বেয়াড়া মন
তোমার দু'চোখের কোল ঘেঁষে
দুটো ছোট্ট নদী।
তাতে জোয়ার-ভাটা খেলে
পলকগুলো দু'ধারে সার সার
তরুর মত দাঁড়িয়ে,
মাঝে ভেসে আমার মন
ছোট্ট পানসিতে।
তোমার নাকের নীচে
ঠোঁটের উপর ঘেঁষে আল পথ
আমার মনের অবাধ বিচরণ সে পথে
কখনো কখনো উপরের ঠোঁটে
হুমড়ি খেয়ে গড়ায়
তাকে রাখতে গিয়েও
রাখি না জোর করে।
বিষাদ
বন্ধুত্
আজ বন্ধুত্ব দিবস। জানতাম না। অনেকে বললেন বন্ধুত্ব নিয়ে কিছু লিখতে। ভাবলাম কি লিখব? বন্ধুত্ব নিয়ে কি লেখা যায়! এ তো বিশাল বড় কথা - বন্ধুত্ব।
বাসা
আমার আছে আশা
সব চাওয়ার শেষে
নিজেতে মিলবে বাসা।
বিশ্বাস
বিশ্বাস করেছি, ঠকেছি। ফের বিশ্বাস করেছি, আবার ঠকেছি। কারণ -কখনো আমার নির্বুদ্ধিতা অথবা কখনো অন্যের সুনিপুণ অভিনয় ক্ষমতা।
সন্দেহ করে কি হবে? কাকে, কখন, কোন ক্ষেত্রে, কতটা সন্দেহ করতে হবে - এ কি খুব সহজ হিসাব? আর সব হিসাব মিললও বা যদি, তাও যে ঠকব না তার কি নিশ্চয়তা আছে?
অনেকবার শূন্য থেকে শুরু করতে হয়েছে। ভবিষ্যতেও হবে।
বোধন
শুনিলাম কোনো বিজ্ঞানী
স্থির সিদ্ধান্তে আসিয়াছেন
সর্ব সমক্ষে ঘোষিয়াছেন-
ঈশ্বর নাই
আম জনতা দলে দলে
তাহারি পদতলে আসিতেছে
বলিতেছে গদগদ ভাষে-
হেন সত্য উদঘাটিলে
তবে তুমি তাই!
বুদ্ধি
বুদ্ধির সীমাবদ্ধতাকে জানাই হল বুদ্ধিমত্তা। তাই ভালোবাসার প্রথম ধাপ। কারণ তা অহংশূন্য। একমাত্র ভালোবাসাই জানা-অজানাকে পাশাপাশি রেখে চলতে পারে স্বাচ্ছন্দ্যে। অহংকার তা পারে না বলেই, শুধু 'জানা'র দিকে ঝুঁকে চলতে চায়। আর কিছু দূর গিয়ে পড়ে মুখ থুবড়ে।
বোসো
রোদ পড়ছে সবুজ পাতায়
সবুজ পাতা রোদকে বলল-
এসো।
বিছে
ঘর মোছার ন্যাতার নীচে একটা বিছে থাকে। বাড়ির বৌটা জানে আর কাজের মেয়েটা জানে। কেউ কাউকে বলেনি কোনোদিন। তবু দু'জনেই জানে যে তারা জানে। সাবধানে হাত দেয়। ঘাঁটায় না। কারণ ন্যাতাটা ছাড়া ঘরের কাজ হবে না। ঘরের কাজ না হলে, ঘরে থাকার অধিকারও থাকবে না।
বিশ্বাসহীন
বিশ্বাসহীন উদ্বাস্তু একটা মানুষ
সকাল থেকে চৌকাঠে দাঁড়িয়ে
ওর বাইরে যেতে ভয়
ওর ভিতরে থাকতে সংশয়।
বৃত্ত
সবই আছে, সবই হচ্ছে
তবু কোথায় যেন
একটা ছেড়ে যাওয়ার ব্যাথা
একটা শূন্যতা,
তরী মাঝ সমুদ্রে বলে?
