প্রতিটা মেয়ে আত্মগোপন করে সমাজে জন্মায়
সেদিন খাঁচার পাখি আর বনের পাখির মধ্যে তুমুল তর্ক হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথের গান কি কবিতা যাই বলুন, আমরা পড়েছি। তাদের মধ্যে যে একটা মিলনের পিয়াস ছিল, তাও পড়েছি। কিন্তু তা হয়নি। বিধাতার মনে কি ছিল সে জানি না, কিন্তু বনের পাখিটার মনে কি হয়েছিল তারপর, বনে ফিরে গিয়ে? তার কি একবারও মনে হয়নি যে খাঁচার পাখি যা বলেছে সে তার প্রাণের কথা নয়?
পাগল
পাগল ধেই ধেই করে নাচতে লাগল।
সবাই বলল,
এই পাগল কি হল?
পাগল বলল,
আমি সব বুঝে ফেলেচি...সব
সবাই বলল,
কি বুঝলে?
পাপের ইচ্ছা
পয়সাকড়ি নেই, মেয়েমানুষ পাবো কোত্থেকে?
কথাটা সত্যি নয়। সনাতন পুরোহিতের কথায় নেশা আছে। আজ অবধি কত মেয়েমানুষের সঙ্গ করেছে সে নিজেও গুনে বলতে পারবে না। সনাতন পুরোহিতের বয়েস ছাপান্ন। এক ছেলে অম্বর, এম. এ. পাস করেছে। সংসারে সচ্ছলতা নেই ঠিক, কিন্তু শান্তি আছে। অণিমা সব জানে। মাথা ঘামায় না।
প্রতিশ্রুতিবদ্ধ
এমন মানুষের সামনে তো আমাদের বসতেই হয় যে মানুষটা হয় তো আর কয়েক মাস পরে মারা যাবে। ডাক্তার বলে দিয়েছেন। যে মানুষটা মারা যাবে সে অনেক সময় স্পষ্টভাবে জানে, অনেক সময় আন্দাজে জানে। বেশির ভাগ সময়েই সে তথ্যে জানে না, কিন্তু অনুভবে জানে, সে আর থাকবে না। আমি দেখা করতে গেছি, যেমন আপনারাও কখনও না কখনও দেখা করতে গেছেন, 'অন্য কথা' খোঁজার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। 'স্বাভাবিক আচরণ' করার আ
প্যাণ্ডেল
পুজোর প্যাণ্ডেলে বাঁধা বাঁশগুলো বিয়েবাড়ি হয়ে যখন গৃহপ্রবেশের অনুষ্ঠানে বাঁধা হচ্ছে, বাচ্চাটা চীৎকার করে বলে উঠল, বাবা এই সেই বাঁশটা দেখে যাও, যেটায় আমি আমার নাম লিখেছিলাম অষ্টমীর দিন, বুম্বা, এক রকম আছে।
তার ডাক কেউ শুনল না। ছেলেটা আবার নাম লিখল তিনবার, বুম্বা বুম্বা বুম্বা। কেউ দেখল না।
পরিচর্যা
দিল্লী থেকে ফিরছি, ট্রেনে খুব অসুস্থ হয়ে পড়লাম। বেড়াতে গিয়েছিলাম বন্ধুরা সবাই, সঙ্গে কয়েকজন বন্ধুর পরিবারের লোকেরাও ছিলেন। দুরন্ত এক্সপ্রেস। থামার জায়গা কম। বন্ধুরা বেশ একটু উদ্বিগ্ন, কি হবে আমার এই নিয়ে। যা হোক রাতের দিকে সুস্থ হতে শুরু করলাম।
পেটটা যেন না কামড়ায়
সমস্যা হল মোমবাতিটা কোথায় রাখবে। কারেন্ট চলে গেছে। বাথরুমটা ঘুটঘুটে অন্ধকার। এই সময়টা রোজ গা ধোয়া অভ্যাস। নইলে কে ঢোকে এই সময় এই অন্ধকারে।
পরিণতি
ছেলেটা সাইকেলটা নিয়ে সরু গলির ভিতরে ঢুকেই গেল। এ গলিটায় আসার কথা ছিল না। গলিটার শেষে গঙ্গা, পাশে ইঁটভাটা। কিন্তু বুকের মধ্যে রাক্ষস ঢুকেছে। দু’হাতে বুকের ভিতরটা খামচে ধরে তাকে নাচাচ্ছে। পাগল হয়ে যাবে এক এক সময় মনে হয়। সাইকেলের হাতলদুটো শক্ত করে চেপে ধরে আছে, যেন নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছে না। সোজা গঙ্গায় চালিয়েও ঝাঁপ দিয়ে দিতে পারে। এই এত নরকযন্ত্রণার কারণ কে?
পাখি ভালোবাসো বলে
পাখি ভালোবাসো বলে
খাঁচা হতে গেলে কেন?
