Skip to main content
 
পল্লব চায়ের ভাঁড়টা চা খাওয়ার পর মাঠের দিকে ছুঁড়ে ফেলে দিল। তারপর বাইকে উঠে ব্যান্ডেলের দিকে রওনা দিল হাইওয়ে ধরে। শীতকালের রাত। পল্লব একটা অফিসের কাজে যাচ্ছে।শরীর সাস্থ্য বেশ হাট্টাকাট্টা। প্রতিদিন জিমে যাওয়া কসরত করা মেদহীন শরীর। বয়স আঠাশের আশে পাশে হবে।
      কিছুটা যাওয়ার পরই মনে হল তার পিছনের সিটে কেউ বসে। গাড়ীটা ভারী লাগছে। মনে হচ্ছে পিছনের দিকে আরেকটু সরলেই যেন কারোর গায়ে ধাক্কা লাগবে। ব্যাপারটাকে গুরুত্ব না দিয়ে পল্লব চালাতে লাগল। দশ মিনিট চলার পর একটা তেলের পাম্পে দাঁড়াল। ২০০ টাকার তেলে ভরার কথা বলে বাইক থেকে নামল। পিছনের সিটটা আশ্চর্য্যজনক ভাবে গরম। একটু নার্ভাস লাগলেও মনের ভুল ভেবে উড়িয়ে দিতে চাইল। তবু একটু খচখচ করতেই লাগল কোথাও একটু।
      আরেকটু এগোনোর পর মনে হল তার বাঁ কাঁধের ওপর কারোর যেন একটা হাত রাখা। তার সারা গা শিরশির করছে ভয়ে।
      ব্যান্ডেলের কাজ সেরে যখন ত্রিবেণীতে তার বাড়িতে পৌঁছাল তখন প্রায় ১১ টা বাজে। মুখ হাত ধুয়ে বসল টিভি দেখতে। কি মনে হল একবার গিয়ে বাইকটা আবার দেখে আসল। নাঃ সব ঠিক ঠাকই তো আছে।
     খেতে দিতে দিতে পল্লবের মা বললেন, জানিস পল্লব তোকে বাইকটা যিনি কিনিয়ে দিয়েছিলেন সেই ভদ্রলোক আজ এসেছিলেন। উনি বললেন তোকে একবার ফোন করে নিতে।
      "হ্যাঁ পল্লব শুনেছ কিছু?"
      "কি কাকাবাবু"
      "রতন আজ দুপুরে সুইসাইড করেছে
" 
      "হ্যাঁ!"
     হ্যাঁরে, তুই বাবা বাইকটা একবার পূজো দিয়ে নিস। আমি তোর মা কে কিছু বলিনি। উনি একা ছিলেন তাই।
      আচ্ছা কাকাবাবু, বলে পল্লব ফোনটা রাখতেই তার মা এসে বললেন, বাবা একটু আগে রতন তোর গাড়ীটা চাইতে এসেছিল। আমি বললাম তুই বাড়ি নেই, তো ও বলল ঠিক আছে আমি দেখা করে নিচ্ছি। যা হোক তোর সাথে ওকে আসতে দেখে নিশ্চিন্ত হলাম। দিয়ে দিস বাবা। হাজার হোক ওরই গাড়ি তো! অভাবে পড়ে বেচেছে।
 
 
(ছবিঃ সুমন দাস)