Skip to main content

বিশ্বাস

প্রতিদিন লোকটা এক ঘড়া করে জল বয়ে বয়ে এনে মরুভূমির বালিতে ঢালত। বালি ভিজত। সে খুশী হয়ে যেত। ভাবত একদিন ভিজতে ভিজতে ডোবা তৈরী হবে। তারপর দীঘি। তারপর সম

শিখা

প্রদীপের সলতে এগিয়েছি সারারাত
       শিখাটাকে জ্বালিয়ে রাখব বলে
  যেন প্রদীপের বুক না জ্বলে

শিখা এগোতে এগোতে
      কখন আমার আঙুলে ধরেছে আগুন

আঙুল থেকে শিখা এসেছে সারা শরীরে

পুড়ুক পুড়ুক। আগুনের ভুল ভাঙিয়ো না।

   তবু প্রদীপের বুকটা বাঁচুক

হে সত্য

সে কথা থাক, যে কথা শুধুই তর্কের ঝড় তোলে
নিজের তোলা ঝড়ের ধূলোয় নিজেই পথ ভোলে

সে আলো জ্বালো, যে আলো মৃত্যুর পারে জাগে
আজ সব পরাভব তোমার চরণে পুনর্জন্ম মাগে

দ্রোহাত্মা ও মহাত্মা

(আজ ৩০ শে জানুয়ারী। মহাত্মাজীর এই ঘটনাটা আমি সুচেতা কৃপালীনি, মধু দণ্ডবতে প্রমুখ ব্যক্তিত্বের স্মৃতিচারণে পড়েছি। ঘটনাটিকে অবিকৃত রেখে তাকে কাব্যরূপ দানের প্রয়াস করেছি। ভাষাটি সাধু রাখলাম। বিষয়টি রূপদানে তা সহজে আসল।)

 

বোবা কথারা

বোবা মুখের বোবা কথারা
      এখানে ওখানে হাঁটুগেড়ে বসে
মিথ্যাগুলোকে পথ ছেড়ে দেয়
         সাজানো কথা বোঝে না সে

যদি

যদি শুদ্ধতা চাও
   অপারক আমি

তবে

দুটো নিম্নাঙ্গের মিলনে
একটা শরীর তৈরী হলেও হতে পারে
                  প্রেম নয়

অন্তর্লীন

এত ব্যাখ্যা করছ কেন?
শুতে যাও। আমি জেগে আছি।
ভয় অন্তর্দৃষ্টির অন্তরে জাগা বিশ্বাসকে কাড়তে পারে না

তুমি সে বিশ্বাসে আছো।
মিথ্যার সাধ্য কি সে বেদীতলে দাঁড়ায়!
মিথ্যার কল্পনাও ভস্ম হয়ে যায় সে শুদ্ধাগ্নিতে

তোমায় আমি ব্যাখ্যায় পাইনি
পেয়েছি বিশ্বাসের অন্তরে জাগা অতন্দ্র আলোতে
তুমি এসো। আমি হাত পেতে আছি -
আর কিছু না, শুধু তোমার হাতেরই জন্য।

আগুন

আগুন পোড়ায় না শুধু
   আগুন আলপনাও আঁকতে পারে
    তেমন তেমন হৃদয় পেলে

তার পরতে পরতে ভাঁজ পড়ে সুন্দরের
  জ্বালাবার আগে নিজেকে জ্বালায় তপের তাপে

সে তাপ বুকের কোটরে আসতে দাও
   শুদ্ধ হোক অভিশাপগুলো পুড়ে
      আশীর্বাদের রূপ আঁকুক হোমানলে-

আছেই আছে

বাঁচার মানে খুঁজতে যাইনি বইয়ের পাতায়

২৬শে জানুয়ারী

২৫শে জানুয়ারী সন্ধ্যেবেলা। কয়েকজন উঠতি বয়সের ছেলে ২৬শে জানুয়ারীর ছুটির উদযাপন করার প্ল্যান করছে কানে এলো। শীতের কুয়াশায় ঢাকা মাঠ। ছেলেগুলোকে স্পষ্ট দেখ

এসো

ছন্দ

কথা বলার একটা ছন্দ থাকে। হাঁটাচলা

আরশিনগর

হাতের কাছে কি একটা আছে। ছুঁতে চাইলেই ছুঁতে পারি। তবু যেন ছোঁয়ার যো নেই। কিসের যেন বাধা। না বুঝি কি আছে হাতের কাছে!

