জানতাম চুরি করবেই তুমি
জানতাম চুরি করবেই তুমি
তবু দরজায় খিল দিইনি
সোজা রাস্তা থেকে বাঁকা রাস্তাই
যে পছন্দ তোমার
সেকি বুঝেও বুঝিনি!
জল বালির বুকে
জল বালির বুকে
কিছু আঁকিবুঁকি কাটল
যে ছবিগুলো জলের বুকে ছিল
বালি তার বুক পেতে দিল
(ছবিঃ সমীরণ নন্দী)
জয়ন্তী
জাগা স্বপ্ন
হয় তো ভুল জানতাম
মোড়ের বাঁকে কোনো শিউলি গাছ ছিল না
হয় তো কোনোদিনই ছিল না
তবু আমার জানলা দিয়ে যে গন্ধটা আসত
আমার বিছানা বালিশে ঘুমের সাথে মিশত –
আমার কেন জানি মনে হত
সে গাছটা ওই মোড়ের বাঁকেই আছে
জল্পনা
তুমি আসার পর
অভাব কিছু নেই
কিছু মিটিয়েছ তুমি
কিছু মিটিয়েছে তোমার ছায়া
আরো যদি কিছু থাকে অভাব?
মিথ্যা জল্পনা সে, মায়া
জাল
...
জাল
দাঁড় বাইতে বাইতে লোকটা পাড়ের দিকে তাকিয়ে ছিল
তার ছোট্টো কুঁড়েঘরটা মিলিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাচ্ছে....ক্রমশ একটা বিন্দুর মত হয়ে যাচ্ছে...মিলিয়ে গেল...
জানো না
তুমি শূন্যতা দেখো, আমি দেখি আকাশ।
এত ভয় কেন তোমার? জানো না -
আকাশের নিলাম হয় না!
জোনাকি
চেতনা, জোনাকির মত ঝলসে উঠছে
এখানে ওখানে, দেখছি
...
জীবন-মরণ
তার আসা যাওয়া
আমার বুকের অলিতে গলিতে যখন তখন
এখানে ওখানে তার পায়ের ছাপ
যেখানে যেখানে নরম মাটি
সে যে নরম মাটিতেই হাঁটে, শুনেছি তার কোমল চরণ
জাগাও পথিকে সে যে ঘুমে অচেতন
জলের বুকে রঙের স্তর
স্তরের উপর স্তর ...
জীবন্ত ভালোবাসা
কেন্দ্রে আমি
জানোয়ার
হস্টেল রুমে ঢুকে বাঁদিকের দেওয়াল হাতড়ে স্যুইচটা জ্বালতেই পরমা চীৎকার করে উঠল। বাইরে প্রচণ্ড জোর বৃষ্টি হচ্ছে। জানে কেউ শুনতে পাবে না। তবু রিফ্লেক্সে চীৎকারটা বেরিয়ে এলো গলা থেকে। তার মেরুদণ্ড দিয়ে একটা হিমেল স্রোত নেমে গেল। সে বুঝতে পারছে তার নীচের ঠোঁটটা থরথর করে কাঁপছে। তার পা-দুটোও যেন তাকে ধরে দাঁড়াতে দিচ্ছে না, এমন দুর্বল অবশ হয়ে আসছে তার শরীর। মনে মনে বলল, 'জানোয়ারটা ঢুকল কখন?
জল
জল অভিমানী নাকি বীতশ্রদ্ধ?
তাকে ডাকলেও সাড়া দিচ্ছে না
জেগে থাকতেই পারি
আসলে তো কারোর ঘুম ভাঙাতে পারি না
জেগে থাকতেই পারি
মৃত ঈশ্বর আর ঘুমন্ত জনগণ ডিঙিয়ে ডিঙিয়ে
কারা কারা জেগে দেখে নিতেই পারি
৮ বছর মানে তো আইপিএল নয়
৮ বছর মানে তো চোখ মারা নয়
৮ বছর মানে নায়কের জেলের কষ্টও নয়
জীবন-বেদ
যে মানুষটা মোহনার মুখে দাঁড়িয়ে আমার কাঁধে হাত রেখেছিল
সে পুরুষ না নারী আমি জানি না-
...
জাল
...
জগদ্দল
বুকের ওপর একটা জগদ্দল পাথর বসিয়েছিলাম
অজান্তেই
পাথরটা কবে জানি বিশ্বাসঘাতকতা শুরু করল
জুতো
কলিংবেল বাজল। রাত এগারোটা। ছেলেটা দরজা খুলে বাইরে কাউকে দেখতে পেলো না। এদিক ওদিক তাকিয়ে দরজাটা বন্ধ করতে গিয়ে খেয়াল করল, সামনের সিঁড়িতে দু'পাটি জুতো রাখা। ছেলেটা ভ্রু কুঁচকে কিছু মনে করার চেষ্টা করল। পারল না। দরজাটা বন্ধ করে টিভির সামনে এসে বসল। টিভিটা চলছিলই।
জাগরণ
অভিমানী মানুষটা গাছটাকে জড়িয়ে ধরে বলল, আমি কই?
গাছ বলল, এই তো তুমি।
মানুষটা বলল, এই আমি না, এত বড় সংসারে এত কিছু ঘটে চলেছে, সেখানেই আমি কই?
গাছ বলল, তুমি কি চাও?
