Skip to main content

কাকটা গঙ্গার পাড়ে কিছু একটা খুঁটে খেতে চাইছে। বারবার কাদায় পা আটকে যাচ্ছে। কি সেয়ানা দেখো, এক দুবার খুঁটে খেতে না খেতেই দু তিনবার লাফিয়ে নিচ্ছে, যাতে কাদায় পা না জমে যায়। পা যদি একবার কাদায় জমে যায়, তবে ডানায় যত শক্তিই থাকুক, পা দুটোকে যে কিছুতেই টেনে তুলতে পারবে না। মাটিতে পায়ের ধাক্কা দিয়ে, ডানায় হ্যাঁচকা টান মেরেই না আকাশে ওড়া!

    কি চালাক দেখো, সে কাদার মধ্যে কি একটা খুঁটে খেতে খেতে চারদিকে বারবার তাকিয়ে নিচ্ছে। যেন কেউ এসে চেপে না ধরে তাকে, ছোবল না দিয়ে যায়, ঢিল না মারে। লাফিয়ে লাফিয়ে গঙ্গার হাওয়া আর সকালের রোদের সঙ্গে কি দারুণ একটা সমঝোতা হয়ে যাচ্ছে ওর। ডেকেও নিচ্ছে দু’একবার, কা কা কা.... মনে হচ্ছে না কারোর জন্য ডাক এটা, এ ডাক ওর ফুর্তির। সুখের। এই ডাক কাদা এড়ানো, ঢিল-ছোবল-ধরা থেকে বাঁচা সুখের। 

    এরপর উড়ে যাবে। পায়ে লেগে থাকা গঙ্গাপাড়ের কাদা শুকিয়ে ঝরে যাবে। কোনো গাছের ডালে বসে রোদ মাখতে মাখতে সময় ভুলে যাবে। নিজেকে ভুলে যাবে। রাতের অন্ধকারে কালো শরীর ডুবে যাবে। সুখের মত আলগা গঙ্গার হাওয়া অনাসক্ত আমেজে ঘুরে বেড়াবে। তার ওই ছোট্টো বুকের মধ্যে দ্রুতগতিতে চলা সতর্ক হৃৎস্পন্দন চুপিচুপি মনে করাতে থাকবে, ডানা আর পা থাকুক মুক্ত... আর কিছু না... আর কিছু না... আর কিছু না..