বাংলার রায়
বুদ্ধজয়ন্তী
রামায়ণ থেকে যদি বারো বছরের বনবাসের অধ্যায়টি বাদ দেওয়া যায় তবে তাতে যত তত্ত্বকথাই থাকুক না কেন, সেটা মহাকাব্য হয়ে ওঠে না। মহাভারতের বেলাতেও তাই। পঞ্চপাণ্ডব যদি পায়ের উপর পা তুলে রাজত্ব করেই কাটিয়ে দিতেন, তবে যতই তাতে গীতার কালজয়ী উপদেশ থাকুক, তা-ও মহাকাব্য হত না। জীবনের স্বাভাবিক গতিপথের সাথে মিলত না। হত রূপকথা। এমনিই সমস্ত মহাপুরুষের জীবন।
বলেছিলাম আলোর দিকে ফেরো
বলেছিলাম আলোর দিকে ফেরো। তুমি আলোর সংজ্ঞা জানতে চাইলে। আমি মুখ্যু, আলোর সংজ্ঞা কি ছাই জানি? না জানি সে কোন পথে আসে, কোন পথে দিয়ে যায়?
বাসি অভিমানগুলো
বাসি অভিমানগুলো নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি কোরো না আর
বাইরে বেরিয়ে এসো
দেখো বাগানে নতুন কুঁড়ি এসেছে
আর দেখো, ধ্রুবতারাটাও একই জায়গায় আছে
বারুদ
নিজে জ্বলেই জ্বালানো যায়
শুধুমুধু বারুদের দোকান সাজিয়ে কি হবে?
যে আসবে কিনতে,
সে চারদিকের অন্ধকারে বিভ্রান্ত হবে
আলোকে করবে অবিশ্বাস
দুর্ভাগ্য এই, আজ বারুদ বিক্রেতাই চারিদিকে
কেউই পুড়তে চায় না
চায় অন্যকে জ্বালিয়ে সে আগুনে তাপ পোয়াতে
বে-হিসাবী
বাউল
বাদল বাউল
বদভ্যেস
কারোর কারোর মিথ্যা বলতে
তেমন কোনো কারণ লাগে না
সন্তর্পণে খোঁজে চোরাগোপ্তা গলি
সোজা রাস্তায় হাঁটার অসুবিধা না থাকলেও
কারোর কারোর দু'দিক সামলানো গোঁজামিলে
পুলটিস দিতে দিতে চুল পেকে যায়
কোন্ নৌকায় যে বেশি সুখ অথবা ফুটো
না বুঝে দু'নৌকায় দেয় বেসামাল লোভী পা
বন্ধ দরজা
বন্ধ দরজা। স্বপ্নগুলো পায়চারি করছে। দরজার ওপাশে আলো। দরজার এপাশে জায়গা কম। স্বপ্নগুলোর ধাক্কাধাক্কিতে মাথায় ফেট্টি।
লোকটা পানশালায় বসে, ফাটা মাথায় হাত বুলোতে বুলোতে, স্বপ্নগুলোকে স্বপ্ন দেখিয়ে ভুলিয়ে রাখার চেষ্টা করে।
সময় সারাটা দেওয়াল জুড়ে টিকটিকিগুলোর সাথে ছোঁয়াছুঁয়ি খেলে।
বসন্ত উৎসব
সবুজের বুকে লালের বর্ণমালা
রঙে ভিজে গেল তৃষ্ণার্তদুটো চোখ
তোমার সাধনা দেখার মধ্যে-
অদেখাকে খুঁজে ফেরা
না হয় ছুঁয়েই তোমায়
আমার চোখের নতুন জন্ম হোক
(ছবিঃ সমীরণ নন্দী)
বোঝো
কেউ কথা বলছে?
অনুভব করো কণ্ঠস্বর
কারণ কথার মানে শব্দগুলোয় না,
কণ্ঠস্বরে থাকে
কণ্ঠস্বর নেই?
খোলা চোখের উষ্ণতায় রাখো হাত
বুঝবে কখনো পুড়ছে, কখনো ভিজছে
হয় তো বা কখনো হিম শীতল
বন্ধ চোখ?
মুখের চামড়ার ভাঁজে রাখো চোখ
দেখো গ্রন্থাগারের সামনে দাঁড়িয়ে তুমি
এভাবেই বোঝো
কি বুঝবে?
বলা যায় না
ইঙ্গিত করা যায় হয় তো
বলে যাও
বসন্তের রঙ
বাইরে এসো
কি কথা বলি?
দরজার ধারে আছি সকাল থেকে দাঁড়িয়ে
সবার আসা যাওয়া বসা ওঠা
দেখছি দু'চোখ ভরে
আরতির ঘণ্টা, দীপের আলো, ধূপের ধোঁয়ায়
সবের আবরণে তোমায় দেখছি
তুমি দেখেছ আমায়?