মানুষটা বলল, সবাই আমাকে চিনুক, নইলে আমি গলায় দড়ি দেব তোমার ডালে, নইলে তোমার বিষফল খাব।
একটা সাপ গাছের গুঁড়ি বেয়ে উপরের দিকে উঠছিল, সে থেমে গিয়ে লোকটার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, বিষ চাই? মরবে?
জেলিফিশ
আমরা যখন প্রকাশ্য রাস্তায় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে ধর্ষণ ব্যাপারটা মেনেই নিয়েছি, তখন আসুন না, আমাদের সংবিধানে ধর্ষণটাকে বৈধ ঘোষণা করে দিই। অকারণ তবে এই খবরগুলো আর পড়তে হয় না, জ্বলতে হয় না। রাস্তায় যেখানে সেখানে প্যান্টখুলে হিসি করার মত ব্যাপারটাকে ইজি করে নিই।
জোনাকিরা
একটা কবিতা লিখতে লিখতে
সকাল গড়িয়ে বিকাল হল
বিকাল গড়িয়ে রাতও হত হয়ত
তুমি না এসে পড়লে গোধূলিতে
সিঁদুর মাখা পশ্চিম আকাশ নিয়ে ঘরে
যদি না আসতে
মধ্যরাতে না ঘুমানো জোনাকিরা
চুরি করে নিয়ে যেত সে কবিতা
জানো মামু সেদিন কি হল?
জানো মামু সেদিন কি হল?
জলপটি
হরেনের দোকানের চপ খাওয়ার পর প্রতিবারই কাশীরামবাবুর এই সমস্যাটা হয়। আজও হয়েছে। তিনি দিগম্বর হয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে, আর ফলতা পিছনে জলপটি দিচ্ছে। কাশীরামবাবু গভীর আবেগ নিয়ে বলতে লাগলেন, আহা জুড়িয়ে যাচ্ছে রে ফলতা... জুড়িয়ে যাচ্ছে।
জানতাম তিনি বেড়াতে গেছেন
আমি তো জানতাম তিনি বেড়াতে গেছেন। ফিরে আসবেন কয়েক দিন কি মাসের মধ্যেই। ও বাবা! এ তো দেখতে দেখতে বছর ঘুরল। তাঁর তো দেখাই নেই। কেউ বলে, উনি নাকি জলে ডুবেছেন, কোন সমুদ্দুরে তা তিনি-ই জানবেন। কেউ বলে নাকি জঙ্গলে পথ হারিয়েছেন, কেউ বলে জঙ্গলে না তো, মরুভূমিতে! কেউ বলে হিমালয়ের ওদিকে নাকি কি কলোনি আছে, ওখানে ঘর ভাড়া নিয়েছেন। তা শুনে নিন্দুকের দল বলে, "কই?
জেটি
জেটিকে যদি জিজ্ঞেস করি, "জেটি তুমি কার?" জেটি কি উত্তর দেবে, জানি না।
জোনাকি পথ
লোকটা জানত মারা যাবে। মারা তাকে যেতেই হবে। ব্যথার কথা বলে না। খিদে কমে যাওয়াটা লুকিয়ে যায়। অল্প বয়েসী মেয়েটার মাথায় সিঁদুরের দাগটা দেখলে বুকটা টাটায়। দুটো ঘুমন্ত বাচ্চার মুখে এসে পড়া স্ট্রিট লাইটের আলো, জানলার পর্দা উড়িয়ে ঘরের ভিতরে এসে জমে - সে দেখতে দেখতে আন
জিভ
বাচ্চাটার মুখে একটাই কথা, আমি বড় চিপসটা খাব। মা মুখের দিকে তাকিয়ে বড় চিপসটা হাতে দিয়ে, চারদিকে তাকাল। চিপসের প্যাকেটটা মাটিতে পড়েছিল, মা কুড়িয়ে পেয়েছে। মুখটা খোলা, তবু, বাচ্চাটা চাইছে, কি আর হবে?!
জিজ্ঞাসা শুধু প্রদীপ জ্বালাতেই নয়
প্রদীপ নেভাতেও শেখায়,
...
জীবন সত্যের থেকে কিছুটা বেশি
জীবন সত্যের থেকে কিছুটা বেশি
তা বলে সে মিথ্যা নয়
শুধু সত্যের থেকে কিছুটা বেশি
জানলার গারদ
জানলার গারদ
বিষন্ন দুটো চোখ
ভারি বর্ষণ
পুরু চশমার কাঁচ
বর্ষা দেখেছে বহু
ভিতরে বাইরে
জানা-অজানা ও কবিতা
জানার একটা সীমা আছে। জানার একটা দৃষ্টিকোণ আছে। যাকে যা জানছি তাকে অনুভবে জানছি না তথ্যে জানছি সেও আছে। জানার পরিসরের বাইরে আরো অনেক এমন কিছু আছে যা আমার জানা উচিৎ ছিল, আবার জানার মধ্যেও এমন অনেক জিনিস আছে যা আমার না জানলেও চলত। এই জানা আর অজানার মধ্যে যে মেঘ ও রৌদ্রের খেলা তা নিয়ে বেশ একটা মজা আছে। অহংকারটা আছে এর মধ্যে কোথাও একটা। বনের মধ্যে যেমন
জীবনবল্লভ
...
জোছনার ফুল
...
জামা
...