স্পর্ধা

চাঁদ কোনোদিন প্রতিশ্রুতি দেয়নি আমায় জানো

২৩ শে জানুয়ারী

কিছু কিছু জন্মদিন লজ্জা দিয়ে যায়
কার যেন নিহত স্বপ্নগুলো হেঁটে বেড়ায়

দরবারি কানাড়া

গভীর রাত। বাঁশিতে বাজল সুর - দরবারি কানাড়া। সুর উঠল কেঁপে কেঁপে চার দেওয়ালের মধ্যে মাথাকুটে। কে দেবে ওকে আগল খুলে? ও কাকে চায়? কার কান্না ওর বুকে এমন জমাট বেঁধে?

বৃষ্টি

বর্ষা আমার আলতো সোহাগ গায়ে
   বিন্দু বিন্দু চুঁইয়ে চুঁইয়ে ঘিরছে

আমার আলগা বাঁধন
      ওর সিক্ত ঠোঁটের ছোঁয়ায়

        গরল সুখে অতল তলে নামছে


(ছবিঃ শান্তনু ধীবর)

না হয় আমি

না হয় আমি অপেক্ষাতেই আছি
    সময় হলে এসো
সারা মাঠঘাট ছড়িয়ে ভালোবাসা
  ওড়না পেতে
   খানিক না হয় বোসো


(ছবিঃ মৈনাক বিশ্বাস)

সত্য উত্তর

আমার সঙ্গে এরকম ঘটবে ভাবতেও পারিনি....শেষে আমার জন্য এই অপেক্ষা করছিল....আপনিই বলুন এটা হওয়া কি উচিৎ

নিয়ন আলো

বাচ্চাটার মাথা ঢাকা টুপিতে
ছোট্ট শরীরটা মোড়া সোয়েটারের মোড়কে

সরাসরি

আমি কারোর মাধ্যমে কিছু চাইনি কোনোদিন

ভালোবাসাকে চেয়েছি ভালোবাসার জন্যই
ঈশ্বরকে চেয়েছি ঈশ্বরের জন্যই

তাই আমার দরজায় সেজে আসতে হয়নি
                  কাউকে কখনো কোনোদিন
যে এসেছে, সে সহজ বেশেই এসেছে সহজেই

ধরা-অধরা

তুমি হয়ো না সহজলভ্য
    থেকো না হাতের নাগাল
তাহলে আমার মন বলবে,

অনুকম্পা

অনেক মানুষের জঙ্গলে একা হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ মনে হয়, কোথায় যাচ্ছি?

ধ্যানের গভীরে

ধ্যানের গভীরে জ্বলে উঠল আলো
ধ্বনিত হল আলোকিত বাণী -
"তাই সত্য, যা কিছু বেসেছ ভালো"

( ছবির জন্য কৃতজ্ঞ ও প্রণত রইলুম শ্রদ্ধেয় Samiran দার কাছে)

আছে

চৌকাঠ পেরোও
রাস্তা আছে
হাত বাড়াও
হাত আছে
শ্বাস নাও
বাতাস আছে
কণ্ঠ ছাড়ো
শ্রবণ আছে
দু'হাত মেলো
আকাশ আছে
স্বপ্ন বোনো
লড়াই আছে
সামনে তাকাও
আশা আছে

স্বপ্নাতীত

কে ডেকেছিল?
কার ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম?
আমার সাথে কার যেন দেখা হয়েছিল। ঠিক কদিন আগে?
আমার হঠাৎ ভাঙা ঘুম পায়ের তলায় মাটি না পেয়ে
অভ্যাসের ডাঙা খোঁজে। হাতড়িয়ে বেড়ায় এর ওর মুখ।
পরিচয় ছিল তো একটা আমার -
বুকে, মাথায় করে টাঙিয়ে নিয়ে ফিরেছি সে অহং
       দীনতার ছদ্মবেশের আড়ালে

করবী

আমার আনমনা শরীরে তুমি হাত রেখেছিলে
একটা করবী বৃন্তচ্যুত হয়েছিল সেই মুহুর্তে

শখ

ওষুধের বাক্সটা খুলে দেখছিলেন মল্লিকবাবু। মোটামুটি সব ওষুধেরই এক্সপায়ারী ডেট পার হয়ে গেছে।

প্রান্তিক

রাস্তা বুঝি শুধু স্মৃতিরই আছে?

মৃত্যুঞ্জয়

আমরা বলতাম 'মানকাকু'। আসল নাম ক্ষুদিরাম মান। আমার দেখা বিস্ময়কর মানুষদের মধ্যে একজন। আশ্চর্য মানুষ!

বিশ্বাস

পথ চলতে সামনের দিকে কত সাবধানতা, কত সতর্কতা! কারণ আমার চোখদুটো সামনের দিকে করা।

গল্প না তো!

