Skip to main content
(50) | " (18) | # (1) | ' (12) | 1 (1) | 7 (1) | A (5) | B (3) | C (6) | D (8) | F (8) | G (3) | H (2) | I (16) | J (4) | K (3) | L (9) | M (9) | N (5) | O (11) | P (8) | R (2) | S (19) | T (13) | U (5) | W (8) | Y (6) | | (1) |   (4) | (2) | (1) | (1) | (1) | (1) | (1) | (2) | (1) | (1) | (1) | (3) | (1) | (312) | (425) | (28) | (15) | (49) | (5) | (288) | (47) | (1) | (415) | (64) | (101) | (43) | (120) | (69) | (139) | (35) | (29) | (12) | (32) | (9) | (274) | (15) | (193) | (51) | (231) | (321) | (65) | (403) | (207) | (365) | (162) | (123) | (48) | (194) | (2) | (475) | (111) | (6) | (11) | (5) | (1) | (2) | (1) | (1)

মৈত্রী এক্সপ্রেস

হরিদাসীর সকাল থেকেই মন খারাপ।
রাণাঘাটের কিছু দুরে তার বাড়ি,
ছোট্ট একটা গ্রামে
রেল লাইনের কিছুটা দূরে,
বাড়ি থেকেই ট্রেন আসার শব্দ যায় কানে।
...

মিথ্যুক তুমি ঘুমাও

যখন আমি ওর সাথে দেখা করতে যাচ্ছিলাম,
ভাবলাম ওর ভাষা তো বুঝি না, তবে?
আমার অনুবাদক চলল সাথে

ও হাসল
আমার অনুবাদক লাগল না

ওর চোখের কোণা ভিজল
আমার অনুবাদক লাগল না

ও ছুঁলো
আমার অনুবাদক লাগল না

আমি সেদিন থেকে
নদী পাহাড় সমুদ্রে অনুবাদক নিই না

পায়ে ঘাসের ছোঁয়া, ফুলের গন্ধ, পাখির ডাক, বিকালের রঙ, ভোরের হাওয়া

সব বুঝি

মাঝপথে

পাল তুলেছিলাম পৌঁছাব বলে
পৌঁছালাম কই?

মৃত্যুঞ্জয়

আমরা বলতাম 'মানকাকু'। আসল নাম ক্ষুদিরাম মান। আমার দেখা বিস্ময়কর মানুষদের মধ্যে একজন। আশ্চর্য মানুষ!

মিলনাপেক্ষা

অনেকটা রাস্তা সমতলে হাঁটার পর পাহাড় এলো। পথকে বললাম, এবার?
পথ বলল, ওই তো। সে পাহাড়ের দিকে ইশারা করল।
বললাম, পথ কোথায়? এ যে চড়াই শুধু। ঘন জঙ্গল।
খানিক এগোলাম। পথ হারালো জঙ্গলে। ঢুকলাম জঙ্গলে। মানুষ সব হারিয়েও নিজেকে আর হারাতে পারে না, সেই ভয়, সেই ভরসা।
ঘন জঙ্গলের মধ্যখানে দাঁড়িয়ে বললাম, কোনদিকে যাব কেউ জানো?
আমার কণ্ঠস্বর আমারই কাছে এলো ফিরে - প্রতিধ্বনি হয়ে।

মাটি

হতে পারে তোমার ঘুম আসছে না
হতে পারে তুমি কাজের ফাঁকে ফাঁকে
                হচ্ছ অন্যমনস্ক
কোথায় যেন ঘটেছে কিছু ভুল
  কার কাছে যেন বাকি আছে ক্ষমা চাওয়া
একবার বাইরে এসো
খোলা আকাশের নীচে দাঁড়াও
একবার নত হও
স্পর্শ করো মাটি দু'হাত বিছিয়ে

মাছ

- ও মাছদাদা, চিংড়ি কত করে?

