পারলে অন্য কিছু ভাবো
লাগেনি তো
তবু তো পসরা সাজিয়ে বসেছি রোজ হাসিমুখে
পর্ণা
পর্ণা শ্যামনগর যাবে। সেখানে একটা হাইস্কুলে ভূগোল পড়ায়। পর্ণার ডিভোর্স হয়েছে বছর নয়-দশ হল। বিয়ে অনেক কম বয়সে হয়। তখন পর্ণা সদ্য গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করেছে। অনিকেতরাও নাগেরবাজারেই থাকত। তার থেকে বছর তিনেকের বড়, সদ্য মার্কেটিং এগজিকিউটিভের চাকরি পেয়েছিল একটা ওষুধ কম্প্যানীতে।
...
প্রেম
জানতে চাইছ কার?
...
পর্যবেক্ষণ
অনেকদিন আগের ঘটনা। স্কুলে পড়ি। দূরদর্শনে কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্ঠে রবীন্দ্রসংগীত হচ্ছে। মনোযোগ দিয়ে শুনছি। গান শেষ হল, আমার পাশে বসা একজন কাকু বললেন, বল তো উনি যে শাড়িটা পরেছিলেন তার দাম কত হবে? আর ওনার পায়ের কাছে যে কার্পেটটা রাখা ছিল তার দাম কত আন্দাজ কর তো?
পাওয়া না-পাওয়া
জীবনে পাওয়া তো যায় অনেক কিছুই,
তবে হিসাবে রেখে যায় শুধু না-পাওয়াগুলোই
~ গুলজার
পদ্মাবতী
প্রগতি
হিন্দু মহাসভা নাথুরাম গড্সের মন্দির প্রতিষ্ঠা করল। নাথুরাম গড্সে তাদের আদর্শ, পুজ্য। তার কারণ তিনি হিন্দুধর্মের মহত্ব প্রচার করেছিলেন বলে নয়, গান্ধীকে হত্যা করেছিলেন বলে। গান্ধীকে ও তার আদর্শকে কারোর অপছন্দ হতেই পারে, সভ্যতার ইতিহাসে গড্সে ও মহাত্মার অবদানের ফারাক বোঝার মত মানসিকতা বা ইচ্ছা অনেকের না-ই থাকতে পারে। কিন্তু পৌরাণিক পুরুষ রাম তথা কৃষ্ণ পূজ্য কি শুধু রাবণ তথা কংস নিধনের জন্য, না
পুরুষতান্ত্রিক সমাজ?
- যতদিন পড়াশোনা করেছেন, কটা পাঠ্য বই মহিলা লেখকের পেয়েছেন?
- যতজন বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক, দার্শনিক ইত্যাদি আজ অবধি সারা বিশ্বে স্বীকৃতি পেয়েছেন পুরোধা হিসেবে তার কত শতাংশ মহিলা?
- ঈশ্বরের অবতারেরা শুধু পুরুষই হন কেন?
- শুধু মাত্র অভিনয় আর কিছুটা গানে নৃত্যে মহিলা শিল্পীর নাম বলতে পারা যায় এক নিঃশ্বাসে অনেকগুলো, বাকি ক্ষেত্রে এমনকি যে অভিনয়ের উল্লেখ হলেও, সেই মহলে পরিচা
প্রেমের জন্য হাপিত্যেশ করিনি
প্রেমের জন্য হাপিত্যেশ করিনি
তোমার জন্যে করেছিলাম
দুনিয়া ওকেই প্রেম বলে
পরে জেনেছিলাম
পুরোনো রাস্তাটা ধরে
পুরোনো রাস্তাটা ধরে আবার হেঁটে এলাম
কয়েকটা ঝরা হলুদপাতা ফুটপাথের ধারে পড়েছিল সেদিন
এত বছর পরেও সেভাবেই রয়ে গেছে দেখলাম
কয়েকটা পাতা হাতে নিয়ে ভাবলাম ফিরি
তবু কি জানি কি ভেবে
পা ভাঙেনি তো!
রাস্তায় পড়ে থাকা পাথরের টুকরোর সাথে কি শত্রুতা আমার?
