দাগ
এমনকি জগদীশ যখন ইতিমধ্যে মৃত স্ত্রী'র শরীরটা টুকরো টুকরো করছে, তখনও তার মনে হচ্ছে সে ঠিক করছে। ঝুম্পা যখন জগদীশের করাল মুষ্টির মধ্যে থেকে শ্বাস নেওয়ার জন্য ছটফট করছিল তখনও জগদীশের মনে হচ্ছিল সে ঠিক করছে।
মৎস সাগর
মাছের বাজারে গিয়ে বুঝলেন গন্ধবোধটা তো একেবারে গেছে! এইবার?
এক একটা মাছ এনে এনে নাকের কাছে ধরেন, শোঁকেন, রাখেন, ঘামেন, আবার মাছ ধরেন, তোলেন, শোঁকেন, ঘামেন, রাখেন।
নৈবেদ্য
রবীন্দ্রনাথে ফেরার দরকার হয় না, রবীন্দ্রনাথে তো বাস। 'নৈবেদ্য' যখন রিফ্লেক্ট পাবলিকেশান সাত টাকায় বার করল, প্রায় দুশো কপি কিনে ফেললুম। যে আসে তাকেই দিই। যেন সদ্য বেরোনো কোনো কবির কাব্যগ্রন্থ। কেন? জানি, আবার জানি না। যেটা জানি সেটা হল, এ কাব্যগ্রন্থ অনেক ঝড়ের রাতে আগলে রেখেছে। যা জানি না তা হল কি করে আগলে রেখেছে তা বুঝি না। সব বোঝার কি ব্যাখ্যা হয়?
এমনই দুঃসময়
এমনই দুঃসময়
"মানবিক" হওয়াও
খবরের শিরোনাম হয়
যদি ভালোবাসবে
যদি ভালোবাসবে
তবে একটু সরে দাঁড়াও
একটু ছেড়ে দাঁড়াও
তোমায় কে বলল
গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়ানোকেই ভালোবাসা বলে?
যদি ভালোই বাসবে
তবে ভালোবাসার মধ্যে
একটা নীলাকাশ বৈরাগ্য রেখো
দেখবে
ভালোবাসা ফাঁস হবে না
সংস্কৃতিপ্রবণ বাঙালি মন
গতকাল বাংলা নিউজচ্যানেলগুলোর সাংবাদিকেরা বেশ বাড়াবাড়ি করে ফেলেছেন এই নিয়ে বিস্তর লোকজন বিস্তারিত লিখছেন, আপত্তি জানাচ্ছেন, বকাঝকা করছেন ইত্যাদি ইত্যাদি মানলুম। কিন্তু আপনারা আর কিছু দেখলেন না? মানে খেয়ালই করলেন না? মানে আপনাদের সংস্কৃতিপ্রবণ বাঙালি মনে চোখেই পড়ল না? হায় হায়! অগত্যা আমিই বলি।
কথা হয় না
কথা হয় না
দেখা হয় না
মন ঘুরে ফিরে তাকায়
বলে,
কথা হয়নি
দেখা হয়নি
আশা উন্মুখ হয়ে বলে,
হবে, হবে।
অভিমান বলে,
না হলেই বা কি!
ব্যথা বলে
এখন এ সব কথা না হয় থাক
ইন বিটুইন
১
---
"জল নেই, আপনি বাইরের কলটায় যান, পাবেন।"
তেদ্রোস
খালি খালি হু এর পেজে আপডেট দেখছি। তেদ্রোস মুখটা ভেটকে আবার না বলে বসে,
আমার যে আমি
যদি
দেরি হলে বর্ষা পাবে না গাছগুলো
মন যদি নদী হয়, তবে সে নদীর জোয়ার ভাটার সাক্ষী কে গোঁসাই?
গোঁসাই গোলাপ গাছের গোড়ায় আরেকটু মাটি চেপে বলল, চেতনা।
গোঁসাই উঠে দাঁড়ালো। কোমরটা ছাড়িয়ে নিয়ে বলল, আমার সঙ্গে এদিকে এসো দেখি একবার।
বাঘের গল্প বাঘের মুখে
কখন শুরু কখন যে শেষ
'আকালের সন্ধানে' বলে মৃণাল সেনের একটি সিনেমা আছে। বেশ ছোটোবেলায় দেখতে বসেছি। মানে যখনও মস্তিষ্কে আঁতেল কোষ জন্ম নেইনি। বিষয় হল, একদল মানুষ শুটিং করতে গেছেন গ্রামে আর সে গ্রামের দুর্ভিক্ষ অনাহার নানা ঘটনা ইত্যাদি। বুঝলামই না সিনেমাটা কখন কিভাবে শুরু হল আর কিভাবে কখন কেন শেষ হল। এরকম অনুভূতি পপকর্ণ ও ইডলি খেলেও হয়। ও মন কখন শুরু কখন যে শেষ কে জানে....তো সিনেমাটা দেখার
সত্যিকারের সমস্যা
আচ্ছা, এই যে এত এত ডাক্তারি পরামর্শ চলছে রাতদিন ফেসবুক জুড়ে, আসলে নকলে মিলে করিছে হাহাকার। এগুলোর দায় কারোর নেওয়ার নেই না?
