Skip to main content

আধুনিকতা ও সাহিত্য

বেশ কিছুকাল আগে আমার এক অত্যন্ত প্রিয় আলোকচিত্রগ্রাহকের তোলা একটা পলাশের ছবিতে লিখেছ

আদিগন্ত আকাশ

আদিগন্ত আকাশ বুকে টোকা দিল,
বলল, বাইরে এসো।
বাইরে এসেই মিলিয়ে যেতে লাগলাম,
লীন হতে হতে বুঝলাম-
প্রসন্নতার রঙ নীল

(ছবিঃ সমীরণ নন্দী)

তৃষাগ্নি

খুব জ্বর তোমার
  পুড়ে যাচ্ছে শরীর ভিতর তল
থার্মোমিটারে পারা উঠছে না দেখো
  পায়ে পায়ে ঘনিয়েছে রসাতল

তবু কি হাঁটবে?
   তবু থামবে না জানি
তারা খসাতেই সার্থকতার খোঁজ
        পথ টানছে নাবাল ভূমি

শরীরাধীনতা

গভীর রাতে স্মার্টফোনে অবৈধ ডাক
ঘুমের অভিনয়ে রপ্ত করা চিচিংফাঁক
শরীরের পাশে শুয়ে অদেখা শরীর
ঘামের গন্ধ নেই তবু বেইমানি শিরশির

Where misty

Where misty words slip into a soft slumber,
Where scent of an unsung song,
flock in the virgin winds,
There, the twilight sky steals the rainbow, From a
weary, dreaming butterfly's wings.

(Translator: Sukanya Bandyopadhyay)
 

 

যেখানে শব্দেরা ঘুমিয়ে পড়ে

যেখানে শব্দেরা ঘুমিয়ে পড়ে
    অনাঘ্রাত গন্ধ ছড়ায় বাতাসে
ঘুমন্ত প্রজাপতির ডানার
    আলপনা আঁকে আকাশে

(ছবিঃ সমীরণ নন্দী)

জীবন

জীবন মানে নদী?
নাকি একটা ঘূর্ণিপাক?
গড়গড়িয়ে ছুটছি?
নাকি বোঁ বোঁ চর্কিপাক?
আশা মানে সামনে?
নাকি পিছন টেনে আগে?
হতাশ মানে ব্যর্থ?
নাকি 'সত্যি' গেছে জেগে?
আকাশ সে কি অসীম?
নাকি শেষ না হয়ে থমকে?
প্রেম মানে কি সুখ?
নাকি খানিক গরম কলকে?
কার মানে কি করবে
সেটা মনের উপর দাঁড়িয়ে
সব কি বোঝা যায় রে?

আকাশের মত

চেকচেক লুঙ্গিটা হাঁটুর উপর তোলা
    দুটো বিস্তীর্ণ ক্ষেতের মাঝে যে বাঁকাপথ
সেখানে সাইকেলে পিঠ দিয়ে দাঁড়িয়ে

ভোর

আমার কেন জানি মনে হয়
    বারবার মনে হয়, খুব মনে হয়
বিশেষ করে রাতে শুতে গেলে
    অন্ধকার ঘরে জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মনে হয়
    এক আকাশ তারাও আমার কথাটায় আমার ভাবনাটায় সায় দিচ্ছে।

অপেক্ষা

ঘন কালো এলো চুল ছড়িয়ে সে দাঁড়িয়ে
   এক মাথা সিঁদুর
  বুকের মধ্যে সারা দিনের কথাদের প্রত্যাবর্তন
               পাখিদের ঘরে ফেরার ক্লান্ত ছন্দে

প্রিয় বইটা

প্রিয় বইটা হাতের নাগালে থাকলেই শান্তি, না হয় হলই না সারাদিন তার একটাও পাতা ওল্টাবার সময়। তবুও চোখের দেখাতেই মনের পাঠ, নীরব পাঠ।
প্রিয় মানুষটার বেলাতেও...নাই বা হল কথা বলার সময় সারাটা দিন। তবু থাক নীরব ছোঁয়া, চোখের ছোঁয়া....বিনা কথায় লক্ষ কথা বোনা..আকাশটার মত...

