Good Knight
ঘরের একটা কোণে গুড নাইট জ্বলছে। খাস্তগির একটা পুরোনো খবরের কাগজ কেটে নৌকা বানাচ্ছে। সামনের বড় পুকুরে ছাড়বে। তাতে কয়েকটা পিঁপড়ে তুলে দিয়ে যাত্রীও বানাবে। খাস্তগিরের বয়েস ছত্রিশ।
নির্বাসিত প্রেম
মানবজমিতে চষতে হয়
( উঠল কথা বাজার মাঝে, যার কথা তার বুকে বাজে)
কবিতা
কবিতা আমায় বলেছে
বারবার বলেছে
আমার আগে যারা আগুনে পুড়েছে,
যারা মাটির নীচে শুয়ে আছে,
(কিম্বা যারা কোনোটাই পায়নি)
হৃদয় তাদেরকেও শান্তি দেয়নি
হৃদয় শান্তি দেয় না
ভগিনী নিবেদিতা
বেঞ্চ
কলেজের শেষ দুটো ক্লাস করেনি ওরা
পার্কে এসে নির্দিষ্ট বেঞ্চটায় বসল
অভিমান। চুমুগুলো যেন বিফলে গেল।
সব ক'টা বিকেল, সন্ধ্যে যেন ব্যর্থ গেল।
লেকের জলে যে ছায়াদুটো পড়ত
তারা জলের গভীরে মিলিয়ে গেল
কালের যাত্রার ধ্বনি
কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজে যখন রুগীকে নিয়ে যাওয়া হল, তখন তিনি অচৈতন্য। সেরিব্রাল অ্যাটাক। বয়েস ৪৬। প্রাথমিক কিছু পরীক্ষার পর চিকিৎসক বললেন, “এখানে কোনো নিউরোর ডাক্তার নেই, আপনারা কলকাতায় নিয়ে যান, নইলে ওনার যা অবস্থা উনি বাঁচবেন না।" বাঁচলেনও না। কলকাতায় যাওয়ার যাত্রা শুরু হতে না হতেই জীবনযাত্রার অন্তিম অধ্যায় অ্যাম্বুলেন্সেই সমাধা হল।
ভক্তি গতপ্রাণা
হার বয়েস হইয়াছে ষাটের উপর। তিনি ভক্তি গতপ্রাণা। তিনি ফোনে আলাপ করিয়াছেন আমার সহিত। সাক্ষাৎ হয় নাই কদাপি। ভাগ্যে তিনি ফেসবুকে নাই।
আমায় খানিক আগে ফোন করিলেন।
The Call
The dawn breaks at the horizon,
Birds chirp in needless glee....
It breaks the sombre trance
of monotony.....
In boundless joy.
A call to break your slumber,
A call of the Lord...
Wake up, my child,
The dawn has broken...
Wake up! Wake up! Ahoy!
[Translated By: Sukanya Bandyopadhyay]
[মূল কবিতাঃ ডাক]
ডাক
এই তো সকাল হল
কিছু পাখির ডাক কানে আসছে
অপ্রয়োজনের ডাক
গভীর আনন্দ জাগিয়ে আলস্য কাটালো
সম্পর্ক
সম্পর্ক অবিনশ্বর
মোড় ফিরিয়ে রূপ বদল
এখন তখন
তবু শূন্য হয়ে যেতে দেখিনি
হয়ও না
জেলিফিশ
আমরা যখন প্রকাশ্য রাস্তায় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে ধর্ষণ ব্যাপারটা মেনেই নিয়েছি, তখন আসুন না, আমাদের সংবিধানে ধর্ষণটাকে বৈধ ঘোষণা করে দিই। অকারণ তবে এই খবরগুলো আর পড়তে হয় না, জ্বলতে হয় না। রাস্তায় যেখানে সেখানে প্যান্টখুলে হিসি করার মত ব্যাপারটাকে ইজি করে নিই।
পুরুষতান্ত্রিক সমাজ?
- যতদিন পড়াশোনা করেছেন, কটা পাঠ্য বই মহিলা লেখকের পেয়েছেন?
- যতজন বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক, দার্শনিক ইত্যাদি আজ অবধি সারা বিশ্বে স্বীকৃতি পেয়েছেন পুরোধা হিসেবে তার কত শতাংশ মহিলা?
- ঈশ্বরের অবতারেরা শুধু পুরুষই হন কেন?
