সেদিনের বিকালবেলাটা মনের সামনে হঠাৎ দাঁড়াল এসে আজ। দেখলাম তার সাজ বদলায় নি একটুকুও। সেই উদাস সরল তোমার দুটো চোখ, পড়ন্ত বিকালের রোদ তোমার মুখে। গ্রীষ্মের বিকালের উত্তপ্ত হাওয়া বুনোফুলের গন্ধ নিয়ে তোমার গায়ের সাথে মিশে আমায় ছুঁয়ে যাচ্ছে, আমার মনকে গোপনে উদ্বেল করে। আশপাশটা ভাল করে বোঝার বয়স সেটা ছিল না। নিজেই নিজের কাছে সে এক পরম বিস্ময়! সে তোমায় যত না দেখত তার থেকে বেশি দেখত নিজেকে। সবই নতুন তার কাছে তখন। তুমি, তার চারপাশ, সে নিজে, যেন আবিস্কার করতে হবে সব কিছুকেই! এ কেমন অনুভূতি, আমি এখনও সেই অনুভূতিটাকে স্পর্শ করতে পারছি।
আজ সেই সরলতা নেই। আজ সে বিকাল আসে না। হয়তো তুমিও এ পৃথিবীর কোনো খন্ডে আছো, হয়তো নেই। জানি না, আর জানতেও চাই না। পৃথিবীটার সাথে আমিও নিজের কাছে নিজে বেশ পুরোনো আজ। সে কৌতুহলটাও আর নেই। পাহাড়ে উঠি, সমুদ্রে ঝাঁপাই, জঙ্গলে ঘুরি - সব যেন খুব চেনা। শুধু হৃদয়টা ছাড়া। এতবড় শরীরটার একটা সীমা পেলাম। তার সুখ দুখ ভয়ের একটা হিসাবও পাই। কিন্তু তার মধ্যের এই একহাত বুকটাকে আজও বুঝতে পারলাম না। কি রহস্যে সে আমার সাথে ফিরছে আমায় নিয়ে, জানি না। শুধু জানি সে চিরপুরাতন হয়ে চিরনবীন। তাই সময়ের নিরিখে তুমি পুরোনো হয়ে গেলেও, আমার বুকটার কাছে তুমি সেই একই রুপে, একই মাধুর্য্যে স্থির। হয়তো এভাবেই থেকে যাবে অনন্তকাল ধরে! সেই বিকালের খন্ড মুহুর্তটা কার মন্ত্রবলে চিরকালের হয়ে উঠল কে বলবে?