সম্ভাষণ
যখন ছোটোবেলায় মামাবাড়ি যেতুম, মানে উড়িষ্যায়, আমার মামারা প্রবাসী বাঙালি, সেখানে রাস্তায় কারোর সঙ্গে দেখা হলেই, হয় "জুহার আঁগিয়া" বা "রাম রাম" এরকম কোনো একটা সম্ভাষণ আসত। বড়দের মধ্যেই অবশ্য। এর পর ভারতের নানা জায়গায় দেখেছি দেখা হলেই প্রথমে হয় "রাম রাম" নয় "রাধে রাধে" ইত্যাদি বলে সম্ভাষণের একটা প্রচলন আছে।
করবী
১
==
চেনা ফুলের গন্ধ। তবু ছেড়ে যেতে হবে। গন্ধের চেয়ে আপন কোনো স্মৃতি নেই। পোড়া উনুনের গন্ধ, ভিজে মাটির গন্ধ, মাথার তেলের গন্ধ, তেত্রিশটা বছর সঙ্গে কাটানো মানুষটার ঘামের গন্ধ, এই রেললাইনের গন্ধ... সব চেনা মৈত্রী রেড্ডি'র। বয়েস ষাটই হবে। স্পষ্ট মনে নেই।
বনসাই
এখন শোকে কেউ বিবশ হয় না
নিখুঁত নির্ভুল শব্দ চয়নে
তাৎক্ষণিক শোকগাথা লিখতে
শিখে গেছে শোকও
হৃদয় গভীর অরণ্য
কেউ হারিয়ে যায় না
সে অরণ্যেও ভিড় করছে
বনসাই
অনুভবটা বাস্তব
অন্ধকারে ভূত কল্পনা করে যেমন ভয় হয়,তেমনই এ বিশ্বসংসারের একজন চালক আছে কল্পনা করে ভক্তি হয়।
মজা হল, কল্পনাটা কল্পনাই, কিন্তু অনুভবটা তো বাস্তব। তাই অনুভবটা বাস্তব বলে মানুষ এরপর কল্পনাটাকেও বাস্তব বলে ভ্রমে পড়ে। ফলে ভগবান আর ভূত দুই-ই সত্যি হয়ে দাঁড়ায়।
গোলমেলে নীতি
স্বয়ং রামচন্দ্র আড়াল থেকে তীর মেরেছিলেন। কিভাবে? না বালি সুগ্রীবকে তো একইরকম দেখতে। চিনতে পারছেন না। এদিকে সুগ্রীবের শর্ত যে পথের কাঁটা সরিয়ে দিতেই হবে, চুক্তি সেরকম। তখন চিনতে না পেরে কৌশল করে বালিকে বধ করা হল। কথা হল সুগ্রীব মালা পরে থাকবে। বালি পরবে না।
পাখি ভালোবাসো বলে
পাখি ভালোবাসো বলে
খাঁচা হতে গেলে কেন?
আকাশ হতে
কে বারণ করেছিল তোমায়?
কখন মিলিয়ে গেছে রাজা!
সমস্ত আয়োজন সারা
একশো আটটি স্বর্ণদীপে
জ্বলজ্বল করছে কম্পিত শিখা
ঘন্টাবাদক, শঙ্খবাদক প্রস্তুত
নববেশে,
তরুণ অঙ্গের কি শোভা!
স্নিগ্ধ দিব্য
ভাবগম্ভীর পরিবেশ হল সৃষ্টি
পায়ের ছন্দ
কে বলল
সে শুধু আকাশ বেয়ে
অদৃশ্য রাস্তায় আসে?
খিড়কির দরজা দিয়েও আসে
পায়ে কাদা লেগে থাকে
চিনতে পারো না তাই
ফিরিয়ে দাও
অবিশ্বাসে
হাস্পাতাল
সারা পৃথিবীতে একটা জায়গাতেই জাতি-ধর্ম-বর্ণ ইত্যাদির শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে তর্ক হয় না, সেখানে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কেবলমাত্র মানুষের মঙ্গল নিয়েই এই নিয়ে আলোচনা, ব্যস্ততা - সে হল হাস্পাতাল।
এই বেলা?