- শুধু মাত্র অভিনয় আর কিছুটা গানে নৃত্যে মহিলা শিল্পীর নাম বলতে পারা যায় এক নিঃশ্বাসে অনেকগুলো, বাকি ক্ষেত্রে এমনকি যে অভিনয়ের উল্লেখ হলেও, সেই মহলে পরিচা
নিবেদিতাকে নিয়ে এ প্রহসনটা বরং থাক
অতলবাবু
ধরি মানুষটার নাম 'অতল'। মানুষটা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে - সবটাই অভিনয়। ঘুম থেকে উঠে চায়ের দোকানে উনুনে আঁচ দেয় যে বাঁ হাতভাঙা বেঁটেখাটো লোকটা- সে থেকে শুরু করে, মাঝরাত্তিরে বাসটা গ্যারেজে রেখে ঝিমোতে ঝিমোতে ফেরা ড্রাইভার অবধি - সবাই অভিনয় করছে। বড়লোকদের আরো সুক্ষ্ম অভিনয়, লড়াই করে বাঁচা মানুষদের স্থুল। ছিরিছাঁদহীন।
বীমাবিপত্তি
আজ বলে না। নরহরিবাবুর দীর্ঘদিনের ইচ্ছা মা কালীর নামে একটা জীবনবিমা করেন। ডেট অব বার্থ নিয়ে একটু সমস্যা আছে, কিন্তু নরহরিবাবুর শালা সুড়ঙ্গ সিকদার সে ব্যবস্থাও করে ফেলেছেন। সুড়ঙ্গবাবু পেপারমিলে কাজ করেন। সাইডে হাত দেখার ব্যবসা থুড়ি সাধনা। খোদ কামাখ্যায় গিয়ে রপ্ত করেছেন, সুড়সুড়িবাবার কাছে। তিনিই তার বলাইচাঁদ নামটা এপিঠ-ওপিঠ করিয়ে সুড়ঙ্গ সিকদার করেছেন।
মা
শুভ দীপাবলি
সাজানো কথা আর মিথ্যা কথা এক না। প্রথমটায় খানিক শিল্পীসত্তার দরকার হয়, দ্বিতীয়টায় সে দরকার নেই।
যেমন সত্যভাষণে আর কটুভাষণে। প্রথমটায় বিবেচনাবোধ জরুরী। দ্বিতীয়টায় নয়।
ছবি
ঘনশ্যাম আর সুনয়না ঘরের মধ্যে ঢুকলেন। ঘুটঘুটে অন্ধকার চারদিক। আজ ভূতচতুর্দশী। কেউ চোদ্দ প্রদীপ জ্বালার নেই। সবাই বেড়াতে গেছে। ঘনশ্যাম খাটে বসলেন। সুনয়না নিজেদের ছবিটা খুঁজলেন এ দেওয়াল, সে দেওয়াল। নেই। অবশেষে বাথরুমের পাশের জুতোর র্যাকের নীচ থেকে ভাঙা ছবিটা বার করলেন। কত পুরোনো ছবি।
ভেস্টিবিউল
করোমণ্ডল এক্সপ্রেস
ট্রেনটা প্রচণ্ড বেগে ভারতের দক্ষিণাভিমুখে ছুটছে।
সত্তর পেরোনো মানুষটা
হাতে একটা ফ্লাক্স নিয়ে প্যান্ট্রিকারের দিকে এগোচ্ছেন
S6 থেকে ছ'টা বগি পেরোলে প্যান্ট্রিকার,
মানুষটা অশক্ত শরীরে ধীরে ধীরে এগোচ্ছে
বিকল্প
কোথায় খুঁজছো খোলা আকাশ?
কিসের চাইছো বিকল্প?
মুঠো খুলে যদি টানটান হয় আঙুলগুলো
যদি ভেসে যায়-
মাথা ভরা সব প্রজল্প
যখন টবে জল দিলাম
যখন টবে জল দিলাম
তখন কিছুটা জল শুষল রোদে পোড়া তৃষ্ণার্ত টবের মাটি
কিছুটা জল শুষল মাটির রোদে পোড়া বুক
অবশেষে কিছুটা জল নিল শিকড়
ভালোবাসা সব সময়ই একান্নবর্তী
ফিরেও চায়নি
আজ অবধি কোনো পথ দিগন্ত ছুঁতে পারেনি
তবু দিগন্তের দিকে
যেতে যেতে,
যেতে যেতে
কোনোদিন পিছন ফিরেও চায়নি
[ছবিঃ সুমন]
দারুচিনি
আর ঝরণা না
আর নৈসর্গিক মোহময় রহস্যময়তা না
আমায় গল্প বলো
যে মেয়েটা উদাস চোখে কাজল সামলে
রঙ মাখানো ঠোঁটকে উপেক্ষা করে
পিঠের বাচ্চা সামলে চায়ের জল চড়ালো
তার গল্প বলো
ছোট্ট যীশু - অতীশ
এইটুকুই থাক
ধানক্ষেতের মধ্যখান দিয়ে যে রাস্তাটা গেছে
অতীন্দ্রিয়বাদ-রোম্যান্টিসিজম-ধম্মকম্ম
রোম্যান্টিসিজম এ যদি একটা ক্ষতির আশঙ্কা না থাকত তবে শব্দটা মাহাত্ম্য হারাতো। ভয়কে জয় করে নিজের আবেগ, ভালোবাসাতে প্রতিষ্ঠিত হতে চাওয়ার প্রয়াস অথবা সাধনার ভিত্তিই এই রোম্যান্টিসিজম। নতুনকে নতুন ভাবে দেখতে শুধু রুচি লাগে না, সাহস লাগে, আত্মবিশ্বাস লাগে। প্রথা ভেঙে নতুন পথের ভগীরথ হতে শুধু বিচক্ষণতা লাগে না, ধৈর্য্য, অধ্যবসায় আর প্রাণের তীব্র আকাঙ্ক্ষা লাগে। প্রাথমিকভাবে চারপাশের চূড়ান্ত বিরোধিতা আ
এটা এমনি মিছিমিছি লেখা
এটা এমনি মিছিমিছি লেখা। মনের মধ্যের কথাগুলো, চিন্তাগুলোকে বাইরে সাজিয়ে সাজিয়ে থাকে থাকে রাখা। না রাখলেও ক্ষতি ছিল না, তবু মাঝে মাঝে ভাঁড়ার ঘরের কোণে পড়ে থাকা অবহেলায় ধুলোমাখা ভাঙা সরাটা দেখলে যেমন মনটায় টুক করে একটা ব্যাথা লাগে, এও তেমন ধারা কথা।
স্পন্দন
বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে। পুরোহিত সন্ধ্যারতি শেষ করে দরজায় হেলান দিয়ে বসল। কেউ নেই মন্দিরে আজ। এত বৃষ্টি সেই বিকাল থেকে, কে আসবে?
