আমন্ত্রণ
দেখো, তোমার ভালবাসা গ্রহণমুক্ত আজ
দুঃস্বপ্নের পাখিরা ওই গা ঝাড়া দিল
তোমার বিন্দু বিন্দু অশ্রুতেই হবে সাগর
ততদিন শুধু হাসিটা জীবিত রেখো
কোনো দিগন্তে সূর্যাস্ত যদি দেখো
জেনো, কোনো দিগন্তে সূর্যোদয়ও আজ
রাতের গুহায় কান্না ঘুমিয়ে আছে
তোমার বুকের তলায় গঙ্গোত্রীর ডাক
আবদার
কথা বলার দরকার নেই
একটু বসতে তো পারিস
ভাল লাগে তো সব কিছু তা হলেই
ঝুল নোংরা লাগে না
ধূলোতে অসুবিধা লাগে না
আঁচের ধোঁয়ায় চোখ তো জ্বলে, রাগ হয় না
শুধু তুই পাশে বসলেই
আমার বন্ধুরা
আমার বন্ধুরা মাথা ঘামায় না
আমি কি পারি তা নিয়ে
তারা জানে, জানে শুধু না
হাড়ে মজ্জায় জানে, আমি কি কি পারি না
সেগুলোকে তারা এমন ভাবে ঢেকে রাখে,
যেন আমিই পৃথিবীর সবচেয়ে নিখুঁত মানুষটা
অথচ আমি জানি, বেশ জানি
ওদের মত হাড়ে মজ্জায় শুধু না
শিরায় ধমনীতে জানি
ওরা না থাকলে আমি জীবনে অনেকগুলো
সূর্যোদয়ই দেখতে পেতাম না
আর জানে বিসমিল্লাহ্
কিছু অকথিত কথা
কিছু আত্মভোলা ব্যাথা
কিছু কাছে থাকা দূর
কিছু বোবা কান্নার সুর
কিছু পোড়া চিঠির ছাই
কিছু পালক সুখের ঠাঁই
সানাই জানে
আর জানে বিসমিল্লাহ্
আমি-রা
নিজের সাথে দেখা করতে চেয়েছিলাম
দরজা খুলে দেখি অনেক লোক
জিজ্ঞাসা করলাম, তোমরা?!
ওরা একটা অন্ধকার দরজার দিকে ইঙ্গিত করল
সে দরজা দিয়ে ঢুকে দেখি আরো অনেকে দাঁড়িয়ে
আশ্চর্য! সবাইকেই খুব চেনা লাগলেও চিনতে পারছি না
কারা তোমরা? চীৎকার করে উঠলাম
হাজার কণ্ঠের ফিসফিসানি কানে এল-
আমরা তোমারই অতীতের এক একটা খন্ড
আমি বললাম, তবে আমি কে?
আড়াল রেখেছি বনফুলে
বুকের মধ্যে একটা আলপিন ফোটালে
জিজ্ঞাসা করলে, লাগছে?
বললাম, না
তারপর একটা বড় পেরেক গাঁথলে
পাঁজর চিরে
জিজ্ঞাসা করলে, লাগছে?
দাঁতে দাঁত চেপে বললাম, না তো!
আশা
একজন মানুষ সারা জীবনে কটা বসন্ত পায়?
সে জানে না
তবু সে প্রত্যেক বসন্তে করে বর্ষার জন্য অপেক্ষা
প্রত্যেক বর্ষায় করে কাশের জন্য প্রতীক্ষা
আলোর গন্ধ
প্রাণানন্দবাবু রিট্যায়ারের পর পরই পাহাড়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন। ফিরে ইস্তক ওনার মধ্যে উনি একটা বিশেষ পরিবর্তন খেয়াল করছেন। উনি এখন আলোর গন্ধ পান। প্রথম প্রথম ভাবতেন বুঝি অন্য কিছুর গন্ধের সাথে গুলিয়ে ফেলছেন। এখন দেখছেন, তা না। সকালবেলা সূর্য্যের আলো জানলা দিয়ে ওনার বিছানায় এসে পড়লেই উনি সারা ঘর শিউলির গন্ধ পান। জ্যোৎস্নারাতে ছাদে বসে থাকতে থাকতে জুঁই-এর গন্ধে বিভোর হয়ে ওঠে ওনার মন। সব গন
আমি ফিরব
গেলাম ভিক্ষার থালা নিয়ে
...
আয় হাঁটি
এখন না, গভীর রাতে
...
আবর্ত
সে ভাল থাকলে ও ভাল থাকে
ও ভাল থাকলে রাম ভাল থাকে
...
