অন্যরকম
অন্য কোনো একটা হাওয়া এসেছিল
অন্য কোনো দিক থেকেই এসেছিল
কিছু একটা বলতে চেয়ে
সব কিছুকে অন্যরকম করে
ভ্রুকুটিতে বড় নিষ্ঠুর হেসেছিল
অন্ধকার ঘরে পোড়া সলতের গন্ধ
অন্ধকার ঘরে পোড়া সলতের গন্ধ
ধীরে ধীরে ঠাণ্ডা হয়ে আসা প্রদীপের বুক
শিউলির হাতছানিতে স্মৃতির ব্যথার অভিসার
পূর্ব আকাশে খোলা জানলার
প্রাগৈতিহাসিক প্রতীক্ষা
অষ্টমী
মণ্ডপে আমাদের দাঁড়ানোর লাইন দেখেছেন? পুরুষের লাইন দেখেছেন, মহিলার লাইন দেখেছেন। আমাদের? আমরা ওই মহিলাদের লাইনেই দাঁড়াই। আমরা হলাম জ্বলন্ত উৎপাত বুঝলেন তো। ট্রেনে, বাসে, রাস্তাঘাটে আমরা হলাম জ্বলন্ত উৎপাত।
অবশেষে আর যুক্তি না খুঁজে
অবশেষে আর যুক্তি না খুঁজে, সান্ত্বনা না খুঁজে,
হেসে উড়িয়ে দিতে শিখলাম
ব্যস, পাথর কই আর?
এ যে পাথুরে পথ শুধু
অনেক মানুষকে পাশ কাটিয়ে এগোতে এগোতে
অনেক মানুষকে পাশ কাটিয়ে এগোতে এগোতে
অনেকটা এগিয়ে এসে, খানিক থেমে
প্রথম কাটিয়ে আসা মানুষটার কাছে
আবার ফিরে যেতে ইচ্ছা করে,
তাকে যেন কি একটা বলা হয়নি
অনুরোধ
তোমাকে আমায় কেন্দ্র করে ঘুরতে হবে না
শুধু দিনের শেষে,
যেখানে আমি দাঁড়িয়ে
সেখানে ফিরে এসো
যদি না ফেরো,
জানি হারিয়ে যাবে না
আমার নিজেকে অপরিচিত লাগবে
অভয়
ভয় আমার আত্মীয় না। ভয় আমার প্রতিবেশী না। ভয় আমার পরিচিতও না। ভয় আমার কে?
অমর্ত্যবাবুর অবাঙালী জীবনীকার হলে ভালো?
অযত্নে, অসুন্দরেও কিছুটা জীবন রেখেছি
...
অটো ইম্যুউন
রুচির বৈষম্যতা আর রুচির মান এক কথা কি? খাদ্যে রুচির পার্থক্য হয়েই থাকে। টক, ঝাল, মিষ্টি, অম্ল ইত্যাদি নানা স্বাদের বৈষম্য থাকে। তাতে কারো কোনো ক্ষতি হয়েছে বলে কোনো তথ্য কোথাও লিপিবদ্ধও নেই। কিন্তু খাদ্য-অখাদ্যের বিচার যখন আসে তখন যদি কেউ সেই বিচারের ক্ষেত্রকে রুচির বিচারের ক্ষেত্রর মধ্যে নিয়ে আসে? অখাদ্যকে রুচির তারতম্য বলে চালাতে চায়?
অকারণ
আজ পূর্ণিমা না
তবু আধফালি চাঁদই যেন সারা আকাশ জুড়ে
ঢেউয়ের পাড় ভাঙার শব্দ শুনেছি
গভীর রাতে পুরীর বিচে বসে
অস্তরাগ
বিকালের দিকটায় এই রাস্তাটায় ভীষণ যানজট লেগে যায়। খুব চওড়া না রাস্তাটা। একদিকে রেললাইন আর আরেকদিকে পর পর দোকান। দুপুরটা যা একটু কম ভিড় থাকে, সকাল থেকেই প্রচুর লোকের যাতায়াত। স্টেশান, হাস্পাতাল, স্কুল, বাজার সবই তো এই একটা রাস্তা দিয়েই যেতে হয়।
অনশন
ওদের বোকা বোকা জেদ
হারতে লজ্জা লাগছে, ইগোতে লাগছে
জানি তো!
সুক্ষ্ম কঠোর অতিমানবিক নজর তোমার
দেখে নিতে চাইছ, মতলবটা কি?
