তুমি আছ বলে
তুমি আছ বলে আমি গাইলে বড়ে গুলাম
তুমি আছ বলে আমার তুলিতে ভ্যান গঘ
তুমি আছ বলে আমার শিসেতে হরিপ্রসাদ
তুমি আছ বলে কাঞ্চনজঙ্ঘা চিলেকোঠায়
তুমি আছ বলে লাইটপোস্টে কুতুবমিনার
তুমি আছ বলে রেশন দোকান তাজমহল
তুচ্ছ বলে যা চাইনি
তুমি আমি
তুমি দরজা হয়ে ছিলে,
আমি তোমায় দরজার বাইরে খুঁজেছিলাম
তুমি পথ হয়ে ছিলে
আমি তোমায় পথের প্রান্তে চেয়েছিলাম
তুমি প্রেম হয়ে ছিলে
আমি তোমায় শর্তের বাঁধনে বেঁধেছিলাম
তফাত যাও
অস্পষ্ট আলো
আগে বাঁক
বাঁকের সামনে অন্ধকার
তুমি
বলল, এটা পাহাড়
তুমি অন্ধ
তুই আছিস মেয়ে
বসন্ত সব গলিতে আসে না রে মেয়ে
বর্ষা আসে যখন তখন, যেখানে সেখানে
দেখ, তোর হাতে পড়ছে জ্বলন্ত মোমবাতি চোঁয়া গরম মোম
তবু মোমবাতি তো নিভিয়ে ফেললে চলবে না!
তাহার উপর নয়
ছোটোবেলা থেকে জানতুম, শ্রাদ্ধশান্তি, জন্মদিন, মুখেভাত, বিয়ে ইত্যাদি তিথিনক্ষত্র, দিনক্ষণ দেখে করতে হয়ে।
তুমি বলো
তুমি অনুরোধ করলে
কবিতা লিখতে পারিনি কোনোদিন
আজও পারি না।
আমি কবিতা লিখি তোমার চোখের জন্য
তোমার চোখের ভাষায় কথা বলার শব্দদের খুঁজি
তাড়াতাড়ি করো
বুক অবধি নেমে দাঁড়িয়ে আছে
না না দাঁড়িয়ে নেই ...
তাই হয়
তুমি কি আকুতি ভরা দৃষ্টিকে উপেক্ষা করে, 'না' বলোনি মুখের উপর?
তুমি কি সাহায্য চাওয়া দুটো হাতের সামনেই দরজাটা ধড়াস করে বন্ধ করোনি? ...
তোমার সময়
তোমার সময় তোমার জন্মসূত্রেপ্রাপ্ত সম্পদ। উত্তরাধিকারে পেয়েছো মহাকালের থেকে। কারোর থেকে ধার করে পাওয়া না। তাই তা কখন কিভাবে তা ব্যবহার করবে, তা সম্পূর্ণ তোমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।
কেউ সে সম্পদের ভাগ চাইতে পারে, দাবী করতে পারে না। আর তুমি তা দিতে না চাইলে, সে যদি কৈফিয়েৎ চায়, সে তো নিতান্তই জুলুম!
তুমি জানতে?
আমার ভালোবাসার সাক্ষী কি কেবল আমিই ছিলাম? না তুমিও ছিলে?
ভয় করে
ভুল শুধু আমিই বুঝলাম
না তুমিও
খালের জল খরস্রোত হল
তুমি ওপারে কখন গেলে?
তুমি কি জানতে বান আসছে?
তুমি আকাশ, শাহরিয়ার
নীড় আর আকাশের ব্যবধান
...
তুমি বলেছিলে
"মানুষের ধর্ম বিশ্বাস না থাকলে, ঈশ্বরে বিশ্বাস না থাকলে মানুষ পশু হয়ে যাবে।"
...
তোমার ভিন্নতায়
তোমার ভিন্নতায় আমার ঘৃণা
তোমার বিশ্বাসে আমার অবিশ্বাস
তোমার চলনে-বলনে আমার আতঙ্ক
...
তৃষ্ণা
ফিরছে,
ট্রেনের বাইরে অন্ধকার
ভিতরে চৈত্রের গুমোট ভ্যাপসা গরম
...
তালা
...
তবে আজ কিসের উৎসব?
...
তাই তো বরাবর ছিল
যা এখন আছে
আমিই চেয়েছিলাম অন্যরকম হোক
...
ততটা অনিশ্চিত হয়ত ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে নই
জানি আমি আগে বহুবার লিখেছি। আবারও লিখছি। পাকিস্তান হলেও লিখছি। পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তেই ঘটুক না কেন লিখছি। কারণ আমি আর কিছু করতে পারি না।
...
তোমায়, না আমায়?