পঞ্চপ্রদীপের মাঝের কর্পূরটা নিভে গেছে। বাদল বাতাসে কেঁপে কেঁপে উঠছে জ্বলন্ত বাকি চারটে শিখা। পুরোহিত অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে সেই দিকে। দেবতাও। যেন এখনি নিভে যাবে।
সত্য
দার্শনিক, সন্ন্যাসী খুঁজে চলেছেন সত্যের সংজ্ঞা
দার্শনিক লিখলেন বই
সন্ন্যাসী গড়লেন মঠ
সত্য ঘুড়ি উড়িয়ে চলল মহাকাশে
লাটাই নিতে চাইলেন সন্ন্যাসী
নিতে চাইলেন দার্শনিক
অর্বাচীন প্রশ্ন
আমার মনে খুব একটা কঠিন প্রশ্ন গজিয়েছে। বলে ফেলি, কি বলেন।
প্রশ্নটা হল, আচ্ছা ফেলুদাকে নিয়ে সত্যজিৎবাবু ছাড়া আর কেউ লিখেছেন?
কিম্বা ব্যোমকেশকে নিয়ে শরদিন্দুবাবু ছাড়া আর কেউ লিখেছেন?
অথবা ঘনাদাকে নিয়ে পেমেন মিত্তির ছাড়া, বা নিদেন কাকাবাবু কিম্বা কর্ণেলকে নিয়ে সুনীলবাবু, সৈয়দবাবু ছাড়া....
মহাকাব্য
আকাশ ছুঁতে চাওয়া
প্রবল বিক্রমে তাকে ছুঁয়ে ফেলা
এতো মহাকাব্যর মুখবন্ধ
তারপর সজোরে পতন
সে কি মহাকাব্য নয়?
সেই তো মহাকাব্যের উপসংহার
নইলে তা মহাকাব্য কিসের?
দোসরা অক্টোবর
সঙ্গীত - ধর্ম(?)- উন্নত সভ্যতা- মেশিনগান
এও একটা সমীকরণ -
দোসরা অক্টোবর?
জোনাকিরা
একটা কবিতা লিখতে লিখতে
সকাল গড়িয়ে বিকাল হল
বিকাল গড়িয়ে রাতও হত হয়ত
তুমি না এসে পড়লে গোধূলিতে
সিঁদুর মাখা পশ্চিম আকাশ নিয়ে ঘরে
যদি না আসতে
মধ্যরাতে না ঘুমানো জোনাকিরা
চুরি করে নিয়ে যেত সে কবিতা
বাপু
নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুন
মাঝবয়েসী মহিলাকে ধর্ষণ করে খুন
বৃদ্ধা মহিলাকে ধর্ষণ করে খুন
আমিও আসছিলাম বাপু জন্মজয়ন্তীতে যোগ দিতে,
দাঁড়িয়ে পড়েছিলাম।
তোমারও কোথায় একটা দাঁড়ানোর কথা ছিল না?
মনে পড়ছে না।
উপড়ানো বটগাছ
একলা একটা পাখা কত কথা বলবে?
চারটে দেওয়াল তো আর আরব্যরজনী শোনাতে পারে না?
জানলারও একটা সীমা আছে!
মানুষটা রাতদিন শুয়ে শুয়ে কি ভাবে জানি না
মশারির মধ্যে শীর্ণ শরীরটা
মূল উপড়ানো বট গাছের মত শুকিয়ে যাচ্ছে দিন দিন
অথচ মাত্র কয়েক বছর আগেই
এই মানুষটার পাঁজর আর মেরুদণ্ডের উপর ভর করে দাঁড়াতে শিখল গোটা পরিবারটা