পায়ের নীচে এসে পড়েছিল হয়ত
(কিম্বা রেখে দিয়েছিল হয়ত কেউ, পরম যত্নে)
এত চীৎকার কেন?
পাথরই তো ছিটকিয়েছে,
পা ভাঙেনি তো!
পুনরাবৃত্তি না সংশয়?
তবে কি আমি প্রতিষ্ঠান বিরোধী? কিন্তু তা তো মোটেও নয়। জন্মালাম একটা হাসপাতালে, পড়াশোনা করলাম স্কুল-কলেজে, টাকা রাখতে ব্যাঙ্কে গেলাম, চিঠি পোস্ট করতে পোস্ট-অফিসে... এ সবই তো প্রতিষ্ঠান। সমাজের পক্ষে অপরিহার্য। এছাড়াও বিধানসভা লোকসভা থেকে শুরু করে আরো নানান প্রতিষ্ঠানের সাথে জীবনযাত্রা তো প্রতিপদে জড়িয়ে। তবে? ক'দিন ধরে একটাই কথা মাথায় ঘুরছে, তবে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অর্থ কি, প্রয়োজন কি?
পড়শির নামে তোমার বানান খুঁজছিলাম
অনেকবার ভুল বানান লেখার পর বুঝলাম,
পড়শির নামে তোমার বানান খুঁজছিলাম
প্রশ্রয়
দুর্বল ভঙ্গুর মন
তায় আলাদিনের দৈত্যের দাপট
ছিন্নভিন্ন মেঘ চিন্তারা
শিশির ভেজা সকালে
সস্তা সাদা কেডস পরে বলে
"চল বেড়িয়ে আসি, বেশিদূর যাব না"
পেট ঠুসে খাওয়ার পর
পেট ঠুসে খাওয়ার পর শরীরটা আইঢাই করছে। অনেকক্ষণ এ ঘর সে ঘর বারান্দা উঠান পায়চারি করার পরও না উঠছে ঢেকুর আর না তো....পেটটা দম মেরে আছে।
পরকীয়া ঘোল
ওরে কে যেন হইল ভ্রষ্ট?
চারদিকে উঠিল শোরগোল
দিকে দিকে ফিরিল নীতিবাগীশ
মুখেতে শাস্ত্রের বুলি, হট্টগোল
শ্লেষ, তির্যক দিঠি, ক্লেদের বন্যা
মাখো মাখো সবে,
আজিকে পাঁকের দোল
পলাশ
বাচ্চাটার জামায় নীল বোতাম। সাদা সুতোতে সেলাই। বাচ্চাটার লাল জামাটা একটু ছোটো। নীল হাফ প্যান্ট। পার্কের একটা কোণে বসে মোবাইলে গেম খেলছে।
পান্নালাল
জনবহুল রাস্তা। আলোয় আলো চারদিক। দুর্গাপূজোর জামা দ্বিতীয় দফায় কালীপূজোতে বেরিয়েছে আবার। কচিকাঁচা, কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতী-বয়স্করা রাস্তায় --- ঠাকুর দেখতে, প্যাণ্ডেল দেখতে, আলো দেখতে, মানুষ দেখতে।
প্রতিটা মানুষের পরিস্থিতি আলাদা
প্রতিটা মানুষের পরিস্থিতি আলাদা, আর সেই পরিস্থিতির সাথে বোঝাপড়া করার রীতিটাও আলাদা। এমনকি দেখেছি একই পরিস্থিতিকে রাম শ্যাম যদু মধু এক এক রকমভাবে সামাল দেয়।
প্রতিবাদ
আসলে খুব খারাপ শব্দ প্রয়োগ করলেই প্রতিবাদ করা হয় না
কিম্বা গগনভেদী চীৎকার করলেও প্রতিবাদ জানানো হয়,
তা না
বড় জোর কয়েকটা কাল-চিল উড়তে পারে
অজ্ঞতা বা ভণ্ডামি না
প্রতিযোগিত মানিনে
"আমারও চাই"
"আমিও হব"
এই "ও" কারটিকে বড় ভয়
যাহা ঈর্ষার শানিত কণ্ঠ হয়
প্রতিযোগিত মানিনে
সৃষ্টিসুখেই আত্মমগ্ন
পাওনা-গণ্ডা বুঝিনে
প্যাটেল - বসু উপাখ্যান
প্রশ্ন কোরো না
পুরুষের উর্বশী বাসনা
প্রতিশব্দ আছে, শব্দ নেই
আমার বসার ঘরে শোয়ার ঘরে ফ্যানের গায়ে, টিভির গায়ে, কম্পিউটারের গায়ে, বইয়ের মলাটে প্রকাশকের নামে, ক্যালেণ্ডারে, আলমারির চাবির সংখ্যায়, এমনকি ঠাকুর ঘরের ধূপের প্যাকেটে ইংরাজি অক্ষরমালা ছড়িয়ে। কারণ আমি একজন বহুভাষিক, উন্মুক্ত বাজারি সভ্যতার নাগরিক।
...