মতে অমতে

'মত কিছু ঈশ্বর নয়' - ঠাকুর বলতেন। মত পথ। মতের প্রচার চলে, সত্যের নয়। তবে সত্যের সাথে মতের সম্পর্ক কি?

Deception

You sought a rose from my bouquet, I spoke,
''These are offerings of my soul...
For my Lord, my
Light...''
Still you took a blossom,
by deceit, my dear..
And decked
your tresses and ears
Garlanded your neck
Like a fake goddess....
O my feigning beauty,
Don't you know,
The fragrance of sandal

ছল

চেয়েছিলে সাজির ফুল
   বলেছিলাম, এ নৈবেদ্যর!

তবু সাগরতীরে এসে দাঁড়াও

তবু সাগরতীরে এসে দাঁড়াও
  দু'হাত প্রসারিত করো
   দেখো, এখনো দিগন্ত আলিঙ্গনে ধরা দেয়
   নোনা বাতাস পরম স্নেহে
       চোখের নোনা জল মিলিয়ে নেয়

 

বন্যা


----
শেষ রাতে প্রদীপের বুক পোড়ালো যে আগুন
প্রথম রাতে সে আগুনই ছিল তার প্রেয়সী হয়ে

ভদ্রসত্য

সত্য তবে কি মিথ্যার আয়ুষ্কাল?
    না কি মেঘ চিরে আসা আলো?

অন্ধকারে আমি তুমি সব এক
    আলোতে জাগা তফাতগুলো কি ভালো?

মিথ্যাগুলোই থাক তাই তবে বেঁচে
    মুখে গাই সত্যের জয়

অর্ধসত্য বন্ধুর মত আসে
    পূর্ণসত্যে তাই এত ভাই ভয়!

তবু এলো তো

আমার আজ ভীষণ বিষণ্ণতা
     তোমার জন্য।

তোমার চোখের নীরব ভাষার

তোমার চোখের নীরব ভাষার
নিতল গহিন কথার মাঝে
ডুবতে দেবে?
আকাশছোঁয়া অহং আমার
তুচ্ছ নীরস পাতার মতো,
তোমার স্রোতে ভাসিয়ে নেবে?
হৃদপ্রাসাদের নিচের মহল--
অলিন্দ তার যত্নে খুলে,
পাতাল ছোঁবো,
ডাক পাঠাবো।
তোমার মত আমরা সবাই একাত্মলীন, কৃষ্ণশ্যামা--
আপন মনের আগল খুলে
এই পৃথিবীর রঙ্গ দেখি,
চোখের তারায় সুদূর মায়া

Oh silent eyes

Oh silent eyes
  Shall I take a dip within you?
    To lose my roaring ego
  Like a withered leaf on passing river!
     Let me touch bottom of the heart
       To speak from there
          Like you, where we all are one

রাস্তা থেকে না সরে দাঁড়ালে

রাস্তা থেকে না সরে দাঁড়ালে
     সময়ের পথে
         মাইলস্টোন হয়ে থাকবে
যে যাওয়ার সে যায়-ই
  স্রোতের বাধা তৈরী করলে
         তোমাতে ঠেকে
     শুধু নতুন একটা বাঁকের জন্ম হবে

 

মুক্তপথ

বিশ্বাস আমার ব্যক্তিগত
     গোপনীয় নয়

উপলব্ধি আমার বোধগত
     কুক্ষিগত নয়

প্রেম আমার চিত্তগত
     আত্মগত নয়

মানুষ মাত্রেই উভচর

মানুষ মাত্রেই উভচর
তুমিই শুধু না,
   সময়ে সময়ে আমিও জেনো গুপ্তচর

 

দু'পা

দু'পা পাশেই তো চলতে চেয়েছিলাম
পা দাপিয়ে ধূলো উড়ালে কেন?

তোমার না হয় অনেক দূরের পথ
রাস্তা বাঁকা অনেক চড়াই উতরাই
তবু মাঝপথেতে বসে পড়লে কেন?

