জানলার গারদ
জানলার গারদ
বিষন্ন দুটো চোখ
ভারি বর্ষণ
পুরু চশমার কাঁচ
বর্ষা দেখেছে বহু
ভিতরে বাইরে
আঁতলামি
সবার শেষ কথা কি বাজারে কাটতি? বক্স অফিস হিট? এমন একটা ধারণার বিপরীত মানে কি আঁতলামি? বলা হয় আঁতেল শব্দটা নাকি ইন্টেলেকচ্যুয়ালের ফরাসী উচ্চারণের অপভ্রংশ। হবে হয় তো। তবে কথাটা ব্যঙ্গাত্মক এই নিয়ে সন্দেহ নেই।
কিশোরীদাস
এখানে সেখানে কেন মনোনিবেশ মন, মনোনিবাস তোর হবে কবে?
পিলসুজের আনন্দ
বঞ্চিত হওয়া আর ত্যাগ করা একই কথা তো নয়। দৃষ্টির সামনে যে অসীম জগত তার একটা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অস্তিত্বে নিজেকে স্বীকার করে বাঁচতে চাওয়ার অভ্যাস - এই তো কথা? একি সামান্য কথা? আমার এই 'আমি' জাগতের কাছে অতিতুচ্ছ একটা অস্তিত্ব হলেও, আমার নিজের কাছে তো সে আছে বলেই জগত সংসার!
একাকীত্বের ভার
মাঝে মাঝে ঈশ্বরের মত সব কিছু জেনে যেতে ইচ্ছা করে
পরক্ষণেই মনে হয়, থাক।
এতবড় একাকীত্বের ভার কে নেবে?
বালিকা
গায়ে একটা নীল রঙের পোশাক। বালিকা দৌড়ালো পাখির আওয়াজ শুনে। ঘন জঙ্গল পেরিয়ে ছুটছে সে, মাথার উপর নীল আকাশ। চারদিকে বৃষ্টিভেজা সবুজ বন। একটা নীল রঙা নদীর তীর ধরে বালিকা ছুটছে। যেন এক টুকরো নীলাকাশ এই ঘন বনের মধ্যে, সবুজের সাথে লুকোচুরি খেলছে। বালিকার পিছু পিছু একঝ
রসবোধ
গুরু
গুরু যেদিন ব্যক্তিত্ব থেকে ব্যক্তি হল সেদিনই বিপদ হল। বিদ্যা আর দক্ষতার বলে চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, উকিল, রাঁধুনি, মুচি, জমাদার। কিন্তু গুরু হন ব্যক্তিত্বের বলে, ততটা বিদ্যা আর দক্ষতার জন্য না।
পিত্তবমি
(ঘটনা আর নামগুলো তো প্রায় সবারই জানা এখন)
পরিসর
পরিসর মানে এক চিলতে রোদ্দুর
পরিসর মানে এক খণ্ড আকাশ
পরিসর মানে দ্বিমতের বাস শতমত নিয়ে
তবু হাত পা ছড়িয়ে বসা
পরিসর মানে অভিমানে ভাঁটা
পরিসর মানে ডুবজলে নেমে মৃত্যুর সাথে
জীবন ফুরোতে না দেওয়া
ন্যায় আমাদের নীতিগত না ধর্মগত
ন্যায় আমাদের নীতিগত না ধর্মগত। ধর্ম আমাদের বিবেকগত না, আচারগত। আচার আমাদের বিজ্ঞানগত না, অতীত ঐতিহ্যগত। তাই মারতে বা মারের হয়ে সাফাই গাইতে আমাদের অসুবিধা হয় না। আমাদের অবচেতন জুড়ে হাজার বছরের আচারের ভরবেগ, আমি থামাতে চাইলেও থামবে কেন?
নষ্ট
নীলেশ কয়েকবার কৃষ্ণনাম গেয়ে দাঁড়িয়ে থাকল এক-দু'মিনিট। কেউ বাইরে এলো না। নীলেশ উঠোনের গেটটা আটকে আরেকবার রাস্তা থেকেই বাড়ির ভিতরের অন্ধকারটায় দৃষ্টি হাতড়ে হাঁটতে শুরু করল। সব বাড়ি যায় না। দরজায় দাঁড়িয়েই বাড়ির ভিতরের অবস্থা বুঝতে পারে নীলেশ। অভ্যাস হয়ে গেছে। ফুটো ছাতাটা মাথার উপর ধরে হাঁটতে হাঁটত
নিরাশ্রয় চোখদুটো
নিরাশ্রয় নিঃসঙ্গ চোখ দুটো তুলে বাড়িটা দেখালেন, বাড়ির কাজটা সম্পূর্ণ করচি। ওর ইচ্ছা ছিল দোতলার। সাইকেলে ঝোলানো ব্যাগে তরকারি। বললাম, এই দুপুরে বাজার?