ওই তো ক্ষুদে ক্ষুদে পা, বার পাঁচ ছয় ফেললেই ঝুলবারান্দাটা শেষ। বাচ্চাটা কি উন্মাদনায় সেইটুকুই প্রাণপণে দৌড়াচ্ছে বিকেলে। আকাশে ওড়া কোনো বাড়ির সাদা পায়রাদের দেখছে, হাত নাড়ছে, আবার দৌড়াচ্ছে। সাদা মেঘে বিকেলের হলুদ আলো। নীড়ে ফেরা বকের দল। এলোমেলো বাতাসের নারকেল বন কাঁপিয়ে যাওয়া। দীঘির জলে ঢেউ তুলে যাওয়া। সব হচ্ছে। ওই তো রাস্তা দিয়ে একদল কুকুর দৌড়াচ্ছে। হেঁটে গেল কি বড় একটা
যদি পারো
জীবন তো পোষ্য নয় বলো
যে তাকে দরজার কাছে বেঁধে রাখবে
একটা বিস্কুট কি মিষ্টি ছুঁড়ে দিলে
তোমার মুখের দিকে তাকিয়ে
লেজ নাড়বে
রবীন্দ্রনাথ
চন্দ্রিলের একটা ভিডিও খুব ভাইরাল এখন। রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বলা কিছু কথা। একটা বিশেষ দিনের ঘটনার কথা বলেছেন চন্দ্রিল। কিভাবে একটা অত্যন্ত ক্লেশদায়ক, দুঃসহ, অসফল যাত্রার মধ্যেও রবীন্দ্রনাথ কিভাবে পাঁচটা গান লিখে গেছেন। অনেকেই দেখে থাকবেন ভিডিওটা। যারা দেখননি স্ক্রোল করতে করতেই পেয়ে যাবেন, এ তো ভ্যাক্সিন না যে আপনাকে আপাতত ষোলো হপ্তা অপেক্ষা করতে হবে প্রথম ডোজ নিয়ে।
ঘুড়ি
১
===
ঘুড়িতে চড়িয়ে পিঁপড়ে ওড়ায়। কিন্তু সে পিঁপড়েরা কি ফেরে? ফেরে না তো! আকাশে মিলিয়ে যায়? তাই কি হয়? মাটিতেও তো পড়ে না। তবে?
জীবনশৈলী
একটা সময় ছিল কুঁজো, ওয়াটার বোতল নিয়ে ট্রেনে উঠতাম। স্টেশান এলেই দৌড়ে গিয়ে জলের বোতল ভরে নিতে হত। বা অনেকক্ষণ ট্রেন থামার থাকলে কুঁজো নিয়েও দৌড়াতে হত। এ স্মৃতি অনেকেরই থাকবে।
একটা সময় ছিল যখন চাপাকলের জল ভারী এসে ড্রামে ঢেলে দিয়ে যেত। সেই ছিল কলের জল, রান্নার জল।
দেরি হয়ে যাচ্ছে যে
যে সে নয়, মায় স্বামীজির বইতে পড়েছি, যে কখনও কাঁদেনি তাকে নাকি বিশ্বাস করতে নেই। ঋষিবাক্য। মনে বুকে গেঁথে নিয়েছিলাম।
এও তবে সভ্যতা
সারা বিশ্বজুড়ে ভারতের করোনার এক ভয়াবহ ছবি দেখান হচ্ছে - নদীতে ভাসছে মৃতদেহ। নিশ্চিত নয়, তবু আশঙ্কা করা হচ্ছে এ করোনায় মৃত মানুষের দেহ।
খোলস
গুরু কাঙাল জানিয়া পার কর
আজ সকাল থেকে নির্মলেন্দুবাবুর একটা গানই মনে পড়ে যাচ্ছে - সর্প হইয়া কাটো গুরু, ওঝা ঝাড়ো....
কথা হল, কেন মনে পড়ছে?
পঁচিশে বৈশাখ
গীতায় পড়েছিলাম, শ্রীকৃষ্ণের বিশ্বরূপ দর্শনের ঘটনা। তা অর্জুন তো অত অত ভয়ানক মূর্তি দেখে আঁতকে উঠে, হাতজোড় করে শ্রীকৃষ্ণকে বারবার রিক্যুয়েস্ট করে "মনুষ্য" রূপ দেখলেন এবং আশ্বস্ত হলেন। কিন্তু আমার কি হবে?
