সেই ঢের
আমার কথা তুই বুঝিস না,
এত নিশ্চিন্ত তাই তোকে নিয়ে
আমায় তো বুঝিস!
আমার কথার জালে আমি নিজেই থাকি জড়িয়ে,
তুই ছাড়া তোর প্রাণের আনন্দে
আমার ভাবনা পেরিয়ে আমায় ছুঁতে তো পারিস!
আমার গান, তাল, লয় কিছুই বুঝিস না,
মুখ্যু ঢেকি
কেন গাইতে চেয়েছিলাম, সেটা তো বুঝিস!
সেই নদীটা
রাস্তার ধারে ধারে একটা বিষন্ন নদী
আমার চলা-ফেরার দিকে তাকিয়ে থাকে
অপলক
আমাদের দৃষ্টি বিনিময়ের মধ্যে থাকে
কিছু কথা লুকানো
জানি সে কথাগুলো ওর বুকে নুড়ি হয়ে
স্বামীজি
তুমি যুক্ত করতে চেয়েছিলে
নিজের বৈশিষ্ট্য না হারিয়ে মেলাতে চেয়েছিলে
সব ধর্মকে বললে
মিলিত হও মানবধর্মে।
প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যকে বললে
মিলিত হও ধর্মে ও বিজ্ঞানে।
ধর্ম ও যুক্তিকে বললে
মিলিত হও হৃদয়ে ও মস্তিষ্কে।
ব্যষ্টি ও সমষ্টি জীবনকে বললে
মিলিত হও সত্যে ও সেবায়।
পুরাতন ও নূতনকে বললে
মিলিত হও উদারতা ও শ্রদ্ধায়।
সেই বিকালটা
সরে বাঁচা
একটু সরে সরে বাঁচার অভ্যাস এখন
বেশি গায়ে গায়ে থাকলে উত্তাপ বাড়ে
বাঁকা চোরা গলিতেই পেয়েছি সোজা পথ
তর্ক যুক্তির বেড়াজাল টপকে মাঠে এখন।
কানে আঙুল দিয়ে ফাঁকা পেট বাচ্চাটার কান্না ভুলি না,
ফাঁকা পেটে আমারও বমি পায়।
দুটো হাত প্যান্টের পকেটে ভরে
নিজের কথা ভাবতে ভাবতে যারা অন্যের কথা শোনে
ওদের দুয়ো দিয়ে, ওদের পিছনের রাস্তায় নেমে গেছি,
সেদিন
ছোটবেলায় পড়েছিলাম
বাচ্চাটা বলেছিল, "যেতে নাহি দিব"।
আজ ছোট্ট ভাগ্নে বলল, "যেতে তো হবেই"
এটা প্রজন্মের পার্থক্য নাকি বোধের অকাল বোধন?
সেটা সত্যিই দুর্দিন হবে
যেদিন একটা বাচ্চার বায়না হবে যুক্তিসম্মত।
সাথে সাথে
তোমার সাথে সাথে ঘোরে
...
সাজের বাক্স
...
সারা জগতে
সারা জগৎ তোমায় ঘিরে মাথা নীচু করে দাঁড়াবে
...
স্ব-মোহে
তূণে বিষাক্ত তীর রেখেছ
তলোয়ারে শান দিচ্ছ দিনরাত
বল্লমগুলোকে ক্ষুরধার করছ
...
সামলে চলো
আমার ধর্ষণ করতে ইচ্ছা করে
...
সহযাত্রী
...
সেই ছেলেটা
এদেশে এল,
এল মানে, আসতে বাধ্য হল।
...
সংশয়
-কে?
-সংশয়
-কি চাই?
-কিছু প্রশ্নের উত্তর
...
সে হয় না
আপত্তি নেই।
তোমার বদলে যেন কেউ না আসে
সহ্য হবে না, যেই হোক না
...
সিদ্ধান্ত
পাত্তা দিলেই ওদুটো মাথায় চড়ে বসে।
আমি শুধু দেখি, যে পা-টা তুলেছি ফেলার জন্য
সেই পা-টাই তুলতে চেয়েছিলাম কি না।
...
সিঁড়ি
চিন্তার ছাদে একা
নামা ওঠার সিঁড়িও আছে
...
সত্য
তাতে তোমার ভাল লাগুক আর নাই লাগুক।
সত্য হারিয়ে উদ্বাস্তুর মত বেঁচে থাকার চেয়ে
তা অনেক ভাল।
...
সর্বনাশী
আর
চোখের শাসনে
নাজেহাল আমি।
...
সকাল
বলল, তাকাও একবার আমার দিকে।
আমি ব্যস্ত ছিলাম আপন কাজে।
...
