Skip to main content

আজ সকাল থেকে নির্মলেন্দুবাবুর একটা গানই মনে পড়ে যাচ্ছে - সর্প হইয়া কাটো গুরু, ওঝা ঝাড়ো....

    কথা হল, কেন মনে পড়ছে?

    খবরে পড়লাম চীন থেকে অক্সিজেন কনসেনট্রটর ইত্যাদি আরো নানা সামগ্রী এসে পৌঁছালো ভারতে। তা ভাবুন, হল না সেই কথা? মানে ভাইরাসও দিলি বাবারা আবার এইসবও পাঠাচ্ছিস! 

    তারপর ওদিকে ‘হু’-এর বরিষ্ঠ বিজ্ঞানী সৌম্য স্বয়ামিনাথন, আরে সেই যে আমাদের সবুজ বিপ্লবের বিজ্ঞানী এম এস স্বয়ামিনাথনের মেয়েটা গো... তো সে বেটি বলে কিনা আমাদের এই ভারতীয় ভাইরাস নাকি কোনো ভ্যাক্সিনের বাধা মানছে না। হল? তার পরক্ষণেই আবার ফাউচি জেঠু বলছে আপামর ভারতীয়কে ভ্যাক্সিনস্থ না করলে নাকি এ সংকট কাটার নয়?

    অর্থাৎ চাদ্দিকে বড় কনফিউশান। ওই সর্প হইয়া কাটো গুরু ওঝা হইয়া ঝাড়ো....

    রাতদিন সবাইকে বলছি সাবধানে থাক.... আমাকেও সবাই বলছে সাবধানে থাক..... কিন্তু কতটা সাবধান হলে তাকে সাবধানী বলা যায় সে না জানে সুমন না জানে বব ডিলান। না জানে ফাউচি না জানে আমাদের গগনদীপ। নইলে ভাবুন এত এত বড় বড় মানুষেরা, ডাক্তারেরা যারা সংক্রামিত হচ্ছেন তারা কি মাস্ক খুলে ধম্মতলায় ধেই নেত্ত করছিল, না কুম্ভে গেসলো, না মিটিংমিছিলে গলা ফাটায়েছিল? তবু সাবধানে থাকতে হবে। কিন্তু কতটা? আবার সেই সাপ আর ওঝার গল্প। 

    এখন বলে বাতাসেও সে নাকি ঘুরে বেড়ায় ক্ষুদ্র তরল কণিকা হয়ে। ভেসে ভেসে নাকে মুখে সেঁধোলেই হল। নাও, এবার সারাক্ষণ কি তবে মাস্ক পরে থাকব? এ হল সর্প পর্ব। এবার ওঝার পর্ব কি? না, ঘরে পর্যাপ্ত ভেণ্টিলেশান থাকলে তবে নাকি সে ভাইরাস হাওয়া খেতে বাইরে চলে যাবে আমার নাক মুখের মিউকাসকে রেহাই দিয়ে। এখন কথা হল কতটা কতটা ভেন্টিলেশান হলে তাকে পর্যাপ্ত ভেণ্টিলেশান বলে? কেউ বলে না। 

    সর্প হইয়া কাটো গুরু... ওঝা হইয়া ঝাড়ো......

    এ গানের প্রথম লাইন কি বলেন তো? আহা... কি গান গো.... গুরু কাঙাল জানিয়া পার কর.... ঘোর লেগে যায় শুনতে... নির্মলেন্দুর গলা যেন অক্টোপাসের চোরাবালি। না ভুলভুলাইয়া। ডুবেই যাচ্ছি। আটকিয়েই যাচ্ছি। হারিয়েই যাচ্ছি। 

    গুরু কাঙাল জানিয়া পার কর..... এই গানই শুধু বেজে চলেছে....

    এমন কাঙালপনা তো আগে দেখিনি গুরু.... এমন হাহাকার... এমন দিশাহীন কি আগে হয়েছি গুরু.. জন্ম থেকে অসহায়..... সে মানুষ জন্মেই অসহায়.... মা তুলে স্তন দিলে তবে সে বাঁচে.... পশু কেমন লাফিয়ে নেচে জন্মের পরেই নিজের অধিকার ছিনিয়ে নেয়... মায়ের স্তনে তার অধিকার... আমাদের তো সে ভাব দাওনি গুরু.... মানুষ তো জন্ম অসহায়.... মা কোলে তুলে নিলে সে স্তনের নাগাল পায়... প্রাণে বাঁচে.... গুরু এত এত মানুষের হাহাকারে চুপ কেন গো..... কোলে তোলো.... পার কর.... হাল ধরো গুরু... হাল ধরো..... গুরু কাঙাল জানিয়া পার কর.....