কুহক
দূরত্বই থাক
কিছুটা কুহকে বাঁচুক ভালোবাসা
খাদের ধারে দাঁড়িয়ে
সামনে পথ নেই জানি
তবু কুহকে ঢাকুক পথের নিরাশা
কিছু ভুল হয় দুজনেরই
কিছু ভুল হয় দুজনেরই
তাইতেই পাশাপাশি থাকি
যখন দুজনের ঐশ্বরিক নির্ভুলতা -
তখন অহং এর ঠোকাঠুকি
কিছু স্বপ্ন ময়লাফেলার
কেউ পুড়ছে
কেউ পুড়ছে
কেউ খুঁড়ছে
কেউ ঘুমাচ্ছে
আমি বলছি না
চোখেরা বলছে
কতখানি নিরাপদ
খুব অন্ধকার রে চারদিক আজ
তপসিয়া খাল, ওলা ক্যাব, দুজন নরখাদক
আর একটা ইনারের মত চেনা শব্দ - ধর্ষণ
এরা মিলে তোকে চেনালো।
দমবন্ধ, গুমোট আবহাওয়া
একটা কালবৈশাখী চাইছি রে,
বড় আবর্জনা জমেছে চারদিকে
বড্ড রুগ্ণ মনগুলো,
মেরুদন্ডহীন পড়ে আছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে
কিছু সময় থেমে থাকে
কর্ম যখন প্রবল-আকার
আমার একজন পরিচিত, ভাইয়ের বয়সী, অফিস থেকে ফিরে আমায় ফোন করল। কুশল বিনিময়ের জন্য। নতুন অফিস তার। আমায় ফোন করল যখন তখন রাত পৌনে এগারটা। বলল, "অফিসের পরিবেশ খুব ভালো। আমায় ৯ ঘন্টা থাকতেই হবে, তারপর যদি কাজ বাকি থাকে তো সেটা পুরো করে আসতে হবে।"
ক্ষণিক
সাড়া দিয়েছি
অধিকার দিই নি
সময়ের স্রোতে ক্ষনিকের কাছে আসা
হাওয়াতে ভাসা তুলোর অঙ্গীকার
কাজল মেঘভেজা অন্ধকারে কি হারালে
কাজল মেঘভেজা অন্ধকারে কি হারালে?
রুমাল?
রুমাল হারিয়ো না
রুমালের ভাঁজে অনেক হারানো গল্পের বাসা
দীঘির গভীর কালো জল ছুঁয়ে দিলেই
মনের মধ্যে এক হাঁটুজল কান্না
কিছু পথ
কাঁঠাল
কিছু কথা
কিছু কথা উড়ে যেতেই দাও
আটকিও না
না হলে তুলোর আঁশের মত আঙুলে আটকে থাকবে
ছাড়াতে গেলে আরো জড়িয়ে পড়বে
শ্বাস নিতে অসুবিধা হবে,
গলার কাছে দলার মত পাকিয়ে থাকবে
তুমি কি তবে এড়িয়ে যাবে?
না তো, এড়িয়ে যাবে কেন?
উড়ে যেতেই দাও
ওরা বাসা পাবে হয় তো কোথাও
সেখানে তুমিও থাকবে অন্যভাবে
কাঁটা
বাঁধাবাঁধি, গোছগাছ সব সারা হয়ে গিয়েছিল। তার ফিরতে হবে ঘরের দিকে।
ফেরার পথে পায়ে ফুটেছিল কাঁটা
সে মাথা নীচু করে কাঁটাটা বার করছিল যখন
আচমকাই ছড়িয়ে পড়ল সব মাটিতে তখন
কি করে?
