চন্দ্রিমা রাত্রি
স্টেশনের একাকীত্বকে জানান দিয়ে
চলে গেল শেষ ট্রেন।
নীরস উপন্যাসটা বন্ধ করে
ঝরে পড়া পাতার মতো
বেঞ্চের কোণে বসে,
ভোরের ট্রেনের অপেক্ষায়।
চোখের হাসি পড়তে পারো?
চাইছিলাম আলো
চাইছিলাম আলো জ্বালব ঘরে, এক কোণে। এদিক ওদিক, এদেশ ওদেশ আগুন খুঁজে বেড়ালাম, চাই যে একটু আলো! কোথায় মিলবে ত্রিভুবনে?
চিড়
বৈশাখীর সব পাল্টে গেল জামাটা দেখার পর। সকাল থেকে বেশ ব্যস্ত ছিল। ছেলেকে স্কুলে পাঠানো, কাজের লোক, রান্নার লোকের পিছনে দৌড়াদৌড়ি করতে করতে...
চ্যালাকাঠ
আস্ত একটা চ্যালাকাঠ কিনে লোকটা বাড়ি ফিরছিল। সামনে জটলা দেখে দাঁড়িয়ে পড়ল। সামনে এগোতে পারছে না। প্রচণ্ড ভিড়। বেশির ভাগ মেয়ে মানুষ। আগে মেয়ে মানুষ ঠেলে ভিড়ে ঢুকতে বেশ লাগত। এখন লাগে না। বয়েস হয়েছে।
চেনা পথ অচেনা পথিক ও পাঠক রবীন্দ্রনাথ
চড়াই-উতরাই
চেষ্টা করো
আমায় জ্যান্ত চেয়েছিলে না?
তবে নাক-চোখ-মুখ চেপে ধরছ কেন?
চলো
যে পথে কিছু কাঁকড় এখনো প্রতিশোধ নেবে বলে বুক চিতিয়ে শুয়ে আছে
চক্ষুলজ্জা
...
চলে গেলে দুঃখ হয়
সঙ্গের জিনিসগুলো রয়ে যায়
দালান, দরজা, সিঁড়ি, খাট, চটি
...
চম্পা
এক নিঃশ্বাসে এতটা বলে দম নিল চম্পা। তখনও ভোরের আলো ফোটেনি। অন্ধকারটা ভালোই লাগে চম্পার। চাদরটা বুকের উপর টেনে নিয়ে বলল, "বাবু একটু জানলাটা খুলে দে তো, টুনটুনিটা ডাকছে।"
...
চাকা চাই চাকা
এই যে চুপ করে ঘন্টাখানেক ধরে ট্রেনের সিটে চুপ করে বসে আছি, সে ট্রেনটা চলছে বলেই যে না! নইলে কখন অস্থির হয়ে এটা-সেটা করে নিজেকে ব্যতিব্যস্ত করে তুলতাম।
ওই যে, চোখ বন্ধ করে, ১০৮টা রুদ্রাক্ষ গেঁথে গেঁথে মালা বানিয়ে মানুষটা জপ করছে। ও একটা বসার সিট খুঁজছে। মনটাকে মন্ত্রের চাকায় চড়িয়ে দিয়ে, একটু জিরিয়ে নিচ্ছে। নইলে মনটার বায়নায় বায়নায় মানুষটার এক মুহূর্ত বসার জো আছে!
চক্ষু চড়কগাছ
একখেন পোস্ট পইড়া চক্ষু চড়কগাছ হইল। একজন রামকৃষ্ণ ভক্ত লিখছেন যে, 'রামকৃষ্ণ মিশনের নিন্দা শোনা পাপ। গুরুতর পাপ। রামকৃষ্ণদেবের গৃহীভক্ত নাগ মহাশয় একবার গুরুনিন্দা শুনে নিন্দুককে বেগো জুতোপেটা করেছিলেন। আমাদেরও উচিৎ নিরুত্তর না থাকা'।
চেকমেট
চলাচলের রাস্তা
পরিচিত তো দুই হাতের কড় পেরিয়েও অনেক
আহ্নিকগতি বার্ষিকগতিতে
বাজেট-উৎসব-হাসপাতাল-প্রেম-ঈর্ষা
সবই খাপেখাপে
চেয়েছিলাম
তোমাকে প্রতিধ্বনিতে চাইনি
প্রতিধ্বনিত হতে চেয়েছিলাম
চাঁদ
চাঁদ,
চাঁদের মুখ ভার
মেঘের আড়ালে তুমি
তারও মেঘের আড়াল আজ
চুনের দাগ
চাহিয়া দেখো রসের স্রোতে রঙের খেলাখানি
গতকাল মধ্যরাত থেকে যে শুভেচ্ছা আর ভালোবাসার স্রোতে ভেসে চলেছি, তার জন্য নিজে কতটা যোগ্য সত্যিই জানি না। নীরেন্দ্রনাথ মহাশয় একবার বলেছিলেন, জীবনে এমন অনেক অপমান দুঃখ পেয়েছি যা হয়ত কাম্য ছিল না, কিন্তু অন্যদিকে এমন অনেক সুখ, ভালোবাসা পেয়েছি, তারও আমি যোগ্য ছিলাম
চোখ বন্ধ করেন
ডাক্তার বললেন, চোখ বন্ধ করেন। কি দেখছেন?
