কিছু যেন তার
দূর থেকে
দূর থেকে মনে হয়
ভীষণ কাছাকাছি দাঁড়িয়ে আমরা
কাছে এসে দেখো
এক একজনের মধ্যে
যোজন যোজন ফাঁক
সেখানে বিস্তর অন্ধকার
আশ্রয় দিয়েছে কিছু জোনাকিদের
দূর থেকে মনে হয় যেন তারা
শুধু তোমার কথা মনে পড়ে
আমার পুরী যেতে ভালো লাগে না
সারাদিন সমুদ্রের একটানা গর্জনে
আমার তোমার কথা মনে পড়ে
আমার লাভা, লোলেগাঁও, দার্জিলিং, কালিম্পং যেতে ভালো লাগে না
কুয়াশায় ঢাকা স্থির নিশ্চল পাহাড় দেখতে দেখতে
আমার তোমার কথা মনে পড়ে
অনবগুন্ঠিতা
বল জয় হরি
আমার ঈশ্বর
দুই খানেতেই
- ঈশ্বরের নিবাস কোথায়, বিশ্বাসে না সংশয়ে?
- দুই খানেতেই
- শুভবুদ্ধি জাগে কই, ভালোবাসায় না ভয়ে?
- দুই খানেতেই
- ভালোবাসার বাস চেতনায় না অন্ধকারে?
- দুই খানেতেই
- আচ্ছা মুশকিল। একটা কিছু ঠিক করে তো বলো। সত্যটা তবে কই?
- দুই খানেতেই
আমার সুন্দরবন ভ্রমণ
তো ট্রেনে তো বেজায় ভিড়। ওদিকে অমিতাভ স্যার গুরুগম্ভীর গলায় বারবার বলে চলেছেন দূরত্ব বজায় রাখার জন্য। কিন্তু দূরত্ব বজায় রাখা কি অমনি বললেই রাখা যায় স্যার? চলেছি সুন্দরবন।
কেন যাচ্ছি? কারণ একটাই, এক বছর হল বেড়ানো হল না। মনে মরচে পড়েছে। বাচ্চাগুলো অস্থির হয়ে যাচ্ছে। বলি করোনা কি তাদের পৃথিবীটা সত্যিই চার দেওয়ালে বন্দী করে দেবে?
এটাই রীতি
পাখিরালয়ের ভেতরের দিকে এক গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা হচ্ছে। মাটির বাড়ি। সামনে কয়েকটা ছাগল চরে বেড়াচ্ছে। মানুষটার বয়েস আন্দাজ ষাটের উপর। একটা চেক চেক লুঙ্গি পরা, ফুলহাতা সোয়েটারের উপর একটা চাদর জড়ানো গায়ে। মাথায় উলের টুপি। হাতে বোনা মনে হল। সবগুলোর অবস্থাই জীর্ণ।
ইচ্ছা করে
মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে
অর্বাচীনের মত ভালোবাসি
হৃদয় এমন কিনারা হারিয়ে
না হয় হলই খানিক বানভাসি
Bhaakt
The word 'Bhaakt' is becoming very familiar to us. Bulk of people are claiming themselves as 'Bhaakt'. Are we really eligible to be a 'Bhaakt' by uttering Jay Shree Ram, that is the question. Let's see, what Hinduism actually focuses on this issue.
কারণ তো শুধু এই
বারবার ভুলে যাও কেন
বেরোনোর দরজা
আলগা করে রয়ে ভেজানোই
বেরিয়ে যাওয়া যায়
চাইলেই যে কোনো সময়ে
অন্যের ঘুম না ভাঙিয়ে
একান্তেই
সে দরজা খুঁজে পাও না
দেখতে চাও না তাই
কি করে জানবে বলো?
খবরের কাগজে কি সব খবর লেখে বলো?
এত যে তোমরা কেন রাতদিন খবরের কাগজ পড়ো, বুঝি না বাপু!