তোমার বৃষ্টিভেজা চুলের ছাঁট পড়েনি কোনোদিন বারান্দায়
তোমার ছাদে শুকোতে দেওয়া কাপড়
কালবৈশাখী উড়িয়ে নিয়ে প্রতিবেশীর ছাদে ফেলেনি কোনোদিন
তাকিয়ে দেখো
তারাটা অনেকক্ষণ উঠেছে
ওটা কি ঈশান কোণ?
...
তোমার জন্য
তোমায় ভুলে যাওয়া
তোমায় বারবার ভুলে যাওয়া আমার অভ্যাস
তুমি বলো স্বার্থপর, দুনিয়া বলে উদাসীন
মূর্খরা বোঝে না
শ্বাস নেওয়ার আগে শ্বাস ফেলাও তো জরুরী
তেমন কিছু না
তেমন কিছু না
তেমন কিছু না
মানে তেমন বড় কিছু না তো
মনের মধ্যে ঢুকলে বালাই
মনকে বেঁধে, চরকি কাটিয়ে
সন্ন্যাসী দেখো কি আনন্দে
সারাদিন তার পালাই পালাই
তাই বলছি, তেমন কিছু না
তেমন কিছু না তো
তেমন বড় কথা হলে-
বলা-কওয়া তবু যেত
তোমায় ভালোবাসব বলে
তোমায় ভালোবাসতে হবে বলে
টাইমটেবিল দেখে রুদ্ধশ্বাসে সাইকেল চালিয়ে
ঘেমেনেয়ে স্টেশানে গেলাম
তোমায় ভালোবাসতে হবে বলে
একটা হাতলে জীবন বাজি রেখে
একটা পা ট্রেনের ভিতর
বাকি শরীরটা পোস্ট বাঁচিয়ে ঝুলে এলাম
তা না নানা, তা না নানা
তোমারই আছি
তুমি যেন অলৌকিক
হাত ছুঁইনি তোমার
পাশে বসিনি
কয়েক পা হেঁটেছিই শুধু
তাও বাজারের মাঝখানে
বাজার মিলিয়ে গেল
তোমায় রেখে
তোমার চোখের সাথে
চোখ মিলিয়ে
ঘুরে এসেছি কতবার
বারণ করোনি,
চোখের ভাষা দুর্বোধ্য করে
ভ্রান্তও করোনি
তবু একদিন
তবু একদিন
একট্রেন বোঝাই অফিসযাত্রী চীৎকার করে উঠবে - আর না!
এক শপিংমল ভরতি মানুষ চীৎকার করে বলবে -
তফাৎ যাও!
ট্র্যাফিকে দাঁড়িয়ে থাকা অজস্র মানুষ চীৎকার করে বলবে -
রাস্তা ছাড়ো!
সিনেমাহলের সব কটা মানুষ উঠে দাঁড়িয়ে বলবে -
চুপ করো!
স্কুলের টিফিন পিরিয়ডে বাচ্চাগুলো জড়ো হয়ে বলবে -
গাছ চেনাও, কালো বোর্ডটা সরাও!
তুমি নির্বাক
তোমার হাতের স্মৃতিতে আমার শৈশব
আমার হাতের তালুতে মিশে তোমার বার্ধক্য
তুমি নির্বাক। আমিও নিশ্চুপ।
আইসিউতে খালি পা আমি
সময়ের সাথে চটি খুলে রাখা বাইরে
অপেক্ষা আর অসহায়তার গভীর পার্থক্য
তুমি সুখী হবে কি করে
তুমি সুখী হবে কি করে?
তোমার যে সুখী হওয়ার শর্ত আছে
তবুও আমি আস্তিক
তবুও আমি আস্তিক
যদিও আত্মার অমরত্বে বিশ্বাস রাখি না
বিশ্বাস রাখি ভালোবাসায়
তবুও আমি আস্তিক
যদিও কোনো মানুষের অবতারত্বে বিশ্বাস রাখি না
বিশ্বাস রাখি মহত্বে
তবুও আমি আস্তিক
যদিও মুক্তি কিম্বা নির্বাণ - অর্থহীন আমার বোধে
বিশ্বাস রাখি সাতরঙে, সাতসুরে
তবুও আমি আস্তিক
তোমারও
তোমার পায়ের তলায় ধুলো ছিল
আমারও পায়ের নীচে ধুলো
তোমার মাথার উপর আকাশ ছিল
আমারও মাথার উপর আকাশ
তোমার আশেপাশে ছিল মানুষজন
আমারও চারপাশে আছে
শুধু তোমার একদিনে ছিল
অনেকগুলো দিন
আমার একদিনও যেন অর্ধেক
তত্ত্বকথা
তর্জনী ডুবিয়ে বসে
তুমি তো মহাকাল নও
ছেঁড়ো
সে ছেঁড়া পাতাগুলো রাখবে কোথায়?
তুমি তো মহাকাল নও!