সরো
জানলার আদর
ছাদের অভিসার
দূরের শব্দ
কাছের আওয়াজ
...
সমুদ্র ও ঢেউ
ঢেউ জিজ্ঞাসা করেছিল,
"তুমি শান্ত
...
সেদিন ডেকো
আমায় ডাকো কেন?
সেদিন ডেকো আমায়
...
সংস্কার
...
সে আসবে আবার বাড়ি চিনে
সুখ ও সত্য
সত্য বলল সঙ্গে যাবে যদি নিজের পায়ে হাঁটো।
সান্ত্বনা চাও?
সান্ত্বনা চাও?
অনন্ত সান্ত্বনা?
কে দেবে? ...
সতর্ক আর সচেতন
সে নিজেও জানে না
বাঁ হাতের গোড়া থেকে টাটাচ্ছিল। এই হাতের কাঁধের কাছে গোলাটা দুবার বেরিয়ে গিয়েছিল ধড় থেকে। কি যন্ত্রণা, উফ্..., কি যন্ত্রণা খাণ্ডোবাই জানে। আবার খাণ্ডোবার নাম করছে! মন বড় পাজি। কয়লার মত। যতই ধোও রঙ আর যায় না।
স্বামীজীর জন্মদিন
সূচ
সমস্যা..... বুঝলে
স্বপ্ন
বাবা ছেলের মুখের দিকে একবার তাকিয়ে, জালটা গোটাতে গোটাতে বলল, না বাবা।
ছেলে বলল, তবে রোজ রোজ সমুদ্দুরে নৌকা নিয়ে কেন যাও?
বাবা বলল, মাছ ধরতে। মাছ বিক্রি না করলে আমাদের যে না খেয়ে থাকতে হবে।
ছেলে বলল, আমি একদিন তোমার নৌকাটা নিয়ে ওপার থেকে ঘুরে আসব। বড় হই। তুমি দেবে তো তোমার নৌকাটা আমায়?
সেলাই তো পডবে, কিন্তু ক'টা?
সানাই
এ দ্বন্দ্ব আজও কাটিয়ে উঠতে পারেনি মনোরমা। যখনই সানাই বেজেছে, বুকে কান্না উঠেছে। কিন্তু কেন? কাকে সে চায়? সে মুখটা স্পষ্ট নয়। বিয়াল্লিশ বছর আগে যখন পুরোহিত মন্ত্র পড়ছিল, চারদিক হুল্লোড়, সানাই বাজছিল মনোরমাকে কাঁদিয়ে একা একা, গোপনে। মনোরমা নিজেকে জিজ্ঞাসা করেছে, কে সে? কার জন্য এমন বুক হাহাকার কান্না তার?
মন উত্তর দেয়নি স্পষ্ট করে। শুধু বলেছে, এ সে নয়, যার হাতের উপর হাত, এ নয় সে।
সেদিনের আকাশ ভাঙা মেঘ
পুরোহিত বলল, তোমার বাড়ি কোথায়?
বুড়ি বলল, খড়দা...
পুরোহিত বলল, তা তুমি নিজে রেঁধে আনলেই পারতে..
সে আসবে তো?
ধর্ষণের পর
ভুল বললাম
যে দলিত মেয়েগুলো হারিয়ে গেল, ধর্ষণের পর
...
সুহৃদ
একজন বলল, দরদী পাই কই?
গোঁসাই বলল, দরদ দিয়ে তাকা, দরদ দিয়ে শোন, দরদ দিয়ে ছোঁ। দেখ দরদের ঝুনঝুনি বাজছে জগতে।
সে বলল, পেলাম তো শুধু আঘাত গোঁসাই…. দরদ কই?
...