শুধু এই রবিবারটাই করি। ওতেই হপ্তা চলে যায়। ছেলেটা আসলে অবিশ্যি...একলা ফেলে চলে গেল..কাল ঢালাই... শরীর ভেঙেছে। চশমাটা নাকের গোড়ায়, মোছা হয় না। প্যান্টটা কোমর থেকে নীচে নেমে যাচ্ছে বারবার। তুলে নেওয়া অভ্যাস হয়ে গেছে।
...
এখনই
এখনই না
এখনও অনেকে বসে আছে
অনেকে দাঁত দিয়ে নখ কাটতে কাটতে ভাবছে এখনও
এখনও অনেকে বাথরুমের আলো নিভিয়ে
বাথরুমকে অস্তিত্বহীন করে
শোয়ার ঘরে শুয়ে টিভিতে রান্না শিখছে
এখনও অনেকের চোখে-মুখে জরায়ুস্থ শিশুর সরলতার ভান
ঘুমন্ত চেতনায়
তিনশো বছরের পুরোনো কৃষ্ণমন্দির
রথের উৎসব,
মঞ্চে বাউলের উদাত্ত কণ্ঠে আল্লাহ্ নাম
আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে
লালনের পদ
পূর্ণতার জন্য
খুব কমই এমন হয়
কখনও কখনই হয়
যখন একজন মানুষ
আরেক মানুষে
মিশে যেতেই চায়
কামের জন্য না
সুখের জন্য না
শান্তির জন্য না
আশ্রয়ের জন্য না
পূর্ণতার জন্য
অস্তরাগ
বিকালের দিকটায় এই রাস্তাটায় ভীষণ যানজট লেগে যায়। খুব চওড়া না রাস্তাটা। একদিকে রেললাইন আর আরেকদিকে পর পর দোকান। দুপুরটা যা একটু কম ভিড় থাকে, সকাল থেকেই প্রচুর লোকের যাতায়াত। স্টেশান, হাস্পাতাল, স্কুল, বাজার সবই তো এই একটা রাস্তা দিয়েই যেতে হয়।
তোমরাই জানো
কোন রক্তের ঘনত্ব বেশী
কোন প্রাণেতে আনুগত্য
কোন কোন দেহ প্রাণহীন হলে
তোমরা তাকে শহীদ বলো
তোমরা জানো
কখন মাইকে গলা চড়ে
ভোকালকর্ড শীতঘুমে যায়
কখন কাকে তুচ্ছ করে
হঠাৎ ভীষণ উৎসব পায়
তোমরা জানো
অনশন
ওদের বোকা বোকা জেদ
হারতে লজ্জা লাগছে, ইগোতে লাগছে
জানি তো!
সুক্ষ্ম কঠোর অতিমানবিক নজর তোমার
দেখে নিতে চাইছ, মতলবটা কি?
তবু একটা কথা থেকেই যাবে জানো
কতটা দূরত্ব?
সন্ধ্যায় পশ্চিমাকাশে রক্তিম মেঘের বুক চিরে
ঘরে ফিরছিল একঝাঁক পাখি
মেঘের সাথে কতটা দূরত্ব ওদের?
অন্ধচোখ বৃদ্ধার পাশে বসে
হত দরিদ্র সম্বলহীন স্বামী
ঢাকের তালে তালে দিচ্ছে তালি
সুখের থেকে কতটা দূরত্ব ওদের?
হুলো কাঠবেড়ালি উপাখ্যান
কথোপকথন
(ছুঁৎমার্গীরা লেখাটা এড়িয়ে যান প্লিজ)
মেহেদী হাসান
...
সময় স্মৃতিজাত
সময় স্মৃতিজাত
প্রেম বিস্মৃতিতে
মৃত মানুষ হাঁটে জীবিত মানুষের সাথে
স্মৃতি সরণীতে
যদি সোডিয়াম পটাশিয়াম হাত ধরে থাকে!