আকাশ হতে
কে বারণ করেছিল তোমায়?
পায়ের ছন্দ
কে বলল
সে শুধু আকাশ বেয়ে
অদৃশ্য রাস্তায় আসে?
খিড়কির দরজা দিয়েও আসে
পায়ে কাদা লেগে থাকে
চিনতে পারো না তাই
ফিরিয়ে দাও
অবিশ্বাসে
পঁচিশে বৈশাখ
গীতায় পড়েছিলাম, শ্রীকৃষ্ণের বিশ্বরূপ দর্শনের ঘটনা। তা অর্জুন তো অত অত ভয়ানক মূর্তি দেখে আঁতকে উঠে, হাতজোড় করে শ্রীকৃষ্ণকে বারবার রিক্যুয়েস্ট করে "মনুষ্য" রূপ দেখলেন এবং আশ্বস্ত হলেন। কিন্তু আমার কি হবে?
পার্ফেক্ট
তুমিও জানো আমি পার্ফেক্ট নই। আমিও জানি তুমি পারফেক্ট নও।
তবু আমি ভয় পাই যদি তুমি পার্ফেক্ট হয়ে থাকো। তুমি ভয় পাও আমি যদি পার্ফেক্ট হয়ে থাকি।
অগত্যা তর্ক করে আমি আমার ভয় আর তোমার ভান ভাঙাতে চাই।
প্যারালাল ওয়ার্ল্ড
অ্যাদ্দিন জানতুম প্যারালাল ওয়ার্ল্ড কথাটা একটা অতিজাগতিক তত্ত্ব হয় তো বা।
প্রজ্ঞা
প্রশ্ন - পাণ্ডিত্য ও প্রজ্ঞার মধ্যে পার্থক্য একটি করিয়া বাক্যে বুঝাইয়া লেখ।
উত্তর - করোনা হইতে রক্ষা পাইতে ও অন্যকে রক্ষা করিতে মাস্ক পরিধান আবাশ্যক - ইহা জানার নাম পাণ্ডিত্য।
সঠিক সময়ে, সঠিক মাস্ক, সঠিক উপায়ে ধারণ করিবার অভ্যাসকে বলে প্রজ্ঞা।
পাখিটা মরে না
পার্থক্য শুরু হয় পেন্সিল বক্স আর টিফিন বক্সের মান থেকে। তারপর টিফিন বক্সের ভিতর খাদ্যের মান, প্রকারভেদ থেকে। তারপর ইউনিফর্ম হলে কাপড়ের মান থেকে। সাইকেলের মান থেকে, বেল্টের মান থেকে।
প্রথম থেকে ভাবো
আটান্নোটা বসন্ত মাড়ানো মানুষটা
যে যেতে আসতে হাসিমুখে
কাঁচের দরজাটা খুলে দেয়
পাখি তুমি উদাস কেন
পাখি তুমি উদাস কেন? কি হারালে? ...
পাকদণ্ডী ও ঝিঁঝিপোকা
ছবি তুলতে জানেন? আমাদের একটা ছবি তুলে দেবেন? এই, এই যে, এই বোতামটা চিপলেই খচ্ করে আওয়াজ হবে, হ্যাঁ হ্যাঁ, এইভাবেই, দেখবেন পিছনে ঝর্ণাটা যেন আসে…
প্রথম কুঁড়ি মেলে যখন
প্রতিবিম্ব
আসামীর সাজা ঘোষণা হয়ে গেছে। এদিকে তাও সে কাঠগোড়ায় ঠাঁয় দাঁড়িয়ে। বিচারক বললেন, তুমি কিছু বলবে?0
আসামী হাসল। বলল, বলি?
বিচারক বললেন, কি মুশকিল, বলবে বইকি.. বলো….
প্রলাপ
অকালে রাণী গেলা
কি দরিদ্র জীবন জিয়ে
নেটিজেন কাঁদি উঠে
ফুকারি ফুকারি হিয়ে
বলে সবে ওগো রাজা
জাতীয় শোক কর ঘোষণা
পথে ঘাটে পর্দা টাঙি
হউক "ক্রাউন" প্রচারণা
কি নির্লজ্জ বিরাট বাবা
শোকতাপ নাহি মানে
গত রাণীর জাতীয় খেলা
এরই মধ্যে সেঞ্চুরি হানে?
ব্যাট উঁচায়ে আকাশ পানে
কি দম্ভ প্রকাশ করে!
প্রতিদিন
প্রতিদিন আমার একটা করে ঘোর ভেঙে যাক
প্রতিদিন আমি নতুন করে বুঝি
আমার বোঝার বাইরে সংসারে যা আছে
তা অসীম
প্রতিদিন আমি নিজের কাছে ফিরি
ধুলোকাদা মেখে
নিজেকে বলি, এই তো বেশ
একটা বুদবুদ হারিয়ে গেলে
সাগরের কিছু আসে যায় না
পড়োনি বুঝি!
