Skip to main content
সন্ধ্যায় পসার সাজায়ে বসিয়াছে 
   ব্যবসায়ীকূল পথপাশে 
      মনোহারী নয়নাভিরাম সাজে
 
তীব্র তীক্ষ্ণ উত্তরের বাতাস নখদন্ত মেলি
   ফিরিতেছে পথেঘাটে আপন শিকার লাগি,
      ক্ষণিক অসতর্কতায় আছাড়ি পড়িছে দেহে
                    হিম-দংশন, কোনো ক্ষমা নাহি
 
হেন কালে হেরি এক বৃদ্ধা শতরঞ্জি গায়ে
  ফিরিতেছে ভিক্ষা মাগি শ্রান্ত নগ্নপদে
পার্শ্বে বালিকা এক, ক্ষীণ তনু খানি
  মলিন শীতবস্ত্রে আবরিয়া চলিছে পাশেপাশে
        কুতুহলী আঁখি
 
চারদিকে কত কোলাহল
 কত কলকলি
   আমোদে ভ্রমিতেছে সবে
 
       নানান সামগ্রীমাঝে
      আপন স্বার্থলাগি।
কেহ নাহি চাহে ফিরে
  এত শোভামাঝে, দরিদ্র রমনী এক
    সহস্র শীতবস্ত্র মধ্যে
     শতরঞ্জি গায়ে ফেরে
 
বিস্ময়ে রহিলাম স্থির
   ওই শিশু বালিকাটি
   কেমনে শিখিয়াছে প্রভু
      সবে মাত্র এ জগতে আসি
   কেমনে বাঁচিতে হয় লক্ষ উপেক্ষা সহি
      প্রাণের দাবী নীরবে বহি?!
 
দেখিতে দেখিতে তারা গেলা দৃষ্টিত্যাজি
সম্বিৎ ফিরি, লইলাম শাল এক
   খুঁজি ফিরি আত্ম-ব্যস্ত সমাজ মাঝে
       শতরঞ্জি আবৃতা সে নারী
 
 পাইলাম তারে। 
অতি সংকোচে বলিলাম, ইহা লহো,
    কুতুহলী দৃষ্টিহানি কহে সে বৃদ্ধা, কি ইহা?
 
ইত্যাবসরে সে বালিকা
   খুলিয়া পেটিকা, কহি উঠে উচ্ছ্বসি উল্লসি
 
"ওরে ঠাকুমা, দেখ চাহি, 
   শাল নাহি কহিতেছিলি, 
        এই দেখ চাহি,"
 
নারিলাম তিষ্ঠতে আর ক্ষণকাল
   বালিকা নাচিছে পথে দিয়া হাততালি,
         ফিরিতে ফিরতে পথে
             নিবারি অশ্রুবারি
    মনে বাসি গভীর সংশয় এক
       অমন শুভ্র শালে পাইবে কি
          ভিক্ষা সে?
       যে শতচ্ছিন্ন বস্ত্র
 
জাগাইতে পারে কিঞ্চিৎ করুণা তবু
        এ নিষ্ঠুর, স্বার্থসর্বস্ব পাষাণ হৃদয়ে
              শুভ্র বস্ত্র কি ভাবে সাধিবে তাহা?
 
 

Category