এইটুকুই যা ভেদ
তার ভীষণ জেদ
প্রয়োজন বিকল্প খুঁজেই নেয়
...
একবচন হোক
তোমার কলার টিউন
তোমার পারফিউম
একবচন হোক
কিছু বহুবচন বিভ্রান্তিকর
...
এটা ধর্ষণ
দ্বিতীয়ত, বলছেন ওরকমভাবে অন্ধকারে না পুড়িয়ে দিলে বাড়ির লোক নাকি খেতে পারত না ওই দৃশ্য দেখলে। মানে পোস্টমর্টেমের পর যা নাকি হয়েছিল। যাতে প্রমাণ লোপাট করলেন।
তৃতীয়ত, বাড়ির লোকের উপর কার্ফু চালালেন দু-তিন দিন ধরে, এই মানসিক অবস্থাতেও।
...
এখন যাও
পাহাড়ের কোলে একটা নদী
আদর খেতে খেতে
খেলতে খেলতে
হাত পা ছুঁড়তে ছুঁড়তে দৌড়াচ্ছে
...
এদিক ওদিক
...
এ তো হামেশাই হচ্ছে
...
একা দাঁড়িয়ে কাঁদতে শুনেছি
ভালোবেসেছি বলে বুঝতে চেয়েছি
কোনো কারণ আছে বলে পাশে থাকতে চাইনি
পাশে দাঁড়িয়ে থেকে দাঁড়িয়ে থাকার অজুহাত খুঁজে গিয়েছি
তুমি খুব সুন্দর - এ কথাটা মন পাব বলে বারবার
...
একাকীত্বই জানে
সে চাইলেই যেন
যেদিকে খুশি উড়ে যেতেই পারে
একাকীত্বই
...
এখনও বাকি অনেক
এখনও ভীষ্ম আসেননি যে কুরুক্ষেত্রে
শরশয্যায় খুঁজছ কাকে?
এই তো সবে পাশাখেলা হল
...
একটি নাটিকা
...
একটা বড় শূন্য শুধু
সিংহাসনের গদি, চাদর বদলাতে বদলাতে
ধাতুমূর্তি ঈশ্বরের পোশাক কাচতে কাচতে
বাসি ফুল ফেলতে
...
একফোঁটা জল
কচুপাতার উপর একফোঁটা জল। সে জলের উপর সূর্যের আলো পড়ে মনে হচ্ছে যেন মুক্ত।
পাগল দুই হাতে তালি দিয়ে বলল, মুক্ত, মুক্ত।
চারদিকে খবর রটে গেল। পদার্থবিদ এসে বলল, মুক্ত কোথায় হে? এ যে জল, পাতা আর আলোর একত্রিত অবস্থান।
পদার্থবিদ অঙ্ক কষে জলের মধ্যে আলোর প্রতিফলনের হিসাব করে দেখালো। কেন অমন লাগছে তাও বোঝালো।
পাগল হাসল। বলল, তুমি বাড়ি যাও। আমি মুক্ত দেখি।
এই যে আমার বারান্দায়
একফালি রোদ এসে পড়েছে ...
এক খামচা কষ্ট
কান ঘেঁষে গুলিটা চলে গেল। মানুষ মারার গুলি না, বেলুন ফাটানোর।
একদিন সব রোগ ভালো হয়ে যাবে
এখন ঘুরেফিরে
মাথার মধ্যে
হোয়াটসঅ্যাপে
টেক্সটে, ফোনে
এইবার?
এত জল, এত জল
পাহাড়ের কোলে ছোটো মন্দির। একটু দূরে নদী। নদী পেরিয়ে গেলেই গাঁ। পুরোহিতের গাঁ।
পুরোহিত প্রদীপটা নেভানোর আগে, ভালো করে আবার গোবিন্দের দিকে তাকালো। স্থির, কালো চোখ। পাথর গেঁথে এমন চোখ বানানো যায়!
পুরোহিত প্রদীপটা তুলে গোবিন্দের চোখের মণির দিকে তাকালো। উত্তর নেই। গোবিন্দ স্থির তাকিয়ে। অপলক।
...
এক নটীর গল্প
...
