Skip to main content
কিন্তু তবু নববর্ষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ। হলই না হয় ম্লেচ্ছদের নতুন বছর। তবু ইহাই আমাদিগের নববর্ষ। বামুনে যাই বলুক। বঙ্গাব্দ সরকার মানে না। কণিষ্কব্দের ক্যালেন্ডার মেলে না। আরো কি কি সব অব্দের কথা ইতিহাসে মুখস্থিয়েছিনু, এহন মনে নাই।
        মোট কথা, নতুন বৎসরের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ। ব্যক্তিগত শোক, দুঃখ, মামলা মোকদ্দমা চলবেই। তো? তাই বলে ফেসবুকের পাতাজুড়ে কাঁদুনি গাইবার কি মানে তো বুঝিনে বাপু? লোককেও হা-হুতাশনের গপ্পো শোনাবার কি আছে আজকের দিনে? হুম। খুব বেশি কেউ প্যাচাল পাড়লেই আজ ফোন কেটে দেবেন, বলবেন শুনতে পাচ্ছি না জানেন। চাট্টি গালমন্দও করতে পারেন, করে বলবেন, ক্রসকানেক্সন হয়ে গিয়েছিল। মোট কথা নো প্যাঁচাল আজকে। তোর মন খারাপ তুই অফ লাইন হয়ে, দরজায় খিল দিয়ে বসে থাক, জ্বালাতে আসিস না। জগতে দুঃখের যে অন্ত নেই, সে শুদ্ধধনের ব্যাটা বটগাছ তলায় দাঁত ছড়কুটে পড়ে থেকে বুঝেছিল না? পেরানটাই চলে যাচ্ছিল তার প্রায়, সে সময় করে তেনার কিরপায় সুজাতা একবাটি পায়েস ডেলিভারি করেছিল বলে না ব্যাটা তরে গেল। তা তেনার কৃপা যে এক্কেবারে হয় না তা তো নয়, তবে কখন কিরকম নেটওয়ার্ক মেলে তার উপর নির্ভর করছে সব, বুইলেন কিনা।
        উফ কি কথায়, কি কথা পাড়লাম। হ্যাঁ যা বলছিলাম , জগতে যে দুক্ষু আছে, সে কথা তিনখন্ড ত্রিপিটক জুড়ে কত্তাবাবা বলেন নি? তবে তোর মুখপোড়া সাত-সক্কালে সেসব কথা বলার কি দরকার আছে? আছে আছে আছে। সব আছে, কিন্তু শুদ্ধধনের ব্যাটার চাইতে আমাদের দেবেন ঠাকুরের পোলাডার হেব্বি বুদ্ধি। কেমন লিখলে, 'আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহবেদনা জাগে / তবুও শান্তি, তবু আনন্দ, তবু অনন্ত জাগে'.
        এখানে একটা নিজের অজ্ঞতা স্বীকার করে রাখি, নতুন বর্ষের সক্কালে। আমার ছোটবেলায় আমাদের কলোনিতে অনন্ত কাকা ছিলেন। রেলের অফিসের বড়বাবু। তা তিনি প্রচন্ড ঘুমুতেন। আমি ভাবতুম রবি ঠাকুর তেনার কথা লিখেছেন, কিন্তু সংশয়ে পড়তুম, তিনি জাগেন কই, সব সময় তো ঘুমাচ্ছেন? সেই থেকে আমি সংশয়বাদী।
        যা হোক ব্যক্তিগত কথা থাক। সক্কলরে হ্যাপি নব ইয়ার। ভালো থাকা অভ্যাস করুন। একটা জ্ঞানের কথা বলি, 'পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি, এ জীবনে মন সকলি দাও' আর 'মনেরে আজ কহ যে, ভালোমন্দ যাহাই আসুক সত্যেরে লও সহজে' - এই দুইখান কবিতা মনে রাখবেন, জীবনটা মাখনের মত নরম না হলেও, ডাস্ট আল্যার্জির মত দুর্বিসহ হবে না, জয়গুরু।