- দুশো করে বৌদি।
- এবারে উঠেছে বোধায় বেশি নাকি?
- হ্যাঁ, নেবেন?
- না না, আগের টাকাগুলো শোধ করে নিই। আগেরটা তো দিতে পারিনি এখনো। আসলে ওর মাইনে হতে দেরী হচ্ছে। হলেই দিয়ে দেব। তারপর মাছ নেব, কেমন?
- ঠিক আছে বৌদি।

মাছওয়ালা সাইকেল নিয়ে চলে গেল। শ্বেতা বারান্দার গ্রীল ধরে এখনো দাঁড়িয়ে। বয়েস পঁয়ত্রিশের আশেপাশে হবে। 

মরণ


ভ্রমর বাতাসকে বলল, তুমি ভারী বুদ্ধু।
বাতাস বলল, কেন? 
ভ্রমর বলল, সারাদিন থাকো ফুলের আশেপাশে, তবু চাও না একবিন্দু মধু। 
বাতাস হাসল। ভ্রমর বলল, হাসলে যে! লুকালে বুঝি কিছু? 
বাতাস বলল, না তো। 
ভ্রমর বললে, বলো তবে কি পাও?
বাতাস বলল, ওর গন্ধ।
ভ্রমর ফুলকে বলল, আর তুমি কি পাও?
ফুল বলল, ওর স্পর্শ।

মামু

আমি আর আমার জান- মামু...আমার দিদির মেয়ে। 
 
ওর সাথে আমার প্রথম দেখা হল ওর ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরই। নার্স বললে, দেখে যান। দেখি একটা ট্রের উপর সদ্য ইহজগতে আসা ছোট্ট মানুষটি। নাভির সাথে তখনও মায়ের শরীর থেকে আসা ডেটা কেবিলের কিয়দংশ লেগে। 
 

মন্থন


এখনো মন্থন চলছে
এখনো বেরোচ্ছে পেঁজা পেঁজা বিষ

এখনো মন্থন চলছে
এখনো অপেক্ষায় আছি অমৃতের

অমৃত আসবে, না হলে-
এত হলাহল রয়ে যাবে নিরুত্তর

তা হয় না

মহানিশা


অন্ধকার। মহানিশা। কালীপূজোর রাত। শাস্ত্রর কথা থাক। পুরাণে, তন্ত্রে, বেদে কি লেখে সে কথা থাক। আজ মনকে অন্ধকারের সামনে দাঁড় করানোর কথা।

মুক্তির ভয়


তালাগুলো ভেঙে গেছে
চাবিগুলো গেছে রয়ে
নতুন তালা ফিরছি খুঁজে 
বাজারে হন্যে হয়ে

মিছিমিছি কথা


তোমার সাথে রোজ কথা বলি
এ কথা, সে কথা, কত কথা

প্রতিদিন তোমার কত কথাই শুনি
এ কথা, সে কথা, কত কথা

এ সব গুলোই মিছিমিছি

আসল কথাটা দু'জনেই যাই এড়িয়ে 
সে কথায় ঢাকি, নানা কথার ঢাকা
এ কথা, সে কথা, কত কথা

মায়া


একটা গাছ, তার-

শিকড়কে বিশ্বাস করে না
পাতাকে বিশ্বাস করে না

তার চারপাশের-

মাটিকে বিশ্বাস করে না
জলকে বিশ্বাস করে না
বাতাসকে বিশ্বাস করে না

সে আকাশের দিকে তাকিয়ে
দীর্ঘশ্বাস ফেলে
হতাশ্বাস ফেলে
বিষাদের জাল ফেলে

মানুষটা


মানুষটার ভিতরটা ছিল সমুদ্রের মত ভর্ত্তি।
লোকে ঢিল ছুড়লে, 
এমনকি থান ইঁট ছুঁড়লেও জল ছলকাতো না,
গর্জে উঠত না সে
যেমন পুকুরে ডোবায় হয়,
কারণ লোকটার ভিতরটা ছিল সমুদ্রের মত পূর্ণ।