একাকীত্ব নেই তো
কিন্তু যে আমায় ভালোবাসতে বা আমার অনুগত হতে বাধ্য, তার ভালোবাসা বা আনুগত্য পেতে যে আমার লজ্জা বোধ করে। যে আমায় প্রত্যাখ্যান করার স্বাধীনতা পায় না, যার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য আমার আনুগত্য স্বীকার করা ছাড়া তেমন কোনো প্রশস্ত পথ নেই, তাকে ঘাড়ে, পিঠে বয়ে কি করব? সে বরং আমায় সত্যিই একা করবে। স্বয়ং ঈশ্বর যখন আমায় তাঁকে স্বীকার করা বা অস্বীকার করার স্বাধীনতা দিয়েছেন, তখন কাউকে কোনো কিছুতেই বাধ্য করতে আমার রুচিতে বাধে।
....
এই মানুষে সেই মানুষ আছে
- না, হাওড়ার ব্রীজের উপর বামাখ্যাপা চড়ে বসে মা মা করছেন, তাই দেকচি... যত্তোসব…
- আহা, চটেন কেন? চা কি ঠাণ্ডা হয়ে গেছে?
- কেন?
...
একদিন জিতে যাবে
সারারাত আকাশই পারে না সব তারা চাঁদ এক জায়গায় রাখতে, এদিকে ওদিক ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে নেয়। আর তুমিই নাকি সব গুছিয়ে এক জায়গায় রাখবে। যতসব পাগলের মত কথা।
এবার আমার উমা এলে
কাঁপা হাতে চশমাটা খুলে মুছে নিলেন। তারপর কাঁপা কাঁপা হাতে চশমাটা আবার পরে মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকলেন। সপ্তমীর সকাল। ভিড় নেই তেমন মণ্ডপে।
একটা অল্প বয়সী ছেলে এসে বলল, দাদু এই যে চেয়ারটা, বসো। পড়ে যাবে তো। ভোগ খেয়ে যেও।
একটা ফাণ্ডামেন্টাল প্রশ্ন
আচ্ছা, যিনি যে কোনো বিষয়ে প্রাথমিক প্রশ্ন করেন, তাঁকে কি আমরা ফাণ্ডামেন্টালিস্ট বলতে পারি না? এই যে 'হ য ব র ল' -তে উকিল বলছেন, মোকদ্দমাটা যখন মানহানির, এবং মান মানে কচু, কচুর মূল খাদ্য অংশ যেহেতু মূল, তাই বিষয়ের মূল অবধি যাওয়া উচিৎ, তখন সেই উকিল কি ফাণ্ডামেন্টালিস্ট নন?
একান্নবর্তী পরিবার
একজন আমার কাছে খুব দুঃখ করত, "দেখো আমাদের একান্নবর্তী পরিবার। আজকাল তো দেখাই যায় না এরকম। কিন্তু কেমন যেন সব ছাড়াছাড়া। কেউ কারোর ঘরে আসে না। সব আলাদা আলাদা রান্না। ভালো লাগে না।"
আমি শুনে, 'হাঁ, হুঁ' বলতাম।
এ হওয়ারই ছিল
"না বললেও হত" র সঙ্গে "কেন বললাম" এর মুখোমুখি দেখা হল একদিন। কেউ কারোর কাছে কোনো কৈফিয়ৎ চাইল না। তাকালোও না একের অন্যের দিকে। দুজনে দুজনকে এড়িয়ে, ফিরে যেতে, হাওয়া উদাস হল, বলল,
"এ হওয়ারই ছিল"।
এমন শান্তি চাই নে
পূজারী পুজোর শেষে যজ্ঞের জ্বলন্ত কাঠ ছুঁড়ে আশীর্বাদ করেন না, শান্তির জল ছিটান। বিশ্বাসী বিশ্বাস করেন সেই শান্তির জলকণা তার শান্তি প্রাপ্তির একটি অমোঘ উপায়। এ অনুভব না করলেও, অনুমান করতে পারি। কিন্তু জ্বলন্ত যজ্ঞকাষ্ঠ ছুঁড়ে মারার পর ভক্ত যদি জ্বলন্ত ধুতিশাড়ি সামলাতে সামলাতে বলেন, আহা কি শান্তি, কি শান্তি, তখন বুদ্ধি বিভ্রান্তির চোরাবালিতে হাবুডুবু খায়।
একই রুটের বাস
