তোমার অশ্রুত বাণীতে
তোমার অশ্রুত বাণীতে
আমার নিঃশব্দ কান্না
তোমার অদেখা উপস্থিতিতে
আমার অবলম্বনহীন আশ্রয়
তর্পণ
- মায়ের জন্য তর্পণ করতে গেলে না?
- না কাকু/কাকিমা/দিদা/দাদু/পিসী/পিসে... [দীর্ঘ প্রশ্নকের দল]
- কেন?
- ইচ্ছা করেনি। মন চায়নি।
- তোমার মায়ের জন্য এটুকু করা তোমার তো কর্তব্য বাবা...
- মনে হয়নি।
- তুমি কি কমরেড?
- কমরেডরাও তর্পণ করে। আমার কাকা বাবা দু'জনেই বর্তমান ও অতীত কমরেড... দেখুন গিয়ে গঙ্গায় গলা জলে দাঁড়িয়ে তর্পণ করছে।
তোমার
তোমার মুখের সাথে আমার অনেক সকালের আলো জড়িয়ে
সরে যেও না
তোমার গলায়, আঙুলের ভাঁজে
আমার অনেক অসম্পূর্ণ আবদার জড়িয়ে
ভুলে যেও না
তোমার শ্বাস-প্রশ্বাসের উষ্ণতায়
আমার অনেক গভীর কান্না শুকিয়েছে
তুমিই থেকো
আমার রাতের ঘুমের পাশে
শুধু তুমিই থেকো
আমার ঘুমন্ত আলতো হাতের মত
নিজেকে একমাত্ৰ
তোমার বুকেই রাখতে পারি নিশ্চিন্তে
তুমি কি চেয়েছিলে?
ওরা বলল, আজ থেকে তুমি সন্ত।
এ দূরের কথা না কাছের?
ভয় করছে আমার
মা ডাকের চেয়ে আপন ডাক কি সন্ত?
তাও কি কখনো হয় রে মা?!
তুমি আসবে
তখন দেরী নেই
তুমি
তোমার গলার আওয়াজ শুনলে
আমার ফুটোফাটা দুঃখগুলোতে
চুণকাম পড়ে যায়
তুমি ফিরে তাকালে
আমার যত ব্যর্থ চেষ্টাগুলোর ঝোঁপে
প্রজাপতি ডানা মেলে পা ছড়িয়ে বসে
তৃষাগ্নি
তবু সাগরতীরে এসে দাঁড়াও
তবু সাগরতীরে এসে দাঁড়াও
দু'হাত প্রসারিত করো
দেখো, এখনো দিগন্ত আলিঙ্গনে ধরা দেয়
নোনা বাতাস পরম স্নেহে
চোখের নোনা জল মিলিয়ে নেয়
তবু এলো তো
তোমার জন্য।
তোমার চোখের নীরব ভাষার
তোমার চোখের নীরব ভাষার
নিতল গহিন কথার মাঝে
ডুবতে দেবে?
আকাশছোঁয়া অহং আমার
তুচ্ছ নীরস পাতার মতো,
তোমার স্রোতে ভাসিয়ে নেবে?
হৃদপ্রাসাদের নিচের মহল--
অলিন্দ তার যত্নে খুলে,
পাতাল ছোঁবো,
ডাক পাঠাবো।
তোমার মত আমরা সবাই একাত্মলীন, কৃষ্ণশ্যামা--
আপন মনের আগল খুলে
এই পৃথিবীর রঙ্গ দেখি,
চোখের তারায় সুদূর মায়া
তুচ্ছ
ধানের খোসা ছাড়িয়ে চাল পুঁতলে মাটিতে
গাছ হবে নাকি চালেই
খোসাটা অপ্রয়োজনীয় ভীষণ - অতিরিক্ত!
গাছ হল না।
রাগে ফেটে পড়লে ধূর্ত মাটির উপর
অকৃতজ্ঞ হল চাল
তোমার নীরব বাঙ্ময়তা
তোমার নীরব বাঙ্ময়তা,
আমার নৈঃশব্দ্যপ্রাচীরের কানে কানে,
কথা বলে যায় কত---
আমার ভীরু, অস্ফুট
ভাষা যে ঠিকানাহীন--
তুমি ধারণ করোনি তাকে আপন সত্ত্বামাঝে---
তুমি হরিণছন্দে এসো--
আমার অশ্রুমুকুল চয়নে,
এসো আমার হৃদনূপুরের ভাবনাব্যাকুল গুঞ্জনে--
আমার আঁধার নয়ন আলোকিত হোক
তোমার নীরব আনন্দস্বপনে।
তবু মন প্রসন্ন থাক
মনকে প্রসন্ন রেখো
সে যে ভাবেই হোক
ঈশ্বর তোমার পাড়ায় থাকুন
চাই না থাকুন
মনকে প্রসন্ন রেখো
মনের সাথে চিরকালীন বাস
মনের মধ্যে তাই না থাক দীর্ঘশ্বাস
মনে করো না, ঈশ্বর গেছেন বেড়াতে
গেছেন তীর্থে - পুরী কিম্বা জেরুজালেম অথবা মক্কাতে
তুমি কোন দিকে দাঁড়িয়ে
তুমি কোন দিকে দাঁড়িয়ে?