রাস্তা আমার খানিক দূর যাক
তোমার সাথে তোমার পাশে থেকে
তারপরেতে যেখানে নেবে বাঁক
আপনি গতি ফিরিয়ে নেব বেঁকে

চলা

মনের কিছু খবর রাখি
   আমার কিছু খবর রাখে মন
বেশির ভাগটাই অন্ধকারের ভাগে

সন্ন্যাসী ও যুবক

দূরপাল্লার রেলগাড়ি। অনেক দূরে পাড়ি দেবে বলে স্টেশনে দাঁড়িয়ে লম্বা নিশ্বাস নিচ্ছে। জানলার ধারে বসে আছে একটি যুবক। তার ঠিক উল্টোদিকে এক সন্ন্যাসী উপবিষ্ট। যুবকের মুখটি ভারী বিষণ্ণ। পাংশুবর্ণ। সন্ন্যাসী নীরবে কিছুক্ষণ লক্ষ্য করে প্রশ্ন করলেন তাকে, সে চলেছে কোথায়? জবাব পেলেন না কোনো।

আরো প্রেমে


রবীন্দ্রনাথের কথায়, ‘যদি বলি মানুষ মুক্তি পেতে চায়, তবে মিথ্যা কথা বলা হয়। মানুষ মুক্তির চেয়ে ঢের বেশি চায়, মানুষ অধীন হতেই চায়... সে বলছে, হে প্রেম, তুমি যে আমার অধীন, আমি কবে তোমার অধীন হব!’

মাটি


আচমকা মনে হল সবাই যেন খুব এগিয়ে গেছে। রাস্তার দিকে তাকিয়ে মনে হল, কই কাউকে তো চোখে পড়ছে না। বিস্মিত হলাম না। এটাই তো হওয়ার ছিল। এরকমই তো হয়।

যেন কিছুই হয়নি

যেন কিছুই হয়নি
   এমন অনায়াসে হেঁটে গেলে
এই অনায়াস কত আয়াসের ফল!
                        তুমিই জানো
শুধু দেখলাম, নিজেকে লুকিয়ে
            নিজেকেই ছিঁড়ে নিলে

 

জীবন

জীবন
   শাঁখের খোলে অসীমের নিনাদ
   যদি কান পাতলে - তো শুনলে
   নয় তো দেখলে
        সারা গায়ে শুধুই
                    দাগের উপর দাগ

 

মকরন্দ


---
ফুলের বুকে মকরন্দ
আমার বুকে তুমি
একলা রাখতে সাহস পাই না
তাই দোসর অন্তর্যামী!


---
আয়নাও তোমার সামনে ভয়ে ভয়ে দাঁড়ায়
তুমি সরে গেলে
ওর বুকের থেকে চিরবাঞ্ছিত তোমার ছায়াও মিলায়

অনর্থক

আকাশ ভরতি তারা
  আমি বিস্তীর্ণ নির্জনতায় একা বসে
চারদিক নিঝুম অন্ধকার
   পাহাড়ের অস্পষ্ট চূড়ারা নিশ্চুপ
জীবনের অর্থ কি?
   এর কোনো উত্তর পাইনি এখনো
 কোনো ধর্ম, কোনো দর্শন না
    কেউ দিতে পারেনি সে উত্তরটা
      যে উত্তরটা শুনে মন বলবে, হ্যাঁ

নিজেকে দিই নি

নিজেকে দিই নি
         তাই পাইওনি
দেওয়ার কথায় এড়িয়ে গেছি
      তাই বুকে এত কৈফিয়ৎ জমে
সময়ের স্রোত সংশয় আবর্তে আটকে

 

কাঁটা

বাঁধাবাঁধি, গোছগাছ সব সারা হয়ে গিয়েছিল। তার ফিরতে হবে ঘরের দিকে।

ফেরার পথে পায়ে ফুটেছিল কাঁটা
 সে মাথা নীচু করে কাঁটাটা বার করছিল যখন
  আচমকাই ছড়িয়ে পড়ল সব মাটিতে তখন
   কি করে?
জানি না। হয় তো আলগা ছিল বাঁধন।
   আর ফেরা গেল না। ফিরে এল।

