ভুল গল্প
দরজা খোলা ছিল। দমকা বাতাস ভিতরে এসে পড়ল। কড়ি-বরগা, দেওয়াল, মেঝে রে রে করে উঠল। গেল গেল গেল সব গেল। কে খুলে রেখেছিল দরজা? - হুঙ্কার দিল ছাদ।
খাটের তলার জমে থাকা অন্ধকার গুটিগুটি পায়ে বাইরে বেরিয়ে এসে বলল, আমি। তার মুখে নম্রতা আছে, কিন্তু লজ্জা নেই। শ্রদ্ধা আছে, অথচ অনুতাপের গ্লানি নেই। সক্কলে তার মুখের দিকে তাকিয়ে রইল। মনে মনে বলল, বেটির ক্ষমতা আছে। মুখে বলল, তবে রে!
ভাগ্যে
ভাগ্যে তুমি আমার সামনে অতবড় প্রাচীরটা তুলেছিলে,
না হলে জানতেই পারতাম না - আমি এতটা উঁচুও চড়তে পারি!
ভাগ্যে তুমি আমার সামনে এতটা অন্ধকার তৈরি করেছিলে
না হলে জানতাম কি করে- আমি এত অন্ধকারেও দেখতে পারি!
ভুলে যাও
প্রতিবার তোমার হাত ছুঁতে গেলে ভয় হয়
মনে হয়, বুঝি ধরা পড়ে যাব!
সব দুর্বলতাগুলো
স্পর্শে অনুদিত হবে
তুমি ছুঁয়ো না আমায়
দূরে থাকো
অজস্র সহস্র মুহুর্ত দূরে থাকো
ভয়
ততদিনের নিশ্চিন্ততা
যতদিন একেও নকল না করে
বাজারে আনে কালো ছাপ
ফাঁকি যদি ধরতে না পারি
নতুন বন্দুকের যতই বড়াই করি
ওদিকে বাঘেও শিখছে নতুন লাফ
তাই মনে বাসি ভয়
কোন ক্ষমতা রাতারাতি
আবার রাজ ইঙ্গিতে লোপ হয়
ভাইফোঁটা
বুকের ভিতর চিচিংফাঁক ...
ভাবনা - শীত সংখ্যা - জানুয়ারী ২০১৮
...
ভালোবাসা অসাড় হলে
...
ভালো থাকার পাসওয়ার্ড ©জে কৃষ্ণমুর্তি
...
ভালো থাকার পাসওয়ার্ড (© বুদ্ধ)
...
ভালোবাসা
ভালোবাসা পরিধি ঘেরা পুকুর দীঘিও না
...
ভুল
এমন কি কিছু দেওয়া কথাও
কথাদেরও বয়েস হয়
কথারাও টেনে টেনে হাঁটে
...
ভয়
ভিজে জবজবে হবে সারা গা -
এত জায়গা দিই না আর
ভয়ের মাথায় হাত রাখি
শামুকের মত গুটিয়ে যায়
গা থেকে গড়িয়ে পড়ে হড়হড় করে
ভক্ত
খানিক পর দেখা যায় রাস্তার উপর সত্যিই একটা ঘোড়া। ভক্ত উৎফুল্ল হয়ে "জয় প্রভু, জয় রামজীকী" বলে চড়ে বসে। ও বাব্বা! খানিকটা পথ যেতে না যেতেই ঘোড়াটার পা গেল মচকে। ঘোড়া আর চলতে পারে না। ওদিকে দয়ালু, শ্রান্ত ভক্তও অমন অসুস্থ ঘোড়াকে মাঝপথে একলা ফেলে আসতে পারে না।
ভারতীয় রেলের, প্লেনের লোগো আছে
সব খেলাগুলোরও আছে। নামী নামী ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, টেনিস ইত্যাদি খেলার রোজকার ফলাফল যখন কাগজে বেরোয় তখন বাঁদিকে উপরে ছোট্ট করে একটা লোগো আঁকা থাকে। দেখেই বোঝা যায় কোন টুর্নামেন্টের কথা লিখছে।
...
ভবাকান্তবাবু
গায়ে একটা শাল। শালটার বয়েস পঁচিশ। তার বয়েস একাশি। চেয়ারে বসলেন। মুখটা রোদের বাইরে রেখে চোখ বুজে শুলেন। মাইকের গান আসছে "চুরা লিয়া হ্যায় তুমনে জো দিলকো"। সামনের ক্লাবে চলছে। উপরে পতাকা, নীচে নেতাজি। চারদিকে চারটে দড়ি। তাতে ছোটো ছোটো পতাকা। যাননি এবার দেখতে, তবু জানেন। নেতাজির জিলিপি খেতেও মন চায়নি। অম্বল হয়। কম দামী তেলে ভাজা।
...
ভাগ্যিস তুমি তুমিই
...
ভালোবাসা
...
ভিড়
হয়ত উত্তর দিতাম
প্রশ্ন এড়িয়ে যেতে যদি
হয়ত চুপ থাকতাম
...
ভালোলাগা
কি ঘাসের আগায় জমা শিশিরবিন্দু থেকে
তুলনার প্রাচীর টেনে
ভালোলাগাকে খণ্ডিত করি না
অপমান করি না সূর্যকেও
ভজ গেরুয়া
পুরবেলা চাট্টি ডালভাত খেয়ে, চেয়ারে বসে, বিছানায় দুটো ঠ্যাঙ তুলে, এক ব্রহ্মজ্ঞানীর লেখা বইয়ের সদ্য দুটো লাইন পড়েছি,
"আমি কি, কোথা হইতে আসিলাম, কোথায় যাইব? ভব-বন্ধনই বা কি? কি ভাবে মোচন হইবে? আত্মা কি? জীবাত্মা কি? পরমাত্মা কি?"...