মিথ্যার ছাই হয় না


হঠাৎ কি হল
পাঁচিলের গায়ে রোদ আটকালো?
তুবড়িতে আগুন দিতে-
ছুটল সাগরের নোনা জল?
চীৎকার করে গলার শিরা ফুলিয়ে কি বলছে ওরা?
ওগুলো মিথ্যা কথা।
কুকুরের পেচ্ছাপের মত তোমার বোধের উপর এক পা তুলে সারছে,
সরে দাঁড়াতে পারছ না?
বোধশোধ সব খুইয়েছ নাকি?
ঘুঁটের পোকা ঘুঁটের সাথেই পোড়ে,
ওরাও পুড়বে। পুড়ে ছাই হবে না।
কারণ মিথ্যার ছাই হয় না।

মায়া


আমি যদি
কিছু একটা হই
অমনি দেখি আলোকে ঢেকে
বানিয়ে ফেলেছি এত্তবড় ছায়া!

নিজেকে বলি, সরে আয় ভাই
আমি তো আর তেমন কিছু নই
নিজের সাথে তাও থাকা যায়
ছায়ার যে ভাই বড্ড বেশি মায়া!

মাঝপথে


একটা বৃত্ত পূর্ণ হতে কতটা জায়গা লাগে?
জানি না
একটা কেন্দ্রে কতগুলো বৃত্তের কেন্দ্র থাকে?
জানি না
আমি পরিধি বরাবর ঘুরে এসেছি।
কেন্দ্রে শুনেছি -
   ঢেউয়ের গর্জন
        ঝড়ের হুংকার

মিথ্যা


যেদিন তোমার ভয় বাস্তবের মুখোমুখি হবে,
দেখবে বাস্তবের হাত তোমার ডান হাতে ধরা
ভয় মিলিয়ে যাচ্ছে ধোঁয়ার মত, একা।

যেদিন তোমার কল্পনা প্রেমের মুখোমুখি হবে,
দেখবে প্রেমের পাদুটো তোমার দাঁড়ানো মাটিতেই রাখা
কল্পনা মিলিয়ে যাচ্ছে কুয়াশার মত, একা।

মাতৃভাষা ও প্রাথমিক শিক্ষা

বহুদিন আগে কোনো এক নিকটাত্মীয়া আমায় জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তাঁর সন্তানকে তিনি কোন মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা দেবেন?

মুক্তি


(আজ গুরুপূর্ণিমা। সেই সব মানুষের চরণে সশ্রদ্ধ প্রণাম জানাই, যাঁরা আলো জ্বালেননি, বরং নিজেই আলো হয়ে জ্বলে, মানুষকে পথ দেখিয়েছেন যুগ যুগ ধরে)

মাটি

রজনীগন্ধার দিকে গোলাপ চেয়ে বলল,
আমার কই অমন সৌরভ?

গোলাপের মুখে চেয়ে রজনীগন্ধা দীর্ঘশ্বাস ফেলল-
আমার কই অমন রঙ?

ঘাস দুজনের কথা শুনে নিজের দিকে তাকাল, হাসল, বলল-
ভাই আমার না আছে রঙ, না আছে বাস
আমার আছে যা, তা তোমাদেরও তো আছে
যা সব চাইতে খাঁটি-
গোলাপ সাথে রজনীগন্ধা বলল-
কি?
ঘাসের দল সমস্বরে বলল-
মাটি মাটি মাটি....

মা

একটা বাচ্চা পার্কের স্লিপে
উঠছে হাসছে নামছে
মা দাঁড়িয়ে দেখছে।

স্লিপের নীচে মা কুকুরটা
বাচ্চাগুলো নিয়ে ঘুমোচ্ছে।

মরার তার সময় আছে নাকি

রোজ রাতে যে মরতে পারলেই বাঁচে
পরের দিন সে সবার আগে ওঠে
ফুল চোরকে দেয় গালি
উঠোন ধুয়ে, চা বসায়
মরার তার সময় আছে নাকি?