সব জানি
অনেকগুলো ছোট ভুলের জাল বিছিয়ে
সমর্পণ
বিন্দু বিন্দু মনের গুঁড়ো ছড়াচ্ছে সারাটা দিন জুড়ে। জড়ো করতে গেলে খেলনার মত রূপ। যার মানে নেই। একটা গাছের শুকনো ডাল, দূর থেকে ভেসে আসা মানে না বোঝা কথা, বাতাসের হাল্কা গা ছুঁয়ে যাওয়া - এ সবারই কোনো ব্যাখা নেই।
সতর্ক
সমর্পণ
খুব ভয় হয়
স্পর্ধা
সত্য উত্তর
সরাসরি
আমি কারোর মাধ্যমে কিছু চাইনি কোনোদিন
ভালোবাসাকে চেয়েছি ভালোবাসার জন্যই
ঈশ্বরকে চেয়েছি ঈশ্বরের জন্যই
তাই আমার দরজায় সেজে আসতে হয়নি
কাউকে কখনো কোনোদিন
যে এসেছে, সে সহজ বেশেই এসেছে সহজেই
স্বপ্নাতীত
কে ডেকেছিল?
কার ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম?
আমার সাথে কার যেন দেখা হয়েছিল। ঠিক কদিন আগে?
আমার হঠাৎ ভাঙা ঘুম পায়ের তলায় মাটি না পেয়ে
অভ্যাসের ডাঙা খোঁজে। হাতড়িয়ে বেড়ায় এর ওর মুখ।
পরিচয় ছিল তো একটা আমার -
বুকে, মাথায় করে টাঙিয়ে নিয়ে ফিরেছি সে অহং
দীনতার ছদ্মবেশের আড়ালে
স্বামীজী
বেলুড়মঠ, শান্তিনিকেতন - এগুলো পার্কসদৃশ, কিছুটা উচ্চমার্গের বিনোদনস্থল আজ। কোনো রসালো মিষ্টি বানানোতে বিফল হলে, মা-কাকিমাদের মুখে একটা কথা শোনা যায় - ইস্, রসটা ভিতরে যায় নি রে!
স্বামীজি
বললে
তোমার ভিতরের সুপ্ত দেবত্বকে জাগাও
তাকালাম অন্তরে, বললাম
ঘন অন্ধকার। আলো কই?
সুখ
সুখ খুঁজে মন জনম গেল
হেঁটে বেড়াস কানাগলি
কি সুখে সব সুখ খোয়ালি
নিজেই নিজের চোরাবালি
ডুব দে রে মন মাঝপুকুরে
জলে ছায়ার মায়া ছাড়
লাগবে মাটি পায়ের তলায়
মন একডুবেতে ছারখার
সবাই আলাদা আলাদা শুয়ে
সবাই আলাদা আলাদা শুয়ে। কেউ কারোর পাশে নেই। শুকনো কিছু পাতা উড়ে বেড়ায় ওদের উপর দিয়ে। ওরা টের পায় না। মাটির কাছে থাকলেও চারদিকে তাদের অসংবেদনশীল আস্তরণ। তার উপরে আসা যাওয়ার তারিখ লেখা। তারাই কথা বলে এখন।
সাধ
বয়স্ক মানুষটার চোখ বোজার সময় এল
ছুটে গিয়ে দু'পা জড়িয়ে বললাম -
ওগো একটু দাঁড়াও। পুরোপুরি চোখ বোজার আগে বলে যাও, কি পেলে, কি বুঝলে এতবড় জীবনটায় বেঁচে?
সে হাসল। চোখের জল গাল গড়িয়ে পড়ল বালিশে।
সে বলল, পেলাম জীবন -
এক সমুদ্দুর দুঃখ, তাতে কয়েক ডিঙি সুখ
সত্যের গায়ে জমে না মেদ
যেখানে নাকি অনেক নীতি, উচ্চাদর্শ
মহাপুরুষের গুষ্ঠিবাস
তারও নীচে জমছে ক্লেদ
তাদের কাছে যাচ্ছে যারা সরল মনে
ঠকছে তারা
এসব দেখে দেখে জমছে খেদ
সত্য বস্তু
সত্য বস্তু চিত্তে বাঁধা
তারে খুঁজতে গেল জনম আধা
এমন গোলক ধাঁদায় ঘোরায় যে রে
সে জন কোন জনা?
চিত্ত ক্লান্ত মিথ্যা ভেকে
যারে হন্যে হলেম ডেকে ডেকে
সে যে সব ঘরেতেই আছে বসে
হয়ে একজনা
সত্য বলো, সুপথে চলো
লালন সাঁই এ মন্ত্র দিল
সে ধন পাবে যদি মন সামলে চলো
ভাগাও ছয়জনা
সোজা সাপটা
সত্যে মিথ্যায়
আলোতে আঁধারে
জড়ানো চিরটাকাল
ছিল, আছে, থাকবেও
কিছু মানুষ চীৎকার করে ধূলো উড়াবে
বিভ্রান্ত করবে
তাদের আছে উদ্দেশ্যের দায়
এরাও আছে চিরটাকাল, থাকবেও