জানি না।
এত গতি, এত টানাটানি, কাড়াকাড়ি
হাসি কান্না আশা হতাশা - সব কোন কালের গহ্বরে হচ্ছে লীন?
সেখানে গেলে কি আমার ফেলে আসা অতীতের সাথে আবার হবে দেখা?
কেউই জানি না।
তবু মনে হয়,
মন বোধহয় কিছুটা তার আভাস রাখে।
বন্ধুতা (PDF)
বন্ধুতা
বৃষ্টিও মুক্ত
বৃষ্টিও মুক্তো হয়
তোমার চুল ভিজিয়ে
মাথার গন্ধ নিয়ে
মাটি ছুঁতে যখন দ্বিধান্বিত
ঠিক তখন
মাটিতে কি মুক্তো ছড়ায়?
বাউল এই গেল
বাউল এই গেল। বড় কঠিন একটা কথা খুব সহজ করে বলে গেল -
"জানবা, মানুষ মর্মে গভীর আঘাত পেলি কিসু একডা হয়!"
আমার আশেপাশে ডাঁই করা বইগুলোর স্তূপ থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস শুনলাম মনে হল।
"এ মানুষে সে মানুষ আছে রে"...
"ওরে বাইরে নয় রে, তোর বাসার ভিতরি বেঁধেছে ভীষণ গোলমাল"......
বেধেছে তো বাউল....দেওয়ালগুলো ধ্বসার অপেক্ষায়....সে ইঁটের হোক আর পাঁজরের...
বিশ্বাস জন্ম দেয় অনুভবের
বিভ্রান্ত কোরো না প্লিজ
ধরো তোমার কাছে একটা নীল কালির পেন আছে। অথচ আমার দরকার একটা কালো কালির পেন।
তুমি কখনো বোলো না, ইস, একটু আগেই আমার কাছে একটা কালো কালির পেন ছিল। কিম্বা বোলো না, তোমার পেনটাতে আগে কালো কালি পড়ত, এখন নীল পড়ে। অথবা, বোলো না, আরে আমার এই পেনটাও তো কালো কালিরই!
বৈভব
একটা ছোট্ট চিন্তার বাসা
তার বুকে এক টুকরো অনুভব
ঠোঁটে করে প্রতিদিন আনা
শস্যের দানা
তার ঠোঁটে দিয়েছি তুলে
আমার বৈভব
আমার অনুভব
বলো না
আমার জন্য
বুকের আঁচল খসিও না
জুতো খুলে কাদা রাস্তায় নেমো না
আলো ছেড়ে অন্ধকার রাস্তায় হেঁটো না
আমার সন্দেহ হবে নিজেকে,
তোমায় না
ভুল হল কোথায়?
বুদবুদ
বন্ধুতা
আমার সাথে ভাব করবি মেঘ?
আমি যুগযুগান্ত এখানেই ঠাঁয় দাঁড়িয়ে
সময়ের দাঁড়ি।
তোমায় দেখি খোলা আকাশটার বুকে কেমন রঙ পাল্টিয়ে পাল্টিয়ে খেলো
জানো কতবার ভিজে গেছি তোমার ঢালা জলে
গর্বে বুক ফুলেছে। সবাইকে ডেকে বলেছি দেখ, ওই আকাশের জল আমারও সারা গায়ে!
পরেরদিনই সব জল শুষে নিয়েছে ওই আকাশের সূর্য, আমার যেন অধিকার নেই আকাশের জলে ভিজে থাকার!
