নেশা
তোমার নেশা - ভালোবাসার আগুন।
তুমি জ্বালানী খোঁজো এ বন, সে বন।
কাঠুরের মত বাগানে ঢোকো সন্তর্পণে
শিকারীর লালসায়
জ্বালানী কাঠের জন্য।
আমি ডালে ফোটা ফুল দিতে গেলাম।
নিলে না। ফুল মাটিতে পড়ল লুটিয়ে।
বললে, ডালটা দাও, শুকিয়ে।
আগুন জ্বালব।
না হয় না
এমন অন্ধকার হয় না
যে তারাদেরও দেখা যায় না
নীলিমায় নীল
গভীর জঙ্গল। সেই জঙ্গলের মধ্যে একটা নীলপদ্ম ফুটে। এই জঙ্গলে নীলপদ্ম বিশেষ একটা ফোটে না। সবাই ভাবল, এ কিরকম ফুল? কেউ দেখল সন্দেহে, কেউ দেখল ঈর্ষায়, কেউ দেখল তাচ্ছিল্যে। পদ্ম চুপ করে থাকে। কাকে বলবে সে? আর কি-ই বা বলবে?
নাম
মালীটা প্রতিটা ফুলের গায়ে নিজের নাম লিখে রেখেছিল গোপনে
কেউ জানত না
প্রজাপতি না, বাতাস না, মাটি না।
জানত শুধু মালী
আর ফুল
নাই বা হল পারে যাওয়া
...
নিজের মাপে গড়তে গিয়ে
সাগরের বুকে পুকুর কাটল যে
...
নারীবাদ আর স্বচিন্তা
নীল দেওয়াল
নদী সাগরকে পায় সেদিনই
নারী নাকি সমাজ?
মেয়েটার স্বামী ফুলশয্যায় মদ্যপ হয়ে এলো। গরীব হলে এমন হয়। সমাজ উদাসীন।
সংসারের জোয়াল মেয়েটার ঘাড়ে। স্বামী মাতাল, উদাসীন। পরিবার উদাসীন। পাড়া উদাসীন। সমাজ হাই তুলে সমাজোদ্ধারকদের সাথে ঘোরে, শিথিল পায়ে।
নিজেকেই পাবে
না হতেও তো পারে
হতে পারে তুমি আমার উপর নারাজ
রাস্তাটা আধমাইল কেন
এক পাও হাঁটতে তোমার ইচ্ছা নেই
হতে পারে তোমার ভোরের স্বপ্ন ভাঙিয়েছি আমি
নতুন নিয়ম (Bible)
নেই?
দৃষ্টিতে নেই, স্পর্শেতে নেই বলেই কি নেই?
মিথ্যে কথা!
এই যে ঘড়িটা,
নিছক একটা যন্ত্র মাত্র
সময় কি ওর কাঁটায়?
এবার বলো, সেকি নেই?
নির্মেদ
ব্রেস্ট ক্যানসার হওয়ার পর বুঝলেন
ওই অঙ্গটার অন্য একটা প্রচ্ছন্ন পরিচয় ছিল
তাঁর পুরুষসঙ্গীর প্রেমের নিলয় শুধু নয়
তাঁর অধুনা যুবক সন্তানের পরিত্যক্ত খাদ্য ভাণ্ডার শুধু নয়
নীলপাখী
নিরাপত্তা
নেই
অস্বীকার করছি না
নিরুত্তর ভালোবাসা
নির্জন অর্গাজম
অর্গাজমে পৌঁছালে সবাই একা
শরীর থেকে মুখ ফিরিয়ে
তুষ জমা নীড়ের ভিতর ফিরে আসা
রাতের অন্ধকারে কয়েকটা জোনাকি
ওরা পথ দেখিয়ে নিয়ে চলেছে যুগযুগান্ত ধরে
তোমার আমার খিদেকে
ফ্রীজে রাখা বাসি মাংসের দিকে
রান্না না হলে বাসি হয় কিছু?
নোনতা কমলালেবু
একটা কমলালেবু। তুমি দাঁড়াও,
আমি একটা একটা কোয়া ছাড়িয়ে তোমার হাতে দিই,
তুমি খাবে কি না খাবে, তা শুঁকে দেখে ঠিক কোরো ...
নীলাচলে তিনদিন
নবমী
রাস্তার ধারে বসে আছে পাগলীটা। তাকে ঘিরে মাছি ঘুরছে ভনভন করে। কালো মোটা বোঁচকাটায় পিঠে ঠেসান দিয়ে আছে মল্লিকদের বাড়ির রকে। সামনে চলেছে লোকের বান। পাগলী আলোর খেলা দেখছে মুখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে। হঠাৎ কানখাড়া করে কি শুনতে লাগল। মাইকে হারিয়ে যাওয়া মানুষদের ঘোষণা চলছে। তাদের পার্টি অফিসের সামনে দেখা করতে বলছে। পাগলী চুল পাকাতে পাকাতে শুনছে মন দিয়ে। চোখে মুখে উদ্বিগ্নতা। তার চোখে রাস্তায় লাগানো আলোর ঝলকানি।
নিয়তি
এমন তো নয় পৃথিবীর শেষ বিচারের দিন ঘোষণা হয়ে গেছে
এমন তো নয় ব্যালেট বাক্সে আমার হাত পড়বে না আর কোনোদিন
এমন তো নয় তোমার হুঙ্কারের কম্পনে রিখটার স্কেল পর্যন্ত ভেঙে গেছে
...
নীরবতা
ভুলে যাও কেন
...
নীরবতা - আত্মশুশ্রূষা
...
নিঃসঙ্গতার শতবর্ষ
...
নিশানা
বাঁচতাম হয়ত বা
মরতেও পারতাম,
অথবা আহত হতাম
...
নারী দিবস?
...
নিউজ চ্যানেল
নগ্নতা
তুমি আমার নগ্নতাকেই ঐশ্বর্য ভাবলে
...
নিঃশব্দে
কথাই তো দিয়েছিলে
...
নিজেকে
তার বিপরীত দিকে যাইনি কোনোদিন
প্রতিদিন নদী থেকে খাবার জল ভরে
স্নান সেরে, শৌচকর্ম সেরে ফিরে গেছি বাড়ি
...
নির্বাণ
থাকা বেড়ালের মত রোদ পোয়াচ্ছে
তখন সব গভীরতাই অন্ধকার
সব ব্যঞ্জনবর্ণ দূরে দূরে
...
নববর্ষ
...
নিজের হৃৎপিণ্ডটা
এমনই একটা ভোরের অপেক্ষায় বেঁচে আছি
এক হাতে নিজের হৃৎপিণ্ডটা আগলে
আরেক হাতে তোমায়
(ছবিঃ সমীরন নন্দী)