পরিবর্তন আর জীবন, এ দুটো সমার্থক শব্দ। এ কথা বহুশ্রুত। খাঁটি কথা, সন্দেহ নেই।
দেখেছি শারীরিক, মানসিকভাবে যখন সুস্থ থাকি, তখন যে কোনো পরিবর্তন নিজের মধ্যে একটা উত্তেজনা আনে, একটা আলোড়ন আনে। সেটা দুঃখ বা সুখ যাই হোক না কেন, তাকে স্বীকার করে নেওয়ার একটা লড়াকু মনোভাব জন্মায়। প্রাণ কিছুতেই সে পরিবর্তনের কাছে হার স্বীকার করতে চায় না। না তো সুখের কাছে, না তো দুঃখের কাছে। সে বলে, আমি বড়ো, তোমরা আমার চেয়ে বড়ো না। সে বলে, আমি বেশি শক্তিমান, তোমরা না।
অথচ সেই আমি যখন লোভে, আসক্তিতে দুর্বল। তখন সামান্য প্রতিকূল পরিবর্তনেই কেঁদে উঠি, চমকে উঠি, কুঁকড়ে যাই। যত দেবতা ঈশ্বর, সবার পায়ের কাছে কেঁদে বলি, আমি কোনো পরিবর্তন চাই না প্রভু। আমায় আড়াল করো। আমায় রক্ষা করো।কত তোষামোদ, কত পীড়াপীড়ি।
আর এর উল্টোটা হলে, অর্থাৎ সুখের কিছু পরিবর্তন হলে? তাকে অক্ষয় রাখার জন্য কত মানত, কত কৌশল, কত ছল, কত চাতুরী।
থাকে কি পরিবর্তন থেমে? না থাকে না। প্রতিদিনকে একই রকম করে বাঁচার অভ্যাস, সব কিছুকে একই গতানুগতিক দৃষ্টিতে দেখার অভ্যাস, ছাড়তে না পারলে, আমাদের ভয় যাওয়ার না।
তাই আস্তিককে বলা হল, শরণাগত হও। এ পরিবর্তন তাঁর বিধান, তাঁর ইচ্ছা।
নাস্তিকও তার মত করে বুঝল, মেনে নেওয়াতেই মঙ্গল।
তাই ভাবি, এ পরিবর্তনের সাথে পরিবর্তিত হতে থাকাই স্বাস্থ্যের লক্ষণ। না হলে, থেমে থাকার চেষ্টা করতে করতেই কালের স্রোতে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে পথ চলা। সেকি কাম্য? না গৌরবের?