প্রবঞ্চক
...
পিলসুজের আনন্দ
বঞ্চিত হওয়া আর ত্যাগ করা একই কথা তো নয়। দৃষ্টির সামনে যে অসীম জগত তার একটা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অস্তিত্বে নিজেকে স্বীকার করে বাঁচতে চাওয়ার অভ্যাস - এই তো কথা? একি সামান্য কথা? আমার এই 'আমি' জাগতের কাছে অতিতুচ্ছ একটা অস্তিত্ব হলেও, আমার নিজের কাছে তো সে আছে বলেই জগত সংসার!
পিত্তবমি
(ঘটনা আর নামগুলো তো প্রায় সবারই জানা এখন)
পরিসর
পরিসর মানে এক চিলতে রোদ্দুর
পরিসর মানে এক খণ্ড আকাশ
পরিসর মানে দ্বিমতের বাস শতমত নিয়ে
তবু হাত পা ছড়িয়ে বসা
পরিসর মানে অভিমানে ভাঁটা
পরিসর মানে ডুবজলে নেমে মৃত্যুর সাথে
জীবন ফুরোতে না দেওয়া
পূর্ণতার জন্য
খুব কমই এমন হয়
কখনও কখনই হয়
যখন একজন মানুষ
আরেক মানুষে
মিশে যেতেই চায়
কামের জন্য না
সুখের জন্য না
শান্তির জন্য না
আশ্রয়ের জন্য না
পূর্ণতার জন্য
প্রাচীর ঘিরি না
তোমায় আমি
কাছের ভাবি
নিজের ভাবি না
তোমার কাছে
আশা রাখি
দাবি রাখি না
যে ঝরণাটা
নদী হবে
নামছে দেখো
ছুটছে দেখো
ওকে আমার
দেখেই শান্তি
আগল ঘিরি না
তৃপ্ত আমি
মুক্ত আমি
পূর্ণ আমি
পরের সিঁড়িটা না থাকলেই হয়ত ভালো হত
পরের সিঁড়িটা না থাকলেই হয়ত ভালো হত
পরের সিঁড়িটা না থাকলে কি ভালো হত?
কোন সিঁড়িতে বিশ্রাম নেওয়া যায়
আগের সিঁড়িতে না পরের সিঁড়ি?
পাতার খাঁজে রাখা পালক
...
পালক
আগলে রাখতে চাইছিলাম
বিস্তৃত ডানায় পেলাম ভয়
ভালোবাসতেই তো চাই
আকাশকে বললাম,
ছেড়ে দিলাম
যা -
তোরই হল জিত
প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীরা
...
প্রতিশ্রুতি
ছেলেটার গায়ে নীল টিশার্ট তার সাথে চলতি কালারের বাজার উপচানো সস্তা জিন্স। সদ্য যৌবনে পা। খেটে খাওয়া শরীরের সন্ধ্যের অবসরের সস্তা শৌখিন বিলাস। সিগারেটের দোকানের সামনে বেঞ্চে বসে। পা দোলাচ্ছে। ঠোঁটে দুলছে জ্বলন্ত সিগারেট, একটার পর একটা। ফোন কানের কাছে উঠছে বারবার, "একবার এসো, প্লিজ..."। জীবনবাজি ডাক।
...