তুমি আমি একই রুটের বাস। একই রাস্তায় শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা চলেছি। খানাখন্দ, উঁচুনীচু রাস্তা, কখনও সমান। ট্রাফিক সিগন্যালে আটকে তুমি আমি পাশাপাশি, কখনও একই দিকে যাচ্ছি, কখনও তুমি যাচ্ছ আমি আসছি, কিম্বা আমি যাচ্ছি তুমি আসছ। আমাদের চালক, কন্ডাক্টর আলাদা। যাত্রীদের মত আমাদের কর্তব্যগুলো কখনও এক, কখনও আলাদা আলাদা। কোনো কর্তব্য শেষের মাথায় আমি, তুমি তখন তোমার কর্তব্য শুরু করছ। ক
একটু রোদ
বৃদ্ধা সামনের দরজার দিকে তাকিয়ে শুয়ে আছেন। একটু আগে আয়া অল্প একটু সেদ্ধভাত আর আর উচ্ছে আলুসেদ্ধ মাখা খাইয়ে গেছে। কুলকুচোটা ভালো হয়নি। দাঁতের ফাঁকে কয়েক টুকরো উচ্ছে আটকে এখনও। তিতো তিতো লাগছে জিভ ঠেকালে। সব মিলিয়ে আটটা দাঁত টিকে আছে এখন।
এক ও একা
মানুষ অনেকভাবে একা হয়। আদর্শবোধে একা হয়। ঔচিত্যবোধে একা হয়। নীতিবোধে একা হয়। যন্ত্রণায় একা হয়। ভাবনায় একা হয়।
মানুষ অনেকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়। লোভে বিচ্ছিন্ন হয়। ঈর্ষায় বিচ্ছিন্ন হয়। আতঙ্কে বিচ্ছিন্ন হয়। আশঙ্কায় বিচ্ছিন্ন হয়। ষড়যন্ত্রে বিচ্ছিন্ন হয়। স্বার্থপরতায় বিচ্ছিন্ন হয়।
এই সই
আমিও নই
যাদের খুঁজতে এসেছিলাম,
তাদের লুকিয়ে
এই যে আমরা রোজ বাঁচছি মুখোমুখি
এই তো প্রথম নয়
এই তো প্রথম নয়
সব জানলা দরজা বন্ধ করে কেউ বলল
এই আলো। এই সুখ। এই নির্ভুল ব্যবস্থাপনা।
এই তো প্রথম নয়
প্রাণের বিনিময়ের শর্ত হল স্বাধীনতা
কিম্বা পরাধীনতার বিনিময়ে জীবন
এই তো প্রথম নয়
জরায়ুর থেকে বিচ্ছিন্ন হল
হৃদয়, শুভবোধ, আত্মসম্মান
এইটুকুই তো তাঁকে দেওয়ার
দীর্ঘ আলোচনার পর, বাইকে চড়ে আপিস থেকে ফেরার সময় নন্দলালবাবু ভাবছিলেন, আলোচনাটা কি হল? স্কুলের পরীক্ষায় রবীন্দ্রনাথের সব গান নেওয়া যাবে না। কারণ করোনার অতিমারীতে সব গান শেখানোই যায়নি ঠিক করে। তবে কোন গান রাখা যাবে আর কোন গান রাখা যাবে না এই নিয়ে ভীষণ ঝক্কিতে পড়লেন নন্দলাল।
এই কি ঈশ্বর
নিজেকে ডিঙিয়ে বাইরে এসে লোকটা ভয় পেল? যে বাইরে এসে দাঁড়ালো আর যে ভিতরে ছিল - এরা কি দুটো আলাদা মানুষ? পাঁচিলটা কই? যেটা ডিঙিয়ে সে বাইরে এলো।
এমনই দুঃসময়
এমনই দুঃসময়
"মানবিক" হওয়াও
খবরের শিরোনাম হয়
এই বেলা?
ওই তো ক্ষুদে ক্ষুদে পা, বার পাঁচ ছয় ফেললেই ঝুলবারান্দাটা শেষ। বাচ্চাটা কি উন্মাদনায় সেইটুকুই প্রাণপণে দৌড়াচ্ছে বিকেলে। আকাশে ওড়া কোনো বাড়ির সাদা পায়রাদের দেখছে, হাত নাড়ছে, আবার দৌড়াচ্ছে। সাদা মেঘে বিকেলের হলুদ আলো। নীড়ে ফেরা বকের দল। এলোমেলো বাতাসের নারকেল বন কাঁপিয়ে যাওয়া। দীঘির জলে ঢেউ তুলে যাওয়া। সব হচ্ছে। ওই তো রাস্তা দিয়ে একদল কুকুর দৌড়াচ্ছে। হেঁটে গেল কি বড় একটা