উপেক্ষা

উপেক্ষার জবাব দিতে জানত
   দিতও হয় তো
দিল না,
   উপেক্ষাকে উপেক্ষা করার মত ঔদাসীন্য ওর পায়ের নখে এখন
তাই চলতে ফিরতে ওর চোখের মণিতে এখন লক্ষ নক্ষত্রের বাস
     ও নিজেই নিজের উত্তর দক্ষিণ
          নিজেই নিজের কম্পাস

 

থমকে যাওয়া সময় দোলায়

থমকে যাওয়া সময় দোলায়
ছিন্নপাতা সত্ত্বাকে-----
পর্ণমোচী চেতনকে কোন
অস্তরাগের ঝড় ডাকে
আমার ঝরা পত্রছায়ায়
লগ্নজিতা প্রেমের মায়া
বেলাশেষের সুর আঁকে,
জীর্ণপাতার মলিন ঘরে
অলয় প্রেমের মধুর স্বরের
রাগরাগিণীর তান থাকে।

(অনুবাদিকাঃ সুকন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়)
 

My soul

My soul
A fallen leaf
An oscillation in stagnant time
My soul
A fallen leaf
An expression of consciousness
My soul
A fallen leaf
An undefeated anthem of love

My soul

My soul
A fallen leaf
An oscillation in stagnant time
My soul
A fallen leaf
An expression of consciousness

My soul
A fallen leaf
An undefeated anthem of love

(Photography: Enrique Peláez)

অস্পষ্ট অন্ধকার

কি সাবলীল বাচনভঙ্গি তোমার
  অথচ কি বিষ পরতে পরতে
যেন কতদিনের জমানো অবসাদ
      ভুল ভুল ভুল

ফ্লোরিডার ঘটনাটা

ফ্লোরিডার ঘটনাটা গতকাল রাতেই শুনেছিলাম। আজ সকালে আনন্দবাজারের প্রথম পাতার খবরের শিরোনাম দেখে থমকে গেলাম – ‘সমকামী নাইট ক্লাবে বন্দুকবাজের হামলা’। থমকে গেলাম। অন্য কয়েকটা পেপারের হেডলাইনে চোখ বুলালাম। না তো! Times of India.

ওরা বোঝে না

কেউ বলেনি আমায় তোমার কাছে নিয়ে যাবে
আমি তবু নিশ্চিন্তে খেয়া পারাপারের ঘাটে বসে আছি

কেউ বলেনি তুমি আমার অপেক্ষায় পথ চেয়ে আছো
আমি তবু কয়েকটা করবী ফুল একটা কচু পাতায় মুঠো করে নিয়েছি
               তোমার জন্য

বিজ্ঞাপিত প্রেম

তুমি রক্তাক্ত পায়ে এলে
এসেই বললে-
  দেখো, তোমার জন্য

স্বপথ


ঈশ্বরের বিরোধিতাও এক ধরণের আস্তিকতা। কারণ যার অস্তিত্বহীনতা নিয়ে আমার মনে কোনো সংশয় নেই, তার অনস্তিত্ব নিয়ে এত মাথা ঘামানোর কি দরকার?

নিজেকে নিয়ে একা

যারা যারা, যা যা
     খুঁজতে এসেছিল
      চাইতে এসেছিল
        দেখতে এসেছিল

শিবানী


-----
ঘটনার সময়কাল ১৯৪০ সাল। বাংলাদেশের একটা ছোটো গ্রাম। মেয়েটা বিয়ে হয়ে গ্রামে এল ঘোর বর্ষা মাথায় করে। মেয়েটার নাম শিবানী। তার বরের সাথে পরিচয় হওয়ার আগে হল পরিবারের সাথে পরিচয়, গ্রামের সাথে পরিচয়। সেবারে ধান হল গোলা ছাপানো। লোকে বলল - লক্ষী।

I have my own universe

I have my own universe
It's my own, very own
Here everything is utmost important
   The tiny particle of dust
  Rain quenched bright edge of leaf
      Infamous rainbow colored beetle
 They talk to me in silence
    They open their deepest mystery