বক্সা ফোর্ট
বিধানচন্দ্র মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল ২০১৬
বুঝুন
একটু দাঁড়ান। মিছিলটা পার হোক।
ওদের খিদের দাম আপনার সময়ের দামের থেকে বেশি
বিশ্বাস ও তার manipulation
(এই লেখাটি পড়ার পর যারা আমায় আনফ্রেণ্ড করতে চান, সানন্দে করুন। প্লিজ বোকা বোকা তর্ক জুড়বেন না। আমার অভিজ্ঞতায় সত্য যে বেশে প্রতিভাত আমি তাতে দায়বদ্ধ। কাল যদি এর বিপরীতটা সত্যি বলে মনে হয়, তাও বলব, দ্বিধা করব না।)
বুঝে নিতে হয়
পার্থক্যটা হল, লাইটস অন্, ক্যামেরা রোল বা মুভ কেউ বলে না। বুঝে নিতে হয়।
নাইস শট্, কেউ বলবে না। ওটাও বুঝে নিতে হয়।
বেঁচে যেত লোকটা
যখন তখন সাইরেন বাজতে পারে
আচম্বিতে হতে পারে বোমারু বিমানের হামলা
সাবধানে হাঁটো।
যে কোনো মুহূর্তে ছদ্মবেশে ঢুকে যেতে পারে শত্রুপক্ষের চর ভালোবাসার মানুষ সেজে
বুঝে ভালোবাসো।
বন্দনা
লতানো গাছটা সারা গা রোদে মাখামাখি হয়ে দাঁড়িয়ে
ভোরের হাওয়ার মৃদু আন্দোলন ওর ক্ষীণ শরীরে
যে আমগাছটার গোড়ায় ওর বাস
সে আমগাছের প্রতিটা পাতার উপর লেগে আছে ভোরের রোদ
বড়রাস্তা
সব গলিই ঘুরতে ঘুরতে বড় রাস্তায় মেশে।
তবু বড় রাস্তাটা এত শুনশান কেন?
গলি দিয়ে আসার সময় তো দেখে এলাম
হাজার লোকের চলাফেরা
বাংলা সিরিয়ালের কথা অমৃত সমান
বাংলা সিরিয়ালের কথা অমৃত সমান।
যেই শুনে তার হয় জীবন শ্মশান।।
সেট টপ উপরে ধরি নীচে জোড়া স্ক্রিন।
নাচিছে নাচাইছে সবে তাধিন তাধিন।।
নট-নটী অঙ্গসজ্জা কভু নাহি খুলে।
কথা কহে বসে নাহি, ঘরে বুলে বুলে।।
বিশ্বাস
দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের বাইরের প্রাঙ্গণ। সকাল আটটা। উল্লেখযোগ্য ভিড় নেই। রামকৃষ্ণদেবের ঘরে ঢুকতে বাঁশ। ডাঁয়ে, বাঁয়ে, পিছনের দিকে বাঁশ আটকানো - প্রবেশ নিষেধ - এখানে জুতা রাখবেন না। ঘরে ঢুকতে গেলে মন্দিরের ভিতরের প্রাঙ্গণে ঢুকে তবে যাও। এখ
বইয়ের আলমারি
আমার বইয়ের আলমারিরর সামনে এক ভদ্রলোক দাঁড়ালেন। বাবার বন্ধু। তখন একখানাই বইয়ের আলমারি সম্বল। তার মধ্যে আমার প্রাণ ভোমরারা।
বিরতি
আর কিছুদিন পর থেকে কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষাক্ষেত্রে, নেতাদিগের বাদ-বিবাদালয়ে, গবেষণাগারে, ধর্মঘটের মধ্যখানে, হয়ত বা শল্যচিকিৎসার মধ্যভাগেও একটি নতুন বিরতির প্রচলন হবে ( হয়ে গেছে কিছু কিছু ক্ষেত্রে যদিও) -
'ফেসবুক ব্রেক'
বদল
গাছটা ঠিক করল, সে আর বোকা হবে না। আগে তার ডালপালা চতুর্দিকে মেলা থাকত। পাখি বাসা বাঁধত, পিঁপড়েরা বর্ষাকালে ওর ডালে উঠে আশ্রয় পেত, ক্লান্ত পথিক ওর ছায়ার তলায় বিশ্রাম নিত। গাছটা আনন্দেই ছিল। কিন্তু বোকার মত আনন্দে।
বিশ্বাস
বিচার
বিচার চলছে
আসামী বেবাক বোকা বেইমান হৃদয়
ফরিয়াদী আমি
ওর পক্ষের উকিল নেই কেউ
আমার পক্ষের উকিল তো মেলা
যুক্তির পর যুক্তি সাজিয়ে...
সেকি ধুন্ধুমার কাণ্ড!
বন্ধ দরজা
বন্ধ দরজাটা যখন খুলল অবশেষে
সবাই ভাবল এবার বুঝি উনি উঠবেন
কারণ সকাল থেকে উনি বসে
দরজাটা খোলার অপেক্ষায়
বোকা
...
বাতুল
বিস্মরণ
সামনে প্রবহমান গঙ্গা
আমার এক 'আমি' মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে ওপারে
আজকের দিনের শেষ সূর্য, দিগন্ত শয়ানে
বিস্মরণ মানে কি পুনর্জন্ম?
মনে হয় যেন রাজ্যপাট সব হারিয়ে ফেলেছি
হাজার হাজার সৈন্য হারিয়েছি
আরো হারিয়েছি না জানি কত ঘোড়া, কত হাতি