কান পেতে শুনলো
আপ্রাণ চাইত
সে একা হবে না ...
কবীর কবীর
ক্যাডবেরি
দিলীপ কম্বলের ভিতর থেকে বলল।
রত্না শুতে গিয়েও বসে পড়ে বলল, মানে, আলো জ্বালিয়ে শোবে নাকি। যত বুড়ো হচ্ছ, তত ভীমরতি ধরছে...
দিলীপ উঠে বসে বলল, বাহাত্তুরেও বলতে পারো, তিয়াত্তর তো হল না?
রত্না বলল, শোনো এই মাঝরাতে আমার খেজুরে আলাপ করার কোনো ইচ্ছা নেই, শোও...
কাজের মানুষ
এই যেমন ধর্ম দিয়েই শুরু করা যাক। এই যে এত এত অবতার, গুরু, মন্দির ইত্যাদিকে অনেকে আমরা প্রাণের সঙ্গে জুড়িয়ে রাখি, নাস্তিকেরা আবার যেমন নানা রাজনৈতিক দার্শনিক, নেতাদের ফটোতে মালা দিয়ে প্রায়ই ভালোবাসা জানান, এতে দোষের কিছু আছে?
...
কন্ট্রোল কাউকে দিও না
দেখো, তোমরা শুনেছ যে মানুষ সিগারেট, মদ, গাঁজা এরকম নানা নেশা করে। তোমরা জানো এগুলো বাইরে থেকে মানুষ কিনে বা জোগাড় করে নিজের নেশার ইচ্ছাকে তৃপ্ত করে। এখন একটু ভেবে দেখো তো, নেশা আর অভ্যাসের মধ্যে ঠিক পার্থক্যটা কি? নেশার জিনিসটা আমার উপরে তার কন্ট্রোলিং পাওয়ার পেয়ে বসে। এটাই হল সব চাইতে খারাপ দিক নেশার। বাকি শরীরের উপর কি প্রতিক্রিয়া সেই নিয়ে আমার এখানে আলোচনা করার দরকার নেই। আমার কথা হল যে সেটা তোমার উপর তার কন্ট্রোলিং পাওয়ারটা পেয়ে বসে। তুমি সম্পূর্ণ তার কন্ট্রোলে চলে যাও।
...
কত্তাবাবা ও ছাগল
কত্তা বলল, আগে এক টিপে বাঘ মারতাম রে। তখন তো তুই জন্মাসইনি। আমাদের পূর্বপুরুষেরা ঘোড়া, সিংহ এই সব নিয়ে হাঁটত। ছাগল কি কেউ নিত রে!
ছাগলটা উদাস হয়ে বলল, তাও...
....
কাকটা
কি চালাক দেখো, সে কাদার মধ্যে কি একটা খুঁটে খেতে খেতে চারদিকে বারবার তাকিয়ে নিচ্ছে। যেন কেউ এসে চেপে না ধরে তাকে, ছোবল না দিয়ে যায়, ঢিল না মারে।
....
কাজরি
ট্রেনের জানলার উপর হাত রেখে জাহ্নবীও বলেছে, এসো তবে, ভালো থেকো, সাবধানে যেও।
...
কচুরি আর ছোলার ডাল খাচ্ছিল
ছবিতে যিনি আছেন, মানে আরাধ্যা পাল, তিনি সকালবেলা ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিলেন। ফিরে আমার সঙ্গে দেখা করতে এলেন। কথায় কথায় আমি জিজ্ঞাসা করলাম যে সকালবেলা কালী ঠাকুর কি করছিল? ওরকম দাঁড়িয়েই ছিল?
সে সঙ্গে সঙ্গে একটুও না ভেবে বলল, না না
,,,
কেন বারবার সমুদ্র?
সজ্ঞানে তো জানি পাহাড় আর জঙ্গল ভালোবাসি। বিশেষ করে জঙ্গল। কিন্তু স্বপ্নে যেখানে সেখানে সমুদ্র কেন দেখি? পাশের বাড়ির পিছনেই যেন বালুতট, তারপর সমুদ্র। উঠানের পেয়েরা গাছটার গোড়া ছুঁচ্ছে এসে সমুদ্রের ঢেউ। ঘুমের মধ্যে নোনা বাতাস। নিরবচ্ছিন্ন গর্জন। কেন বারবার সমুদ্র?