এই তো আজ সকালে স্কুলে যাচ্ছি
বাপির বাইকে চড়ে
দেখলাম কালো কুকুরের বাচ্চাটার একটা পা রয়েছে ভেঙে
লেংচে লেংচে চলছে
লিখেছে তোমাদের কাগজে?
সনাতন ধর্মের ভক্ত বনাম আধুনিক ভক্ত বা ভক্ত্
'ভক্ত' শব্দটা খুব কানে আসছে। প্রচুর মানুষ ভক্ত বলে নিজেকে দাবী করছেন। এখন আমার কয়েকটা প্রশ্ন আছে, 'জয় শ্রীরাম' বললেই কি ভক্ত হওয়ার যোগ্য হচ্ছি? একটু ঘেঁটে দেখি হিন্দুধর্ম কি বলে। হিন্দুধর্ম নিয়েই যখন কথা বলছি তখন একেবারে গীতা দিয়েই শুরু করা ভালো। কি বলেন?
মতিগতি
লঙ্কা মাখা আঙুল
জিহ্বা স্পর্শে ক্ষতি কি সেমতি?
চ্ক্ষু স্পর্শে হইবেক যেমতি?
ধর্ম করিলে স্পর্শ রাজনীতি
কোন খাতে বহিবে মতিগতি?
চারপাশ
আমার একজন শিক্ষক ছিলেন। ভীষণ বামপন্থী। এমনই বাম যে হৃৎপিণ্ডের মাধ্যমে রক্তসঞ্চালন বোঝাতে গিয়ে বলেছিলেন, বাম অলিন্দ নিলয় দিয়ে শুদ্ধ রক্ত যায়, কারণ বামেরা সব সময় শুদ্ধ।
তোমার গন্ধেই তো
বন্ধ দরজা খুলতেই
সারা ঘর জুড়ে তুমি
তোমার গায়ের গন্ধ
তুমি এসেছিলে
এ কথাটা শুধু
আমার বুকেই বিঁধে ছিল না তবে
ভুলে গিয়েছিলাম,
তোমার গন্ধেই তো
আমায় ঘিরে বসন্ত
বিয়ে দিয়ে দিন
আবর্জনা
যে মেয়েটা মার খেয়ে এলো
কে সে?
মেয়ে নয় গো মেয়ে নয়
হিজড়ে হিজড়ে হিজড়ে
মা কাঁদে কেন মেয়ে মেয়ে বলে?
বা রে বা, লজ্জা নেই?
সমাজ নেই? ধর্ম নেই?
তাই মা কাঁদে মেয়ে বলে
লোককে ওসব বলতে নেই
বলতে নেই, বলতে নেই
পালিয়ে ছিল?
আর না তো কি?
কোথায় কোথায়?
খেলছে সাদাকালো
তোমার মনে হতেই পারে
মানুষ বড় স্বার্থপর
সে তো চিরকালই বলো
অতশত না ভেবে ভাই
নিজের মনে চলো
তোমার মনে হতেই পারে
মানুষ বড় অবুঝ
সে তো চিরকালই বলো
অতশত না ভেবে ভাই
নিজেই বুঝে চলো
একটা মরুভূমি দাও
আমায় শুধু একটা বিস্তীর্ণ মরুভূমি দাও
যেখানে কোনো ফুলের যত্ন নিতে হয় না
যেখানে কোনো নদীর জোয়ারভাটার হিসাব রাখতে হয় না
যেখানে হঠাৎ হারিয়ে যাই যদি
কোনো নাম ঠিকানা লেখা কাগজ
হাওয়ায় উড়ে বেড়ায় না
তাড়াতাড়ি এসো
- এদিকটায় সরে এসে বসো
- কত নাম্বারে নাম?
কামড়
রাস্তায় জল জমেছে। এতটা জল যে সাইকেলের অর্ধেক টায়ার জলের নীচে চলে যাচ্ছে।
অনুপের নতুন সাইকেল। চেনটা শক্ত। টান লাগছে। কিন্তু ভালো লাগছে। সব মিলিয়ে ভালো লাগাটাকে ভয়ও লাগছে। একটু পরেই সন্ধ্যে। বিদিশা কই তখন?