বিনাশকালে বিপরীত বুদ্ধি
কোনো নীতিই যখন কৈফিয়ত কিম্বা জবাবদিহির তোয়াক্কা করে না, তা অবশ্যই দুর্নীতি। কোনো মানুষও।
এমনভাবে হাত দুটো বাড়াও
এমনভাবে হাত দুটো বাড়াও
যাতে আকাশকে সঙ্কুচিত হতে না হয়
এমনভাবে দুটো চোখ মেলো
যাতে হৃদয়ের এককণাও শূন্য না রয়
( Debasish এর ছবিটা মন কাড়লো)
হারানো বাসা
লোকটার কাঠ ঘষা দেখছিলাম দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে
ঘষতে ঘষতে এমন মসৃণ করে দিল
যে দুপুরের চড়া রোদ ঠিকরে
ওর দোকানের দেওয়াল ঘড়ির কাঁচকে যেন হার মানিয়ে গেল
ওলটপালট
পাঁচিলটা ভেঙে পড়তে দেখার
আলোর মজলিশ ঘিরে জীবনের উৎসব
আমিও অপেক্ষায় আছি
...
আবিলতা
তুমি মিথ্যাবাদী নও
তুমি প্রবঞ্চক
তোমার প্রতিটা কথা অক্ষরগত সত্য
হৃদয়গত সত্য কি?
নেমন্তন্ন
(কিছু ঘটনা শোনার পর থেকে বিঁধে থাকে, যতক্ষণ না ভাষায় জন্মায়)
দীক্ষা
নিরাকার থেকে সাকার, আদিদেব থেকে ইদানীং লোকনাথ বাবা --- কার না ক্যালেণ্ডার, ছবি নেই এ দেওয়াল, সে দেওয়াল, আলমারীর গায়ে, খাওয়ার টেবিলের পাশে ইত্যাদি ইত্যাদি। পরেশের মজাও লাগে, রাগও লাগে। ইলাকে কিছু বলে না। তাদের মেয়ে জয়িতা এবার মাধ্যমিক দেবে, তার সাথে মাঝে মাঝে ই
বড় রাস্তার দুধারে দুটো প্রাচীন বটগাছ
বড় রাস্তার দুধারে দুটো প্রাচীন বটগাছ
ওদের পাশ কাটিয়ে আসতে মনে হল
রাস্তার দুপাশে
এমন কয়েকটা প্রাচীন গাছ থাকা জরুরী
রথের চাকার ধ্বনি
কোথা চলিতে চাও প্রভু?
শুধালো না কেহ
শুধু চলিল রথ উন্মত্ত ভক্ত উচ্ছ্বাস ভেদি
নীরব জগন্নাথেরে লয়ে
রথের চাকা
এক, আমি নিজে; দুই, আমার সমাজ; আর রইল বিশ্বচরাচর। এই তিনকে ঘিরে একটা জীবন। এই তিনটেকে গেঁথে একটা সূত্র আছে - দর্শন। একজন মানুষ জেনে হোক, না জেনে হোক, কোনো না কোনো একটা দর্শনে বিশ্বাস করে। তার সেই বিশ্বাসের সাথে তার আচরণ যত খাঁটি সে তত স্বচ্ছ। তার সে দর্শন যত উচ
ভালোবেসেছিলাম
ভালোবেসেছিলাম
শুধু তোমাকেই আমি
বিনা অভিধান
বুঝতে পেরেছিলাম
প্রাচীর ঘিরি না
তোমায় আমি
কাছের ভাবি
নিজের ভাবি না
তোমার কাছে
আশা রাখি
দাবি রাখি না
যে ঝরণাটা
নদী হবে
নামছে দেখো
ছুটছে দেখো
ওকে আমার
দেখেই শান্তি
আগল ঘিরি না
তৃপ্ত আমি
মুক্ত আমি
পূর্ণ আমি
কবিতা ফুল
গদ্য ফসল। কবিতা ফুল।
গদ্য হাটের। কবিতা রসিকের।
গদ্য প্রতিবিম্ব। কবিতা প্রতিফলন।
গদ্য পরতন্ত্র। কবিতা স্বতন্ত্র।
একারই
দ্বিধা ছিল
আছে
থাকবেও
চলা ছিল
আছে
থাকবেও
রঙ হল পাকা
মুছে দিলাম
নির্মম
পথ একাই ছিল
একারই ছিল
আছে
থাকবেও
তৃষা-নিশা
মনের উপর বোধের নিয়ন্ত্রণ থাকবে - এমন কথা ছিল সভ্যতার মূলে। কিন্তু সভ্যতা বলতে কি বোঝানো গেল? বলা হল যা মার্জিত, যা ভদ্র। ভদ্র অর্থাৎ মার্জিত। যা দোষমুক্ত। দোষ কি?