একটা ছেলে ছিল। এটা গল্প নয়।
ছেলেটার একটা হৃদয় ছিল। এটা কবিতা নয়।
ছেলেটার একটা বাড়ি ছিল। এটা উপন্যাস নয়।
ছেলেটা ভালোবাসায় বিশ্বাস করত। এটা মহাপুরুষের বাণী নয়।

হঠাৎ একদিন সব হারিয়ে গেল। এটা ইতিহাস নয়।
শুধু ছেলেটা হারালো না। এটা অলৌকিকতা নয়।
ছেলেটা এখন মাটি খুঁড়ে শিকড় খুঁজছে। এটা ভুগোল নয়।

অপেক্ষায়

জল তোলার পর বালতিটা একা আবার

স্বামীজী

বেলুড়মঠ, শান্তিনিকেতন - এগুলো পার্কসদৃশ, কিছুটা উচ্চমার্গের বিনোদনস্থল আজ। কোনো রসালো মিষ্টি বানানোতে বিফল হলে, মা-কাকিমাদের মুখে একটা কথা শোনা যায় - ইস্, রসটা ভিতরে যায় নি রে!

স্বামীজি

বললে
তোমার ভিতরের সুপ্ত দেবত্বকে জাগাও

তাকালাম অন্তরে, বললাম
      ঘন অন্ধকার। আলো কই?

ভেলভেট পোকা

ঘাসের উপর সুরের চাদর বিছিয়ে গেল
হলুদ ঘাসগুলো সারাগায়ে ধুলো মেখে

একা

অন্যজনের কথা কেন বলবে?
এসো। একা বসে কটা কথা একা একা বলো।
ওরা পাগল বলবে? বলুক।
ওরাও একা একাই বলবে তুমি না শুনলে।

কৌশল

যবনিকা

তোমার সাথে বোঝাপড়া তো আছেই
    আজ না হয় কাল
মাটিতে পা রাখা, আলোতে চোখ মেলা

পুষ্পপুরাণ

শীতের সকাল। খুব বড় ফুলের বাগান। পিকনিক চলছে হইহুল্লোড় করে। কে একজন চীৎকার করে বললেন, মাইতিবাবু এদিকে একবার আসুন। কি অসাধারণ ফুলটা দেখুন।

ঝরণার জল

ঝরণার জল। জলতরঙ্গ অবিরাম। নির্বিকার পাথর।
বছরের পর পর বছর। শুধু পিচ্ছিল। আরো পিচ্ছিল।

 

দেবদাসী


ফাঁকা মন্দির। বেশ বড় মন্দির। বিগ্রহ - শ্রীকৃষ্ণ ও রাধার। সন্ধ্যা হয়েছে ঘন্টাখানেক হল। শীতের সন্ধ্যা তাড়াতাড়ি হয়।
প্রণাম করে উঠতেই খেয়াল করলাম একজন বৃদ্ধা পূজার আয়োজন করছেন মন্দিরের এক কোণের দিকে বসে। সাদা শাড়ি। মাফলার জড়ানো মাথা। দেহটা একটু সামনের দিকে ঝোঁকা।
বললাম, দরজাটা একটু খুলবেন, একটা ছবি তুলব। আমার আর আমার আরো দু'জন বন্ধুরই মুর্তিটা খুব ভাল লেগেছিল।

একাকীত্ব

গভীর কোনো সংগীতই পারে একাকীত্ব থেকে চিত্তকে মুক্তি দিয়ে একা-র আনন্দ সাগরের তীরে নিয়ে আসতে।

থমথমে চারদিক

থমথমে চারদিক। ঝড়ের পূর্বাভাস?
নাকি ঝড়ের মৃত্যুশোক, মৌন দীর্ঘশ্বাস।

 

মিলনাপেক্ষা

অনেকটা রাস্তা সমতলে হাঁটার পর পাহাড় এলো। পথকে বললাম, এবার?
পথ বলল, ওই তো। সে পাহাড়ের দিকে ইশারা করল।
বললাম, পথ কোথায়? এ যে চড়াই শুধু। ঘন জঙ্গল।
খানিক এগোলাম। পথ হারালো জঙ্গলে। ঢুকলাম জঙ্গলে। মানুষ সব হারিয়েও নিজেকে আর হারাতে পারে না, সেই ভয়, সেই ভরসা।
ঘন জঙ্গলের মধ্যখানে দাঁড়িয়ে বললাম, কোনদিকে যাব কেউ জানো?
আমার কণ্ঠস্বর আমারই কাছে এলো ফিরে - প্রতিধ্বনি হয়ে।

শোনার সময় হয় না

যে হাতটা কেটে গেলে- শুধু বঁটি, হাত মোছার ন্যাকড়া, খুন্তির ডান্টি, বড়জোর ডেটল জানে.... সেই হাত দুটো ছাড়া নাকি সংসার অচল!

