Skip to main content

যে সে নয়, মায় স্বামীজির বইতে পড়েছি, যে কখনও কাঁদেনি তাকে নাকি বিশ্বাস করতে নেই। ঋষিবাক্য। মনে বুকে গেঁথে নিয়েছিলাম। 

    আমি যে মাননীয়কে অনেকবার কাঁদতে দেখেছি। অনেকবার। না, সামনাসামনি সশরীরে নয়। টিভির পর্দায়। আবেগে গলা বুজে এসেছে। পাশে রাখা জলের গ্লাস থেকে দু ঢোক জল খেয়ে আবার বক্তব্য রেখেছেন। আমি নিজের চোখে দেখেছি। একবার নয়, বহুবার। তবে? নিন্দুকে বলবে, ও নকল। সে আমি বিচার করার কে বলুন, কোনটা আসল, কোনটা নকল?

    কিন্তু এখন? এক্কেবারে চুপ! আশ্চর্য, বাংলার এ প্রান্ত থেকে সে প্রান্ত, এই তো মাত্র কয়েক দিন আগেও যার কণ্ঠস্বরে মুখরিত হয়ে উঠেছিল, সে কণ্ঠস্বর একেবারে স্তব্ধ? তবে কি শোকে? মানুষ শোকে পাথর হয় শুনেছি। একি তাই তবে? এতবড় দেশ, এত অসহায়তা, এমন সময়ে এমন নিস্তব্ধতা বিপিতৃসুলভ বোধ হয় না? হয় তো। 

    ওদিকে একজন অভিনেতা, মানে যে সত্যিকারের অভিনেতা। সেটাই যার পরিচয়, তার সীমিত পুঁজি নিয়ে এইভাবে বন্যা আটকাবার ব্রত নিয়ে ফেলল? এও হয়! একদিন না, দুদিন না, পুরো বছর ধরে? "এই নে টাকা দিলুম তোদের ফাণ্ডে", এরকম বলে তো কত নামীদামী মানুষ টাকা দিয়েছে। অবশ্যই সে অনেক বড় কাজ। কিন্তু এইভাবে নিজেকে দিয়ে দেওয়া? আশ্চর্য কথা। অথচ যে মানুষটার দেশ জোড়া পুঁজি, সে মানুষ স্তব্ধ। একবার এসে এইটুকুও বলল না, স্বামীজির মত, 'নৌকায় ছিদ্র হয়েছে, এসো মেরামতে লাগি, আর যদি সে ছিদ্র বুজাতে না পারি, তবে এসো একসাথে ডুবি।'এইভাবেও তো বলা যায়! বাড়ির বড়রা চূড়ান্ত দুর্যোগে বারবার বলেন না, ঠিক হয়ে যাবে, আমি আছি। ওতে ঠিক হয় না সব কিছু দুম করে, কিন্তু মনোবল তো বাড়ে! তার উপরেই সব দায়িত্ব যে! 

    তরুণ প্রজন্ম প্রতিষেধকহীন, আক্রান্ত সুষ্ঠু চিকিৎসাহীন, মৃত সৎকারহীন....আর কবে বলবেন মাননীয়? দেরি হয়ে যাচ্ছে যে!