তারা
যারা বিয়ের দিন অনেক সেজেগুজে হইহুল্লোড় করে গেল
তারা ডিভোর্সের দিন আসতে পারেনি
কারণ সেদিন তাদের আরেকটা বিয়ে বাড়ি ছিল
তবু তুমি
আমার মনের বার দুয়ারে কপাট দিলে
ভিতরে তুমি
দরজা এঁটে বাইরে এলে
পথে তুমি, ধুলোতে তুমি, আকাশে তুমি
দীঘির জলে তুমি, বটের ছায়ায় তুমি
চিলের চীৎকারে তুমি, দোয়েলের শিসে তুমি
রাতের আকাশে ধ্রুবতারায় তুমি
পাগল করা দক্ষিণের হাওয়ায় তুমি
আমি কি কোথাও নেই?
আমি আছি অপেক্ষায়
অনন্তকালের আকুল অপেক্ষায়
তোমার জন্য
তোমার সাথে মিশব বলে
তাই হোক
আমি না ভালবাসলে যদি ভাল থাকো
তো থাকো
তবে এমন না হয় দেখো
নিজেকে ভালোবাসার ইচ্ছা হারিয়ে ফেলেছ
আমি না চাইলে, যদি সুখে থাকো
তো থাকো
তবে এমন না হয় দেখো
নিজেকেই আর চাইতে ইচ্ছে করছে না
আমি না হয় দূরেই থাকলাম
তবে নিজের থেকে দূরত্ব না হয় দেখো
তমোনাশ
শিষ্য দাঁড়ালেন গুরুর সামনে
অহংকারে পূর্ণ হৃদয় তার
গুরু নামালেন চোখ
শিষ্য হলেন গর্বিত
স্বয়ং গুরু ফেরান নিজ দৃষ্টিপাত!
তেমন করে
যেমন করে সন্ধ্যেবেলা নৌকা ভেড়ে পাড়ে
...
তুমি জিতলে
আমার 'আমি'র আড়াল থেকে এল তোমার স্বর।
...
তাই তো!
মাথা তুলে দাঁড়াতে চায়
নিজেকে নিজে পেতে চায়
...
তিন সত্যি
তবু মনে হয় তোর সারা গায়ে শিউলির গন্ধ
কাছে গেলেই পাব।
...
তার সাথে
তবু অনেক খামতি তো ছিল
...
তেমন তেমন
ঈশ্বর হন অ্যাটোম বোমের থেকেও ভয়ংকর
ভালবাসা হয় হেমলকের থেকেও বিষাক্ত
ক্ষমা হয় আদিমতম গুহার চেয়েও কালো
...
তোর জন্য
তোর জন্য
আমি লোকাল ট্রেনের হাতলে বাঁচছি
...
তুষ
এমনকি এক অতি ক্ষুদ্র স্ফুলিঙ্গও
নাই হতে পারি।
...
তুমিই ভারত
ভূবনখ্যাত সন্ধ্যারতির মুহুর্ত!
চারিদিক লোক থিকথিক
চূড়ান্ত উন্মাদনা!
...
তালা-চাবি
এক একটা তালার এক একটা চাবি।
চাবিগুলো আলাদা করে গুছিয়ে রাখতে চেষ্টা করছি, সেই কবে থেকে।
...
তোমার কাছে শান্তি চাব না
তবু সে ঘুরছে
মা ভাল নেই। মা অসুস্থ।
তাই অসুস্থ তার সন্তান। সন্তানেরা।
লক্ষ কোটি কোটি অগুনতি সন্তানেরা।
তবু সে ঘুরছে। প্রদক্ষিণ করে চলেছে সূর্যকে।
অসুস্থ শরীরেও। সে ভালো নেই।
অপুষ্ট সন্তানদের বুকে করে সে ঘুরছে
আমাদের তার না হলেও চলত
তাকে না হলে চলবে না আমাদের
তবে
দুটো নিম্নাঙ্গের মিলনে
একটা শরীর তৈরী হলেও হতে পারে
প্রেম নয়
তোলপাড়
রাজ্যসভা লোকসভা তোলপাড়
তোলপাড় আলোচক বুদ্ধিজীবী মহল
সেই ভয়াবহ ডিসেম্বরের রাত
আতঙ্ক আক্রোশ ঘিরে আইনি টহল
মাথা ঘিলু চটকাচ্ছে বিবেক বিচার
কত বয়সের অপরাধে দাগী অপরাধী হয়?
আমি ভাবি -
বলো দেখি, কতটা উদাসীন হলে সমাজ
এ ঘৃণ্য প্রবৃত্তিরও কিশোর মস্তিস্কে জন্ম হয়?
তোমার সাথে বারোমাস
তুমিও তাই বলবে?
যে রাস্তাটা অর্ধেক হেঁটে ফিরে গিয়েছিলে
আমি এখনো ঠিক সেখানেই দাঁড়িয়ে
দেখতে দেখতে কত কি পাল্টে গেল
কত কেউ এলো গেলো
আমি এক বিন্দুও নড়িনি
দেখো
তুমি মানে
তুমি মানে
একফালি অপেক্ষায় এ ঘর ও ঘর করা
তুমি মানে
একঝলক সুখের বুকে হঠাৎ ঝাঁপিয়ে পড়া
তুমি মানে
বেশ কয়েক ঘন্টা এক লহমায় ফুরিয়ে ফেলা
তুমি মানে
তুমি ফিরে গেলে, তোমাতে আমায় ঘেরার পালা
তুমি মানে
এক আকাশ শূন্যতাকে সুরে ঢাকার চেষ্টা
তুমি মানে
তোমার তুমিতে আমার আমির তেষ্টা
তুমি না চাইলে
সেদিন তুমি
দিতে চেয়েছিলে দু'হাত ভরে
নিই নি আমি,
ফিরিয়ে দিয়েছি অহংকারে
কালের ঘুর্ণী
ঘোরালো ছোটালো কি মহাঘোরে
ফিরে এসে দেখি
শূন্য অহং পূর্ণ হিসাব শূন্য করে
তর্পণ
যেদিনই তোমার জন্মদিন থাকত
আমি বলতাম-
ধুর্, মায়ের আবার জন্মদিন হয় নাকি!