নাম অপরাধ
যে নামের মাহাত্ম্য
প্রাচীন ঋষিচিত্ত উপলব্ধিগামী
আত্মার মুক্তিহেতু জপিবারে
আছিল বিধান
শুশ্রূষার আশায়
মাত্র কদিনের পরিচয়
মাত্র এই কদিনেই তোমায় ভালোবেসে ফেললাম
বন্যায় গাছপালা বাড়িঘর
ভেসে যেতে দেখেছি টিভিতে
এইবার নিজেকে ভেসে যেতে দেখলাম
হৃদয়ে
সারাক্ষণ কেমন যেন
মন খারাপ খারাপ লাগা
যেন গ্রীষ্মের দুপুরে বন্ধ পাখার দিকে তাকিয়ে
গোনাড
- গোনাড মানে কি স্যার?
- গোনাড মানে জানো না, তুমি না মাধ্যমিক দেবে এই বছর? গো মানে কি?
রেনকোট
রেনকোটটা সুদীপ নিজেই বার করে সুশান্তকে দিয়েছিল। সুশান্ত বেরোতে যাবে হঠাৎ মুষলধারে বৃষ্টি নামল। সন্ধ্যে থেকে বোঝাই যায়নি যে আকাশে এমন মেঘের জট পাকিয়েছে। তখন কটা হবে, দশটা, সাড়ে দশটা হবে। সুশান্ত বাইক নিয়ে সুদীপের রেনকোট গায়ে দিয়ে বেরিয়ে গেল। ওর আজ নাইটশিফট, যেতেই হবে। নইলে থেকেই যেত। ও রেনকোটটা নিতে একটু ইতস্ততও
সহবাসী নয়
কোনো একদিন আমিও শিখে যাব
যখন তখন
যেখানে সেখানে
এক গাল হেসে জিজ্ঞাসা করতে আপনাকে,
"কেমন আছেন?"
যেন আমার ভালো থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলাই বাতুলতা
আমি যার মধ্যে
সারারাত জেগে কাটালাম
তোমার জন্য
যদিও তুমি সঙ্গে ছিলে না
ভোর হল
ক্লান্ত শরীরে
অভিমান হল
বৃথা কার জন্য কাটালাম
সারাটা রাত, জেগে?
মন বলল,
আমি যার মধ্যে মিশেছিলাম
তুমি ভাবলে নিষ্ঠুরতা
আসলে ভয় আমারই
হাত বাড়ালে যদি
হাতটা না ধরো
আর হাত না বাড়ালে
যদি অভিমান করো
এ দ্বিধায় আমি
দ্বিখণ্ডিত
তুমি ভাবলে
নিষ্ঠুরতা
মূল্যায়ন
চ্যারিটি ভালো জিনিস। সভ্য মানুষ চ্যারিটি করবে এ ভালো কথা। মহাপুরুষেরা বলে গেলেন, সব চাইতে বড় দান হল জ্ঞানদান।
অল্প
অল্প অল্প সুখ। অল্প অল্প ক্ষোভ। অল্প অল্প সাধ। অল্প অল্প স্বপ্ন। অল্প অল্প রাগ। অল্প অল্প প্রতিশোধস্পৃহা। অল্প অল্প অসহায়তা। অল্প অল্প বিষণ্ণতা। অল্প অল্প মহত্ব।
এরপর একটা অবশ্যম্ভাবী মৃত্যু।
কোন ভয়টা বেশি?
যা বলার ছিল
বললাম না
তুমিও বললে না
কথা শেষ হল
অসম্পূর্ণ কথাগুলো
জালে আটকানো পোকার মত
দপদপ ছটফট করছে
বুক মাথা জুড়ে
উড়তে চাইছে, বাঁচতে চাইছে
ভয় পাচ্ছ
তুমিও
আমিও
কোন ভয়টা বেশি ?
উড়ে এসে ঠোঁটে বসার?
না মৃত হয়ে বুকে চেপে থাকার?