একটানা
প্রসঙ্গ বদলাও
চাঁদ তারা সূর্য ঋতু
কেউ থাকতে পারে না ঠায়ে একটানা
ভালোবাসা, সুখ, দুঃখ এরাও পারে না,
হৃদয় পারে
সে তো দিগন্ত
জাগরণ আর বিস্মরণের মাঝে দাঁড়িয়ে
নোনতা
আজও কাজে যায়নি। যাবে কি করে, কাজ হলে তো যাবে? সন্ধ্যা কাজে যাওয়ার সময় দেখল মাঠটা পুরো জলে ডোবা। যা বৃষ্টি ক'দিন ধরে পড়ছে, এত জল, বাপ রে! বিষ্ণু'র কাজ তো এই মাঠের থেকে মাটি কেটে লরি ভরতি করা। অত মাটি যায় কোথায় কে জানে?
পরের সিঁড়িটা না থাকলেই হয়ত ভালো হত
পরের সিঁড়িটা না থাকলেই হয়ত ভালো হত
পরের সিঁড়িটা না থাকলে কি ভালো হত?
কোন সিঁড়িতে বিশ্রাম নেওয়া যায়
আগের সিঁড়িতে না পরের সিঁড়ি?
অনিবার্য যেটা
বাকযুদ্ধে হেরে গেছি দু'জনেই
আমি ভাষা হারিয়েছি
সে হারিয়েছে উদ্দেশ্য
নির্বাক অপলক তাকিয়ে
ঝুলন্ত পাহাড়ের কোলে
একটা একটা পাথর খসিয়ে যাচ্ছি খাদে
সরে সরে দাঁড়াচ্ছি পরের পাথরটায়
নৈসর্গিক মাধুর্য মৌমাছির গুঞ্জনের মত
গলস্টোন
...
চোখ বন্ধ করেন
ডাক্তার বললেন, চোখ বন্ধ করেন। কি দেখছেন?
- একটা সবুজ লুঙ্গি পরা লোক, গায়ে সাদা জামা, গলি দিয়ে হেঁটে হেঁটে আসছে। দেখে মনে হচ্ছে চারদিন কিছু খায় নি। বেশি বললাম, দুই দিন হবে। চারদিন না খেলে মানুষ ওভাবে হাঁটে কি? আপনার কি মনে হয় ডাক্তারবাবু?
বিষগাছ
এযাবৎ জীবনে অনেক সান্ত্বনাবাক্য শুনেছি
আহুতি
টিপটিপ করে বৃষ্টিটা হয়েই যাচ্ছে সকাল থেকে। পরমা চোখ খুলে দেখল সে আজকেও মারা যায়নি। পায়ের নীচের দিকের দরজাটার দিকে তাকালো। সবুজ পাল্লা দুটো খোলা। বাইরে অনেকের কথা বলার আওয়াজ। ক'টা বাজে? ন'টা না দশটা?
কথাটা নয় ফেসবুক
...
এককালে আমার ছাত্র ছিল
সাপ
একটু সরে দাঁড়াও
...
তিতিল নয়ন-নীরে ভীম কলেবর
মহাকাব্যের একটা সুর থাকে। হঠাৎ মনে এলো সেই ক্ষণটার কথা --- গভীর রাত; একজন নারী একজন পুরুষের সাথে গোপনে দেখা করতে যাচ্ছেন, নিজেকে রক্ষার বিনতি জানানোর জন্য। কারণ কীচক তাকে বিরক্ত করছে। কীচক তার মর্যাদায় হাত দিতে চাইছে। কার মর্যাদায়?
সেদিন যখন আকাশ জুড়ে মেঘ
কবিতা তো চোখের না গো
কবিতা তো চোখের না গো
কানের
কান তখন শ্রবণ যন্ত্র না
চোখের দোসর,
প্রাণের
গ্রুপ আর আমি
একটা গ্রুপের অ্যাডমিন হওয়ার দায়িত্ব অনেক। কোনো গ্রুপের মান আমার মনে হয় না তার সদস্য সংখ্যার পরিমাণ নির্ধারণ করে। কোনো গ্রুপের মান নির্ভর করে তাদের প্রগতিশীল, কুসংস্ককারমুক্ত, উদারনীতির পৃষ্ঠপোষকতায়। আর এই কাজের দায় অবশ্যই সাহিত্যের সব চাইতে বেশি। কারণ আজ অবধি অচলায়তনের বিরুদ্ধে যদি কেউ নিঃস্বার্থ গর্জে থাকে তবে তা সাহিত্য। বাকিরা তো একটা অচলায়তনকে
কবিতা নয়
ঈশ্বর কথাটা সংবেনশীল। ধর্ষণ নয়। ওটা নিয়ে কথা চলুক। অন্ধ বিশ্বাস? না তো, বহু মানুষের জীবিকা শুধু না, চিন্তাশূন্য, প্রশ্নশূন্য, ফার্নেস মস্তিষ্কের চিরাগ।
...
কথাটা শুধু সততার না, গভীরতার
...