মেঘ রোদকে বলল

মেঘ রোদকে বলল, ধর
ছায়া দীঘির জলকে বলল, ছোঁ
ফুল মৌমাছিকে বলল, আয়
ঝরাপাতা গাছকে বলল, যাই
প্রাণ অনন্ত অসীমকে বলল, আছি

মহাত্মা

তিনি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, “শালা এবারের দোসরা অক্টোবরটা রবিবার পড়ে গেল।

মরে ভ্রান্তিই শুধু

ছায়া কোনোদিন আলোর উৎসের দিকে জন্মায় না
জন্মায় মরে ভ্রান্তিই শুধু,
    সত্য অজন্মা, আবৃত হয়

                  অবলুপ্ত হয় না


[ছবিঃ দেবাশিষ বোস]

মৃত প্রতিশ্রুতিরা

অকাল মৃত প্রতিশ্রুতিরা আনাচে কানাচে চোখ মেলে চেয়ে
ভাষার জালে যুক্তি খোঁজা
      তীরগুলোর মুখ যদি অন্য দিকে ফেরে

মারের সাগর পাড়ি দেব গো

(এক মাঝির গল্প। এমন মাঝির দেখা সংসারে কদাচিৎ মেলে। যেমন আজ, এমনই এক মাঝি ভূষিত হবেন মানুষের দরবারে সন্ত নামে। কিন্তু সে ভূষণ তো তিনি সেদিনই পেয়েছেন যেদিন সে ডাক শুনেছেন। অবশ্যি ডাক তো শোনে কতজনে সাড়া কি আর সবাই দেয়?)

মিথ্যার মত সত্যি কথা

ছেলেটা একলা হাঁটল অনেক দূর
মেঘের সাথে দেখা হল। সে বলল, যাবি?
ছেলেটা বলল, চল
মেঘের সাথে এক যুগান্ত হেঁটে এল
নদী বলল, যাবি?
ছেলেটা বলল, যাব
নদীর সাথে এক সমুদ্র বেড়িয়ে এল

এভাবে সে এক জঙ্গল হাঁটল গাছের সাথে
এক তেপান্তর হাঁটল দিগন্তের সাথে
এক স্বর্গ হাঁটল দেবতার সাথে
এক নরক হাঁটল অসুরের সাথে

মমি

হাত বাড়ালে
          স্পর্শ দিও
                 শর্ত দিও না
অনেক হাত
       শর্ত নিয়ে
            থমকে আছে
মমির মত

মাদল

অসম্ভব যন্ত্রণা নিয়ে জন্মালো একটা তারা
    তার জন্মলগ্নেই যেন বিচ্ছেদযন্ত্রণার ব্যথা
সে মহাশূন্যে চোখ মেলে তাকালো
       বুকের থেকে ছিটকে পড়ল বিকিরণ
    খুঁজল তেষ্টা মেটানোর মত প্রেম
আলোতে অন্ধকারে
     রহস্যে সরলতায়

মহাশ্বেতা

কিছু কথা বলেছিলেন
   যে কথাদের কেউ ঘাঁটায় না
কিছু মানুষদের কথা লিখেছিলেন
   যাদের অস্তিত্ব সভ্য সমাজে ব্রাত্য
সে মানুষদের কাছে গবেষকের মস্তিষ্ক পৌঁছেছে কখনো কখনো
    কখনো সরকারি বা বেসরকারি কৃপা
  একটা মরমী হৃদয় পৌঁছেছিল বহুদিন পর

মেঘ নিরুদ্দেশ

মেঘ পাল্টানো মেঘের ছবি
    তোমার চোখেতে চোখ
দমকা হাওয়ায় খোলা চিঠি
    এবার বন্যা হলেও হোক

মেঘ ঢেকেছে তারার আলো
    আলোর স্পর্শে হাত
ফুলের গন্ধ তোমাতে মিশে
    শ্বাসেতে রাখল হাত