সেন্টিমেন্ট
দেখুন, আমরা আপনাকে প্যানিক করার কারণ দেব। কিন্তু আপনি প্যানিক করতে পারবেন না। আমরা আপনাকে ঘৃণা, রাগ, বিদ্বেষ - এগুলোর খবর জানাব। আপনি স্থিতপ্রজ্ঞের মত থাকবেন। যদি না পারেন, আপনি কি করে কি করে স্থিতপ্রজ্ঞ থাকবেন সেও নানা টিপসের মাধ্যমে জানাব। আপনি শুধু আমাদের কিনুন। আমাদের দেখুন।
সে সদা জাগ্রত
গুরু ধ্যানে বসে আছেন। একজন একজন করে শিষ্যরা এসে বসছে সামনে। আজ বিজয়া। ঘটে পুজো হয়। ঘট বিসর্জন দেওয়া হয়ে গেছে। সন্ধ্যে হব হব।
গুরু চোখ খুললেন। বললেন, কল্যাণ হোক সকলের।
সাহিত্যিকেরা আত্মীয় হন
যিনি সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন আমি তাকে চিনতাম না। কোনোদিন নাম শুনিনি। তার জন্য আমার কোনো লজ্জাও নেই। কারণ সাহিত্য আমার কাছে সাধারণ জ্ঞান না। তৃষ্ণার জল। আমার মন শান্ত হয়েছে, ভালো হয়ে গেছে, শক্তি পেয়েছে, খুশী হয়েছে এমন অনেক অনেক লেখা পড়ে যারা কেউ নোবেল পাননি।
সার্ভিস চার্জ
ভুল্টু ঈশ্বরের কাছে বেগো প্রার্থনা করল, ডাকাডাকি করল, খাওয়াদাওয়া ছাড়ল, কান্নাকাটি করল, মায় চিল্লেমেল্লিও করল। তো ঘোর কলি হতেও ঈশ্বর দেখা দিলেন।
ভুল্টু বলল, এতদিন ধরে ডাকছি, আপনার কোনো পাত্তাই নেই, এদিকে লাইফটা হেল হয়ে যাচ্ছে... ছেলেমেয়েগুলো অমানুষ, চাকরিতে শান্তি নেই, আপনি কিছু একটা করুন….
সুখ
বালাপোষটায় দু-তিনবার হাত বোলালো মিতা। ন্যাপথলিনের গন্ধ বেরোচ্ছে হুহু করে। পুরোনো দিনগুলো যেন তরতাজা হয়ে আছে ন্যাপথলিনের আদরে। পাশের ঘর থেকে কাতরানোর আওয়াজ আসছে। থাকবে না লোকটা। বালাপোষটা?
সত্যিই আমায় মানায়?
যে মানুষটা
রাতের বেলা
একফালি রান্নাঘরটুকু ধুয়ে মুছে
আগামীকালের রান্নার জন্য যা যা দরকার গুছিয়ে
নিশ্চিন্তে শুতে যায়
সুরমার সংসার
আজ সকালেই, রান্নার পর গ্যাসট্যাস মুছে বসার ঘরে খবরের কাগজটা নিয়ে বসল। অতীন মিউনিসিপালিটি চলে গেছে। মেয়ে টিউশানে। এখন কেউ আসার নেই। যেই ভেবেছে খানিক বাদেই কলিংবেল বাজল, মাসতুতো দিদি আর তার বর। মানে আবার গ্যাস জ্বালো। নইলে আপ্যায়ন হবে কি করে?
সে কুড়িয়ে নেবে
প্রতিদিন ফুল চুরি করার সময়
তার একটা কথাই মনে হত
তার নিজের একদিন ফুলের বাগান হবে
সত্যেরে লও 'সহজে' না, নাও জাস্টিফিকেশনে
রাগ করতে নেই। ওভাবে বলতে নেই। ভালো হতে হয়। শান্ত হতে হয়। ভালো কথা বলতে হয়। মিষ্টি কথা বলতে হয়। মনকে উত্তেজিত হতে দিতে নেই।
সমালোচক আর সংস্কারক
সমালোচক আর সংস্কারকের মধ্যে পার্থক্য আছে।
সমালোচককে পারফেক্ট হতে হয়। তর্ক নিপুণ হতে হয়। তথ্য জাহাজ হতে হয়।
সংস্কারকের দায় নেই পার্ফেক্ট হওয়ার। তার জিহ্বা অভিশাপমত্ত নয়। নিন্দায়, কষাঘাতে, তর্কে জিতে তার তৃপ্তি নেই।