তবু একটা কথা থেকেই যাবে জানো
অনিবার্য যেটা
বাকযুদ্ধে হেরে গেছি দু'জনেই
আমি ভাষা হারিয়েছি
সে হারিয়েছে উদ্দেশ্য
নির্বাক অপলক তাকিয়ে
ঝুলন্ত পাহাড়ের কোলে
একটা একটা পাথর খসিয়ে যাচ্ছি খাদে
সরে সরে দাঁড়াচ্ছি পরের পাথরটায়
নৈসর্গিক মাধুর্য মৌমাছির গুঞ্জনের মত
অনেকের মত আমিও দৌড়েছিলাম
অনেকের মত আমিও দৌড়েছিলাম। একাই দৌড় লাগিয়েছিলাম। সবার আগে শেষ প্রান্ত পৌঁছানোর নেশা আমাকেও পেয়ে বসেছিল। ছুটতে ছুটতে আমিও সমুদ্রের তীরে এসে পৌঁছালাম। বালিতে অনেক পায়ের ছাপ, যারা আমার আগে এসেছিল, নানা যুগে, নানা কালে। অনেকের মত আমিও বুঝলাম, আর যাওয়ার নেই কোথাও। কেউ কেউ সব যুগের কিছু নির্বোধের মত সাঁতরাতে লাগল, কেউ ওপারে নিয়ে যাওয়ার নাবিকের অপেক্ষায় রইল। আমি ফেরার পথ ধরলাম, অনেকের মত। আমার আগে অনেক
অভিসার
আমি জানি আকাশটায় আজ কাল পরশু মেঘ থাকবে। আমি জানি সারা সপ্তাহ মেঘ থাকবে। আমি জানি সারা মাস মেঘ থাকবে, যতদিন না কাশ এসে বলে, এবার তোমার ছুটি। মিনতি বৌদি আবার চীৎকার শুরু করবে কাল থেকে, “কাচা জামাকাপড়গুলো কোথায় মেলব? আমার মাথায়?... কি গন্ধ হয়েছে... একটাও শুকালো না... কবে যে সুয্যের মুখ দেখব?”... সেই মিনতি বৌদিই দুপুরবেলা “শাঙনগগনে ঘোর ঘনঘটা” গাইবে... ছায়া ঘনাইছে বনে বনে... গাইতে গাইতে কাঁদবে... তুমি রাতে কান পাতলে শুনবে আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার..... আসলে সব মানুষই তো অভিসারে যেতে চায়... ক'জন যেতে পারে বলো?... আমার সন্দেহ হয় রাধাও কি পেরেছিল... একটা মেয়ে এত ভালোবাসা সারাজীবন কোনো পুরুষের পায়?... রাধা পেয়েছিল?... ওই মেঘ সেই পুরুষ... রাধা কি তবে ওই সবুজ মাঠ?... এই কি অভিসার!
...
অ-সামাজিক
(সেই সব তথাকথিত প্রান্তিক মানুষদের জন্য, যাদের কথা শুনলে মনে হয়েছে কত সমান্তরাল জগতের পাশাপাশি হেঁটে চলেছি)
অপেক্ষায় থাকছি
আমি কখনও ত্রিভুজ
কখনও চতুর্ভুজ
কখনও বৃত্তের
ভিতর দিয়ে বাইরে তাকাচ্ছি
অন্তরীপ
...
অসংজ্ঞ
চেয়েছিলাম বনানী বীথিকা
হল কই?
একটা গাছের সব কটা পাতা গোনার ধৈর্য নেই
তুমি আমায় জীবনের মানে জিজ্ঞাসা করো?
শরীর মনের স্রোতে জাল ফেলেছি মাঝে মাঝে
পাঁক উঠেছে, শূন্য খোল ঝিনুক উঠেছে
কখনও কয়েকটা সাধারণ মুক্তোও উঠেছে হয় তো
আবার ভাসিয়ে দিয়েছি স্রোতে,
অবিরাম
অনিকেতবাবু ঝাঁট দিতে দিতে শ্যামাসঙ্গীত গাইছেন। ব্যাঙ্কে ক্লার্ক ছিলেন। বয়েস আটাত্তর। শক্ত-সমর্থ চেহারা। পাড়ার কচি-কাঁচাদের সাথে বেশ বন্ধুত্ব, বলেন, আমি খাঁটি খেয়েছি তাই এ্যাদ্দিন এইভাবে চালিয়ে যাচ্ছি, তোরা পারবি নাকি?
অদৃশ্য বাড়ি
অন্ধকারে যতি
জীবন মানে
এক ঝুড়ি নানা ফলের মত বিকল্প
এক সাজি নানা ফুলের মত অনেক
অনুষ্টুপ - বইমেলা সংখ্যা
...
অতল অসীম অবশ্যম্ভাবী
অভৌগলিক শান্তিনিকেতন
জড়তা কি শান্তি দিতে পারে? বিহ্বল হয়ে পড়া, অস্থির হয়ে পড়াই কি বিপ্লব? ধৈর্যচ্যুতি ঘটাই কি আন্দোলন? সহ্যের সীমারেখা ছাড়ালে যে চীৎকার, সেইটাই কি প্রতিবাদ?
...
অবরুদ্ধ তপস্যা
...
অতৃপ্তি
অতৃপ্তি হবে অসন্তোষ
বরং যদি বলো
...
অলস মস্তিষ্ক
...
অর্থ
একটা দুঃখও সাগরের মত হল না।
সে অভিমানী হল তাই।
...
অরূপকথা
সামনে চলেছে দরদী পেয়াদা
রক্ষাকবচ,
...
অর্থহীন বুলি
পিছনে
অনুরাগী অনুসরণকারী
...
অ্যান্টাসিড
...
অবলুপ্ত পক্ষী
...
অক্ষর
তিনজনেই অপ্রস্তুত।
...
অ্যাকোরিয়াম
...