মনের গলি ঘুরছিলাম। নিজের সাথে, নেটের এ পাড়া ও পাড়া। কত কথা ছড়ানো ছেটানো। কত তথ্য। কত বাদ বিবাদ। মানুষের পরতে কতটা পোশাক লাগে, তার হিসাব আছে। খেতে কতটা চাল লাগে তাও মাপা যায়। কিন্তু বাঁচতে কতটা জ্ঞান লাগে - এ হিসাব করে ওঠা দায়। যদি জ্ঞানকে কাজের বস্তু ভাবি তবেই অবশ্য। কেউ যদি বলেন জানার আনন্দে জানতে চাইছি, তবে তার ক্ষেত্রে হিসাব নিকাশের বালাই নেই। যেমন কেউ যখন খাওয়ার আনন্দে খায়, কিম্বা সাজার আনন্দে পোশাক কেনে তারও যেমন হিসাব রাখা দায়। কতটা খাবে, কতটা জমাবে - কে বলতে পারে?
তা হলে কথা হচ্ছে মানুষের বেঁচে থাকার প্রয়োজনে জ্ঞান কতটা লাগে? কি করে খেতে হয়, হাঁটতে হয়, কথা কইতে হয়, ইয়ে করতে হয় সেগুলো না হয় প্রকৃতি দায়িত্ব নিয়ে শিখিয়ে দেয়। বাকিগুলান? সেই সহজ পাঠ থেকে শুরু করে কঠিনের পর কঠিনতর পাঠ? তার তো কোনো ইতি নেই দেখছি।
শখের পড়া, সার্টিফিকেট জমানোর পড়া, অর্থকরী উন্নতির পড়া, আরো কত পড়া... বাপ রে বাপ!
এগুলো কি আমায় খুশী করছে? সত্যিকারের খুশী। খাঁটি নির্ভেজাল আনন্দ দিচ্ছে? না তো। এতো গলা টিপছে। কেউ বলবেন তবে কি মুখ্যু ঢেকি হয়ে থাকব নাকি? এই পড়লাম গোলে। কোনটা বেশি ভালো - গেঁয়ো মুখ্যু না পণ্ডিত মুখ্যু? আমায় হিসাব কষে বলেন দেখি, চারদিকে যা অনাচার, ভ্রষ্টামো, দূর্নীতি, তা কটা গেঁয়ো মুখ্যু করছে আর কটা বিশ্ববিদ্যালয় ফেরত মুখ্যু করছে? মুখ্যু মানুষগুলোকে ক্ষেপিয়ে তাতিয়ে মারাপিটি করতে কারা ভড়কাচ্ছে?
গোড়ায় কি একখেন গলদ থেকে যাচ্ছে। ঠিক ধরতে পারছি না। কি যেন একটা শেখানো হচ্ছে না ওই বড় বড় বাড়িগুলানে - যাকে শিক্ষাক্ষেত্র বলে আর কি। কি বলেন তো? রবি ঠাকুর কিছুটা বুঝেছিলেন, তবে ওই বোঝাই সার। বোঝাতে পারেননি। আর পারবেনই বা কি করে? আমরা বুঝতে চাইলে তো!
কথাটা হল মনুষ্যত্ব বলে একটা বিরাট আউট অফ সিলেবাস কোর্স আছে। ওটারে কব্জা করতে না পারলে বাকিগুলান বাচ্চার হাতে অ্যাটোম বোম হয়ে যায়। তাই হচ্ছেও। ফাটছেও যেখানে সেখানে।
কোথায় করানো হয় সেই কোর্স? জানি না। বই কোথায় পাওয়া যায়? জানি না। তবে এটা জানি পরীক্ষার সেন্টার যখন তখন, যেখানে সেখানে পড়ে। টুকে পাস করার যো নেই। ইনভিজিলেটর বড্ড কাছে বসে। বুকের ধানাই পানাই ঘরটা ঘেঁষে। বড্ড কানপাতলা।
এও শুনেছি সেই কোর্সটা করা থাকলে নাকি, বাকি কোর্সে ফেল করলেও কোথাও একটা পাস করা যায়। কিন্তু এই কোর্সে ফেল করলে, শেষে সব ওই এক বাদ দিয়ে শূন্য বসানো। তাতে যতই সংখ্যা বাড়ুক, মান বাড়ে না।
সৌরভ ভট্টাচার্য
24 September 2015