সব জানে সময়
ঢিল পড়ল জলে। টুপ।
ঢেউ উঠল। ঢেউ এসে লাগল পাড়ে। ছলাৎ।
বাতাস উঠল বেগে।
জল উঠল কেঁপে কেঁপে।
সে কাঁপন লাগল পাড়ে এসে। ছলাৎ ছলাৎ।
মাটি উঠল কেঁপে। ভূমিকম্প।
জল উঠল ভীষণ হয়ে।
পাড়ের উপর এসে ধাক্কা খেল জল।
ছলাৎ, ছলাৎ, ছলাৎ।
জলের বুকে আকাশের ছায়া উঠল চঞ্চল হয়ে।
সম্পর্ক
বিয়ে হল। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই মনে হতে শুরু করল, না, এ মানুষটা ঠিক আমার মনের মত মানুষ না। মানে আমি যেমন চাইছিলাম ঠিক তেমন না।
আবার এমন হতে পারে, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই মনে হল, আমরা সংসারটা যেভাবে চেয়েছিলাম ঠিক সেভাবে হচ্ছে না।
সুনিশ্চিত সরকারি চাকরি
যে খবরটা নিয়ে খবরের কাগজগুলো তোলপাড় হচ্ছে তা হল ডোমের চাকরির জন্যে উচ্চশিক্ষিতদের আবেদনপত্র। অনেকেরই বক্তব্য পড়লাম, ডোমের চাকরি মানে সরকারি চাকরি, মানে সুনিশ্চিত নিরাপত্তা।
স্বপ্ন সাগর
ক্লান্তিতেই হবে, নইলে হঠাৎ করে বিদ্যাসাগর মশায় এসে ঘুমের মধ্যে ঢুকবেন কেন? যা হোক, ঢুকেই যখন পড়েছেন, সে ঘুমের মধ্যে হলেও, বসতে বলতে হয়। তা তিনি আমার কথা না শুনে সারা ঘরময় ঘুমের মধ্যেই পায়চারি শুরু করে দিলেন। আমি বললাম, ও মশায়, অমন হাঁটেন কেন, একটু বসেন না, দুটো কথা কই?
সত্য কি?
জগৎ সংসারটা আমার বুদ্ধি-বোধের ক্যানভাসে? না আমার বুদ্ধি-বোধ জগৎ সংসারের ক্যানভাসে?
স্বেচ্ছা আত্ম-অবমাননা
মানুষ দুঃখ থেকে ত্রাণ চায়। সে কোন দুঃখ? খিদের দুঃখ, পরাধীনতার দুঃখ, অপমানের দুঃখ।
সাড়ে তিন মিনিট
আমার বগল ঘামছে। এসি অন। হাতের মুঠোটা শক্ত করে আছি। এটা রিফ্লেক্স অ্যাক্সন। টেনশান হলেই আমার হয়। ট্রেনটা মিস হবে। যশোবন্তপুর এক্সপ্রেস। ছাড়তে আর আধঘন্টা বাকি। কিন্তু যা জ্যাম, অসম্ভব। ফোন সুইচ অফ্ করে দিয়েছি। রেড্ডী অনেকক্ষণ ঢুকে গেছে স্টেশানে, আমি তখন বেলঘরিয়া ছাড়ছি। হাওড়া স্টেশানের পাশেই একটা হোটেলে ছিল। মনে হচ্ছে না পাবো। এমন জ্যাম যে আমি দরজাটাও খুলতে পারব না কোনোদ
সংস্কৃতিপ্রবণ বাঙালি মন
গতকাল বাংলা নিউজচ্যানেলগুলোর সাংবাদিকেরা বেশ বাড়াবাড়ি করে ফেলেছেন এই নিয়ে বিস্তর লোকজন বিস্তারিত লিখছেন, আপত্তি জানাচ্ছেন, বকাঝকা করছেন ইত্যাদি ইত্যাদি মানলুম। কিন্তু আপনারা আর কিছু দেখলেন না? মানে খেয়ালই করলেন না? মানে আপনাদের সংস্কৃতিপ্রবণ বাঙালি মনে চোখেই পড়ল না? হায় হায়! অগত্যা আমিই বলি।
সত্যিকারের সমস্যা
আচ্ছা, এই যে এত এত ডাক্তারি পরামর্শ চলছে রাতদিন ফেসবুক জুড়ে, আসলে নকলে মিলে করিছে হাহাকার। এগুলোর দায় কারোর নেওয়ার নেই না?