আমায় লজ্জা দিও না
উনি হয় তো একটাই কথা বলতেন,
ঝাঁপ
আমি কি তোমাকে বলেছি
আমি কি তোমাকে বলেছি
আমার ভীষণ ভয় করছে
আমি কি তোমাকে বলেছি
আমি তোমাকে হারাতে চাই না
আমি কি তোমাকে বলেছি
আমি হারিয়ে গেলে
সামলে নিও নিজেকে
শুনলাম
শুনলাম প্রাণায়ামে কোভিড সারে কিনা এই নিয়ে গবেষণা শুরু হল।
সেই থেকে আতঙ্কে খবরের কাগজ, ব্রেকিং নিউজে চোখ রাখছি প্রাণ হাতে করে। হঠাৎ না ঘোষণা হয়, আগে গাভীদের (বাছুরসমেত) ভ্যাক্সিন দেওয়া হবে, তারপর আবার মানুষদের। বলা যায় না!
যদি অনবরত
আমি তুমি ঢেউ
প্রাণ শেষ হয়।
প্রাণধারা নয়
শরীর পুড়ে যায়।
চেতনা নয়
আমি, তুমি ঢেউ
মিলিয়ে যেতেই পারি।
এ মহাসমুদ্র শুষে নেবে
এত ক্ষমতাশালী তুমি নও।
সাদা মেঘ
মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়েই দেখল চাঁদের দুপাশে দুটো ডানা। নীল ডানা। সেই নীল ডানার নীল রঙ দিয়েই আকাশটা নীল। আর চাঁদের গা থেকে জোনাকির মত আলো বেরিয়ে বেরিয়ে হয়েছে তারা। এত তারা। আঙুলের কড়ে গোনা যায় না। এমনকি খাতাতেও লিখে শেষ করা যায় না।
লড়াই চলছে
শুধু জ্বলন্ত শ্মশান তো নয়
শুধু মৃত্যুর সংখ্যাও তো নয়
লড়াই চলছে
কেউ গলা উঁচিয়ে
শিরা ফুলিয়ে
মুষ্টি বাগিয়ে বলুক
খবরের কাগজে
প্রথম পাতায় বলুক
একি শুনি
ও দাদা, ও মহারাজ
একি শুনি
বন্ধ নাকি আইপিএল
দেশের ভাগ্যে একি খেল!
"আইপিএল না হলে দেশের লোকে হত পাগল"
এই তো সেদিন
এই তো সেদিন
মঠে এসে রাত কাটালেন
সবাই বলল,
ফকিরি নাকি ওঁর স্বভাবে
গণতন্ত্রের সমস্যা
রাসেল বলতেন পুলিশ আর বিচারক, গণতন্ত্রের দুটো বড় সমস্যা। যদি এ দুটো ঠিকঠাক না হয় তো।
Floccinaucinihilipilification
কিছু নিন্দুক আমাকে ভৎর্সনা করিয়া বলিতেছেন ধর্মে আমার মতি নাই, তাই এ হেন ভৌটিক ফলাফলে কোনো আসন্ন স্বজাতি অবলুপ্তির আশঙ্কা করিতেছি না। অপরদিকে বামাচারী রাজনীতির বন্ধুরা চক্ষু রাঙাইয়া বলিতেছেন আমি আমার বৌদ্ধিক ক্ষমতার যথোপযুক্ত ব্যবহার করিতেছি না। অতএব এমত অবস্থায় আমায় আত্মপক্ষ সমর্থনে গুটিকয়েক কথা না বলিলেই নয়।
মোহ
"আমরা চিরটাকাল মানুষের পাশে আছি"।
এও এক মোহ। এও এক অহংকার। এও এক মিথ্যাভাষণ।
"আমরা জীব উদ্ধার করব, আমরা বিপথগামী মানুষকে ঈশ্বরের পথে আনব। আলো দেখাব।"
এও আরেক মোহ। আরেক অহংকার। আরেক মিথ্যাভাষণ।
দিশা
ইহাই রামের জয়
রামকৃষ্ণ হাসি কয়
ধর্মে ধর্মে ভেদাভেদি
এ মাটিতে নয় নয়
জয় রাম, মহাবীর
চিদাকাশে রহো স্থির
ক্ষমতালোলুপ চিত্ত
নহেরে রামেতে ধীর
রাজা এবে মন দাও
প্রজা ভুলি কেন ধাও ইতিউতি
হরিল গরব রামে
এবে ধরো ধর্ম হালে
আসুক ফিরিয়া শুভমতি
কি করিব ভাবি
ত্যাজিলাম সব কিছু
জনসেবা লাগি
এবে জনগণ ত্যাজে যদি
কি করিব ভাবি
মুখ দেখাব কি করে
আজ এক খুদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। সে গল্প করতে করতে বলল, আজকে আমি ক্রিম দেওয়া বিস্কুট খেয়েছি....জানো তো, আমি যখন স্কুলে যেতাম, তখন মা টিফিনবক্সে আমায় এই বিস্কুটটা মাঝে মাঝেই দিত..