কাদায় পা ডুবিয়ে
স্বপ্ন দেখেন?
দেখি।
কি দেখেন?
এই ধরুন গলায় দড়ি দিচ্ছি। সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে গেছি বাঘে খেয়ে নিচ্ছে। সমুদ্রে নুলিয়া আমায় ডুবিয়ে দিচ্ছে। গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে মারা যাচ্ছি। চব্বিশতলা ছাদ থেকে ঝাঁপ দিচ্ছি।
ভয় পান?
ক্রান্তদর্শী মানুষ
ভাবুন দেখি, একজন মানুষ, বেশ সেজেগুজে, একটা চেয়ার নিয়ে দরজার কাছে বসল। তারপর রাস্তার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে বলে যেতে লাগল,
কন্যাদিবস
ভারতের মত দেশে, যেখানে এখনও জন্মের আগে লিঙ্গ পরীক্ষা নিষিদ্ধ, অবশ্যই কারণটা সবার জানা, কন্যাভ্রুণ হত্যা যাতে না হয় সেই জন্যে, সেইখানে আজকের এই Daughter's day বা কন্যাদিবস উদযাপন আমার দারুণ লাগল। খুব খুব খুব ভালো লাগল। অনেকেই তাদের টাইমলাইনে নিজের মেয়ের সঙ্গে ছবি দিচ্ছেন। দিন দিন। আমার একটুও আদিখ্যেতা লাগছে না, আমার একটুও মনে হচ্ছে না বাড়াবাড়ি, ন্যাকামি ইত্যাদি ইত্যাদি
কেউ বদলে গেলে
কেউ বদলে গেলে
তাকে জিজ্ঞাসা করতে নেই
"কেন বদলে গেলে?"
কিছু হারিয়ে যায়নি
কিছু হারিয়ে যায়নি
দুঃস্বপ্নে কিছুকে
নিজের ভেবেছিলে শুধু
ক্ষোভ
"দিদি তোমায় দিয়ে দিই?"
আমার ছোটোভাইয়ের বউ, অঞ্জলি। আমি 'না-ই' বলতাম। কিন্তু অভ্যাসবশত সুগারের ওষুধটা খেয়ে ফেলেছি। এখন কিছু না খেলে শরীরটা খারাপ লাগবে। তাই…
কর্তব্য
"কর্তব্যটুকু করে যাই, তারপর যা হবার ঈশ্বরই জানবেন।"
নার্সকে কথাটা শেষ বলেছিল। এই বাক্যটা বলে আসছে একত্রিশ বছর বয়েস থেকে। আজ এই চুয়াত্তর বছর দশমাস তিনদিনের দিন শেষবার উচ্চারণ করল। কথাটা বলে শুলো। আর জাগল না।
কথা হয় না
কথা হয় না
দেখা হয় না
মন ঘুরে ফিরে তাকায়
বলে,
কথা হয়নি
দেখা হয়নি
আশা উন্মুখ হয়ে বলে,
হবে, হবে।
অভিমান বলে,
না হলেই বা কি!
ব্যথা বলে
এখন এ সব কথা না হয় থাক
কখন শুরু কখন যে শেষ
'আকালের সন্ধানে' বলে মৃণাল সেনের একটি সিনেমা আছে। বেশ ছোটোবেলায় দেখতে বসেছি। মানে যখনও মস্তিষ্কে আঁতেল কোষ জন্ম নেইনি। বিষয় হল, একদল মানুষ শুটিং করতে গেছেন গ্রামে আর সে গ্রামের দুর্ভিক্ষ অনাহার নানা ঘটনা ইত্যাদি। বুঝলামই না সিনেমাটা কখন কিভাবে শুরু হল আর কিভাবে কখন কেন শেষ হল। এরকম অনুভূতি পপকর্ণ ও ইডলি খেলেও হয়। ও মন কখন শুরু কখন যে শেষ কে জানে....তো সিনেমাটা দেখার
করবী
১
==
চেনা ফুলের গন্ধ। তবু ছেড়ে যেতে হবে। গন্ধের চেয়ে আপন কোনো স্মৃতি নেই। পোড়া উনুনের গন্ধ, ভিজে মাটির গন্ধ, মাথার তেলের গন্ধ, তেত্রিশটা বছর সঙ্গে কাটানো মানুষটার ঘামের গন্ধ, এই রেললাইনের গন্ধ... সব চেনা মৈত্রী রেড্ডি'র। বয়েস ষাটই হবে। স্পষ্ট মনে নেই।
কখন মিলিয়ে গেছে রাজা!
