হস্টেল রুমে ঢুকে বাঁদিকের দেওয়াল হাতড়ে স্যুইচটা জ্বালতেই পরমা চীৎকার করে উঠল। বাইরে প্রচণ্ড জোর বৃষ্টি হচ্ছে। জানে কেউ শুনতে পাবে না। তবু রিফ্লেক্সে চীৎকারটা বেরিয়ে এলো গলা থেকে। তার মেরুদণ্ড দিয়ে একটা হিমেল স্রোত নেমে গেল। সে বুঝতে পারছে তার নীচের ঠোঁটটা থরথর করে কাঁপছে। তার পা-দুটোও যেন তাকে ধরে দাঁড়াতে দিচ্ছে না, এমন দুর্বল অবশ হয়ে আসছে তার শরীর। মনে মনে বলল, 'জানোয়ারটা ঢুকল কখন? তবে কি?...' সে আর ভাবতে পারছে না। গতবারের ঘটনার স্মৃতি তার জ্বলজ্বল করছে মাথার মধ্যে এখনও।
সেদিনও সে হস্টেলের রুমে একা। তার রুম পার্টনার সহেলি জ্বর হওয়াতে বাড়ি গেছে। পরমা সারাদিন কলেজের প্র্যাক্টিকাল ক্লাস সেরে, টিউশান ক্লাস সেরে হস্টেলে ঢুকেছে। স্নান সেরে একটা তোয়ালে জড়িয়ে সবে বেরিয়েছে... শয়তানটা কোথায় ওঁত পেতে বসেছিল কে জানে... আচমকা তার বুকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল এসে... সে ভয়ে ছিটকে বিছানায় পড়ল... টাওয়েলটা খুলে খাটের নীচে এক ঝটকায় পড়ে গেল... আর জানোয়ারটা তার সারা নগ্ন শরীরে দাপিয়ে... আঁচড়ে... উফ্! মাগো!!!! কাউকে বলতে পারেনি লজ্জায়!
পরমার চোখ দিয়ে জল পড়ছে আতঙ্কে... মুখ শুকিয়ে কাঠ... বুকের ভিতর হাতুড়ি পেটানোর মত আওয়াজ... তার মনে হচ্ছে আর খানিকক্ষণ এভাবে থাকলে সে অজ্ঞান হয়ে যাবে... আর সেই সুযোগে এই শয়তানটা আবার তার শরীরে... সে মনেপ্রাণে ঠাকুরকে ডাকছে... 'রক্ষা করো... ঠাকুর রক্ষা করো...' কান্নায় ভিজে যাচ্ছে তার দুটো গাল... কিন্তু এভাবে কি দেখছে সে তার দিকে... জানোয়ারটার কালো দুটো চোখ তার বুকের দিকে... সে বেশ বুঝতে পারছে... চিকচিক করছে ওর চোখ দুটো... ওই তো সে এগোচ্ছে... তার দিকে এগোচ্ছে ধীরে ধীরে... চেয়ারের থেকে উঠবে মনে হচ্ছে এইবার... পরমা সব শক্তি একত্রিত করে চীৎকার করে ডাকল... "রতনদা চামচিকে!!!!!"
সৌরভ ভট্টাচার্য
26 October 2016