভয় নাই। ওই যে ঠাকুর বলতেন না, 'আমি মলে ঘুচিবে জঞ্জাল', অনেকটা সেই আর কি।
হে প্রভু
আমি তোমায় দেখতে পাই না
তোমার ভিতর দিয়ে জগৎটাকে দেখি
আমি তোমায় শুনতে পাই না
তোমার শোনা দিয়ে ভুবন বার্তা শুনি
আমি তোমায় বুঝি না
তোমার আলোতে আমার বোঝা বুঝি
আমি তোমায় খুঁজি না
তোমার ভিতরে আমার আমিকেই খুঁজি
আমাতে তোমাতে অনন্তকাল আছি
পরমানন্দে আত্মময় নিতান্ত কাছাকাছি
হোঁচট
কয়েকটা ভুল কথা ভুল নয়
কিছু গুলিয়ে যাওয়া ভাল
...
হেঁটে বুঝলাম
তোমার সাথে দশ পা হেঁটে বুঝলাম
দশ পা'তেও জন্মাতে পারে
দশ হাজার পায়ের অভিজ্ঞতা
(ছবিঃ সমীরণ নন্দী)
হায় রে বোধি হায় রে
("চমস্কী আর পামুক?
ওরাও শেষে নিন্দা দিলেন? এবার লড়াই থামুক!"
~ শ্রীজাত)
নোম চমস্কী করিল নিন্দা
করিল নিন্দা পামুক
বঙ্গকবি লাফায়ে কহিল
তবে তো লড়াই থামুক
হায় রে বোধি হায় রে
পরানুগত্য কি মহীয়সী
দেখিয়া প্রাণ জুড়ায় রে
হে সত্য
সে কথা থাক, যে কথা শুধুই তর্কের ঝড় তোলে
নিজের তোলা ঝড়ের ধূলোয় নিজেই পথ ভোলে
সে আলো জ্বালো, যে আলো মৃত্যুর পারে জাগে
আজ সব পরাভব তোমার চরণে পুনর্জন্ম মাগে
হাট্টিমাটিমটিম
স্থান - মন্দির
উপস্থিত-
ডাক্তার - রুগী
উকিল - মক্কেল
উদ্দেশ্য - আত্মোন্নতি
ভগবান - কনফিউজড
নেট ফল - কে গায়?
হাট্টিমাটিম তারা মাঠে পাড়ে ডিম
হৃদয়াবেগ
হ্যাঁ, আমিই
১
---
কোর্টে আজ রায় বেরোবার দিন। থিকথিক করছে ভিড়। আসামী একজন মহিলা। বিবাহিতা। বয়েস ৩৩।
অপরাধ - অসুস্থ স্বামীকে রেললাইনে ধাক্কা মেরে চলন্ত ট্রেনের সামনে ফেলে দেওয়া। দিনেরবেলা, সবার সামনে।
যে ক'দিন আদালতে মামলা চলছিল মেয়েটা একটা শব্দও উচ্চারণ করেনি। যতবার জানতে চাওয়া হয়েছে এর পিছনে কারণ কি? সে নির্বাক থেকেছে।
হাঁটবে না আমাদের সাথে?
হাতের কাছে কিছু চেয়েছিলে
পাওনি। এই তো?
অথবা পেয়েও হারিয়েছ। তাই তো?
ওই গাছটার কাছে দাঁড়াও
জানতে চাও, শেষ বসন্তে ওর কত পাতা ঝরেছে?
জানতে চাও, ওর কত মুকুল অপরিণতিতেই
মাটির কোলে গোর নিয়েছে?
হংসধ্বনি
তাড়া নেই কোথাও যাওয়ার। তবু হাঁটছি। সোজা রাস্তা। সন্ধ্যে ইতস্তত করছে পুরোপুরি চাদরে মুড়তে দিনের অবশিষ্ট আলোটুকুকে। ডানদিকের আকাশে ঈষৎ রক্তিম পূর্ণচন্দ্র।
হয় না
মেয়েটার কিছু শাড়ি আলনায় রাখা
এগুলো রোজ লাগে
কিছু শাড়ি আলমারীতে তোলা, গোছানো
ভাঁজের পর ভাঁজ খোলে
আবার ভাঁজ করে রাখে
ভাঁজের রেখায় রেখায় আটকে তার শখ
হলই না হয় বাঁ হাত
আমায় দেবে বলে, সে এলো-
অনেকগুলো কাঁটা
এক পাত্র বিষ
আর এক দাবানল আগুন
নিয়ে
হতেও তো পারত!
তোমার আঁচলের খুঁটে কটা শব্দ বাঁধা থাকত, গোপনে।
ওদের কি করলে?