আরো
তুমি এমন কিছু বলো
যা কথার চাইতে বেশী
...
আকুতি
কেন এতগুলো অসম্পূর্ণ বাক্যের দীর্ঘশ্বাস?
ভাঙা ব্রীজটার বুকে আজও তো দোয়েল বসে
...
আলস্য
মনে হয় চেষ্টা প্রার্থনার প্রতিদ্বন্দ্বী
...
আপনি
তাতেই সম্মানের একমাত্র সুতো
...
আরো জোরে
তোর পায়ের তলার মাটি, ওতে বিশ্বাস রাখ
সব ছাড়, নিজের জেদটা ছাড়া,
আরো শক্ত করে ধর
...
আমার সোনার হরিণ চাই
...
আজি কোন সুরে বাঁধিব
গমগম করত দেওয়াল ছাদ উঠোন।
বাচ্চাদের চীৎকার, মেয়ে বউদের হাসির কলতান, ছেলেদের তর্ক, উনি সব দেখতেন
একটা আরাম কেদারায় বসে, সকৌতুকে
গভীর তৃপ্তিতে।
...
আত্মশুদ্ধি
আমার সারাগায়ে চাপ চাপ ছত্রাক
দেহ ন্যুব্জ, চোখে ঘোলা দৃষ্টি, বুক থেকে
মাথা অবধি আতঙ্কের ধারা।
...
আমায় নামিয়ে দাও
তোমার রান্নাঘরের কোণে বসব
...
আমার এই একটি কুঁড়ি রইলে বাকি
শুনেই খটকা লাগল। তবে কি আমি নিজে নিজের বন্ধু হতে পারিনি? না সত্যিই পারিনি। শরীরকে যে ভাবে ইচ্ছামত কাজে লাগানো যেতে পারে, মনকে সেভাবে পারে কি?
- না পারে না
- কেন পারে না?
...
আমি
আমার দিন
আমার দুপুর
...
আশঙ্কা
দাউ দাউ করে একটা দাবানল।
তাকে ঘিরে রেখেছে বিস্তীর্ণ বরফের
...
আমার ঈশ্বর
সেই শক্তিতেই আমি তোমার সামনে
সেই অস্তিত্বেই জগৎ আমার সামনে।
...
আমন্ত্রণ
আলোতে চোখ মেলল
বাতাসে দুহাত ছড়াল
তারপর মাথার উপর
...
আমি শুধু
আমি শুধু
তোমার সাথে কয়েক পা হাঁটতে পারি
কাঁদতে পারি ভাঙা বুকে তোমার সাথে শত সমুদ্র
তোমার সুখের দিনে তোমার বাগানে
গ্রীষ্মের দুপুরে
গোলাপের চারা লাগাতে পারি
তুমি না চাইলেও।
আড়ি
মৃত্যুকে কতবার বলেছি আড়ি
যা যা যা
নেব না তোকে খেলায়,
যাব না তোর বাড়ি
আড়ি আড়ি আড়ি
আকুল
তুমি আসবে বলে
আগুন
আছেই আছে
আরশিনগর
আছে
চৌকাঠ পেরোও
রাস্তা আছে
হাত বাড়াও
হাত আছে
শ্বাস নাও
বাতাস আছে
কণ্ঠ ছাড়ো
শ্রবণ আছে
দু'হাত মেলো
আকাশ আছে
স্বপ্ন বোনো
লড়াই আছে
সামনে তাকাও
আশা আছে
আসবে
আমার পা ছুঁচ্ছে নুড়ি- পাথরের সোহাগ
আলো
আমি
এক আমি পিছন ফিরে
আরেক আমি সামনে তাকিয়ে
তোমার 'আমি' মাঝখানেতে
আসন বিছিয়ে
একখানে তার ছায়া, আরেকখানে কায়া
(লেখাটা আগেই দেওয়া। Samiranদার হাতের ছোঁয়ায় তা আরেক মাত্রায় উন্নীত হল। ধন্যবাদ দাদা।)
আমার সারাটাদিন
তোমার ভোরবেলায় আমি আছি?
আমার ভোর তোমার চোখের সাথে হয়
তোমার দুপুরবেলায় আমি আছি?
আমার দুপুর তোমার হাসির সুরে হয়
তোমার বিকালবেলায় আমি আছি?
আমার বিকাল তোমার ঘামের গন্ধে হয়
তোমার সন্ধ্যেবেলায় আমি আছি?
আমার সন্ধ্যে তোমার গলার স্বরে হয়
তোমার রাত্রিবেলায় আমি আছি?
আমার রাত তোমার ঠোঁটের বিছানায় হয়