জানি না। হয় তো আলগা ছিল বাঁধন।
আর ফেরা গেল না। ফিরে এল।
কেন বলোনি তুমি এসেছো
কিছু মানুষ হিমালয়ের মত হন
কিছু মানুষ হিমালয়ের মত হন। শুধু মহৎ বলে নন। মাধুর্য আর প্রজ্ঞার এমন মেলবন্ধন যা আজকের দিনে ভীষণ দুর্লভ।
Sukanya Bandyopadhyay এর মা, মানে কাকিমার সাথে আলাপ হওয়ার পর এমন কথাই মনে এল। ওনার সাথে ফোনে কথা হয়েছে বেশ কয়েকবার। বর্ষীয়ান এই বিদূষী মহিলার সহপাঠী ছিলেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার মহাশয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন।
কম হাঁটা পথ
---
আমি একটা নির্লিঙ্গ প্রেম খুঁজছি
বিছানায় আলকুশি ছড়িয়ে
কারোর অপেক্ষায় না
কারোর অপেক্ষায় না
বরং নিজেকে পাল্টে নাও
তবে বন্ধ রাস্তা আপনিই খুলবে
যদি সত্যিই এগোতে চাও
কালবৈশাখী
আশ্চর্য হওয়ার তো কিছু হয়নি, বলে রণিতা পাশের ঘরে চলে গেল শাড়ি ছাড়তে। রণিতার মা কিছুক্ষণ ছাদ থেকে আনা শুকনো কাপড়গুলো কোলে নিয়ে সোফাটায় বসে রইলেন। জানলা দিয়ে সামনের বড় রাস্তাটা দেখা যায়। দুপুর তিনটে, বৈশাখের কাঠফাটা রোদ। রাস্তাটা শুনশান।
কাছে দূরে
প্রেম করবেই ঠিক করেছিল
কাছে আসলেই থমকে গিয়ে বলত
না না না, এখন না।
মনে বলত, এ সে না, এ সে না।
এখন সে থাকে, কার যেন একটা সাথে
প্রেমের কথা বললেই বলে, ও সব মিছেকথা,
ছেলে ধরানো কথা, মেয়ে বোকানো কথা।
কিছু স্পর্শের অনুভব
কিছু স্পর্শের অনুভব
শরীরের সাথে সময়ও মনে রাখে
যখন উদাস বাতাস পাতার গাল ছোঁয়
শিকড়ের কোলে কুঁড়িও মাথা রাখে
(ছবিঃ সমীরণ নন্দী)
কত?
কত স্মৃতির বিন্দু জমে জমে ধ্রুবতারা হয়?
কত ব্যাথা উদাসীনতায় ঘুমিয়ে একতারা হয়?
কত রাত জাগা অভিমানে শিউলিবৃন্ত লালাভ হয়?
কত একা থাকলে রক্তনদীর গভীরতা মাপা যায়?
কত চেষ্টার পর ব্যর্থতাকে প্রদীপের শিখা করা যায়?
কাদের দোষে?
কাদের দোষে? কারা দায়ী? কার গাফিলতি? কোন দল?
ভাঙাপুলের নীচে এ আওয়াজ যায় না
অর্ধমৃত শরীর আগলে, গলা বাড়িয়ে
চাইছে জল, শুধুই জল
আর ওঠার বল
কখনো যেমন
ছেলেটা হোয়াটস অ্যাপ থেকে চোখ তুলে স্টেশানে তাকালো। অফিস থেকে ফেরার সময় রোজ এই সময়টা তার ওর সাথে কথা হয় ঘন্টাখানেক। মানে শিয়ালদহ থেকে পৌঁছাতে যতটা সময় লাগে আর কি।
স্টেশানের অন্ধকারে আলোতে তার নিজেকে দাঁড়ানো মনে হয়। আর কিছুটা দূরে ওকে। ওকে মানে, যে এখন ন'বছর হল তার স্ত্রী। প্রেমিকা ছিল চার বছর।
কবে?
কানায় কানায় পাত্রটা উঠেছে ভরে
উপুড় করে নেবে কবে?
বৃষ্টি শেষে বাড়ি ফিরে গেছে ছেঁড়া মেঘ
নীলাকাশে ডুবিয়ে নেবে কবে?
সব খেলাঘর ছেড়ে এসেছি
কোণের প্রদীপ নিভিয়ে নেবে কবে?
কাকে বলব?