আমার একটা ছোট্ট ভুবন আছে

আমার একটা ছোট্ট ভুবন আছে,
সাতসাগর আর লক্ষতারার মাঝে,
নিবিড় করে ধরা বুকের কাছে---
আপন, বড় আপন ভুবন আছে।
নগণ্য সেই পথের ধূলিকণা,
সবুজ পাতায় বৃষ্টিরই আলপনা-
রামধনুরঙ কাঁচপোকাদের ডানা--
সবাই আমার মনের বাসায় থাকে,
নীরব সুরের হাতছানিতে আমায় তারা ডাকে।
তাদের গহিন গোপন খেলাঘরের লুকোচুরির ছবি,
যত্ন করে আমার চোখে আঁকে।

I have my own universe

I have my own universe
It's my own, very own
Here everything is utmost important
   The tiny particle of dust
  Rain quenched bright edge of leaf
      Infamous rainbow colored beetle
 They talk to me in silence
    They open their deepest mystery

আমি ফুলমুন

মামুর সাথে তেপান্তরে হঠাৎ হলাম একা
তরমুজ কাটা একফালি চাঁদ করতে এল দেখা
বললাম আয় সেল্ফি তুলি আমরা মিলে তিনজন
চাঁদ বলল আজ মোটে নয়! আজ কি আমি ফুলমুন?

প্রশ্ন

প্রশ্ন করতে বারণ কোরো না
   হারিয়ে যাবে

যেমন হারিয়ে গেছে
   অনেক দেবতা
    অনেক ধর্ম
    সমাজের অনেক
       তথাকথিত অভিভাবক

প্রশ্ন শুনতে ভয় পেয়ো না
 মিলিয়ে যাবে অস্তিত্বের সংকটে

স্বীকারোক্তি

তখন অল্প পরিচয়
  অন্ধকারই বেশি, খুব স্বল্প আলো
তোমাকে লাগল ভাল
আলোতে ছায়াতে মিশে
  তোমার যে মূর্তি মনে আঁকলাম
বুঝিনি তো যে
 তাতে সত্যের চেয়ে কল্পনা আছে বেশি
  যা দেখি তা নয় ঠিক
সত্য ঢেকেছে মাধুরী ছদ্মবেশে

বাধ্য না গো

বাধ্য না গো
   উদ্বোধিত হই
খণ্ডিত না
   অখণ্ডিতই রই

 

সন্ধ্যেবেলা হেঁটে ফিরে এসে দেখি কি সমস্যা

সন্ধ্যেবেলা হেঁটে ফিরে এসে দেখি কি সমস্যা, বাড়ির এক্কেবারে বাইরের দরজার গ্রীলের ফাঁকে আটকে একটা বাচ্চা কুকুর। আপ্রাণ বেরোতে চেষ্টা করছে, ডাকছে। বেরোতে পারছে না। পাড়ার কুকুর। গেট খোলা থাকলেই বাগানে ঢুকে পড়ে। তারপর বেরোবার সময় এই রকম ফাঁকে আটকিয়ে কিছুক্ষণ খণ্ডযুদ্ধ করে নিজের থেকেই মুক্ত করে নিজেকে।

কেন বলোনি তুমি এসেছো

কেন বলোনি তুমি এসেছো?
  আমারই অপেক্ষায় আছো সাগর তীরে!
আমারও তো কাজের পালা ফুরিয়ে এসেছে বন্ধু
  তুমি নাও নামাও জলে, আমি আসছি,
       কতবার আমি ঘাটের কাছে গো
          এসে এসে গেছি ফিরে


(ছবিঃ সমীরণ নন্দী)

নাম কথা

জবা টগর রজনীগন্ধা ইত্যাদি
     মাত্র কয়েকটা ফুলই চিনি
   দেখেছি হয় তো আরো অনেক রকম ফুল।
  নাম জানি না।
    তাতে কি আর এসে যায় বলো?
          ফুল তো ফুলই।
        যেমন তোমার কথা।

গভীর ক'টা শব্দ

গভীর ক'টা শব্দ
  বুকে নোঙর গেঁথে ছিল
সন্ধ্যাকাশ মন রাঙিয়ে
     তারে ভাসিয়ে দিয়ে গেল

(ছবিঃ প্রীতম পাল)