যেমন আকাশের কোনো জন্মদিন নেই
মাটির কোনো জন্মদিন নেই
খুশীর কোনো জন্মদিন নেই
তেমন তোমারও কোনো জন্মদিন নেই।
তুমি হাসতে
তুমি
আমার কল্পনা আসে না
তোমায় আমি 'তুমি' বলেই জানি
আমার তুলনা আসে না
তোমায় আমি 'আমার' বলেই মানি
আমার বুকের মধ্যে বোবা অনুভূতি
প্রাণকেন্দ্র তুমি
এতটা জানি
তোমায় হারালে সংসারে আমার
কিছু নেই আর হারাবার
তা প্রতিটা শ্বাসে মানি
তৈলাক্ত কটাক্ষ
ইতিহাস সাক্ষী - একটি জাতির নিকট আরেকটি জাতির পরাজয়, একটি দেশের অপর দেশের নিকট বশ্যতা স্বীকার। কোনো একটি সংস্কৃতির অপর কোনো সংস্কৃতির নিকট নতি স্বীকার।
কিন্তু অধুনা প্রত্যহ সংবাদপত্র, বৈদ্যুতিন সংবাদ মাধ্যমের দ্বারা যে পরাজয় স্বীকারের ইঙ্গিত মিলিতেছে, সে লজ্জা অবহ, অসহনীয়।
তোকে
কিছু কথা বলাই থাকে
বলা হয়নি ভেবে ভুল হয়
কারো হাত ছেড়ে যায় না
ছেড়ে গেছে বলে মনে হয়
তুমি
১
-------
বলেছিলাম, এ তো মরুভূমি!
তুমি ছায়ার আড়াল করে দাঁড়ালে
বলেছিলাম, এ তো মাঝ সমুদ্র!
তুমি দ্বীপ হয়ে বাঁচালে
বলেছিলাম, এ তো দাবানল!
তুমি বৃষ্টি হয়ে নেভালে
২
------
তুমি নদী হলে
পাথরও হলে কখনো
তুমি বাতাস হলে
স্থির প্রদীপ শিখাও হলে কখনো
তুমি কান্না হলে
আকাশের মত নীলও হলে কখনো
তোমার চোখ
তোমার চোখ
আমার সব আনন্দের খনি
তোমার আশ্বাস
আমার প্রতি হৃদয়ধ্বনি
তোমায় ছোঁব বলে
তোমায় ছোঁব বলে
অনেকটা পথ এলাম।
'উদভ্রান্ত' বললে কেউ
সচকিতে ভাবি,
'তবে কি হারিয়ে গেলাম'?
হয় নি তা -
এখন বুঝি,
আমি ছোঁয়ার বহু জন্ম আগে
তোমার ছোঁয়া ছুঁয়ে গেছে আমায়!
তাই
ঘন জঙ্গলে না,
তোমায় পেয়েছি
উত্তাল সাগরে
তাই সারা গা
নোনতা আমার
ভাগ্যের জোরে না
তোমায় পেয়েছি
ভাগ্যের সাথে লড়াই করে
তাই সব হাতের রেখা
রক্তাক্ত আমার
তাগিদ
সারাটা দিন ধরে
বেঁচে থাকার তাগিদ বানাচ্ছিলাম
খুঁজছিলাম না, অত রসদ নেই।
বানাতে বানাতে
কিছু পুরোনো আলপিনে পড়েছে
অন্যমনস্ক হাতের আঙুল।
পিনগুলো সরাতে সরাতে
আরো কিছু আঙুল হল ক্ষত-বিক্ষত।
ওদের সরাবো আজ সারাদিন,
আঙুল না সারলেও।
এটাই হোক, আমার আজকের বাঁচার তাগিদ।
তখন
তোমার আসার আগে বুঝতে পারি,
তুমি আসছো
তুমি যাওয়ার আগে বুঝতে পারি,
এবার বলবে, আসি
শুধু বুঝি না মাঝের সময়টা-
তখন আমি কোথায় থাকি?
তেষ্টা
জল ঝরছে বিন্দু বিন্দু
সারা আকাশটার প্রতিবিম্ব তার গায়ে
মাটির বুকে মিলিয়ে যাচ্ছে
এক মহাকাশ তেষ্টা মেটানোর দায়ে।
তুমি গেছ
তুমি গেছ
তবু মনে হয় ফেরার জন্যই গেছ-
আমায় ছাডা থাকবে কি করে,
আমার ঘরে বাইরে উতলা মন।
তোমার দৃষ্টি
তোমার দৃষ্টি
আমার অদৃষ্টের পথ ঘিরে
তোমার হাসি
আমার বাধা-বিঘ্ন চিরে
তখনই বাধে গোল
অনেকে বাড়ির সামনের দরজার সাথে সাথে পেছনের দরজাও রাখে খোলা,
চালাকি করে।
যারা সামনে দিয়ে আসতে না পারে
তারা ঘুর পথে পিছনের দিক দিয়ে ঢোকে নির্দ্বিধায়।
মাঝে মাঝে -
কিছু পেছনের দরজা দিয়ে ঢোকা লোক সামনের দরজা দিয়ে ঢুকতে যায়
আচমকাই, অন্ধকারের ধাঁদায়
আর তখনই বাধে গোল।