ফোন বেজে উঠল-
- হ্যাঁ রে... কাকু বলছি
- বলো
- আধারের সাথে প্যান লিঙ্ক করেছিস?..
ভালোবেসে কেউ সমুদ্র হয় না
ভালোবেসে কেউ সমুদ্র হয় না
ওসব বাজে কথা
ভালোবেসে মানুষ
গ্রীষ্মের সমুদ্রতট হয়
নিজেরই পা রাখা দায়!
ভাষা আর অনুভব
ভাষা আর অনুভবের মধ্যে
এক খরোস্রোতা নদীর ব্যবধান
পেরোতে পারলে
হাতের উপর একটা হলুদ প্রজাপতি এসে বসে
(ছবি - Susmita Barat)
ভীষণ ব্যক্তিগত
কিছু কবিতা ভীষণ ব্যক্তিগত
ক্ষতর উপর শিশিরপাতের মত
ভগিনী নিবেদিতা
ভক্তি গতপ্রাণা
হার বয়েস হইয়াছে ষাটের উপর। তিনি ভক্তি গতপ্রাণা। তিনি ফোনে আলাপ করিয়াছেন আমার সহিত। সাক্ষাৎ হয় নাই কদাপি। ভাগ্যে তিনি ফেসবুকে নাই।
আমায় খানিক আগে ফোন করিলেন।
ভেস্টিবিউল
করোমণ্ডল এক্সপ্রেস
ট্রেনটা প্রচণ্ড বেগে ভারতের দক্ষিণাভিমুখে ছুটছে।
সত্তর পেরোনো মানুষটা
হাতে একটা ফ্লাক্স নিয়ে প্যান্ট্রিকারের দিকে এগোচ্ছেন
S6 থেকে ছ'টা বগি পেরোলে প্যান্ট্রিকার,
মানুষটা অশক্ত শরীরে ধীরে ধীরে এগোচ্ছে
ভালোবাসা
দীঘির জলে ফুলটার প্রতিবিম্ব। ফুলগাছটা একদম দীঘির পাড় ঘেঁষে।
ভক্তমুক্তি অভিযান
আজ সকাল থেকে ফেসবুক পেজে ভক্তমুক্তি অভিযান চালালাম। আমার বন্ধু তালিকায় এমন কিছু মানুষ ছিলেন যাদের উপদ্রবহীন ভাবতুম। ক্রমশ আমার লেখায় তাদের ভক্তিহানীর আশঙ্কা প্রকাশ করছিলেন হয় মেসেঞ্জারে নয়ত প্রকাশ্যে। মাঝে মাঝে কারোর আবার নখ শিং ও বেরিয়ে পড়ছিল। তাদের সারা টাইমলাইনে বাণীর বন্যায় আমিও ওষ্ঠাগত হয়ে উঠছিলাম।
ভীতু কোথাকার
সবাইকে যথোচিত যথাযথ যা যা দেওয়ার দিয়ে দেওয়ার পর, নিজের জন্য থাক কিছু ভুল করার স্বাধীনতা। ভুল করাটা আত্মিক কর্তব্য। সেরকম কিছু আন্তরিক অবশ্যম্ভাবী ভুলই মোড় ঘোরায়। সমাজ চিরকালই ভীতু, ব্যক্তি নয়। সমাজ মানে অভ্যাস, ব্যক্তি মানে ইচ্ছা।&nb
ভয় তাকে নিয়েই
যে দরজা খুলে বাইরে পা রাখেনি কখনও
তাকে নিয়ে কি ভয়?
যে বাইরের ধুলো ঘরে নিয়ে যায়
ঘরের গন্ধ মাখা হাত বাইরের ফুলগাছে বুলায়
তাকে নিয়ে কি ভয়?
ভারতে যখন প্রথম ভোট হয়
ভিক্ষাপাত্র
বোষ্টুমি (এ বানান অভিধানে নেই, জিভেতে আছে) এসে দাঁড়ালো দরজায়, নামগান শুনতে পাচ্ছি। বোষ্টুমির গায়ে গেরুয়া শাড়ি। কপালে চন্দন। কালো মুখের মধ্যে খোদা দুটো পোড় খাওয়া চোখ।
ভালোবাসা না
ভালোবাসা না
বেঁচে থাকার মাসকাবারি নিতে এসেছি
তাকিও না
আমি তাকিয়ে নিয়েছি
ভালোবাসা না
সামান্য প্রাণের
বেঁচে থাকার বায়না মেটাতে এসেছি
ভাবছি দেশে আর না জানি কি বিটকেল সব আইন আছে
ভাবছি দেশে আর না জানি কি বিটকেল সব আইন আছে। এ অনেকটা মহালয়ার আগে ঘর ঝাড়ার মত হচ্ছে। তা বেশ, আচ্ছা ইয়ে করে হাতমাটি না করা নিয়েও কি আইন বানিয়েছিল ওই লালমুখো গুলোন? কিম্বা তরকারিতে নুন কম হলে? কিম্বা যীশুর নামে রোববার করে নৈবেদ্যে না দিলে ইত্যাদি ইত্যাদি...
ভাষা কথা
ভুলে যাও কেন ?
...