প্রতিশ্রুতি
প্রণাম
প্রতিযোগিতা
কত মিটারের জানো?
আমি জানি না
জানব কি করে বলো
পুষ্প হৃদয়
প্রান্তিক
পুষ্পপুরাণ
প্রান্তিক
পরিবর্তন
কেউ বিপদে ফেলে বলেছিল -
দেখ কেমন লাগে
কেউ বিপদে দেখে বলেছিল -
কাজ আছে ভাই আসি
সব ঠিক হয়ে গেলে একটা মিসড কল দিস
চলে আসব
কেউ বিপদে শুনেই বলেছিল -
পণ
মন্ত্রমুগ্ধের মত চেয়ে বসে আছে দম্পতি। দত্তক নেবে। চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। মা হতে না পারার মাশুল। অপমান।
অনাথ শিশু ধুলোতে। না খাওয়া, রুগ্ন শরীর। উচ্ছিষ্ট যাচকের বেঁচে থাকার সাধ! অসহ্য!
সমাজ। নিয়ম। আইন। উকিল। নির্দেশাবলী।
শিকড় পাথর চিরবে।
পণ। জেদ। স্বপ্ন। দুই ভিখারীর সাধ।
প্রেম চলল বহুদূর
পথচিহ্ন
প্রেম-শরীর
সব শেষে দেখি, ঘরের কোণেতে দ্বীপ জ্বেলে যান কবীর
হিন্দু না ভাই, না মুসলিম, প্রেমে গড়া প্রেম-শরীর
না মন্দিরে, না মসজিদে, না জঙ্গলে, না গুহাকোণে
প্রতি শ্বাসে শ্বাসে, সেই আছে ভাই, প্রতি প্রাণে, প্রতি মনে
চিরশান্তির সুর আসে ভেসে কোন পুরাকাল থেকে
প্রতি আলোকেতে সেই আছে দেখি, সারাটা বিশ্ব ব্যেপে
প্রেমেতে সত্যে করূণায় গড়া ক্ষমার আলোতে স্নিগ্ধ
পর্দা
ঘরের অন্ধকার
মেঘের অন্ধকারের চেয়ে
ছিল বেশি
বন্ধ জানলার পর্দাটা
পাখার হাওয়ায় উড়ে বলছিল -
'জানলাটা খোলো
আমি খোলা হাওয়ায় ভাসি'
পাতি কথা
মনের গলি ঘুরছিলাম। নিজের সাথে, নেটের এ পাড়া ও পাড়া। কত কথা ছড়ানো ছেটানো। কত তথ্য। কত বাদ বিবাদ। মানুষের পরতে কতটা পোশাক লাগে, তার হিসাব আছে। খেতে কতটা চাল লাগে তাও মাপা যায়। কিন্তু বাঁচতে কতটা জ্ঞান লাগে - এ হিসাব করে ওঠা দায়। যদি জ্ঞানকে কাজের বস্তু ভাবি তবেই অবশ্য। কেউ যদি বলেন জানার আনন্দে জানতে চাইছি, তবে তার ক্ষেত্রে হিসাব নিকাশের বালাই নেই। যেমন কেউ যখন খাওয়ার আনন্দে খায়, কিম্বা সাজার আনন
প্রচার বনাম প্রকাশ
আত্ম-প্রচার ও আত্ম-প্রকাশের মধ্যে বিস্তর ব্যবধান আছে।
প্রতিচ্ছবি
যা দেখলাম, তা সহজ
যা হল অনুভব, তা সহজ
যা বললাম, তা সহজ।
শুনল না কেউ।
বোঝাতে গেলাম
হল কঠিন।
সবাই বলল, বাহ্।
পরা টিপ
তোমাকে বলিনি
বলব কেন?
তোমার কথা কেউ শুনেছে
আজ অবধি?
যত কান্না তোমার স্নানঘর জানে
তত কান্না তুমি ভেবেছিলে আছে তোমার বুকে?
প্রার্থনা
তোমায় চাই,
কোনো কৌশলে না
চাই প্রেমে
সহজ সরল ব্যকুলতায়
ভাষা যেখানে
নিজের দৈন্যে থেমে
চালাকি চাতুরী ঘুচে যাক গো
অহং আমার
আপনি আসুক নেমে
প্রেম?
অনেককে দেখেছি, প্রেমটাকে বিয়েবাড়ির মেনু কার্ডের মত বানিয়ে ফেলেছে। এটার পর ওটা আসবে, সেটার ওটা হবে। এইসব ভেবে লালা চুকচুক জিভে পাত পেড়ে বসে থাকে। একটু এদিক ওদিক হল কি, অমনি গোঁসা। যা দিয়েছে তার হিসাব কষে মনে মনে অভিমানের লুচি ভাজবে- "ইস্, এত দামী গিফট আনাটা কি ঠিক হল! এতো সেরকম কিছুই আয়োজন নেই দেখছি!"
