সুড়ঙ্গ
লোকটা দরজা বানাতে চায়নি
শুধু কয়েকটা সুড়ঙ্গ বানিয়েছিল
স্মৃতি
গভীর রাত। তোমার বিস্মৃতপ্রায় স্মৃতিরা বুকে এসে ভিড় করল। কোনো কারণ ছিল না, এমনিই।
যেন শুকিয়ে যাওয়া বাগানে গোপনে এল বসন্ত
যেন ভোরের শীতল বাতাস মরুভূমির বুকের উপর দিয়ে গেল বয়ে
যেন দীর্ঘ অসুস্থতার পর, একটু স্বস্তি পেলো কেউ, অকারণে, এমনিই।
সন্ধিক্ষণ
খিচুড়ির পাতা নিয়ে অন্যমনস্ক হয়ে যাচ্ছে হীরু বারেবারে। হীরুর আঁচলটা পাতে পড়ছে দেখে বাড়ির গিন্নী বললেন, কি হল রে হীরু, কি ভাবতে বসলি খাবার মুখে করে? তোর ছেলেমেয়েদের জন্যে বেঁধে দিইচি তো রে।
স্ব-ভাব
কিছু ভুল কেন যেন শোধরানোই যায় না
আসলে তো ওরা ভুল নয়
স্বভাব। স্ব-ভাব।
তাই হোক। না হয় বারবার ফিরি।
ভাবের ঘরে চোর না ঢুকুক।
সাজঘর
মাথার ভিতর ড্রেসিংরুম
সাজঘর
যারা সেজেগুজে বেরোয়
তারা রাতের অন্ধকারে গা ঢাকা দিয়ে বাড়ি ফেরে
অনেক রাত অবধি রঙ তুলে
পাশের মানুষ খোঁজে হাতড়িয়ে
সব মাটিতে সব গাছ হয় না
সব ঋতুতে সব ফুল ফোটে না
সব ভালোবাসা জড়ো করে
অভিমান করে বসেছ
জানো না,
সব হৃদয়ে সব ভালোবাসা ধরে না?
সচেতনতা
সীমা
সেতু
কয়েক টুকরো ভালোবাসা দিও
বাকিটা আমি জুড়িয়ে জুড়িয়ে নেবো
নিরবচ্ছিন্ন যা, তা তো মরণ!
বালাইষাট, প্রেম চাইতে মরণ চাইব নাকি!
সেনেকা
সব কিছু
সব কিছু সহজ হবে ভেবেছিলাম
সব কিছু সহজ হোক চেয়েছিলাম
নিজের দিকে তাকাতে গিয়ে
মুখ ঢাকলাম
সময়
সাহস
সত্যি বলতে ওর কথায় কিছু আসে যায় কি?
পাপোসের উপর বুড়ো আঙুলটা ঠেকাবার চেষ্টা করে যাচ্ছে বিপ্লব। পা পাচ্ছে না। জুঁই খাটের এক কোণায় হেলান দিয়ে বসে। দেওয়ালে লোকনাথ বাবার ক্যালেণ্ডারটা পাখার হাওয়ায় বাঁদিক ডানদিক দুলছে।
সে-ই সে
শিশিরে পা পড়লে ঠাণ্ডা অনুভূতিই হয়েছে
বৈশাখে খালি পা তপ্ত বালিতে পড়লে
গরম-ই অনুভব হয়েছে
সাক্ষী
এ নিস্তরঙ্গ, নিষ্প্রাণ সমুদ্রে
মাথা তুলে ভেসে আছি
চেতনার মত কিছু একটা নিয়ে
নাম-সংজ্ঞাতে বাঁধতে চাইছি না নিজেকে
সীমানা
ফুল গাছকে বলে,
তুমি বৃন্ত অবধি এসে থেমে যাও
বাকিটুকু আমি বানিয়ে নেব
আমার মত করে
সংশয়
বারণ তো কেউ শোনে না
না নিয়তি
না ঝড়
সুরভিত অ্যান্টিসেপ্টিক ক্রীম
সবাই বদলে গেছে
...
সময়
সময়ও সময়কে থেমে দেখে
এক সময় আলোচনা করে অন্য সময়ের
কোনো এক সময়ের ঝড়ে ডোবা জাহাজের ভাঙা টুকরো
খুঁজে পায় আরেক সময়
সুন্দর
চোখের আড়ালে তুমি সুন্দর
চোখের নাগালে তুমি সুন্দর
গাছের ফাঁকে রোদের খেলার মত
...
সরিয়ে নাও
হাত সরিয়ে নাও
বুকের উপর চাপ লাগছে
মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছি না
একটু সরে দাঁড়াও
সাধন
গভীর রাত। গঙ্গার তীরে একলা সাধু। সংশয়ী দরজায়। সাধু বললেন, কি চাও?
- উত্তর
- সে তো দরজায় মেলে না। মেলে ভিতরে এলে।
- অন্ধকার যে।
- অপেক্ষা করো। বাইরের আলোর ধাঁধা কাটলে ভিতরের আলো দেখা যায়।
সাধনা
একদিন তোমার হাত ভীষণ শক্ত হবে
এমন শক্ত হবে
তুমি কম্পিত প্রদীপকে আড়াল করে বলবে - থামো!
প্রদীপ স্থির হবে
সব কবিতা লেখা হয়ে গেলেও
...
সল্টেড বাদাম
সুহৃদং সর্বভূতেষু
সংস্কৃতি বনাম বিনোদন
স্রোত
শুনেছি নদী তার সমস্ত পথের সঞ্চয় নুড়ি-পাথর-মাটিকণা শেষ পথে নিয়ে এসে নিজের স্রোতকে নিজেই দুর্বল করে তোলে। মোহনায় নিজের চলার পথ নিজের সঞ্চয়ের ভারেই রোধ করে ফেলে প্রায়।
ভাবনা হয়, মনের মধ্যে যা সঞ্চিত হচ্ছে প্রতিদিন, তা যদি মনের স্রোতকেই কোনোদিন ক্ষীণ করে তোলে?
সব দীনতা হতে জাগো জাগো রে
সংক্রমণ
এখন কি করবে চিকিৎসক?
তোমার ওষুধপত্র, স্টেথো, ইঞ্জেকশান সরিয়ে রাখো
সেই রবীন্দ্রনাথ
তৃষ্ণার্ত, সমুদ্রতীরে ডাবের জল
সেই রবীন্দ্রনাথ
প্রেমার্ত, হরমোনের ভুলভুলাইয়ায় দিশা
সেই রবীন্দ্রনাথ
সফল
সরে দাঁড়াও
সরে এলাম
তুমিও একটু সরে দাঁড়াও
মাঝখান থেকে অভিমানগুলো বয়ে যাক
ক্ষেতে জমে থাকা বর্ষার জলের মত
মিশুক নদীতে
তুমি একটু সরে দাঁড়াও
সমুদ্রের গভীর কথা
তীরে খেলে শুধু চঞ্চলা ঢেউ