না-চেয়ে
জোর করলাম।
তার বেশির ভাগেরই-
...
নিরাসক্তি
সবার মধ্যে ঈশ্বরকে দেখার কথা,
নির্লোভত্বের কথা, ত্যাগের কথা, প্রেমের কথা
যা শাস্ত্রে বলেছে!
...
নীচতা
রাগ বুঝি, অভিমান বুঝি।
মাথা ঘোরা বুঝি, পেট ব্যাথা বুঝি
...
নাড়ীর টান
তাকেও কাঁদতে দেখলাম অসহায়, পাগলের মত,
নিজের সন্তানকে কাছে পাওয়ার জন্য,
দেখলাম দুর্বলতম মানুষটার পায়ে হাত দিয়ে
...
নিজের জন্য
খারাপ লাগবে।
দেখবে শ্রাবণের মেঘ তোমার থেকে মুখ ফিরিয়ে,
দিঘীর জলে নিজের ছায়াকে পাবে ভয়
জল নাড়িয়ে ছবি গুলিয়ে কি পাবে?
...
নিজের সাথে বোঝাপড়া
নাকি ডুব সাঁতারে তরবি।
এটা তোরই উপর।
বাইরে থেকে দেখবি,
নাকি ঘরের ভিতর ঢুকবি।
...
নিজেকে
ফেসবুকে না, ওয়াটস অ্যাপে না।
নন্দিত নরকে
তেমন মানুষ আমার চারদিকে।
যে ধরণের মানুষের অসহায়তায় করুণা করতে করুনার অপচয় মনে হয়-
তাদের আমি রোজ দেখি।
ওরা আসে আমার দরজায় এটা ওটা বিক্রি করতে বা সাহায্য চাইতে।
ইচ্ছা হলে দিই, না হলে না।
...
নিশীথিনী
অনেক রাত।
সারা চুল আলুলায়িত করে আমার সামনে এসে দাঁড়াল, নিশীথিনী।
নির্ভরতা
আমি নীলাকাশ ভালোবাসি। সবুজ মাঠ ভালবাসি। দিগন্তে মনকে বিলীন করতে ভালবাসি।
এরকম আরো অনেক কিছু ভালোবাসি। কিন্তু নির্ভর করি কি এগুলোর ওপর? না। নির্ভর করি মাটির উপর, যে নীরবে আজন্ম আমার ভার বহন করে চলেছে। এমনকি তাতে কম্পন ধরলেও হুমড়ি খেয়ে পড়তে হয় তারই বুকের ওপর। আবার ঘরও বাঁধতে হয় তারই বুকে।
নতুন
আমার দিকে তাকাও
দেখো আমি কালকের 'আমি' না।
আমিও আজ নতুন সকাল দেখেছি
তোমারই মত।
তোমার কালকের 'তুমি'
আমার কালকের 'আমি'
থাক না কালের গর্তে মিলিয়ে
জন্মের মত।
আমার হাতে হাত রাখো
দেখো আমার শরীরে আজ নতুন উত্তাপ
প্রেমকে কিছু শর্ত থেকে দিয়েছি মুক্তি
চিরকালের মত।
নীল নীরবিন্দু
দীঘির ধারে ডাকলে, মৃদু হাসির ইশারায়
বললে, নামো
আমি বললাম ভয়ে, সাঁতার জানি না যে!
বললে, তবু নামো
নামলাম
যত নামলাম শরীর হতে লাগল হাল্কা
মাঝ দীঘিতে দাঁড়িয়ে তুমি
চোখে তোমার দৃঢ় প্রত্যয়ের জ্যোতি
স্নেহের কিরণে মাখা
বললে, চিৎ হয়ে ভাসো
দু'হাত মেলো ডানে বাঁয়ে
মেললাম
এখন নীলাকাশে চোখ
সারা শরীর দীঘির জলে মগ্ন
নদী
আমার শরীরে-বুকে স্মৃতির নদী
শাখা-প্রশাখায় প্রাণের শিকড় ছুঁয়ে গেছে
কোন শাখাতে কখন লাগে ঢেউ
সে খবর কি তার নিজের কাছেই আছে?
আমি যদি এ বলি,
এসব কথা ভুলেই আমি ছিলাম
সে বলে হেসে
ভোলো নি তুমি, সে কথা জানিয়ে গেলাম।
নিয়তি
চোখের সামনে
এক
এক করে
সব শেষ হচ্ছে
নিরুপায় সাক্ষী আমি-
নতুন করে
রোজ কিছুটা রাস্তা একলা হেঁটে এসো
কারোর সাথে কথা না বলে
ফেরার জন্য তাড়া না রেখে
ফেরার পথকে রেখো
চলার পথে গোপনে।
না-রাখা কথা
যখন কেউ কথা দিয়ে না রাখে
কষ্ট হয়, সবার যেমন হয়,
এমনকি যে রাখেনি তারও হয়
মনে হয় তার পিছনে পিছনে হাঁটি
ছায়ার মত
সে থাকুক আপন মনে
নির্ভার
শরীরটা যখন অসুস্থ থাকে, যখন বিছানা ছেড়ে দু-পা উঠে খাবার জলটা গড়িয়ে খেতে মাথা টলে, হাঁফ ধরে যায় - তখন বোঝা যায়, যে স্বাস্থ্যকে অনায়াসে লাভ করেছি তার সত্যিকারের মূল্য কতখানি। এত দৌড়-ঝাঁপ, বকবকানি, কীসের জোরে।অথচ সেই স্বাস্থ্যকে কত তুচ্ছ করে দেখি যখন ভাল থাকি তখন, মনেই থাকে না!