I often dream
Crawling over a No
No is dissolving
Yes is flooded
মাটির গুলি
রোগা ছিপছিপে শরীর। প্যান্ট আর জামা অতিব্যবহারের সীমারেখা পেরিয়ে গেছে। বয়েস দেখে মনে হবে সদ্য হয় তো পঞ্চাশ পেরিয়েছে। মুখে শুনলাম, বয়েস তেষট্টি। "আমি এই তেষট্টি বছর এই মাঠে আসছি... এমন সাপ দেখিনি আগে।"
বুবুন আর খোলা ফ্রিজ
বুবুন ওই জন্যেই তো রাত্রে ফ্রিজ খোলে না। কতবার বাবাকে, মাকে, রান্নার পিসিকে, বন্ধুদের বলতে চেয়েছে, কেউ বিশ্বাস করেনি। ভাবে ফোরে পড়ে, তাই বানিয়ে বানিয়ে মিছিমিছি বলে।
সাময়িক বিরতি
কথা বলা দায় জানো। কথা বললেই সুর খোঁজো, চড়া না নরম। কথা বললেই রঙ খোঁজো, গেরুয়া না সবুজ না লাল। এভাবে কথা বলা যায়?
যা চাই
সবাই কি বিচিত্র বিচ্ছিরি একটা খেলা খেলছে
পাইয়ে দেওয়ার
সবাই অনেক কিছু দিতে চাইছে
রাস্তা, আলো, জল, টাকা, সুখ
এ সব তো চাই আমরা
কিন্তু কেউ ওদেরকে গিয়ে বলুক
আমরা শুধু এইগুলোই চাই না
আমরা চাই যাকে শাসনের ভার দিয়েছি
সে বাধ্য হোক শুধু নিজের বিবেকের কাছে
আমরা চাই আস্থা রাখতে
শিক্ষা স্বাস্থ্য বিচার ব্যবস্থায়
সেই চোখ দেখব বলে
সন্ধ্যাবেলায় একটা নৈর্ব্যক্তিক শুষ্কতা ঘিরে থাকে। হাস্পাতালের বাইরে পুকুরটার দিকে তাকিয়ে আমার সারাদিনের হিসাব। পুকুরের জলের রঙ এত বদলে বদলে যায় আগে জানতাম কই?
যখন তোমরা
যখন তোমরা হাততালি দাও
যখন তোমরা বাহবা দাও
তখন তোমরা
বসুদেবায়কুটুম্বকম
যখন তোমরা নিন্দা করো
যখন তোমরা আঙুল তোলো
তখন তোমরা মেরীর ছানা
দুষ্টু ভীষণ, বুদ্ধি কম
কানাভাঙা বেঞ্চ
পকাদা একজন সমাজ সচেতন নাগরিক। সমাজ নিয়ে প্রচুর ভাবনা। মাঝে মাঝে পকাদা বলে, "আমি যা যা ভেবেছি বিশু, লিখলে রবীন্দ্রনাথকেও হার মানাত।"
আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তা লিখলে না কেন গো?
জীবনে চাই কি?
শোনো, কত মানুষের অভিযোগের উত্তর দেবে? কত? তুমি শেষ হয়ে যাবে কিন্তু মানুষের অভিযোগ শেষ হবে না। দেখো না মৃত মানুষদের নিয়েও মানুষের কত অভিযোগ। যার নাভি ভেসে গেছে কত শতাব্দী আগে জলে, যে মানুষ মাটিতে মিশতে মিশতে শত শতাব্দী পার হয়ে গেল, তাকে নিয়েও মানুষের অভিযোগ। অভিযোগ শেষ হয় না। সে যেন রক্তবীজ।
সমঝোতা
- আপনি নিজের প্রশংসা এভাবে নিজেই নিজের মুখে করেন কেন? বাজে লাগে না?
- কেন বাজে লাগবে কেন?
রাতের প্ল্যাটফর্ম
- সব ট্রেনের টাইমটেবিল মুখস্থ?
- বললাম, ধুর, তাও কি হয়?
- রাতের ফাঁকা প্ল্যাটফর্মে লাল সিগন্যালের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মন খারাপ লাগে?
- উদাস হয়।