"আমরা চিরটাকাল মানুষের পাশে আছি"।
এও এক মোহ। এও এক অহংকার। এও এক মিথ্যাভাষণ।
"আমরা জীব উদ্ধার করব, আমরা বিপথগামী মানুষকে ঈশ্বরের পথে আনব। আলো দেখাব।"
এও আরেক মোহ। আরেক অহংকার। আরেক মিথ্যাভাষণ।
বলি মানুষ কি নির্জীব এক বস্তু? চেতনহীন, আত্মবোধহীন এক বস্তু? মানুষ মানুষই। হঠাৎ হাওয়া থেকে উধাও হয়ে তার পাশে দাঁড়ানো, তাকে আষ্টেপৃষ্টে জাপটে ধরে আত্মীয়তা ঘোষণা করা। এ সবই বাপু বাড়াবাড়ি। মানুষের পাশে চিরটাকালই মানুষই এসে দাঁড়িয়েছে। তার জন্য কোনো রাজনৈতিক পতাকা বা ধর্মীয় পতাকা লাগে না ভাই। তার জন্য শুধু একজন সংবেদনশীল মানুষ হলেই হয়।
কিন্তু দুই দলের মানুষ আছে। এক যারা সব বোঝে, কারণ তারা জানে ঈশ্বর নাই, আর তাদের এক জগৎ-উদ্ধারণ নির্ভুল নীতিমালা আছে। আরেকদল আছে তারা সব বোঝে কারণ, তারা জানে তাদের একজন বিশেষ ঈশ্বর আছে, বিশেষ ধর্মীয় মত আছে।
এই দুই গোলমেলে। মানুষের পাশে থাকি বলেই আমরা সবাই মানুষ। তার জন্য কোনো ধর্মীয় মত, কোনো রাজনৈতিক মতের ঘানি টানার দরকার নেই বাপ। ওগুলো দুর্বলতার লক্ষণ। হ্যাঁ, যদি বলেন রাজনীতি করতে এসেছি, যদি বলেন একটা বিশেষ ধর্মে সবাইকে দলে টানতে এসেছি - তবে বুঝতে অসুবিধা হয় না। কিন্তু খামোখা মানুষের জন্য ওসব কান্নাকাটি, পাশে দাঁড়ানোর গল্পটা ছাড়ুন বাবারা।
আমি এদ্দিন বেঁচে এইটুকু সার বুঝেছি, মানুষ হতে গেলে শুধু মানুষ হতে হয়। নানা রাজনৈতিক, ধর্মীয় বিশ্বাস সবই গোলকধাঁধা। ওতে কিস্যুটি হয় না। তবে বলতে পারেন এই যে নানা সরকারের নানা প্রকল্প?এগুলো জনদরদী না? ভাইরে অবশ্যই জনহিতকারী। আমি যখন টিকিট কেটে ট্রেনে উঠি তখন ড্রাইভার আমায় গন্তব্যস্থানে পৌঁছে দেয়, সে আমার প্রতি দরদে না, সে তার কর্তব্য বলে। এও তেমন, ওগুলোর না করলে কি আর রাজত্ব থাকে? তাই দরদ বলে ঠকাবেন না। প্রকল্প শব্দটা ভালো। দরদ বড় মানবিক শব্দ।