কোনোদিন কাউকে কখনও
রাস্তার এদিকে হাঁটতে বলিনি, আমার জন্য
না তো রাস্তার ওই দিকে হেঁটেছি,
কারোর জন্য
কান পাতো
তোমার প্রতিটা শ্বাসে আমার চুম্বন
ওরা ফাঁকি দেবে এমন সাধ্য কি?
তোমার না বলা কথার গঙ্গোত্রী
এখনো অযুত বরফে ঢাকা
আমার মর্মের মোহনা পথ চেয়ে ওদের
তোমার বুকের ভিতর যে প্রেমের ভুলভুলাইয়া
তার সব কটা চোরাপথ কে চেনাবে আমায়?
কেমোফ্লেজ
আমি কেমোফ্লেজ শিখব
তোমাতে মিশে থাকলেও
যাতে কেউ চিনতেই না পারে
বারবার ফেরে ভুল ঠিকানায়
ভুল দরজায় কড়া নেড়ে
কিছু কবিতা
কিছু কবিতা পড়েছিলাম
আজ সে সব গেছি ভুলে
কিছু কবিতা শুনিয়েছিল কেউ
হয়ত খাপছাড়া আছে মনে
কে?
মাথার মধ্যে যারা ঘোরে
যারা ঘুরতে ঘুরতে কথা বলে
এক একটা সাম্রাজ্য তৈরি করে
আবার ভেঙে ফেলে,
তারা কারা?
কেউ পৌঁছায়নি
চলাটা কেবল থামিয়ে দিয়েছে কেউ কেউ
তুমি ওকে শান্তি বলো বুঝি?
আমি বলি না।
অশান্তিতে 'না' বলি না শুধু
সমুদ্র বুকে মাঝি কি বলে -
কেউ না
বিস্তীর্ণ প্রান্তর
নিস্তব্ধ।
পাখিদের আওয়াজ অবশ্য আছে
পাখিরা বিরক্ত করে না
রোদে পোড়া ঘাসের গন্ধ আসছে
বিকালবেলা। সূর্যডোবার দেরি খানিক আরো।
কেন লিখছি
ক'দিন ধরে আমাদের রাজ্যে বেশ চাপান-উতোর চলছে। তার সাথে চলছে ফেসবুকীয় বিষোদগার। কি লাভ হচ্ছে সে প্রশ্নে যাব না? যেটা বলার ইচ্ছা সেটা হল, এ সবের গভীরতা কতদূর? মানে হাঁটু অবধিও তো ডোবে না দেখছি। রাজনৈতিক যে কোনো দল কিছু মানুষের দ্বারা গঠিত। যে মানুষেরা বেশিরভাগই এই বাংলার।
...
কে কাছের
ফুলের শোভায় মুগ্ধ চোখ বৃন্তের সাদামাটা চেহারাকে উপেক্ষাই করে। ফুলই একমাত্র বোঝে, কে কাছের - বৃন্ত না মুগ্ধ চোখ।
কে বলবে?
দরজায় তালা ছিল না। তবু ভাবলাম, ছিল হয়ত।
দিশাহারা হয়ে কড়া নেড়ে বেড়ালাম, এ দরজায়, সে দরজায়।
খুলল না।
কৃতজ্ঞ
আমার প্রতিদিনের অন্নের ধান যে বুনে দেয়
তার ধর্ম কি জানি না
আমার প্রতিদিন পরা পোশাক যে বুনে পাঠায়
তার ধর্ম কি জানি না
কিশোরি আমোনকার
বড্ড নিঃশব্দে চলে গেলেন। গতকাল। কিশোরি আমোনকার। যাঁর সুরে মল্লারকে চিনেছিলাম। একটা ঘটনা মনে পড়ছে, ওর কণ্ঠে, 'মন শিব শিব কা শরণ হো' শুনে মা মুগ্ধ হয়েছিলেন। মা তখন ভীষণ অসুস্থ। গানটা কোথাতেও পাচ্ছি না। কিন্তু মায়ের এই ইচ্ছাটাও অপূর্ণ রাখতে চাইছি না। বুঝতে পারছি তাঁর সময় হয়ে