- একটা সবুজ লুঙ্গি পরা লোক, গায়ে সাদা জামা, গলি দিয়ে হেঁটে হেঁটে আসছে। দেখে মনে হচ্ছে চারদিন কিছু খায় নি। বেশি বললাম, দুই দিন হবে। চারদিন না খেলে মানুষ ওভাবে হাঁটে কি? আপনার কি মনে হয় ডাক্তারবাবু?
চিরদিন মাধব মন্দিরে মোর
চৌকির উপর দুটো পাতলা কাঁথা দিয়ে বানানো বিছানায় শুয়ে শুয়েই সুবাস বুঝতে পারল বৃষ্টিটা ধরেনি। গতকালও সারাদিন হয়েছে। এখন আন্দাজ ভোর সাড়ে পাঁচটা হবে। সুবাস উঠে বসল। দুটো শীর্ণ হাত জড়ো করে সামনের দেওয়ালে টাঙানো রাধাকৃষ্ণের ছবিতে প্রণাম করল। ফর্সা হাতদুটোতে নীলচে শিরার রেখা। মন্দিরের পিছনেই নদী। চূর্ণী নদী। সুবাস স্নান সেরে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতেই ফুল তুলত
চপ
বললে তো হবে না, অনেকেই বারণ করেছিল বিশুদাকে বাড়িটা কিনবেন না, কিনবেন না। ভালো না বাড়িটা। এখন পস্তাচ্ছেন।
চর্চা-মনন-পাঠ
'চর্চা' শব্দটার আগে বানান ছিল 'চর্চ্চা'। চর্চ্চ শব্দটার অর্থ আলোচনা, আন্দোলন, উচ্চারণ। সেই থেকে চর্চ্চা, তার থেকে চর্চা। চর্চা মননের শব্দ। মুক্তো কি করে হয়?
চেতনা
চুমু
বুড়োটা রিকশা চালিয়ে যখন রাস্তা দিয়ে যেত, মনে হত, পরের বারের প্যাডেলটা ঘুরাবার জন্য সে বুঝি আর জীবিত থাকবে না। লোকে একান্ত কাউকে না পেলে তবেই ওর রিকশায় উঠত। করুণায় নয়, সময়ের দাম আছে না? অত আস্তে চালালে হয়?
চেনো ওদের?
জানো কিনা জানি না। আমি অনেক বাড়ি দেখেছি, যারা কেউ হাসে না। তারা যে দুঃখী তা নয়। তারা হাসার কোনো কারণ খুঁজে পায় না। চোখের উপর তাদের কোনো পর্দা নেই আর। ধুলো-বালি-খড়কুটো সব গিয়ে চোখে পড়ছে, কিন্তু তবু তাদের চোখ জ্বালা করছে না, আমি এমন দেখেছি। তাদের চোখের সামনে টিভিতে কতলোক হাসছে-কাঁদছে-গল্প করছে-নাচছে-গাইছে। তারা স্থির হয়ে টিভির সামনে বসে। কত দুর্ঘটনা
চুমু
...
চক্রব্যূহ
শাস্ত্রের ব্যাখ্যা কি?
...
চিরকুট
...
চিন্তা
খিল খুলে বাইরে এলো
...
চোখ দুটো বন্ধ
...
চাঁদ ও গামলা
...
চিন্তাটা দুদিকে ধার তরোয়াল হোক
বড্ড গোলমাল হয়ে যাচ্ছে চারদিকে। কোনো 'ইজ্ম'-এই বিশ্বাসী হতে হবে না। চিন্তাটা দুদিকে ধার তরোয়াল হোক।
...
চারাগাছটা
...
চারপাশ
আমার একজন শিক্ষক ছিলেন। ভীষণ বামপন্থী। এমনই বাম যে হৃৎপিণ্ডের মাধ্যমে রক্তসঞ্চালন বোঝাতে গিয়ে বলেছিলেন, বাম অলিন্দ নিলয় দিয়ে শুদ্ধ রক্ত যায়, কারণ বামেরা সব সময় শুদ্ধ।
চক্রান্ত
মানুষের তো শুধু মহিমাই নেই, মানুষের তো সঙ্কীর্ণতা, অসহায়তাও রয়েছে। সে সঙ্কীর্ণতাকে আমি যে নামেই ডাকি না কেন – স্বার্থপরতা, আত্মকেন্দ্রিকতা, ক্ষুদ্রবুদ্ধি – ইত্যাদি যাই বলি না কেন, আছে তো। এত যে চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র, খুনোখুনি, অত্যাচার, ধর্ষণ – এ সবই মানুষেরই কাজ। এ তো মহত্ব নয়। যে মানুষটা ঠাণ্ডা মাথায় কারোর ক্ষত