বাগানে একটা গোলাপ ফুটে আছে
বাগানে একটা গোলাপ ফুটে আছে। সারাটা বাগানে এই একটাই গোলাপ। তবু ওকে একা লাগে না। ওর উপর যখন মাঝে মাঝেই একটা হলুদ প্রজাপতি এসে বসে, বেমানান লাগে না। কিম্বা কখনো কখনো যখন একটা সরু সবুজ ফড়িং এসে বসে, ভালোই লাগে তো দেখতে।
বেণারস
বন্ধ জানলায় জমা প্রাচীন অন্ধকার
বন্ধ জানলায় জমা প্রাচীন অন্ধকার
অপেক্ষার বালিঘড়ি
বুকের ভিতর বাসা
তীর্থের কাক
বন্ধুত্ব
'বন্ধুত্ব' সবসময় একটা সরে সরে যাওয়া নাম। সম্পর্কের একটা নাম থাকে। তার একটা স্থায়ী হওয়ার ইচ্ছা থাকে। কোথাও বা একটা দায়ও থাকে। কিন্তু বন্ধুত্ব একটা স্থবিরতার নাম না। একটা ঘটমান চলমান অস্তিত্ব। 'বন্ধু' একটা সম্পর্ক হতেই পারে। কিন্তু বন্ধু নামক সম্পর্কে যে বন্ধুত্বটা টিকেই আছে তা কে জোর দিয়ে বলতে পারে?
বিপরীত
বুকের মধ্যে কুলকুল শব্দ
বুকের মধ্যে কুলকুল শব্দ
অর্থ নেই, গতি আছে
জিজ্ঞাসা নেই,
সুর আছে, ছন্দ আছে
আর আছে স্মৃতির পাথরে পাথরে
শ্যাওলা জমা অভিমান
বুকের মধ্যে স্রোতের প্রশান্তি
শীতল জলে ভাসা কয়েক টুকরো সময়ের নুড়ি
এই তো জীবন। বেশ আছি।
ব্যথার প্রজাপতি
মুঠো খুলে দিলে
ব্যথারা প্রজাপতির মত উড়ে যায়
আকাশে, বাগানের গাছে, খাটের কিনারায়
প্রজাপতির মত রঙিন ব্যথারা
আড়মোড়া ভাঙা শরীরের মোচড়ে এসে বসে
সুখের মত ব্যথারা
বিকট
কড়িবরগার দিকে তাকিয়ে হাঁ করে শুয়েছিল বিকট।সকাল থেকে বাইরে বেরোয়নি আজ। মনটা ভাল নেই। কেন ভাল নেই অবিশ্যি সে নিজেও জানে না। শুধু এটুকু জানে তার আজ মন ভাল নেই। রোজ সকালে এই সময়টায় সে জঙ্গল থেকে শুকনো কাঠ এনে, চকমকি ঠুকে আগুন জ্বালিয়ে, একটু চা করে খায়। চা খেতে খেতে জঙ্গলের শোভা দেখে। সূর্যের আলো, গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে তার এই জরাজীর্ণ বাড়ির উঠোনে কেমন আলপনা আঁকে, সেগুলো আবার কেমন সরে সরে যায়, পাল্টে
ব্যাভিচার
আস্থা। বিশ্বাস।
বন্যা
১
----
শেষ রাতে প্রদীপের বুক পোড়ালো যে আগুন
প্রথম রাতে সে আগুনই ছিল তার প্রেয়সী হয়ে
বিজ্ঞাপিত প্রেম
এসেই বললে-
দেখো, তোমার জন্য
বাধ্য না গো
বাধ্য না গো
উদ্বোধিত হই
খণ্ডিত না
অখণ্ডিতই রই
বাবা-মায়ের বিবাহবার্ষিকী
সকালে বাবার ঘরে ঢুকতেই বাবা মুখটা ঘুরিয়ে নিলেন। সে ক্ষণিক দৃষ্টিতেই বুঝলাম বাবার চোখে জল। মনে পড়ল, আজ 6th জুন। বাবা-মায়ের বিবাহবার্ষিকী। জিজ্ঞাসা করলাম না কিছু। ফিরে আসলাম নিজের ঘরে।
বরফের নীচে
বরফের নীচে মৃত মাছের শরীরকে তাজিয়ে রাখার কৌশল
কথার উষ্ণ তাপে মৃত ভালবাসাকে তাজিয়ে রাখার অভিনয়
ব্ল্যাকবোর্ড
তাতে অনেক কিছু লেখা
অনেক হিসাব, অনেক সিদ্ধান্ত