কুটনো কুটতে গিয়ে, কেটে ফেলছো?
শাক ধোয়া জলের সাথে ভাসিয়ে দিয়েছো নর্দমায়?
না বোধহয়।
তোমার চুলের কাঁটার সাথে কিছু শব্দ আটকে আছে, এখনো।
ওরা তোমার দু-একটা পাকাচুল নিয়ে খেলে,
তুমি চাইলে ওরা তোমায় খোলা আকাশে নিয়ে যেতে পারত
গ্যাস বেলুন দেখেছিলে না, ময়দানে?
হঠাৎ বৃষ্টি
অনেকদিন পর রোদ উঠেছে দেখে, বউটা কাচা কাপড় জামা মেলবে বলে ছাদে উঠল। ছাদে কাপড়গুলো মেলতে মেলতেই কোথা থেকে আকাশ জুড়ে এল ঘন কালো মেঘ করে।
সে অবাক হল। তার হাসিও পেলো। ভাগ্য বদলায়নি একটুও! সেই রাতটা মনে পড়ল। যার সাথে পালাবে বলে এক কাপড়ে বেরিয়ে পড়েছিল, তার সেই প্রেম, স্বপ্ন- সে আসার আগেই, আগের ট্রেনে হয়েছিল দেশান্তর।
হিকিকোমরি
'হিকিকোমরি' নামটা শোনা? কারোর কারোর শোনা শোনা লাগতে পারে। একটা বাংলা সংবাদপত্রে খবরটা বেরিয়েছিল।
হ্যাঁ-না
জেনেছি
জানি না
বুঝেছি
বুঝি না
মেনেছি
নেইও, আছেও
হারিয়েছি
ছায়াতে ছায়া
যা আছে
তাই আছে
যা নেই
তা নেই
আমি নেই
আমি আছি
হাত
হাতটা ছেড়ে দাও,
হয়তো হাতটা ধরতে গিয়ে
অজান্তেই বেঁধে ফেলেছো,
হাতের চাপে।
এবার ছেড়ে দাও,
হাতের স্পর্শের সুখ
হাতের মোচড় হওয়ার
দুঃস্বপ্নের আগে।
হতেই পারে
এমন তো কথা ছিল না
আমার রাস্তার দুধারে থাকবে শুধুই গোলাপঝাড়।
মাঝপথে আমার সাথী হবে সে
যাকে আমি খুব একা লাগলে আঁকি মানসপটে।
সব চেষ্টা, সব ইচ্ছা, সব স্বপ্ন - ডানা মেলে উড়ে যাবে সকালে
হাত
যে হাতগুলো
মন্দিরের ভিত কাটল
দেওয়াল গাঁথল, ছাদ ঢালাই করল
বিগ্রহ বানালো, পূজার জোগাড় করল
নৈবেদ্য দিতে গিয়ে দেখি
সেই সব হাতই এক হয়ে
আমার সে নিবেদন গ্রহণ করল
হে কর্ণধার
হারায়নি কিছু
১
---
কষ্ট পেও না। হারায়নি কিছু।
কিছুটা সময় গেছে মাত্র,
সময় আমারও না তোমারও না
না হয় গেলই।
চোখের তারায় সময়ের কি মূল্য?
হে মহামরণ
হত নিজের সঙ্গে দেখা
তাঁর মুখোমুখি সিটটা সব সময়েই ফাঁকা
যখনই চাও বসতে পারো,
হলেই না হয় কিছুটা সময় তাঁর সঙ্গে একা
আর কিছু না
তেমন কিছু না
হত নিজের সঙ্গে দেখা
হে চিরনূতন
বলা হল যদি তুমি তারাখসা দেখতে দেখতে কিছু চাও, তুমি পাবে। আবার কেউ বলল, চোখের ঝরাপাতা হাতে যা চাইবে, পাবে।
হাজার ঘষলেও যায় না
কিছু কথা তবু যেন বলা হয়নি
কিছু কথা বলা কখনো হয় না
মনের তলানিতে আটকে
কড়া পড়া কড়াইয়ের মত
হাজার ঘষলেও যায় না
হঠাৎ হারিয়ে যেতে
হঠাৎ হারিয়ে যেতে অনেকেই তো চায়
ফেরার চাবিটা কেউ কেউ-ই ফেলে রেখে যায়
হ্যাপি মাদার্স ডে নয় তো
আজ হ্যাপি মাদার্স ডে নয় তো আমার
মিথ্যা কথা ওসব তোমার,
সে কি ছিল মাটির দূর্গা?
যে একবার তারে দিয়ে বিসর্জন
বলব, আসছে বছর আসছে আবার!