অকাল সন্ধ্যে


মেঘলা আকাশ। উদ্বেল দীঘির কালো জল। বৃষ্টি ধোয়া গাছের পাতার থেকে এক বিন্দু জল পড়ল দীঘির বুকে - টুপ্। মিলিয়ে গেল। জলের বুকে মেঘের ছায়া।
পাড়ে বসে যে মেয়েটা, সে এ পাড়ায় সদ্য বিয়ে হয়ে এসেছে। এই দুপুরে সে একা বসে ঘাটের সিঁড়িতে। কেউ নেই চারধারে। ফাঁকা জনপথ। ওর কি মন খারাপ? নাকি নতুন সব কিছুর সাথে মানিয়ে নেওয়া লড়াইয়ের ফাঁকে একটু অবকাশ।

বাবা-মায়ের বিবাহবার্ষিকী

সকালে বাবার ঘরে ঢুকতেই বাবা মুখটা ঘুরিয়ে নিলেন। সে ক্ষণিক দৃষ্টিতেই বুঝলাম বাবার চোখে জল। মনে পড়ল, আজ 6th জুন। বাবা-মায়ের বিবাহবার্ষিকী। জিজ্ঞাসা করলাম না কিছু। ফিরে আসলাম নিজের ঘরে।

অপেক্ষায়

অপেক্ষায়
আশঙ্কার পায়চারি
      মনের দালানে উঠানে


(ছবিঃ সমীরন নন্দী)

ফেসবুকের নোটিফিকেশান

ফেসবুকের নোটিফিকেশান চাকতির বুক লাল করে মাঝে মাঝেই আসে খেলার আমন্ত্রণ। ক্যান্ডি ক্রাশ ইত্যাদি নামক অসাধারণ, স্বাস্থ্যকর, উপাদেয়, পুষ্টিকর সব খেলার আমন্ত্রণ। আসুক আপত্তি নেই। আমি এক অতি তুচ্ছ, নগন্য মানুষ (এই ধরণের কথাগুলো দুপ্রকারের লোক বলে থাকে। এক, আত্মজ্ঞানী মহাপুরুষ আর দুই, হাড়বজ্জাৎ মিচকে শয়তানগুলো। আমি যে দ্বিতীয়পক্ষের এই নিয়ে কোনো সংশয় না রাখাই ভাল)। আমায় অবিশ্যি খানিক পেঁচোয় পাওয়া মানুষ

তুচ্ছ

ধানের খোসা ছাড়িয়ে চাল পুঁতলে মাটিতে
        গাছ হবে নাকি চালেই
খোসাটা অপ্রয়োজনীয় ভীষণ - অতিরিক্ত!

গাছ হল না।

 রাগে ফেটে পড়লে ধূর্ত মাটির উপর
      অকৃতজ্ঞ হল চাল

চক্র

সাইকেলের চাকা। টোটোর চাকা। বাইকের চাকা। বাসের চাকা।
রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে আছি বন্ধুর আসার অপেক্ষায়। সামনে হুসহুস করে চাকার দল ছুটে চলে যাচ্ছে। তার উপরে মানুষ। ব্যস্ত মানুষ, চিন্তিত মানুষ, খোশমেজাজি মানুষ, দুঃখী মানুষ। রোগা মানুষ, মোটা মানুষ। গরীব মানুষ, ধনী মানুষ, মধ্যবিত্ত মানুষ।

আশ্চর্য উপাখ্যান

আশ্চর্য উপাখ্যান
সব পাতাগুলোই খোলা
সব সংলাপগুলোই বলা
দিগন্তের মঞ্চ বালির বুকে বাঁধা
  বসে থাকো, চোখ রাখো, কান পাতো
এ অনন্ত পালা

(ছবিঃ সমীরণ নন্দী)

তোমার নীরব বাঙ্ময়তা

তোমার নীরব বাঙ্ময়তা,
আমার নৈঃশব্দ্যপ্রাচীরের কানে কানে,
কথা বলে যায় কত---
আমার ভীরু, অস্ফুট
ভাষা যে ঠিকানাহীন--
তুমি ধারণ করোনি তাকে আপন সত্ত্বামাঝে---
তুমি হরিণছন্দে এসো--
আমার অশ্রুমুকুল চয়নে,
এসো আমার হৃদনূপুরের ভাবনাব্যাকুল গুঞ্জনে--
আমার আঁধার নয়ন আলোকিত হোক
তোমার নীরব আনন্দস্বপনে।

