Skip to main content

ধুম করে আলোটা নিভিয়ে চলে এলে যে?

দিলীপ কম্বলের ভিতর থেকে বলল।

রত্না শুতে গিয়েও বসে পড়ে বলল, মানে, আলো জ্বালিয়ে শোবে নাকি। যত বুড়ো হচ্ছ, তত ভীমরতি ধরছে...

দিলীপ উঠে বসে বলল, বাহাত্তুরেও বলতে পারো, তিয়াত্তর তো হল না?

রত্না বলল, শোনো এই মাঝরাতে আমার খেজুরে আলাপ করার কোনো ইচ্ছা নেই, শোও...

দিলীপ বলল, তবে কি আমাকেই উঠে গিয়ে আনতে হবে?

রত্না শুয়ে অন্যদিক ফিরে বলল, কি? জলের বোতল তো মাথার কাছেই রাখা...

দিলীপ বলল, আরে না.... ক্যাডবেরিটা... তোমার আদরের নাতির নাকি দাঁতে কি সব হয়েছে... বৌমা বলছে শুনলাম... তুমি বাড়ির জন্য দিতে চাইলে, সে তো তাও নিলো না... তবে?

রত্না কোনো কথা বলল না প্রথমে। তারপর বলল, সে আজকালকার কত রোগই তো হয়... যা ভেজাল খায় আজকালকার বাচ্চারা.....

দিলীপ বলল, এই শোনো তুমি আর আমাকে সাফাই দিয়ো না... তোমাকে নাকের ফোঁটা পড়ার বয়সে বিয়ে করে এনেছি... তোমায় চিনতে আমার বাকি নেই..., কেন যে কেনো ওগুলো মরতে....

রত্না কোনো উত্তর করল না। দীর্ঘশ্বাস ফেলে জানলার কাঁচের উপর এসে বসা একটা প্রজাপতির দিকে তাকালো। প্রজাপতি না মথ? আহারে, এই ঠাণ্ডায় বাইরে.....

দিলীপ বলল, ফ্রীজে আছে তো... চলো দু'জনে আধখানা করে খেয়ে নিই..

রত্না বলল, ফাস্টিং একশো নব্বই এসেছিল... না? এই গেল হপ্তায়?

দিলীপ বলল, কি জানি। কার না কার রিপোর্ট কাকে দিয়ে দেয়। ল্যাবগুলো যা হচ্ছে আজকাল!

রত্না বলল, যত্তসব ঢপ...

দিলীপ বলল, যাই তবে?

রত্না বলল, থাক, গিয়ে কাজ নেই। বালিশের তলায় দেখো....

দিলীপ বলল, আলোটা জ্বালি?

রত্না উঠে আলোটা জ্বালল। দিলীপ ক্যাডবেরিটা অর্ধেক ভেঙ্গে রত্নার হাতে দিলো। রত্নার চোখের কোল জলে ভরে এলো।

দিলীপ বলল, কি পুরোটা চাই? তা বললেই হয়... এর জন্য আবার কান্নাকাটি কেনো?

রত্না হেসে ক্যাডবেরিটা মুখে দিয়ে বলল, ধুস... আর কিছু কিনব না জানো... আমরা ব্যাকডেটেড বড্ড না?

দিলীপ বলল, নিজেদের জন্যেও না? এমন আপডেটেড জিনিস তো আমাদের ছোটোবেলায় ছিল না বলো....

রত্না বলল, জানলাটা খুলে ওটাকে ভিতরে নিয়ে নিই....?

দিলীপ হেসে বলল, হায় রে বুদ্ধিহীন মানবহৃদয়..... কোন গল্পের লাইন বলো তো?

রত্না বিছানা থেকে নামতে নামতে বলল, পোস্টমাস্টার....