Skip to main content
শীতের সকাল। খুব বড় ফুলের বাগান। পিকনিক চলছে হইহুল্লোড় করে। কে একজন চীৎকার করে বললেন, মাইতিবাবু এদিকে একবার আসুন। কি অসাধারণ ফুলটা দেখুন।
মাইতিবাবু গেলেন। পিছনে চৌধুরী, তার পিছনে, মিত্তির, পাল, বসাক, চ্যাটার্জী, ঢোল, বর্মণ ইত্যাদিরা।

গণিতজ্ঞ মাইতি বললেন, দেখুন প্রতিটা পাঁপড়ি কিন্তু সমান ব্যাসার্ধে নেই।
উদ্ভিদজ্ঞ পাল বললেন, এটা আসলে অর্ধ-অর্ধবৃত্ত পুষ্প।
সংস্কৃতজ্ঞ চ্যাটার্জী বললেন, আহা..পুষ্পে পুষ্পে মহাপুষ্পে...
ইতিহাসের অধ্যাপক বসাক বললেন, কথা হচ্ছে মোঘল আমলে গোলাপের উপর ভারতীয় সমাজের যে মানসিকতা বদলাচ্ছিল, এ ফুল হয়তো বা সেই সময় পারস্যদেশ থেকেই আনা।
ভূগল শিক্ষক বর্মণ বললেন, আহা, তা কেন, এখনকার জলবায়ু কি এ ফুলের যোগ্য না?
 
ব্যবসায়ী ঢোল বললেন, কলকাতার দিকে এ ফুলের চাহিদা ভালই হবে। দেখি কথা বলে বাগানের মালিকের সাথে।
কৃষিবিদ মিত্তির বললেন, তা হলেই হল। কি কি সার লাগে জানেন?
 
বাংলা শিক্ষক দে বাবু কবিতার দুছত্র বললেন - ওরে ফুল, ওরে নাম না জানা ফুল / দিল দরিয়ায় ভাব আনিলি জোয়ারে বিলকুল।
পরমার দিকে কিশোর ইশারা করে তাকালো... খোঁপায় চাই?

একটা মৌমাছি অনেকক্ষণ ধরে ফুলটায় বসতে চাইছে। প্রবেশের পথ পাচ্ছে না, সাহস নেই জন-অরণ্য ভেদ করার। 
এমন সময় কুট্টুস, কাবেরীর পাঁচ বছরের ছেলে ঊর্দ্ধশ্বাসে বল নিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে পড়ল এদের ঘাড়ে। ফুল পড়ল মাটিতে গাছ থেকে উৎপাটিত হয়ে। কুট্টুস ভ্রুক্ষেপও না করে সেই বেগেই দৌড়তে দৌড়াতে বলল... সরি।
ওই গাছের একটা কুঁড়ি যেন হাসল প্রাণ পেয়ে। আর মৌমাছিটা গুনগুন করে গাইতে গাইতে গিয়ে বসল অন্য একটা ফুলে।