করোমণ্ডল এক্সপ্রেস
ট্রেনটা প্রচণ্ড বেগে ভারতের দক্ষিণাভিমুখে ছুটছে।
সত্তর পেরোনো মানুষটা
হাতে একটা ফ্লাক্স নিয়ে প্যান্ট্রিকারের দিকে এগোচ্ছেন
S6 থেকে ছ'টা বগি পেরোলে প্যান্ট্রিকার,
মানুষটা অশক্ত শরীরে ধীরে ধীরে এগোচ্ছে
যে মানুষটার সাথে প্রায় চল্লিশটা বার্ষিকগতি
পাশাপাশি পেরিয়েছেন এই পৃথিবীতে
তিনি খুব অসুস্থ - তার স্ত্রী।
তীর্থে বেরোনো হয়নি কোনোদিন,
মনেও হয়নি। বেড়িয়েছেন যদিও অনেক।
তবু এ যেন সাবিত্রীর স্বর্গারোহণ।
ভুল হল, সাবিত্রী নয়,
সে তো রোগশয্যায় জানলার পাশে শুয়ে
সাইড লোয়ার বার্থ। RAC ছিল।
দুটো বগির মধ্যখানটায় ভয় পান
খানিক দাঁড়ান এসে হাতলটা ধরে
এ ও হুস হুস করে পেরিয়ে যায়
তিনি পারেন না
অমন বীভৎস জোরে কাঁপতে থাকা পাটাতন দুটো যেন যমের ফাঁদ,
তবু পেরোতে হবে।
যমের ফাঁদে একটা পা আটকে যে মানুষটার
সে তার আকাশ জল মাটির মত আপন,
তাকে ছাড়া বাঁচা?!
চোখ বন্ধ করে পা বাড়ালেন
কি অসম্ভব দুলুনি!
এখনি যেন পা হড়কে পড়বেন ওই চকচকে দুটো লাইনের ফাঁকে
পেরিয়ে গেলেন
এ ভাবে একটা একটা ভেস্টিবিউল পেরোতে হবে
গরম জল আনতে হবে।
যে মানুষটার গায়ের গন্ধ না পেলে তার শ্বাসরুদ্ধ হবে
সে মানুষটার অসহ্য যন্ত্রণা সারা শরীরজুড়ে
গরম জল লাগবে।