নিঃস্ব রাজার চেলা
মাথাটা যখন খুব ভারী
চোখটা যখন ঝাপসা
যখন পায়ে অদৃশ্য শিকল
বুক নিরুৎসাহে ভ্যাপসা
তখন বাইরে এসে দাঁড়া
নীচুর দিকে তাকা
জলের মত হ
তুই যে নিঃস্ব রাজার চেলা
নরককে নরকেই চাই
আমাকে নরকের দরজায় রেখে
নিশ্চিন্তে ফিরে যাও
আমি আমার মত স্বর্গ বানিয়ে নেব
তোমার স্বর্গে যেতে পারবো না
সেখানে পরতে পরতে দেখি
নরকের আতঙ্ক
আমি নরককে নরকেই চাই
স্বর্গীয় আতঙ্কে না
নিস্প্রাণ
সংসারের দিকে পিছন ফিরে
সিংহাসনের দিকে মুখ করে
ওনার তিরিশটা বছর কাটল
স্বামী পূত্র পূত্রবধূ পৌত্র সবাই আছে
শুধু উনি থাকলেন না
এত বছর ধরে উনি এত বড় সংসারের
দিকে পিছন ফিরেই কাটালেন
থেকেও না থেকে
সেদিন রাস্তায় যেতে যেতে আবার চোখ পড়ল
ওনার গারদ ঢাকা শীর্ণ শরীর
সিংহাসনের দিকে ফেরা
আনন্দহীন শুকনো মুখে বন্ধ দুটো চোখ
নিজের জন্য
সারাদিনে অন্তত একটা জানলা নিজের জন্য খুলো
যে আকাশটা দেখতে চেয়েছিলে, পুরোটা না হোক তার খন্ডাংশই দেখো
সে জানলা দিয়ে একটু বাতাস আসুক
আর আসুক কিছুটা আলো
কিছু ধুলো আসুক না হয় ঝরাপাতা নিয়ে
কিছু অবসর হঠাৎ আসুক
বুকের ভিতর অচেনা পথ দিয়ে
নোঙর খুলে
জীবনটাকে পুকুর ভেবে ঝাঁপ দিয়েছিলাম
ঝাঁপ দিয়ে বুঝলাম, কি ভুল করেছিলাম
এ যে বর্ষার উত্তাল সমুদ্র
যাতে সুখের নোঙর ফেলতে চেয়েছিলাম
সে নোঙরে একা আমিই গেলাম আটকে
বুঝতে পারিনি
ঢেউ এর পরে ঢেউ এর চাবুক খেয়েছি শুধু
ভাসিনি
এখন আর নোঙর ফেলি? - পাগল!
সাঁতার শিখে গেছি
তাই নোঙরও লাগে না, হাল-পালও লাগে না,
নতুন
রোজই ভাবি, আর না
প্রেম করব অন্য কারোর সাথে
হয় কই?
রোজ সকালে তোমাকেই
নতুন রকম লাগে
নইলে
তাতে কি?
...
নিরুত্তর
নিশীথ আমার বহু পূর্বপরিচিত।
...
নিষিদ্ধ পল্লী
ও হ্যাঁ সন্ধ্যে হয়ে গেছে তো!
আমি খেয়াল করিনি।
ওই তো ওরা আসছে।
...
না সহযাত্রী
বিশ্বাস করতে পারে না একটা রাস্তাই নিয়ে
যেতে পারে গন্তব্যে
...
নিরুদ্ধ সমীরণ
...
না বুঝলেও
তবু তোমার শোককে ছোঁয়ার মত ক্ষমতা আমার কোথায়?
নদীর ঝড় দেখেছি, পড়েছি সে দুর্বিপাকে
...
নানক
দেখলেন তাঁর নামে-
মঠ আছে, বই আছে, ছবি আছে
সাধু আছে, নিয়ম আছে, সভা আছে
...
নিয়তি
দরজা খুলে দেখি, একরাশ অন্ধকার নিয়ে
সন্ধ্যে দাঁড়িয়ে দোর গোড়ায়।
...
নিষিদ্ধ
আমার জ্বর, আমার ঘোর, আমার প্রলাপ।
তোর নাভীর চারপাশে আমার চোখ
তাতে কাঁটা, তাতে জ্বালা।
...
নাম
আমি বললাম, "কেন করব? সে আমার নাম করে
কখনো?" লোকটা চমকে উঠল,
বিস্ফারিত নেত্রে বলল, "স্পর্ধা!"
...
ন হন্যতে
চিরকালের জন্য কবর দেওয়া যায়
সে উঠেছে।
...
নির্বোধ
আমিও শুধরালাম না
...