সমস্ত আয়োজন সারা
একশো আটটি স্বর্ণদীপে
জ্বলজ্বল করছে কম্পিত শিখা
ঘন্টাবাদক, শঙ্খবাদক প্রস্তুত
নববেশে,
তরুণ অঙ্গের কি শোভা!
স্নিগ্ধ দিব্য
ভাবগম্ভীর পরিবেশ হল সৃষ্টি
কি করিব ভাবি
ত্যাজিলাম সব কিছু
জনসেবা লাগি
এবে জনগণ ত্যাজে যদি
কি করিব ভাবি
কতবার
দরজায় এসে দাঁড়াবে
আমি চিনতে পারব
এইটুকু তো কথা
এইটুকু তো আশা
তবু তারই মধ্যে
কতবার মৃত্যুর যাতায়াত
উঠতে হল কতবার
কত ভুল মানুষের জন্য
কোনো উত্তর নেই
আমি ওরকম ভীষণ শূন্য দৃষ্টি, ওরকম প্রাণহীন হাসি আজ অবধি দেখিনি। সারা ঘর শুধু বই আর বই। খাটে, মেঝেতে, তাকে শুধু বই আর বই। নানা দেশের ম্যাগাজিন। সব অগোছালো।
ক্যানভাসের নিস্তব্ধতা
হয় তো নিঃসঙ্গ ছিলে
নিস্তব্ধ ছিলে কি?
যদি থাকতে
জানতে তবে
একটা পাতা ঝরানোর জন্যও
কত আয়োজন লাগে,
একটা সবুজ ঘাসও হলুদ হয়ে যায় না রাতারাতি
আসলে ক্যানভাসের নিস্তব্ধতাকে বুকে জড়িয়ে নাওনি কোনোদিন
কোনো ছবিই সম্পূর্ণ হল না তাই
কেউ বলবে না
"ন্যাকামি করবেন না"।
মজার কথা হচ্ছে, কেউ কিন্তু উঠে গেলেন না। কেউ বললেন না, আপনি এই শব্দটার জন্য ক্ষমা না চাইলে অনুষ্ঠানটা আর একরত্তিও এগোবে না। একজন জিভ কেটে পাশে বসে হাসলেন। বাকিদের অভিব্যক্তি ক্যামেরায় ধরা পড়েনি।
কে তুমি
সদ্য ফোটা ফুলের উপর
সবুজ পাতার উপর
যখন ভোরের শিশির পড়ল
বিন্দু বিন্দু মুক্তোর মত জ্বলে উঠল
রবিরশ্মির প্রথম কিরণে
মাধুর্য বলল, আহা!
শুকনো পাতার উপর
শুকনো ডালের উপর
ভোরের শিশির পড়ল যখন
বাসনা বলল, এত অকিঞ্চিৎকর তুমি!
শিরিরকণা বলল, কেন?
কনফিউজড
তো কৃষ্ণ যখন অর্জুনকে বললেন, কি বললেন? কৃষ্ণ বললেন, এই জ্ঞান আমি অমুক অমুককে আগে দিয়েছি। এই এখন তোমায় বলছি।
অর্জুন মেলা কনফিউজড, মানেটা কি? তিনি তখন কৃষ্ণকে বললেন, তোমার জন্ম তো এই সেদিন, আর যাদের কথা বলছ তারা তো কবে জন্মেছে... মানেটা কি?
কিন্তু বিবাগী হবে না
তার আরো অনেক কিছু পৃথিবীকে দেওয়ার ছিল
সেদিন তার শুধু একটা দীর্ঘশ্বাস পড়েছিল
...
কিছুই তো থাকে না
কেউ বলেনি
ভালোবাসতে হবে
তবু না ভালোবেসে কোনো রাস্তা পাবে না
দেখো
...
কোমল প্রাণে
ক্ষুব্ধ ভালোবাসা
কাঁঠাল
কিছু প্রশ্নচিহ্ন
কিছু প্রশ্নচিহ্ন
একা একা দাঁড়িয়ে থাকে
বড্ড আত্মবিশ্বাসী
কোনো উত্তরের অপেক্ষা না রেখেই