Skip to main content

ছেলেদের তো কাঁদতে নেই। কি পৌরুষ দেখিয়ে, কি দাপট দেখিয়ে আয়োজন তো করলে। খুঁটিনাটি থেকে শুরু করে মাতব্বরি অবধি সব জায়গায় হাজিরাও দিলে। দেবে না? দাদা বলে কথা। বোনের বিয়ে।

কিন্তু তারপর? বাইরে সাজানো গাড়ি দাঁড়িয়ে। মহিলারা কাঁদছে। আর তুমি? লুকাচ্ছ, বাথরুমে, ঠাকুরঘরে। প্রাণপণে খুঁজছ ফাঁকাঘর, নিজেকে ব্যস্ত রাখতে চাইছো এতে তাতে। জানো একটু পর ডাক পড়বে তোমার। ওই তো ডাকছে... আয়... আশীর্বাদ করে যা....

এইবার? সব মাতব্বরি, সব গা জোয়ারি, সব ঝামেলা, সব পিছনে লাগা, মারামারি, ঝগড়াঝাঁটি গলার কাছে দলা পাকানো না? এইবার চোখের সামনে সব ঝাপসা না? সামনে বেণারসীতে যে তার মুখও ঝাপসা। তুমি জানো সে তোমার চোখের দিকে তাকাবে না। ইচ্ছা করেই তাকাবে না। জানে তো সে তোমায়। তুমি এগোচ্ছো, বুকের ধপাধপ তোমার হৃৎপিণ্ডের আওয়াজ। সবাই তাকিয়ে। কি লজ্জা! কি লজ্জা!

ধানদুব্বো নিলে। মাথায় ছোঁয়ালে। হাত কাঁপল। নাকের কাছে টাটিয়ে আসছে সুনামি। সে পা ছুঁলো। তাকালো তোমার দিকে… ব্যস….

সব ভেসে গেল। কোথায় পৌরুষের দেমাক তোমার… কোথায় তোমার সব জারিজুরি? তুমি পালাচ্ছ। সব ঝাপসা। তবু ঘরের আনাচকানাচ তো সব চেনা। তুমি আবার আশ্রয় খুঁজছ। কিন্তু আর কতক্ষণ? এইবার যে সে গাড়িতে উঠবে। আবার ডাকবে তোমায়। তুমি কাছে যাবে না। দূর থেকে দাঁড়াবে। ফিরে আসবে শূন্য ঘরে। উৎসবের শেষ রেশটুকু মিশে কান্নায়। আনন্দের রেশ মাখানো কান্নায়।

একদিন পর। তুমি যখন যাবে। সে বসেছে সিংহাসনে। বাড়ি উপচানো অতিথি। তুমিও অতিথি, বোনের ঘরে। তাকে দেখে গর্বিত তুমি, কান্না কই? তার কাছে কান এনে জিজ্ঞাসা করছ, কেমন আছিস?

সে একগাল হেসে তোমার দিকে তাকিয়ে সজল পরিপূর্ণ চোখে বলল, ভালো আছি।

ব্যস! এই তো চাই। বাইরে বাজছে বিসমিল্লার 'পাগলা সানাই'। মনের মধ্যে গভীর তৃপ্তি। এইটুকু তো সুখ। এইটুকুই তো চাই।