ওরাই বলে। বড্ড বলে। এত বলে যে শোনার সময় হয় না।

আসবে

ঝরণার জলে পা ডুবিয়ে বসে
আমার পা ছুঁচ্ছে নুড়ি- পাথরের সোহাগ

বীরেনকাকু

কিছু মানুষকে আমার চেতনার আশেপাশে খুব অল্প সময়ের জন্য পেয়েছি। কারণ,

ফাঁকি

 

 

ভোরের বাতাস একলা এসে ডাকল
বলল, হাঁটতে চল
হলুদ সবুজ মেশা সরষে ক্ষেতের ধার দিয়ে ঘুরে আসি চল

উতলা মনে লাগল হিসাবী অঙ্কুশ
বললাম, তাড়া আছে যে! অন্য কোনোদিন?

সে মুখভার করে ফিরে গেল

অপেক্ষায় রইলাম
এই বুঝি আমার দরকারী কাজ এলো!

ওমা! ঘন্টার কাঁটা নড়ল দেড় ঘর
   কই গেল আমার সেই গুরুগম্ভীর কাজ?

প্রান্তিক

কবে দাঁড়াব সামনে তোমার -
     অখণ্ড অবকাশে,
   পিছনে রেখে সব সংসার ভার -
        বিনা শোকে, বিনা ক্লেশে?

ধর্ষণ

খুব আলোচিত বিষয় - ধর্ষকদের ফাঁসি হওয়া উচিৎ কি না। আমি ভণিতা না করে সরাসরি আমার নিজের চিন্তা-ভাবনার নির্যাস বলি - উচিৎ।

মনুষ্যসমাজে তিন ধরণের মানুষ দেখা যায় প্রধানত রুচির দিক দিয়ে।

মাটি

হতে পারে তোমার ঘুম আসছে না
হতে পারে তুমি কাজের ফাঁকে ফাঁকে
                হচ্ছ অন্যমনস্ক
কোথায় যেন ঘটেছে কিছু ভুল
  কার কাছে যেন বাকি আছে ক্ষমা চাওয়া
একবার বাইরে এসো
খোলা আকাশের নীচে দাঁড়াও
একবার নত হও
স্পর্শ করো মাটি দু'হাত বিছিয়ে

ঢল

দেখতে দেখতে
সব বাড়িতে জ্বলে উঠল আলো
  ঠোঁটের আবদার লাগল গালে যেই
বিষন্ন কুয়াশা কাটল
আড়ামোড়া ভাঙা শরীরে এল আদরের ঢল
সন্ধ্যে এখন
চায়ের কাপে চুমুক দেওয়া ঠোঁট
  চোখ নির্জন অরণ্যে একা সর্দার
     তুমি অরণ্যের গুপ্ত জিয়ন ডাল
আঙুলগুলো পরীদের যাদুকাঠি

কথা

না তো। আসেনি তো কেউ?
শাড়িটাকেই ঘিরে ভাঙা বারান্দার উত্তর দিক আটকানো
পৌষের শীত গো মা, মানবে কেন?
আরে আরে ডেকো নি গো!
ও রাত আটটাতেই ঘুমুতে যায়।
কি খায়?
থাকলে খায় ভাত
না হলে খায় মুড়ি
হে হে...মাঝে মাঝে বাতাসও খায়
কোথায় শোয়?
ওই মাদুর পেতে। নিকানো বারান্দা।
ঠাণ্ডা লাগে?
না তো, সারা শরীরে কড়া পড়ে

গোসাঁই

নতুন ইংরাজী বছরের প্রথম দিন। সকাল ১১টা হবে। কাজের গতি শিথিল। ছুটির আমেজ। গোসাঁই এল। সেই সাদা ধুতি, সাদা পাঞ্জাবী, হাতে একতারা, পায়ে ক্যাম্বিসের জুতো। বয়েস পঁচাত্তরের আশেপাশে হবে। শীর্ণ, কালো দেহ। চোখ দুটোর একটা আকর্ষণ আছে। কি একটা যেন ঘোর। সামনে দাঁড়ালে মনে হয় যেন গ্রীষ্মের দুপুরে বড় দীঘির পাড়ে এসে দাঁড়ালাম। মনটা শান্ত হয়ে যায়।

শুভ নববর্ষ

ভালোবাসা
আমার আলো

ক্ষমা
আমার স্নানজল

বিশ্বাস
আমার পথ

অনুরাগ
আমার গতি

প্রার্থনা
হতাশার অন্ধকারে
   আমার চকমকি

বন্ধুরা
আমার হৃৎযন্ত্রের ছন্দ

স্বপ্ন
কোনো একদিন
সাদা খবরকাগজের পাতা

তুমি
আমার আশা
আমার দিশা
আমার শেষ আশ্রয়