Skip to main content

আস্ত একটা চ্যালাকাঠ কিনে লোকটা বাড়ি ফিরছিল। সামনে জটলা দেখে দাঁড়িয়ে পড়ল। সামনে এগোতে পারছে না। প্রচণ্ড ভিড়। বেশির ভাগ মেয়ে মানুষ। আগে মেয়ে মানুষ ঠেলে ভিড়ে ঢুকতে বেশ লাগত। এখন লাগে না। বয়েস হয়েছে। 
     আরেকটু এগোলো। অনেক লোকের ঘামের গন্ধ। আগে লোকটা চিনতে পারত, চোখ বন্ধ করে, কোনটা মেয়েমানুষের গায়ের গন্ধ, কোনটা পুরুষের। এখন সে ভাবে পুরুষত্ব জাগে না। রাগ হয়, ক্ষোভ হয়। ষাঁড়গুলোকে দেখলে গায়ে জ্বালা ধরে। 
     ভিড়ের অনেক কাছে সে। প্রচুর চীৎকার আসছে। এত চীৎকার করে কেন মানুষ। আগে সেও খুব চীৎকার করত। বুকের মধ্যে থেকে ফুলকি গিয়ে মাথায় পড়লেই হল। মাথার মধ্যে সব সময়ে শুকনো কাঠ কেরোসিন ঢালা। দাউদাউ করে জ্বলে উঠত। রাগের একটা নেশা আছে। কামের মতই। আগে তার শিকারি শিকারকে কামড়াচ্ছে, ছিঁড়ে খাচ্ছে দেখলে তলপেটের থেকে সুড়সুড় করত। প্রায় খাঁড়া হয়ে যেত। এখন মায়া লাগে। আজকাল বড্ড মায়াটা বেড়েছে তার। অকারণে মায়া লাগে। মুরগীর বাচ্চা দেখলেও শালা মায়া লাগে। 
     তার ফিক করে হাসি পেয়ে গেল। হাতের চ্যালাকাঠটার দিকে তাকাল। নাতনির পুতুলের দোলনার পাটাতন করে দিতে হবে। 
    ভিড় থেকে কে একটা ছুটে বেরিয়ে গেল। একটা বাইশ তেইশ বছরের ছেলে। সব্বাই মারমার করে পিছনে ছুটল। একটা জোরে ধাক্কায়, টাল সামলাতে না পেরে রাস্তায় পড়ে গেল লোকটা। দুটো ছেলে দৌড়ে এগিয়ে আসল।
     "দাদু লেগেছে?" বলে তাকে হাত ধরে দাঁড় করিয়ে দিতে দিতে পালানো ছেলেটার দিকে আঙুল তুলে বলতে লাগল... আর বলবেন না দাদু, ওই মালটা সামনের বাড়ির বৌদির সাথে......

     শুনতে ইচ্ছা করল না। অনেক কম বয়েসী বৌয়ের মুখ মাথার মধ্যে অস্পষ্ট ভুড়ভুড়ি কেটে মিলিয়ে গেল।

      তাকিয়ে দেখল চ্যালাকাঠটা দু'টুকরো হয়ে পড়ে আছে রাস্তায়।