কিছু মানুষ হিমালয়ের মত হন

কিছু মানুষ হিমালয়ের মত হন। শুধু মহৎ বলে নন। মাধুর্য আর প্রজ্ঞার এমন মেলবন্ধন যা আজকের দিনে ভীষণ দুর্লভ।
Sukanya Bandyopadhyay এর মা, মানে কাকিমার সাথে আলাপ হওয়ার পর এমন কথাই মনে এল। ওনার সাথে ফোনে কথা হয়েছে বেশ কয়েকবার। বর্ষীয়ান এই বিদূষী মহিলার সহপাঠী ছিলেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার মহাশয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন।

প্রাণের প্রাণ

প্রতিটা বাঁকে তুমি একা। প্রতিটা ক্ষতে তুমি মাটির প্রলেপ লাগিয়েছ একা। রক্তগুলো মাটির মধ্যে বানিয়েছে নতুন নতুন নদী। তারাও বয়ে চলেছে একা। তোমার চোখের প্রতি উন্মীলনে জাগে পিপাসা। তোমার চোখের প্রতি নিমীলনে আশ্রিত অপেক্ষা। তুমি জেনে গেছ, সব কুঁড়ি ফুল হয় না। সব ফুলে ফল হয় না। তবু তুমি গোধুলির রঙ গলা নদীতে যখন শেষ স্নান সেরে ওঠো, অস্তগামী সূর্যের কপালে দাও আশিস চুম্বন। তোমার ভেজা শরীরের জলের রেখায় ফোটে

বরফের নীচে

বরফের নীচে মৃত মাছের শরীরকে তাজিয়ে রাখার কৌশল
কথার উষ্ণ তাপে মৃত ভালবাসাকে তাজিয়ে রাখার অভিনয়

 

আপন

রঙ তো কতই আছে
সে রঙই তোমার মনে ধরে
      যে রঙ তোমার চোখের কোণায়

কথা তো কতই আছে
সে কথাই তোমার মনে বেঁধে
     যে কথা তোমার বুকের তলায়

সুর তো কতই আছে
সে সুরই তোমায় কাঁদিয়ে ছাড়ে
    যে সুর তোমার গভীর ব্যথায়

You talk to me in silence

You talk to me in silence
                 very often
Oh my feeble poorly words
  You can't conceive them
Please, slowly follow my tears
   They are the expression of my heart

না না, কাছে এসো না

যেখানেই স্বাধীনতা সেখানেই বৈচিত্র্য। মানুষ স্বাধীন হল চিন্তায়। হল বৈচিত্র্যময়। আদবকায়দা, পোশাক-আশাক, রীতিনীতি, বিশ্বাস, ধর্ম - সব হল বৈচিত্র্যময়।
বিজ্ঞান এল এগিয়ে। সবাই এলো কাছাকাছি। কিছুটা অতিরিক্ত কাছাকাছি। যেন দরজা খুললেই ভিনদেশ। টিভিতে, উড়োপথে হাতের কাছেই সারাবিশ্ব। ইন্টারনেট চিত্রগুপ্তের খাতাকেও নস্যি করে দিয়েছে।

যেন পাশাপাশি

সবাই পাশাপাশি আছি
যে যার গন্তব্যের অপেক্ষায়
   গন্তব্য আসেনি এখনো, অপেক্ষাতে আছি
     তাই পাশাপাশি আছি
         একসাথে চলার মত যাচ্ছি
    সবাই তবু অপেক্ষাতেই আছি
       সবাই যেন পাশাপাশিই আছি

তবু মন প্রসন্ন থাক

মনকে প্রসন্ন রেখো
    সে যে ভাবেই হোক
ঈশ্বর তোমার পাড়ায় থাকুন
             চাই না থাকুন
  মনকে প্রসন্ন রেখো
মনের সাথে চিরকালীন বাস
   মনের মধ্যে তাই না থাক দীর্ঘশ্বাস
মনে করো না, ঈশ্বর গেছেন বেড়াতে
 গেছেন তীর্থে - পুরী কিম্বা জেরুজালেম অথবা মক্কাতে