আমার ছায়া জিজ্ঞাসা করেছিল আমায়
আজ আমি জিজ্ঞাসা করছি তোমায়
তুমি আমার মোহ না
তুমি আমার মোহ না
তুমিই আমার মোহনা
তুমি সুন্দর
তুমি সুন্দর
তোমার দিকে তাকালে আমি সুন্দর
তাই ঝাঁপাই না
তাকিয়ে থাকি
তাকিয়েই থাকি
তুচ্ছ প্রাণ
তুমি জন্মেছো
তুমি জন্মেছো
তোমার বুকে জগৎ জন্মেছে
তুমি জন্মেছো
তোমার বুকে প্রেম জন্মেছে
তুমি জন্মেছো
তোমার বুকে দুঃখ জন্মেছে
ওরা আছে, কারণ তুমি আছো
এটাই সত্যি, বাকিটা গল্প
তারা বানিয়েছে, যারা নেই
সে গল্পও আছে, কারণ তুমি আছো
তুমি সুন্দর
তুমি সুন্দর
আমি না তো!
তবু তোমার বুকে আমার ঠাঁই
বারণ করলে না তো?
(ছবিঃ প্রীতম পাল)
তোমার অপেক্ষায়
তোমার অপেক্ষায়
তোমারই পথ চেয়ে
সময়ের স্রোতে স্নান
আগমনী গেয়ে
(ছবিঃ Pritam Pal)
তবে নাও ফিরিয়ে
কেউ ফেরেনি
কেউ ছুটে যায়নি অবাধ্য হয়ে
ধুলো থেকে গ্রহপুঞ্জ
প্রতিটা ফুল স্ববৃন্তে - সার্থক
শুধু আমি রইলাম অবাধ্য হয়ে
অসন্তোষে, অভিযোগে
যা কিছু ছুঁই, যেদিকে যাই
সব কিছুই যেন- অকারণ অনর্থক
তার পরশরেণু মাগে
তুঁহুঁ মম মাধব
ক্ষ্যাপা তুই কি রাস্তা গুলিয়েছিস?
এদিক ওদিক ঝোপঝাড়ের মধ্যে
কি মাতাল করা ফুল ফুটিয়েছিস?
জানিস না, আমার বাঁধানো পথ?
জানিস না, আমার পাকা দেওয়াল?
জানিস না, আমি কাজের মানুষ?
তোমার চোখের দিব্যি
দেখেছি চামচের জল অল্পেতেই কাঁপে, পড়ো পড়ো হয়।
ঘড়ার জল কাঁপাতে আরেকটু জোর লাগে,
ছলকে ওঠাতে তারও চেয়ে বেশি জোর লাগে।
দীঘির জল?
তাতে কাঁপন ধরাতে লাগে মাতাল বাতাস
আর ছলকে ওঠাতে লাগে একটা পুরোদস্তুর ভূমিকম্প।
তুমি এসো
তুমি রোজ একবার করে
আমার দরজায় আসবে?
যখন তোমার সময় হবে
আমি কোনোদিন একটা ফুল
কোনোদিন একটা কবিতা
দরজার কাছে রেখে দেব
অথবা যেদিন কিছুই না থাকবে
একটা গোটা সাদা পাতা –
তুমি এসো না গো
প্রতিদিন দরজার কাছে আমার
এসো সময় করে
তুমি একটু বোসো
তোমার কি এই বসন্তেই আসার কথা ছিল?
আমার অপেক্ষার পালা এত তাড়াতাড়ি কি করে ফুরালো!
বসার ঘরে কিছু অতিথি আমার এখন
তুমি শোয়ার ঘরে একটু বসবে?
কিছু কাজও আছে আধখানা বাকি
তুমি বসবে ছাদে? ছাদের পাশের পলাশ গাছটায় এসেছে কুঁড়ি।
আমার কিছু লোককে কথা দেওয়া আছে,
তাদের বাড়ি যেতেই হবে, হ্যাঁ গো যেতেই হবে
তবু
তৃষার্ত
তৃষ্ণা
রাস্তার শেষে কোনো গন্তব্য রাখিনি
দিগন্তরেখাকে রেখেছি
আধপোড়া সলতের বুকে
ভোরের তৃষ্ণাই দেখেছি
তাই?
কথা দিল?
না গারদ বানিয়ে গেল?
প্রেম জন্ম নিল?
না বনসাই বানানোর টব-মাটি দিয়ে গেল?
জীবনের অর্থ মিলে গেল?
না চাঁদ-তারা স্টীকার ছাদেই চিপকে গেল?
তাকিয়ে থাকতে থাকতে
কয়েক লক্ষ চোখ মেলে তাকিয়েছিলাম
তিন সন্ত
খানিক আগে একটা লাইভ ভিডিও শেয়ার করেছি। (নিম্নোক্ত বইটার উদ্বোধন করতে দলাই লামা ভারতে এসেছিলেন, তার) যারা এখন দেখেননি অনুগ্রহ করে পরে কোনোভাবে সুযোগ হলে দেখে নেবেন। দলাই লামা হাতজোড় করে অনুরোধ করছেন ভারতকে তার প্রাচীন জ্ঞানে ফেরার জন্য। এ কথা নতুন নয়। ভারতীয় নবজাগরণের সূত্
তাই হয়
সাঁকোটা পেরোবার পর মনে হয় -
এমন কি আর দরকারি ছিল ওটা?
বাঁশে বানানো সামান্য একটা সাঁকোই তো
অমন সাঁকো ঢের দেখেছি, আরো কত দেখব!
তাই হয়
তুমি বুদ্ধ হও
পথ পাচ্ছিল না মানুষটা। তার জাগতিক সুখ কিছু অপ্রাপ্ত হওয়ার কথা নয়। রাজার ছেলে সে। তবু কেমন গোলমাল হয়ে গেল সব কিছু। বার্ধক্য রোগ শোক মৃত্যু - এসবের কোনো একটা অর্থ তো থাকবে? সবই এমনি এমনি? মিছিমিছি। এতবড় সৃষ্টি শুধুই কিছু অন্তঃসারশূন্য অভিনয়ের জন্য? এ হতে পারে?