পরিবর্তন
পরিবর্তন আর জীবন, এ দুটো সমার্থক শব্দ। এ কথা বহুশ্রুত। খাঁটি কথা, সন্দেহ নেই।
পথ
পথ -
পূবে পশ্চিমে না
উত্তর দক্ষিণে না
পথ -
চলার তাগিদে
চলার দিকেতে না।
প্রভু
রথের দিন,
সাজো সাজো রব চারিদিকে।
কেউ গাঁথছে মালা, কেউ বাঁটছে চন্দন,
কেউ গাইছে ভজন, কেউ করছে নর্তন।
মালীর ছোট মেয়ে,
বছর আটেক হবে
বলে, নিজের গাঁথা মালাখানি
প্রভুর গলায় দেবে।
বাড়ির লোক কত বোঝায়
আরে আমরা যে জাত নীচু
বোঝায় যত বাড়ে জেদ
বলে শুনব না তো কিছু!
প্রণাম
অনেকদিন প্রণাম করিনি
না নীচু হয়ে হয়ে কোমরটা এমন শক্ত হয়েছে -
কার সাধ্যি তাকে নীচু করে!
মাথাটা ঘাড়ের উপর সোজা রাখতে রাখতে
ভুলেই গেছি
কিছু জায়গায় মাথা না নীচু করলে
মাথাটা ভারী হয় বড্ড
জগদ্দল পাথরের মত,
ঘাড়ে ব্যাথা করে
অহংকারের গাঁটগুলো টাটায়।
পাঠ
নিস্পাপ দুটো চোখ
পূর্ণ বিশ্বাসে যখন আমার মুখের দিকে তাকায়,
কুন্ঠিত হই মনে মনে।
এ বিশ্বাসের যোগ্য কি আমি?
তার সরল শৈশব, কৈশোরের কাছে
অসহায় আমার জটিল মনের ভাঁজ।
যে শুদ্ধতা ধর্মগ্রন্থের পাতা পারে নি শেখাতে,
সে শুদ্ধতার পাঠ, ওই দুটো চোখে
ওই সরল, নিস্পাপ, বিশ্বস্ত দুটো চোখে।
পার্থ দে
পার্থ দে আর কঙ্কাল। আলাদা করে কিছু বলার নেই। রোমহর্ষক, ভয়ংকর, রহস্যজনক সন্দেহ নেই।
পিঁপড়ের সারি
পিঁপড়ের সারি ডিম মুখে করে
দেওয়াল বেয়ে উঠছিল
আকাশ ছেয়ে কালো মেঘ এলো।
জল বলল, ডুবিয়ে দেব
বাতাস বলল, উড়িয়ে দেব
মানুষ বলল, হারিয়ে দেব।
পিঁপড়ের সারি ডিম মুখে করে
উঁচু গর্তে বসেছিলো।
জল থামল
ঝড় থামল
মানুষ ভুলল
পিঁপড়ের সারি ডিম মুখে করে
দেওয়াল বেয়ে ফিরছিল।
পারো?
ক্ষমা চাইতে হাতজোড় করতেই হবে?
না তো!
ভালোবাসি বোঝাতে সংলাপের সুর আনতেই হবে?
না তো!
পথ
শেষমেশ কোথায় যাবে?
কোনোদিন জানতে পারবে না
কেউ পারেনি জানতে
তবু রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে পোড়ো না
এক পা এক পা করে এগোও
প্রাণের দীপটাকে আড়াল করে গেল
কেউ যেন প্রাণের দীপটাকে আড়াল করে গেল
আশীর্বাদ না সৌভাগ্য?
জানি না
এক পা এগোলে শত পা এগোনো যায়
এতটা জানি
(ছবিঃ সমীরণ নন্দী)
পুরস্কার
আমার যাতায়াতের খবর তুমি রাখোনি কোনোদিন
আমার ছায়া তোমার বাড়ির সামনের রাস্তাটায় পড়েছে কতবার
ধুলোর সাথে লুটিয়ে ফিরে এসেছে আবার আমার পিছু পিছু,
সেই ধুলোয় আছে হয় তো তোমারও পায়ের ছাপ।
আমার চোখ কতবার পড়েছে তোমার মুখে
ছদ্ম উদাসীনতায় তোমার চোখের তারায় রেখেছি চোখ
শরতের সাদা মেঘের দল ছুটিয়ে
পথিক মনে রাখে না
পরিচয়
কিছু পরিচিত মানুষ ছিল
নাগালের বাইরে তারা আজ
নাগালের মধ্যে যারা
রক্তের পরিচয়ে অপরিচিত
তবু কোথায় যেন চির-পরিচিতের সাজ
প্রার্থনা শুধু এই
প্রার্থনা শুধু এই
সজনে বিজনে
আঁধারে আলোতে
সম্পদে বিপদে
নিন্দা খ্যাতিতে
সত্যভ্রষ্ট যেন না হই
পায়ে পায়ে পথ এগোনো
প্রকৃতি
পুকুর পাড়ের ঝোপের নিবিড় যে অন্ধকারটা, আমার খুব চেনা। সামনের বাড়ির ছাদে নারকেল গাছটার পাতার বড় ছায়াটা লুটিয়ে আছে, সেও আমার খুব চেনা। হাল্কা হওয়ায় পুকুরের বুকে যে শিরশিরানো ঢেউ ওঠে, তাদের প্রত্যেক ঢেউটাকে আমি জানি।
প্রবর্তন
ওই শুকনো ফুলটার দিকে তাকাও
দেখো, কোনো প্রজাপতি, কোনো মৌমাছি
ওর ধারপাশ দিয়েও ঘেঁষে না।
ভালো করে খুঁজলে কটা কীট পেলেও পেতে পারো।