অন্ধকারে আলো জ্বালতে সাহস লাগে। অন্ধকারে আলো জ্বালা তো শুধু নয়, আছে আলোকে বাঁচিয়ে রাখার দায়!
তাই, আলোর মধ্যে আলো জ্বেলে আছি বসে। নিভে যায় যদি, কেউ জানবে না। নিন্দে হবে না। বিদ্রুপ নেই, রূঢ়কথাও কেউ বলবে না।
কিন্তু অন্ধকারে নিভে যায় যদি আলো! কি গভীর হবে অন্ধকার আরো! কি ব্যঙ্গ, কি বিদ্রুপ, কি নিন্দা, কি তামাশা! থাক থাক, এত বড় দায় কে নেবে ভাই!
পাগলা সানাই
ছেলেদের তো কাঁদতে নেই। কি পৌরুষ দেখিয়ে, কি দাপট দেখিয়ে আয়োজন তো করলে। খুঁটিনাটি থেকে শুরু করে মাতব্বরি অবধি সব জায়গায় হাজিরাও দিলে। দেবে না?
পৃথিবী তোমার ধর্ম কি?
সবাই যে ধর্তব্যের মধ্যে ধরবে তা তো নয়। না তো কি সবাইকে আমিও ধর্তব্যের মধ্যে ধরব।
কোনো মানুষকে যখন জানি, তখন শুধুই তাকে জানি। যখন তাকে ভালোবাসি তখনই সে মানুষটা সত্য হয় আমার কাছে। আমার ধর্তব্যের মধ্যে আসে।
নইলে এই যে পোলাও আর আলুরদম খাওয়াচ্ছে, কেউ তো বলছে না, ও ঠাকুমা তুমি উঠে যাও, তোমার তো অন্য ধর্ম। কেউ তো বলছে না!
পাগল
সিধু একটা সিগারেট প্যাকেট একজন খদ্দেরকে বাড়িয়ে দিতে দিতে বলল, একটা
প্রশ্ন
সমস্যাটা হল একটা দিয়ে সবটা ব্যাখ্যা করা যায় না। যে রাজনীতি বোঝে, সে ভাবে রাজনীতি দিয়ে সবটা ব্যাখ্যা করবে। যে যৌনতা বোঝে সে ভাবে যৌনতা দিয়ে ব্যাখ্যা করাই বুঝি
প্যারিস আর টিপের পাতা
টিপের পাতাটা কই? ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারে নেই, ট্রে-টাতে নেই। তবে?
পাগলা অনুবাদকরে তুই বাঁধ
পাঁচ টাকার বাতাসা
যতীন তার মেয়েকে নিয়ে রথ দেখাতে এসেছিল। শুনল রথ চলবে না এ বছর। যতীনের চার বছরের মেয়ে বারবার জিজ্ঞাসা করছে, বাবা রথ কই রে? বাবা রথ কই? বাবা জগন্নাথ কই বাবা?
পোকা খুঁজছি
ফস্ করে কেউ মরে গেলে লোকে অনেকরকম কথা বলে। কেউ বলে, গ্যাস হয়েছিল। কেউ বলে, নেশা করত। কেউ বলে, আসলে গুপ্তরোগ ছিল, মানে এইডস।
পাথেয়
গোধূলির আলোতে
ধুলোকেও মনে হয় সোনার কণা
নদীর সাদামাটা জল যেন
গলানো সোনা
মধ্য গগনে না
দিগন্ত ছোঁয়া
নম্র কোমল আলোয়
সামনে এসে দাঁড়াও যখন
প্রেসারের ভাত
প্রেসার কুকারে ভাত রাঁধার অনেকদিন ইচ্ছা ছিল। ফ্যানা ফ্যানা চটচটে ভাত।
পেট গরমের তত্ত্ব
গতকাল এক ভয়ানক স্বপ্ন দেখে ঘেমে নেয়ে উঠলাম। আসলে শুতে যাওয়ার আগে বেশ কিছু তত্ত্বজ্ঞানী গুরুঠাকুরের পেজ
পুটু
পুটু প্রথম দুটো ক্লাসে মনই দিতে পারল না। মায়ের কাটা ঠোঁট, রক্ত, হা
পাপ আর প্রসাদ
শীতটা জাঁকিয়ে পড়তে দেরি আছে। তবু যতটা পড়েছে ততটাতে সুখ আছে, কামড়টা নেই। কানাই ঠাকুর ভ্যান নিয়ে বাজারের দিকে যাচ্ছে। ভ্যানে তিনটে বড় ডেকচি। খিচুড়ি দুটোয়, আরেকটাতে মিশেল তরকারি। সন্ধ্যে হয়ে গেছে। বাজার জমজমাট। সব্জী বাজার।